জাতীয়-পার্টি
কোটা আন্দোলন: শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান জিএম কাদের
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় ৬ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।
বুধবার (১৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।
শোকবার্তায় তিনি নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: বায়তুল মোকাররমের সামনে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ
তিনি বলেন, কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। সরকারকে এই যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে।
জিএম কাদের বলেন, ‘রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ শান্তিপূর্ণ অহিংস আন্দোলন করছিল। পুলিশ তাকে নির্মমভাবে গুলি করে। এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ভিডিও বিশ্ববাসী দেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে নিহতদের পরিবারকে যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
এসময় সহিংসতায় আহত শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসার দাবিও জানান জাপা প্রধান।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষ, আহত ১৩
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার জাপার এমপি
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৯০ শতাংশই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যারা কাস্টমসে চাকরি করেন তাদের প্রত্যেকেরই ঢাকা শহরে দুই-তিনটি বাড়ি রয়েছে।’‘বন বিভাগে যারা চাকরি করেন তাদেরও দুই-তিনটি স্বর্ণের দোকান আছে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নিলে আমরা দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবো।
জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন,‘আর তা না হলে বড় বড় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে হারে দুর্নীতি করছে, আমরা কী করব? আমরা অসহায়। অনেক সরকারি কর্মকর্তা আছেন যারা অসহায়। কারণ এখানে ৯০ ভাগ মানুষ ওই দিকে (দুর্নীতি), ১০-১৫ শতাংশ মানুষ ভালো থেকে কী করবে?’
শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থবিলের ওপর সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।
প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনের সময় একটি হলফনামা দিতে হবে উল্লেখ করে হাফিজ বলেন, এই নথি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সিন্দবাদের দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে আ.লীগ সরকার: জিএম কাদের
তিনি বলেন,‘কিন্তু চাকরিতে আসা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি প্রথমে হলফনামা দেন, তারপর পাঁচ-দশ বছর হলফনামা দেন এবং তাদের আলোচনা-সমালোচনা হয়, তাহলে দুর্নীতির চাবিকাঠি বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যথায় এটা বন্ধ হবে না।’
তিনি বলেন, সরকার অনেক প্রশংসা পেয়েছে। কিন্তু শুধু দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলেই ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর নাম যেমন লেখা আছে তেমনি প্রধানমন্ত্রীর নামও স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
তিনি বলেন, 'ব্যবস্থা নিলে দুর্নীতি বন্ধ হবে। সংসদ সদস্যদের রেকর্ড থাকায় সব সরকারি কর্মকর্তার রেকর্ড তৈরি করলে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব বলে মনে হয়।’
কুড়িগ্রাম-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হামিদুল হক খন্দকার বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সরকারের দ্বৈত নীতি।
তিনি বলেন, 'একদিকে আপনি বলবেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স, অন্যদিকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন। এটা কি সম্ভব? যারা বৈধ আয় উপার্জন করেন তাদের ৩০ শতাংশ কর দিতে হবে, আর যারা কালো টাকা হোয়াইটওয়াশ করবেন তাদের ১৫ শতাংশ কর দিতে হবে। এতে স্বার্থ কার? এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে পড়ে বলে মনে হয় না।’
আরও পড়ুন: সংকট মোকাবিলায় অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করুন: জিএম কাদের
সংকট মোকাবিলায় অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করুন: জিএম কাদের
দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন বিস্তার করে চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের চিন্তা অবাস্তব বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সমাজের সবক্ষেত্রে জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকা উচিত। 'তবেই দেশে সুশাসন আসবে।’
শনিবার (২৯ জুন ) সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে অবাধ দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
সরকার অফশোর ব্যাংকিং চালু করে অবৈধভাবে পাচার হওয়া অর্থ বৈধ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
জিএম কাদের আরও বলেন, সরকার শুধু ট্যাক্স দিয়ে কালো টাকা সাদা করার মাধ্যমে দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও গোষ্ঠী, ব্যাংক খেলাপি, অর্থ পাচারকারীদের সমন্বয়ে একটি অভিজাত ও অতি ধনী শ্রেণি তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের অর্থনীতির মূলধারায় আনতে প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
জিএম কাদের বলেন, কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশে বড় সমস্যা তৈরি করেনি। বরং আসল সমস্যা জবাবদিহির অভাব, যার ফলে সুশাসনের অভাব তৈরি হয়েছে।
জাতীয় পার্টি প্রধান বলেন,‘এর ফলে সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সংশ্লিষ্ট নীতি ব্যক্তি স্বার্থ ও গোষ্ঠী স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়।’আরও পড়ুন: সিন্দবাদের দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে আ.লীগ সরকার: জিএম কাদের
তিনি আরও বলেন, এক কথায় বলা যায়, অর্থনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধে সুশাসনের অভাব কাটিয়ে ওঠা ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা যাবে না।
জিএম কাদের বলেন, বাজেটে মূল সমস্যার কোনো স্বীকৃতি নেই, এ সমস্যা সমাধানে কোনো দিকনির্দেশনাও নেই। ‘বরং সমস্যার কারণগুলোকে উৎসাহিত করার চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। তাই বিদ্যমান অর্থনৈতিক সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধান শিগগিরই আশা করা যায় না।’
ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, ব্যাংকিং খাত নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে, আর এর কারণ খারাপ ঋণ।
কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, অনেকে বলেছেন এটা সংবিধানসম্মত নয়।
আরও পড়ুন: ব্যাংক সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ : জিএম কাদের
জিএম কাদের বলেন, 'এই সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫০-৬০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করেন তিনি।’
বিদ্যুৎ খাতের সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক সমস্যা তৈরি করেছে।
উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে এটা সত্য, কিন্তু অর্ধেক কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এর অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট অব্যবহৃত উৎপাদন, বেসরকারি মালিকদের ভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জের একটি বড় অংশ দিতে হয় বৈদেশিক মুদ্রায়।
অফশোর ব্যাংকিং আইনের সমালোচনা করে জিএম কাদের বলেন, অফশোর ব্যাংকিং আইনের মাধ্যমে বড় ধরনের ছাড় বা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
দেশের রিজার্ভের সঠিক পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে যা শোনে মানুষ তা বিশ্বাস করে, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য জনগণ বিশ্বাস করে না।আরও পড়ুন: পুরান ঢাকায় হরিজন উচ্ছেদ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন চুন্নু
পুরান ঢাকায় হরিজন উচ্ছেদ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন চুন্নু
পুরান ঢাকার হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষদের উচ্ছেদ না করে বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু।
বুধবার (১২ জুন) সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এই আহ্বান জানান।
চুন্নু বলেন, ' আমি সংসদ নেতাকে অনুরোধ করব, বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত মানবিক কারণে তাদের উচ্ছেদ না করতে।’
তিনি উল্লেখ করেন, হরিজন সম্প্রদায়ের লোকেরা কয়েক দশক ধরে ঢাকা শহরের কিছু এলাকায় বসবাস ও সেবা করে আসছে।
পুরান ঢাকার বংশালের আগা সাদেক রোডের কাছে মীরনজিলা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের কথা উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে হরিজন সম্প্রদায়ের প্রায় তিন হাজার মানুষ বসবাস করছেন।
আরও পড়ুন: ব্যাংক সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ : জিএম কাদের
তিনি বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তাদের বসবাসের জায়গায় বাজার তৈরি করতে চায়।’
তিনি উল্লেখ করেন, এটি সত্য যে এই জায়গার মালিক নয় হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ নয়।
‘কিন্তু তারা যুগ যুগ ধরে সিটি করপোরেশনের এই জায়গায় আছে, তাদের উচ্ছেদের আগেই বিকল্প ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।’
তিনি বলেন, গতকাল উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে হরিজন শিশুরা রাস্তায় শুয়ে পড়ে। ‘ফলে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা প্রসঙ্গে চুন্নু বলেন, একজন কর কমিশনার গ্রামীণ ফোনসহ চারটি মোবাইল কোম্পানির ১৭০ কোটি টাকা মওকুফ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এনবিআর চেয়ারম্যান, অর্থসচিব ও অর্থমন্ত্রী কোথায়? দেশের স্বার্থে এটাকে যথাযথভাবে দেখতে হবে।’
আরও পড়ুন: সিন্দবাদের দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে আ.লীগ সরকার: জিএম কাদের
সিন্দবাদের দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে আ.লীগ সরকার: জিএম কাদের
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন করে আওয়ামী লীগ সরকার সিন্দবাদের পৌরাণিক দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার প্রবল ক্ষমতার জোরে দেশের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিয়েছে। এখন, মানুষের কণ্ঠস্বরের কোনও মূল্য নেই; বরং তারা সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য হচ্ছে। এটা মানুষের কাঁধে বসে থাকা সিন্দবাদের দানবের মতো আচরণ।’
শনিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় জিএম কাদের এই অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই এবং তারা প্রতিবাদ করলে তাদের অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
জিএম কাদের বলেন, ‘জাতি এখন এক সংকটময় সময় পার করছে। সংকটের গভীরতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অধিকাংশ মানুষ এখন যা উপার্জন করেন তা দিয়ে সংসার চালাতে পারছেন না।
সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেন, টাকার অবমূল্যায়ন, মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ায় ডলারের দাম বেড়েছে।
আরও পড়ুন: আ.লীগকে কটাক্ষ করে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমালোচনায় জিএম কাদের
তিনি বলেন, ডলার সংকটের কারণে সরকার আমদানিতে সংকুচিত হওয়ায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ চাকরি হারাচ্ছে।
জাতীয় পার্টি প্রধান বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে, দেশ একটি অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি। বেশিরভাগ মানুষ কাজ পাচ্ছে না এবং খাবার সংগ্রহ করতে পারছে না। এমন বাস্তবতায় একদল লোক সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিপুল সম্পদ অর্জন করে ইউরোপীয় রীতিতে জীবন যাপন করছে।’
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জরিপ উদ্বৃত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বাড়ছে। এক শ্রেণির মানুষ অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। অনেকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এই বৈষম্যের কারণে মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।’
জিএম কাদের বলেন, জাতি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে স্বাধীন একটি দেশ প্রতিষ্ঠা করে, যেখানে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এবং বৈষম্যহীনভাবে ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, ‘জনগণ যাতে দেশের মালিক হতে পারে এবং বৈষম্য দূর করে তাদের পছন্দের সরকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে পারে, সেজন্য মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে স্বাধীন করেছে। স্বাধীনতার সেই অর্জন যেমন আমরা হারিয়েছি, তেমনি হারিয়েছি সাধারণ মানুষের দেশের মালিকানাও।’
আরও পড়ুন: ব্যাংক সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ : জিএম কাদের
ব্যাংক সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ : জিএম কাদের
ব্যাংকিং খাত সঠিকভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ‘দেশের ব্যাংকগুলো যে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক তার উদাহরণ।’
বৃহস্পতিবার (৯ মে ) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তিনি বলেন, এই ব্যাংকটি দুর্নীতিতে ডুবে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ৩০ এপ্রিল এনআরবিসি ব্যাংকের ১৩ জন পরিচালক তাকে চিঠি দিয়ে বলেন, এই ব্যাংকটি দুর্নীতিতে ডুবে আছে।
জিএম কাদের বলেন, ‘উদ্যোক্তা পরিচালকরা বলছেন, তারা এখানে বিনিয়োগ করেছেন। এখন ব্যাংকটি থাকবে কিনা তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন তারা। টাকা ফেরত পাবেন কিনা তা তারা জানেন না। তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।’
লোডশেডিং প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, এটা বাড়ছে।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং বাড়ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা দিলে গ্রামীণ মানুষ সবচেয়ে বেশি লোডশেডিংয়ের শিকার হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রাজশাহী, সিলেট অঞ্চল ছাড়াও ঢাকার আশপাশের জেলা, বরিশাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী সব এলাকায় ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং সহ্য করতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন: আ.লীগকে কটাক্ষ করে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমালোচনায় জিএম কাদের
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে সরকার প্রয়োজনের সময় লোডশেডিং কমাতে পারেনি এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারেনি।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনের তুলনায় ১০ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ প্রক্রিয়ায় পিডিবির কর্মকর্তাদের সুষ্ঠু পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে উৎপাদন ছাড়াই ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে সরকারি কোষাগার থেকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হবে।
তিনি বলেন, এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। ক্যাপাসিটি চার্জ না দিলে দাম বাড়ানো হতো না।
আরও পড়ুন: পাহাড় সামলাতে ব্যর্থ সরকার: জি এম কাদের
পাহাড় সামলাতে ব্যর্থ সরকার: জি এম কাদের
পাহাড় সামলাতে সরকার ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের।
তিনি বলেন, পাহাড়ের সামান্য ঘটনায় যদি সরকার হিমশিম খায়, তাহলে দেশে বড় ধরনের বিপদ হলে জনগণ দাঁড়ানোর রাস্তা খুঁজে পাবে না।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের হতাশা ভুলে টাইগাররা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: জি এম কাদের
রবিবার (৭ এপ্রিল) বিকালে রংপুর সার্কিট হাউসে তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের হামলা নতুন কিছু নয়। এর আগেও হয়েছে, সেটি আবার সমাধানও হয়েছে। কিন্তু এবারের ঘটনা একেবারেই আলাদা।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ ও খুনসহ বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। এতে সরকারের গোয়েন্দা বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে। এর দায় সরকারকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারি বাহিনীর সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে। কিন্তু কাজের ব্যাপারে জবাবদিহি নেই। যে যার ইচ্ছে মতো কাজ করছে।
দেশে গণতন্ত্র না থাকায় সাধারণ মানুষের জন্য দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ায় গণতন্ত্র ভেঙেছে।
তিনি বলেন, মানুষ তার অধিকার হারিয়েছে। জাতীয় পার্টি চেষ্টা করছে অধিকার নিয়ে কথা বলার। কিন্তু সরকার ভেতর থেকে কলকাঠি নেড়ে দলকে দুই ভাগ করার চেষ্টা করছে।
কাদের বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ তৈরির অপচেষ্টা চলছে। জাতীয় পার্টিকে ধরে রাখতে দলীয় নেতা-কর্মীদেরও শক্ত অবস্থান তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি।
এসময় রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আলাউদ্দিন মিয়া মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীরসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: জিএম কাদের
রংপুর-৩ আসনে জাপার মনোনয়ন ফরম নিলেন জিএম কাদের
আ.লীগকে কটাক্ষ করে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমালোচনায় জিএম কাদের
বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন ধরনের নির্বাচন হয়েছে।
তিনি বলেন, কিছু কিছু জায়গায় নির্বাচনের ফলাফল পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং ফলাফল পূর্বেই প্রস্তুত করা ছিল।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জিএম কাদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনো কোনো এলাকায় সব নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ না থাকায় নির্বাচন সাধারণত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হতো।
তিনি বলেন, ‘সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে আন্তরিক। নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হয়েছে। কিন্তু উপস্থিতি ছিল কম।’
আরও পড়ুন: সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হলেন জিএম কাদের, উপনেতা আনিসুল ইসলাম
দ্বিতীয় ধরনের নির্বাচনকে অবাধ প্রক্রিয়া বলে অভিহিত করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্র দখলের জন্য পেশিশক্তি ও অর্থ অবাধে ব্যবহার করা হয়েছে।’
তৃতীয় ধরনের নির্বাচন প্রসঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, তার দলের কর্মীরা এমন অভিযোগ করেছেন যে 'ফলাফল পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং শিটটি আগে থেকেই তৈরি করা হয়েছিল।’
এ সময় ট্রেজারি বেঞ্চের এমপি ও নির্দল এমপিদের হৈচৈ করতে দেখা যায়। তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ‘তা নাও হতে পারে।’
জিএম কাদের বলেন, সব দল যখন নির্বাচনে আসে এবং নির্বিঘ্নে ভোট দেয়, তখন ১৫ শতাংশ ভোট কাস্টিং হলেও গ্রহণযোগ্য হয়।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব বড় দল নির্বাচনে অংশ নিলে এই মুহূর্তে তারা ৯০-৯৫ শতাংশ ভোট পাবে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমঝোতা না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কঠিন।’
গত নির্বাচনে ৪২ শতাংশ ভোট পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চিত্র বিবেচনায় ৪২ শতাংশ ভোট পড়লে সব ভোটকেন্দ্রের সামনে আট ঘণ্টা লাইন থাকার কথা।‘কিন্তু তা হয়নি,’ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের তুমুল হট্টগোলের মধ্যে তিনি এ কথা বলেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, সংবিধান ও প্রচলিত আইনের আলোকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বৈধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
‘এটা আইনত বৈধ। কাউকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মনে করে যে এটি ভালোভাবে সংজ্ঞায়িত হয়নি এবং নিখুঁতভাবে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয়নি।’
আরও পড়ুন: নতুন সংসদের দায়িত্ব নিখুঁতভাবে পালন করা নিয়ে শঙ্কা জিএম কাদেরের
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় আইন ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়।
তিনি বলেন, 'যাদের এসব বিষয় দেখাশোনা করার কথা ছিল, তারা এড়িয়ে গেছেন এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে লঙ্ঘনে সহায়তাও করেছেন।’
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ ছাড়া জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য সব দল তাদের নিজস্ব নীতিগত আদর্শ নিয়ে টিকে থাকতে পারবে। ‘আমি আশঙ্কা করছি, রাজনীতি এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, দুর্নীতি 'দেশজুড়ে ছেয়ে গেছে' এবং এটি বেশ কিছুদিন ধরে চলছে।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এটা প্রতিটি সমাজের জন্য অভিশাপ। ক্রমাগত দুর্নীতির কারণে ভোগান্তি বাড়ে। এতে সমাজের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।’
এ পর্যায়ে বিরোধীদলীয় নেতা স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করেন তিনি।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে কাদের বলেন, এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্য তদন্তকে বিলম্বিত করতে উৎসাহিত করতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, সিন্ডিকেটের অংশ হিসেবে কিছু লোক এসব পণ্য আমদানি করে।
এসব ব্যবসায়ী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারের নীতিনির্ধারণী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার তাদের হাতে জিম্মি ‘কারণ তাদের কাছে আর কোনো বিকল্প নেই।’
আরও পড়ুন: অনিয়ম কঠোরভাবে দমন না করলে দেশ শূন্য হয়ে যাবে: মুজিবুল হক চুন্নু
অনিয়ম কঠোরভাবে দমন না করলে দেশ শূন্য হয়ে যাবে: মুজিবুল হক চুন্নু
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে বলেছেন, আর্থিক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোরভাবে মোকাবিলা না করলে দেশ শূন্য হয়ে যাবে।
এ ধরনের অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান বিরোধীদলীয় এই সংসদ সদস্য।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সংসদে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে চুন্নু এ কথা বলেন।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে চুন্নু বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়মের পরিমাণ ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সরকার যদি তাদের কঠোরভাবে দমন না করে তাহলে দেশ শূন্য হয়ে যাবে।
চুন্নু বলেন, এরই মধ্যে ব্যাংকগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, 'নিশ্চয়ই ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এটা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, 'এগুলো দেখভালের দায়িত্ব কার? আমরা কোথায় যাব? অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা যদি এসব দেখভাল না করেন।’
চুন্নু বলেন, এ ধরনের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ ব্যাংক নীরব থেকেছে।
আরও পড়ুন: নতুন সংসদের দায়িত্ব নিখুঁতভাবে পালন করা নিয়ে শঙ্কা জিএম কাদেরের
তিনি বলেন,‘ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে, যা তাদের প্রতিবেদনে (বাংলাদেশ ব্যাংক) উল্লেখ করা হয়েছে। এতদিন কী করলেন তারা? বাংলাদেশ ব্যাংক কেন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না? তারা কি কোনো জিনিসের দাম জানে না?’
বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর সমালোচনা করে চুন্নু বলেন, 'তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) জানে না আন্ডার ইনভয়েস নাকি ওভার ইনভয়েসিং হচ্ছে?'
নগরীর একটি হাসপাতালে খতনা করার সময় এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর কথাও তুলে ধরেন জাপার এই সংসদ সদস্য।
এ সব মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি কঠোর না হয়, তাহলে আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। আশা করি, সরকার তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।’
আরও পড়ুন: জাপার জাতীয় কাউন্সিলের দিন ঘোষণা করলেন রওশন এরশাদ
জাপার জাতীয় কাউন্সিলের দিন ঘোষণা করলেন রওশন এরশাদ
জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের মধ্যেই দলের জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করেছেন দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। এর আগেই তিনি নিজেকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
রবিবার গুলশানে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আগামী ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, দল এখন যে চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রওশন এরশাদ
রওশন বলেন, একটি রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র চর্চার প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে দলের নিয়মিত জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠান করা।
তিনি বলেন, ‘দলের কাউন্সিল আয়োজনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। দলের নেতা-কর্মীদের দাবি অনুযায়ী আগামী মার্চে জাতীয় পার্টির দশম কাউন্সিল করার ঘোষণা দিচ্ছি।’
কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন করতে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন রওশন এরশাদ। এতে আহ্বায়ক হিসেবে কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে সহআহ্বায়ক, গোলাম সারোয়ার মিলনকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সফিকুল ইসলাম সেন্টুকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টিতে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন নিয়ে নতুন ভাঙন দেখা দেয়। গত সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন রওশন। তবে এবার তার দেবর ও দলের প্রধান জিএম কাদেরের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে নির্বাচনে অংশ নেননি তিনি। দলটি রওশনের অনুগত কোনো নেতাকে মনোনয়ন দেয়নি বলেও জানা গেছে।
এ অবস্থায় রওশন একটি সফল কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির শক্তি ফিরিয়ে আনার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এদিকে রওশনকে সমর্থন দেওয়ায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
আরও পড়ুন: জাতীয় পার্টির নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান রওশন এরশাদের
রওশনের কাউন্সিল করার ঘোষণার পরপরই জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাবলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
এর আগে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে রওশন এরশাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়সহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে দল থেকে সরিয়ে দেন জিএম কাদের।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি রওশন এরশাদ নিজেকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন এবং দলের প্রধান ও মহাসচিবকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেন।
তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশীদকে দলের মহাসচিব নিযুক্ত করেন।
সম্প্রতি গুলশানে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা দলের নেতাদের একাংশের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় রওশন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'চলমান সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে দলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধে আমি দলের গঠনতন্ত্রের ২০-১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: ইসির তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছেন রওশন এরশাদ