বিএনপি
‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিতে বহিষ্কার অব্যাহত
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক রাবেয়া সিরাজ ও জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সদস্য মো. মাহবুবুল হাসানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক রাবেয়া সিরাজ এবং জামালপুর জেলাধীন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. মাহাবুবুল হাসানকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: মনোনয়নপত্র নেওয়ায় একরামুজ্জামান ও আবু জাফরকে দল থেকে বহিষ্কার
রাবেয়া সিরাজ বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজের স্ত্রী। এবারের নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ আসনে তার মেয়ে শুল্কা সিরাজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
মেয়ের পক্ষে রাবেয়া সিরাজ দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে কাজ করছেন বলে স্থানীয় বিএনপির নেতারা অভিযোগ করছেন বলে জানা গেছে।
তবে দলীয় কর্মী মো. মাহবুবুল হাসানকে বহিষ্কারের কারণ জানা যায়নি।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মো. আবু জাফরকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা
প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি পেশ গ্রেপ্তার ও কারাবন্দি বিএনপি নেতা-কর্মীদের স্বজনদের
প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি পেশ গ্রেপ্তার ও কারাবন্দি বিএনপি নেতা-কর্মীদের স্বজনদের
বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের সম্প্রতি সাজাপ্রাপ্ত ও গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির জন্য মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন তাদের স্বজনেরা।
কারাবন্দি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস কারাবন্দি বিরোধী নেতাদের স্বজনদের পক্ষে আইনজীবীদের মাধ্যমে স্মারকলিপি জমা দেন।
দুই পৃষ্ঠার স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এক অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে কারাগারে আটক বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা বিচারের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেব প্রধান বিচারপতির কাছে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
স্মারকলিপিতে স্বজনরা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বিচার বিভাগের অভিভাবক হিসেবে আপনি (প্রধান বিচারপতি) দেশের বিচার বিভাগকে রক্ষা, একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।
বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক মিথ্যা, ভুয়া ও হয়রানিমূলক মামলায় গণগ্রেপ্তার, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন, জামিন প্রত্যাখান এবং আদালতে গণহারে সাজা প্রতিরোধে প্রধান বিচারপতি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন বলেও তারা প্রত্যাশা করেন।
স্বজনরা বলেন, বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তির জন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং আদালতকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিরোধীদলীয় নেতাদের কারাগার থেকে মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন কারাবন্দি বিএনপি নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা।
তাদের অনেকের হাতে প্ল্যাকার্ড এবং তাদের প্রিয়জনের ছবি দেখা গেছে, যারা কারাগারে অবস্থান করছেন।
বিএনপির মহিলা শাখা জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্বজনদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
অনুষ্ঠানে স্বজনদের কেউ কেউ প্রিয়জনের অনুপস্থিতিতে তাদের দুঃখ ও কষ্টের কথা বলেন।
তাদের অনেকেই সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আরও পড়ুন: মনোনয়নপত্র নেওয়ায় একরামুজ্জামান ও আবু জাফরকে দল থেকে বহিষ্কার
মনোনয়নপত্র নেওয়ায় একরামুজ্জামান ও আবু জাফরকে দল থেকে বহিষ্কার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়ায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ এ. কে. একরামুজ্জামান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মো. আবু জাফরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে' জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মো. আবু জাফরকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সকল পর্যায়ের সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন: হিরো আলমসহ ৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। তারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহকে 'দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন' হিসেবে বিবেচনা করছে।
একরামুজ্জামান ২০০১ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি নির্বাচিত হননি।
এদিকে, আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে গত ২১ নভেম্বর বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু জাফর নতুন নিবন্ধিত দল বিএনএমে (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন) যোগ দেন।
আরও পড়ুন: সিলেট সিটি নির্বাচন: ১১ মেয়র প্রার্থীসহ ৩৮৭ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সৈয়দ এ. কে. একরামুজ্জামান।
সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে তার পক্ষে বকুল মিয়া মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
এদিকে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে পুলিশের করা একটি বিস্ফোরক মামলায় হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন একরামুজ্জামান। আদালত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
নাসিরনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ২ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে নাসিরনগর উপজেলা সদরের কাশফুল রেস্তোরাঁর সামনে সরকারি কাজে বাধাদান ও বিস্ফোরক আইনে ৩৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রূপন নাথ।
আরও পড়ুন: হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত: রিজভী
সরকারি কাজে বাধা দান, হত্যার উদ্দেশ্যে বিস্ফোরকদ্রব্য ব্যবহার ও পুলিশ সদস্যকে আহত করার অভিযোগে করা এ মামলায় একরামুজ্জামানকে ৪ নম্বর আসামি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। আইনজীবী আলী আজমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন আইনজীবী আদালতে তার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবী আলী আজম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় ঘটনার তারিখ ২ নভেম্বর উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ঘটনার সময় একরামুজ্জামান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপস্থিত ছিলেন না। কারণ ২ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি একটি মামলায় হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার ওই আদালত তাকে জামিন দেন। এর প্রমাণপত্রসহ অন্যান্য প্রমাণপত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পেশ করা হয়েছে। আদালত সব কিছু বিবেচনা করে বিস্ফোরক আইনের এ মামলায় তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবরে মহাসমাবেশ থেকে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, কারাগারে মৃত্যু
একরামুজ্জামান বলেন, ‘আমি জামিন পেয়েছি। ঢাকায় যাচ্ছি। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে এ মুহূর্তে বলার মতো কিছুই নেই। এখনই সব কিছু স্পষ্ট করতে চাচ্ছি না।’
তবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কাউসার আহমেদ বলেন, বিকালের দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সৈয়দ একরামুজ্জামানের নামে মনোনয়নপত্র তোলা হয়। তার পক্ষে মো. বকুল মিয়া নামে একজন মনোনয়নপত্রটি সংগ্রহ করেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেওয়া তালিকা ধরে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করবে ইসি: বিএনপি
বুধবার অবরোধ, বৃহস্পতিবার হরতাল ডেকেছে বিএনপি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে ফের সারাদেশে ২৪ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ এবং বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী হরতাল পালন করতে যাচ্ছে বিএনপি।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল ৬টায় অবরোধ শুরু হবে এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় শেষ হবে এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল চলবে।
রিজভী বলেন, এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
তিনি বলেন, অন্যান্য বিরোধী দল যারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে তারাও এই কর্মসূচি পালন করবে।
আরও পড়ুন: শিথিলতায় চলছে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ
বিরোধী দলের চলমান ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়। এর ১৪ ঘণ্টা আগেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য দেশবাসী ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান রিজভী।
বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো দেশব্যাপী ১৯ নভেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করে এবং ২২ নভেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ এবং ২৬ নভেম্বর থেকে আরেক দফা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা করে, যা মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এবং নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দলগুলো এখন পর্যন্ত সাত দফায় অবরোধ পালন করেছে।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে তারা ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালও পালন করে। যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার মধ্যে দিয়ে হরতাল শেষ হয়।
২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর আধা ঘণ্টা পর কাকরাইলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। খুব দ্রুতই নয়াপল্টনের চারপাশে ছড়িয়ে সহিংস সংঘর্ষ পড়ে এবং মাঝপথে সমাবেশ বন্ধ করে দেয় বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে
ডিসেম্বরে অবরোধের পরিবর্তে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা বিএনপির
শিথিলতায় চলছে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ
এক দফা দাবিতে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন আজ সকালে রাস্তায় নিয়মিত যানবাহন চলাচলসহ শিথিলভাবে চলছে।
গতকাল রবিবার সকাল ৬টা থেকে অবরোধ শুরু হয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছেএ নিয়ে গত ৩১ অক্টোবর থেকে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলো জনসাধারণের তেমন সাড়া ছাড়াই সাতটি অবরোধ পালন করছে।
উত্তেজনা ও সহিংসতার আশঙ্কা সত্ত্বেও ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহন ও যাত্রীদের উপস্থিতি আগের অবরোধের তুলনায় বেশি বলে মনে হচ্ছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে টহল দিতে দেখা গেছে।
গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন এ অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুর্বৃত্তরা নাটোরের একটি গ্যাস রিফুয়েলিং স্টেশনে তিনটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ: সারা দেশে ২৩০ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ৪৩০ টহল দল মোতায়েন
হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত: রিজভী
শেখ হাসিনার ‘স্বৈরাচারী’ সরকারকে সমর্থন দিয়ে ভারত বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার এবং তাদের দেশের রাজনীতিবিদদের বোঝা উচিত কেন বাংলাদেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। স্বৈরাচারী সরকারকে সমর্থন করে তারা (ভারত) বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
রবিবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর বনানী এলাকায় ঝটিকা মিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের তা সমর্থন করা উচিত।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভারতবিরোধী মনোভাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে রিজভী এ মন্তব্য করেন।
সীমান্ত হত্যা ও বিভিন্ন অমীমাংসিত দ্বিপক্ষীয় সমস্যার জন্যও ভারতের সমালোচনা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে
তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্বের সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই বিএসএফ সদস্যরা গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে।’
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে একতরফা বাণিজ্য করলেও বাংলাদেশকে তাদের দেশে ব্যবসা করার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না ভারত। তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্নভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী দেশকে যা যা প্রয়োজন সবই উদারভাবে দিয়ে গেলেও, ভারতের কাছ থেকে কিছুই পায়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অনেক রক্তের বিনিময়ে একটি যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। কারো গোলাম হয়ে থাকার জন্য এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেনি, রক্ত বিসর্জন দেয়নি।’
রবিবার সকাল ৬টা থেকে বিরোধী দলগুলোর ঘোষিত ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের সমর্থনে সকাল ৭টার দিকে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে মিছিল বের করেন রিজভী।
মিছিলটি বনানী মাঠে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলের বিভিন্ন সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেওয়া তালিকা ধরে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করবে ইসি: বিএনপি
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির: রিজভী
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে
সহিংসতার আশঙ্কার মধ্যে দিয়ে আজ রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী আরও একটি ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
সর্বশেষ অবরোধ কর্মসূচিটি আজ সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চলবে।
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে চাপ সৃষ্টি করতে বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যে ৬ দফায় অবরোধ পালন করেছে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে অবরোধের পরিবর্তে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা বিএনপির
আগের অবরোধ কর্মসূচিগুলোতে অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
আগের মতো এবারও ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে।
ঢাকার সড়কে রিকশার সংখ্যা বেশি এবং কিছু ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন এ অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
৪৮ ঘণ্টার অবরোধকে সামনে রেখে সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে অবরোধে বিএনপির ২০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
২৯ অক্টোবর থেকে চলমান হরতাল-অবরোধে ৩১০টি ভাঙচুর ও ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগ হয়েছে: পুলিশ
২৮ অক্টোবরে মহাসমাবেশ থেকে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, কারাগারে মৃত্যু
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া গোলামুর রহমান চট্টগ্রাম নগরীর মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হাই সিকিউরিটি ইউনিটের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার(২৫ নভেম্বর) দুপুরে কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন গোলাপুর রহমান। তাকে দ্রুত কারাগারের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান সুব্রত কুমার।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইদ্রিস আলী জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে টেলিফোনে তার পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির: রিজভী
ইদ্রিস বলেন, তার লাশ নিতে পরিবারের সদস্যদের কাশিমপুর কারাগারে যেতে বলা হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় যান গোলাপুর রহমান। সমাবেশের সময় নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে মোহরা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজম ও গোলাপসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তারা কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেওয়া তালিকা ধরে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করবে ইসি: বিএনপি
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেওয়া তালিকা ধরে নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করবে ইসি: বিএনপি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া তালিকা অনুযায়ী বিজয়ী ঘোষণা করতে শত কোটি টাকা নষ্ট করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জালিয়াতির নির্বাচন করতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
রবিবার থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ সফল করতে দৃঢ় সংকল্প ও সাহসের সঙ্গে রাজপথে নামার জন্য বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
রিজভী বলেন, '২০১৪ সালে অটোপাস নির্বাচন এবং ২০১৮ সালে রাতের ডাকাতির পর এবার আরেকটি জালিয়াতি হবে। নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বা অফিস থেকে দেওয়া একটি তালিকানুযায়ী বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করবে।’
আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে শত শত কোটি টাকা অপচয় করা হবে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'দেশের জনগণকে ফাঁকি দিয়ে সবচেয়ে নিখুঁত প্রতারণায় এটা করা হবে। গণভবন থেকে যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তা নির্বাচনের রাতেই পড়ে শোনানো হবে।’
তিনি বলেন, নির্বাচন এখন একটি কৌতুক, প্রহসন এবং ব্যবসার মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কারণ জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার ক্ষমতা হারিয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, আসন বণ্টনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সহানুভূতি, উপহার ও করুণায় জনপ্রতিনিধি তৈরি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন নিয়ে চিন্তা নেই: ইসি রাশেদা
রিজভী অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক নেতাদের কিংস পার্টিতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে এবং কম পরিচিত দলগুলো তাদের নগদ অর্থের প্রলোভন দিচ্ছে এবং রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তাদের এমপি করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কিন্তু, যাদের নীতি আছে এবং যারা আদর্শবাদী ও দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ, তাদের বোঝাতে পারেনি তারা।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও উৎসবমুখর পরিবেশের পরিবর্তে সারাদেশে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোকজন ছাড়া মানুষ এখন গ্রেপ্তারের ভয়ে পলাতক এবং অনেক গ্রাম মানুষহীন হয়ে পড়েছে।’ ‘তারা (আওয়ামী লীগ) ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতি রাতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ‘এভাবে মাফিয়া সরকার নির্বাচন করতে যাচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের নামে এই খেলা কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে বানচাল করা হবে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে লুটপাট করে নতুন দল তৈরি করছে সরকার: রিজভী
বিএনপি ও এর সক্রিয় নেতাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিচার বিভাগের মাধ্যমে বেছে বেছে 'মিথ্যা' মামলায় সাজা দেয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
রিজভী বলেন, শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ৩২৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো রবিবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ পালন করবে।
তিনি বলেন, 'আমি আশা করি গণতন্ত্রকামী জনগণ এবং বিরোধী দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা অবিচল ও সাহসিকতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে নেমে অবরোধ পালন করবেন।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির: রিজভী