খাবার
গরমে শরীর সতেজ রাখতে আইস-টি
চায়ের কোনো ঋতু নেই! তবে এই গ্রীষ্মে প্রাত্যহিক পানের গরম চায়ের পরিবর্তে শীতল, সতেজ ও সুস্বাদু আইস-টি খেতে পারেন। আইসড-টি আপনার শরীর ও মনকে চাঙ্গা ও রিফ্রেশড রাখতেও সহায়তা করে।
বর্তমানের সর্বাধিক জনপ্রিয় কয়েকটি আইস-টি হলো-
ব্ল্যাকবেরি আইসড চা
ফ্রেশ বা ফ্রোজেন ব্ল্যাকবেরি দিয়ে এই চা বানাতে পারেন। প্রথমে মিষ্টি ব্ল্যাকবেরিগুলো ব্লেন্ড করে নিন, তারপরে পুদিনা ও বেকিং সোডার সঙ্গে মেশান। এরপর পাত্রে পানি গরম করে তাতে চা পাতা দিয়ে ২/৩ ফুটিয়ে নিন। এরপর ছেঁকে নিয়ে তাতে ব্ল্যাকবেরির মিশ্রণ মেশান। স্বাদ অনুযায়ী চিনি বা মধু মিশিয়ে ১ ঘন্টার জন্য ফ্রিজে রাখুন। পরিবেশন করার আগে প্রয়োজনে পানি মিশিয়ে ঠাণ্ডা কমান।
আইসড পুদিনা চা
চায়ে পুদিনা পাতা দিলে সত্যিই দারুণ স্বাদ পাওয়া যায়। পাত্রে পানির মধ্যে পুদিনা পাতা দিয়ে ১৫ মিনিট ফোটান, এরপর চা পাতা দিয়ে ২/৩ ফোটান। এবা চা ছেঁকে নিয়ে তাতে স্বাদমতো চিনি বা মধু মেশান। কিছুটা ঠান্ডা হলে ১ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখলেই আইসড পুদিনা চা তৈরি।
তবে আপনি যদি হালকা পুদিনা স্বাদ পছন্দ করেন, তবে পুদিনা পাতা ৫ মিনিট পানিতে দিয়ে ফোটান, এরপর তুলে ফেলুন। এরপর চা পাতা দিয়ে ২/৩ মিনিট পর চা ছেঁকে নিন। এতে স্বাদ অনুযায়ী চিনি বা মধু মিশিয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
তরমুজ ও তুলসী আইসড চা
গ্রীষ্মে আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে ভুলবেন না। গরম আবহাওয়ায় বিভিন্ন ঠাণ্ডা পানীয় আপনাকে সতেজ রাখবে এবং আপনার তৃষ্ণা নিবারণ করবে। এক্ষেত্রে তরমুজ ও তুলসীর আইসড চা খুবই উপকারী। তরমুজ বিভিন্ন রিফ্রেশিং পানীয় তৈরির উপাদান হিসেবে বহুল সমাদৃত।
এই চা বানানোর জন্য তরমুজের টুকরোগুলোকে ব্লেন্ড করে নিন। পাত্রে পানি ফুটিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিয়ে তাতে গ্রিন টি ব্যাগ ও পুদিনা পাতা দিন ও ৩/৪ মিনিট ঢেকে রাখুন। এরপর টি ব্যাগ ও পুদিনা পাতা ছেঁকে নিয়ে স্বাদমতো চিনি বা মধু মেশান।এরপর চায়ের সঙ্গে তরমুজের পেস্ট মিশিয়ে ঠাণ্ডা না হওয়া পর্যন্ত মিশ্রণটি ফ্রিজে রাখুন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে বীজ সরাতে মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। পুদিনা তরমুজ আইসড চা পরিবেশন করুন বরফের কিউব দিয়ে।
হিবিস্কাস (জবা ফুল) আইসড-টি
হিবিস্কাস (জবা ফুল) চা গ্রীষ্মে প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখার একটি দারুণ পানীয়। লাল রঙ ও সতেজ স্বাদের জন্য এই চা বিখ্যাত। এই চা পুষ্টিকর ও রক্তচাপ কমায়।
চায়ের কাপে জবা ফুলের পাঁপড়ি নিন। এর মধ্যে গরম পানি ঢেলে ৫/৭ মিনিট রাখুন। এরপর ছেঁকে নিয়ে স্বাদমতো চিনি বা মধু মিশিয়ে কমপক্ষে এক ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। আপনার আইসড-টি পরিবেশন করার জন্য প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: চিপসের পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবার
লেবু পানি আইসড চা
এই গরমে আপনাকে সতেজ ও হাইড্রেটেড রাখতে এটি একটি দারুণ পানীয় লেবু পানি আইসড চা। সহজলভ্য উপাদান ব্যবহৃত হওয়ায়, আপনি চাইলে প্রতিদিন এটা পান করতে পারেন।
গরম পানিতে চা পাতা দিয়ে ৫ মিনিট ফোটান। এরপর ছেঁকে নিয়ে কিছুটা ঠাণ্ডা করুন এবং তাতে লেবুর রস ও স্বাদমতো চিনি বা মধু মেশান। তারপর এটি ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে পান করুন।
আরও পড়ুন: মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে নাটোরের কাঁচাগোল্লা
উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও অন্যতম সেরা মিষ্টান্ন নাটোরের কাঁচাগোল্লা এবার জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে।
নাটোরের রাজ দরবার থেকে যাত্রা শুরু হওয়া দুই শতাধিক বছরের প্রাচীন এই মিষ্টান্নকে নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নাটোরের জেলা প্রশাসন।
এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ তার কার্যালয়ে নিবন্ধনের এফিডেভিট কপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
রোজায় সুস্থ থাকার ৫টি উপায়
এসে গেছে পবিত্র রমজান মাস। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস করা হয় এই একটি মাস। তাই শরীর নিয়মিত প্যাটার্নের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার আগে রোজার শুরুর কয়েক দিন কেউ কেউ অসুবিধা অনুভব করতে পারে। খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমের ধরণে সব পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্মে রমজান মাসে ফিট থাকা কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
তো, চলুন দেখে নেয়া যাক পবিত্র এই মাসে সুস্থ থাকার কিছু টিপস।
চিপসের পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবার
ব্যস্ত লাইফস্টাইল, কাজের চাপ এবং মানসিকতার পরিবর্তনের কারণে প্রায়ই আমরা এমন কাজ করি, যা আমাদের শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অফিসে কাজের ফাঁকে বা টিভি দেখতে দেখতে আমরা হালকা কিছু খাবার খেয়ে থাকি। যেগুলো খেলে পেট খুব বেশি না ভরে উঠলেও, শরীরে অস্বাস্থ্যকর পদার্থের পুরু স্তর জমে। আমাদের স্বল্প সময়ের ক্ষুধা মেটানোর জন্য বেশিরভাগই আমরা ভাজা চিপস ও চর্বিযুক্ত বিভিন্ন খাবার বেছে নিই।
এগুলোর বিকল্প হিসেবে আমরা যদি এমন খাবার বেছে নেই যেগুলো সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর; এর চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।
আসুন বিকল্প কিছু স্ন্যাক্সের কথা জানা যাক, যেগুলো আমাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে কাজে লাগতে পারে।
পপকর্ন
সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যকর এমন খাবারের মধ্যে পপকর্ন সেরা বিকল্পগুলোর একটি। এটি আলুর চিপসের মতোই তৃপ্তিদায়ক ও মুড়মুড়ে। তবে এতে আলুর চিপসের তুলনায় অর্ধেক ক্যালোরি এবং অনেক কম চর্বি রয়েছে।
এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে এমন পপকর্ন খেতে হবে যা বেশি তেল বা মাখনে ভাজা হয়নি এবং মুখরোচক বিভিন্ন মশলার বদলে যাতে শুধুমাত্র হালকা লবণ থাকবে।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
গরমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা। আর তাই গরমে ক্লান্তি ও ডিহাইড্রেটেশন কমাতে আমাদের এমন খাবার খাওয়া উচিত, যেগুলো শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে এবং সারাদিন কর্মশক্তি ধরে রাখে। তাই গরমে এই খাবারগুলো হতে পারে আপনার পানিস্বল্পতা দূর করার হাতিয়ার।
মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
মধু এক প্রকারের মিষ্টি-ঘন তরল, যা একাধারে খাদ্য ও ওষুধ। মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস থেকে মধু তৈরি করে মৌচাকে সংরক্ষণ করে। বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতিতে এর ব্যবহার চিনির চেয়েও বেশি স্বাস্থ্যকর।
মধুর গুণাগুণ ও উপকারিতা
মৌমাছি ফুল থেকে ফুলের রেণু ও মিষ্টি নির্যাস সংগ্রহ করে নিজেদের পাকস্থলীতে রাখে। তারপর তাতে মৌমাছির মুখ নিঃসৃত লালা মিশ্রিত হয়ে রাসায়নিক জটিল বিক্রিয়ায় মধু তৈরি হয়। এরপর মুখ থেকে মৌচাকে মধু জমা করে। ঠাণ্ডা কমাতে মধুর বিকল্প নেই।
মধুর পুষ্টিগুণ
মধুতে রয়েছে ৪৫টিরও বেশি খাদ্যগুণ। এরমধ্যে কয়েকটি হলো-গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ, মন্টোজ, অ্যামাইনো অ্যাসিড, খনিজ লবণ, এনকাইম, ক্যালরি, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন বি৬, আয়োডিন, জিংক, কপার, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান।
আসুন জেনে নেয়া যাক খাদ্য ও ঔষধি গুণসম্পন্ন মধু দিয়ে তৈরি কয়েকটি খাবারের পদ সম্পর্কে-
মাশরুমের পাঁচ পদের সহজ রেসিপি
মাশরুম এক ধরনের ছত্রাক। আমাদের দেশে এটি ব্যাঙের ছাতা নামে বহুল পরিচিত। অ্যাগারিকাস ছত্রাকের মাংসল কোমল ও ভঙ্গুর বীজাধারই হলো মাশরুম। এদের অধিকাংশই ব্যাসিডিওমাইকোটা, তবে কিছু অ্যাসকোমাইকোটার অন্তর্ভুক্ত।
চীন, কোরিয়া, জাপানসহ ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে কয়েক ধরনের মাশরুম খাবার হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশেও আধুনিক খাবার হিসেবে মাশরুমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটছে।
পুষ্টি উপাদান
কাঁচা অথবা রান্নাকৃত মাশরুম স্বল্প-ক্যালরিযুক্ত খাদ্য হিসেবে স্বীকৃত। কাঁচা অবস্থায় এতে ভিটামিন বি থাকে। যাতে রিবোফ্লোবিন নায়াসিন ও প্যান্টোথেনিক এসিড এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন খনিজ উপাদান থাকে।
এছাড়াও অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে মাশরুমে ভিটামিন ডি২ তৈরি হয়।
আসুন পুষ্টিগুণসম্পন্ন ও মুখরোচক এই খাবারটির পাঁচটি পদ রান্না সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
শীতের ছয়টি মজাদার পিঠার রেসিপি
পিঠা আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার। বাংলাদেশে সারা বছর বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি হয়। তবে পিঠা তৈরি ও খাওয়ার জন্য শীতকাল সবচেয়ে ভালো মৌসুম। শীতের সকাল পিঠা খাওয়ার উপযুক্ত সময়। পিঠা বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতির একটি অংশ। বেশিরভাগ পিঠাই মৌসুমী। বিশেষ করে শীতের মৌসুমেই ঘরে ঘরে পিঠা তৈরি করা হয়। কারণ কিছু উপাদান শুধুমাত্র এই সময়েই পাওয়া যায়। কিছু পিঠা নবান্ন এবং পৌষ পার্বণের মতো ফসল কাটার উৎসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
পিঠা তৈরির জন্য চালের গুড়ো, নারকেল, গুড়, দুধ, তেল ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। এটা নির্ভর করে পিঠার ধরনের ওপর। কিছু পিঠা মিষ্টি আবার কিছু নোনতা, কিছু নরম আবার কিছু শক্ত।
শীতকালের ছয়টি মজাদার পিঠার রেসিপি তুলে ধরা হল-
১. পাটিসাপটা
পাটিসাপটা হল একটি পাতলা সুইডিশ প্যানকেক বা ক্রেপ ধরনের পিঠা, খুব বিশেষ এবং বাঙালিদের কাছে খুব পছন্দের। এটি ছাড়া কোন বিশেষ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয় না। অনেক বৈচিত্র্য থাকতে পারে, কখনও কখনও গুড়ের সঙ্গে প্রস্তুতকৃত নারকেলের মিশ্রণে ব্যবহার করা হয় এবং কখনও কখনও ক্ষীর বা ক্ষীরশা ব্যবহার করা হয়। অনেকে জাফরান, শুকনো বাদাম এবং কিশমিশ ব্যবহার করে থাকে।
পাটিসাপটা পিঠা করতে যা লাগবে-
উপকরণ:
দুধ ২ লিটার,
চিনি ৫০০ গ্রাম,
সুজি দুই টেবিল চামচ,
মিহি নারিকেল কোরা আধা কাপ,
চালের গুঁড়া ১ কেজি,
ময়দা আধা কাপ,
ভাজার জন্য তেল,
পানি পরিমাণ মতো
চিনি স্বাদমতো
প্রস্তুত প্রণালী:
প্রথমে অর্ধেক চিনি আর দুধ ঘন করে জ্বাল দিতে হবে। এবার তার ভেতর সুজি আর নারিকেল কোরা ছেড়ে ক্ষীর তৈরি করে নিতে হবে। ক্ষীর ঘন হলে নামিয়ে রাখুন। চালের গুঁড়া, বাকি চিনি, পানি আর লবণ দিয়ে পাতলা গোলা করে নিন। ফ্রাই প্যানে সামান্য তেল নিয়ে গরম করে নিতে হবে। এবার আধা কাপ গোলা দিয়ে একটা পাতলা রুটির মতো বানিয়ে নিন। রুটির ওপরের দিকে শুকিয়ে এলে এক টেবিল চামচ পরিমাণ ক্ষীর দিয়ে মুড়িয়ে পাটিসাপটার আকার দিয়ে আরেকবার ভেজে নিন। এভাবে একটি একটি করে পিঠা বানিয়ে নামিয়ে আনুন। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন মজার পাটিসাপটা পিঠা।
সাংস্কৃতিক চীন: কাল ও দেশের সীমা পেরিয়ে চীনা চায়ের সুবাস
চায়ের আদি নিবাস চীন। হাজার হাজার বছর ধরে, চা চীনা সংস্কৃতির অনুষঙ্গ এবং চীনের জনগণের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এটা বিশ্বাস করা হয় যে চা সংস্কৃতি তাং রাজবংশের (৬১৮-৯০৭) সময় চীন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। অষ্টম শতাব্দীতে ট্যাং পণ্ডিত লু ইউ’র লেখা ‘দ্য ক্লাসিক অব টি’ চীনের প্রথম গ্রন্থ, যেখানে চা এবং এর সম্পর্কিত জ্ঞান ও গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছিল।
উত্তর-পশ্চিম চীনের শানসি প্রদেশের ফামেন মন্দির একসময় তাং রাজবংশের রাজকীয় মন্দির ছিল। ১৯৮৭ সালে প্রত্নতাত্ত্বিকরা মন্দিরের ভূগর্ভস্থ প্রাসাদ থেকে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাচীনতম এবং সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিং ট্যাং ইম্পেরিয়াল চা সেটটি আবিষ্কার করেন।
ফ্যামেন টেম্পল মিউজিয়ামের গবেষক জিয়াং জি বলেন, ‘এখানে পাওয়া চায়ের সেটটি চীনা চা সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য।’
জিয়াং বলেন,‘রাজ পরিবারও বলিদান ও টোস্টিং এর জন্য চা ব্যবহার করতে শুরু করে এবং তাং রাজবংশে চা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।’
গানের রাজবংশে (৯৬০-১২৭৯) চা সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে যখন বিশেষ চা-টেস্টিং ক্লাবগুলো প্রতিষ্ঠিত হয় এবং শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে চা প্রতিযোগিতার ফ্যাশন আসে।
ইতিহাস জুড়ে, সাহিত্য, শিল্প, ধর্ম এবং অন্যান্য উপায়ে চা চীনা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতিতে গভীরভাবে মিশে আছে।
প্যাকেটজাত আলুর চিপস কেন শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি মানুষের আকর্ষণটা বরাবরই একটু বেশি। সেখানে আলুর চিপসের ব্যাপারে অনেকেরই দুর্বলতা আছে। কালে ভদ্রে মচমচে চিপস উপভোগ করাটা খারাপ নয়; বরং তা স্বাদে ভিন্নতা আনার জন্য বেশ ভালো কাজে দেয়। কিন্তু স্ন্যাকসের তালিকায় প্রতিদিন প্রায় নিয়ম করে চিপস খাওয়াটা স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে কোন তারতম্য অনূভুত না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে ভয়াবহ স্বাস্থ্য অবনতি ঘটতে পারে। তাই চলুন জেনে নিই প্যাকেটজাত আলুর চিপসের স্বাস্থ্যহানিকর দিকগুলো সম্বন্ধে।
প্যাকেটজাত আলুর চিপসের ৭টি ক্ষতিকর দিক
রক্তচাপের ঊর্ধ্বগতি
লবণযুক্ত চিপসের প্রধান উপাদান সোডিয়াম। দেহের খনিজ উপাদান যোগানে সোডিয়ামের প্রয়োজন আছে। কিন্তু অত্যধিক সোডিয়াম রক্তচাপ বৃদ্ধিজনিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিদিনের স্ন্যাকসের তালিকায় নিয়মিত আলুর চিপস থাকা মানেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেহে উচ্চ রক্তচাপের বিকাশ ঘটানো।
আরো পড়ুন: খাদ্যতালিকায় ৫ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
চিপসে থাকা সোডিয়াম কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রক্তচাপ বৃদ্ধির ফলে স্ট্রোক, হার্ট ফেইল, করোনারি হৃদরোগ এবং কিডনি রোগের আশঙ্কা থাকে। আলুর চিপস-এ সাধারণত প্রতি আউন্সে ১২০ থেকে ১৮০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে এবং টর্টিলা চিপস-এ প্রতি আউন্সে ১০৫ থেকে ১৬০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। চিপসের প্যাকেটগুলো সাধারণত এক আউন্সের বেশি হয়ে থাকে। তাই চিপস খাওয়ার সময় সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সোডিয়াম দেহের ভেতর প্রবেশ করে।
ওজন বৃদ্ধি
চিপসে থাকা চর্বি এবং ক্যালোরির পরিমাণ ওজন বৃদ্ধি; এমনকি স্থূলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এক আউন্স প্লেইন পটেটো চিপস বা প্রায় ১৫ থেকে ২০টি চিপসে প্রায় ১০ গ্রাম ফ্যাট এবং ১৫৪ ক্যালোরি থাকে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সারের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
চিপসের লবণ উপাদান চিপসকে অত্যন্ত মুখরোচক করে তোলে, যার ফলে অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় চিপস বেশি খেয়ে নেয়। লবণের সঙ্গে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত উপাদান একত্রিত হয়ে একটি ক্ষতিকর খাবারে পরিণত হয়, যেটি যে কারও ওজন নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।
আরো পড়ুন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০টি খাবার
হৃদরোগের ঝুঁকি
যে কোন প্রক্রিয়াজাত চর্বিযুক্ত খাবার হৃদযন্ত্রের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। আর চিপস এ ধরণের খাবারগুলোর মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। যাদের প্রিয় স্ন্যাক্স চিপস, তাদের কার্সিনোজেনিক অ্যাক্রিলামাইডের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। চিপসে থাকা এই রাসায়নিকটি হৃদরোগের বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টির জন্য দায়ী। ঘন ঘন চিপস খাওয়া কোলেস্টেরলের মাত্রায় বৃদ্ধিতেও অবদান রাখতে পারে। কারণ এতে আছে অধিক পরিমাণে বিভিন্ন ধরণের ফ্যাট।
বেশিরভাগ চিপস বেশি করে ভাজা হয়, যার ফলে এতে তৈরি হয় ট্রান্স ফ্যাট, যেটি ফ্যাটের সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরণ। এছাড়াও চিপস ভাজার জন্য ব্যবহৃত তেলগুলো স্যাচুরেটেড ফ্যাট সম্পন্ন, যা উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য সক্রিয় প্রভাবক। রক্ত প্রবাহে উচ্চ মাত্রার ট্রান্স চর্বি করোনারি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ক্যান্সারের আশঙ্কাঅ্যাক্রিলামাইড এমন একটি রাসায়নিক, যেটি মুলত প্রক্রিয়াজাত খাবারে পাওয়া যায় এবং এর কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্যের জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার হতে পারে। যারা চিপস পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি নিতান্ত ভয়ানক ব্যাপার। কারণ অনেকেই বিষয়টি উড়িয়ে দেন। আলুর চিপ্স-এ উচ্চ মাত্রায় অ্যাক্রিলামাইড থাকায় চিপসে আসক্ত ব্যক্তিরা আসলে অ্যাক্রিলামাইডে আসক্ত হয়ে পড়ে।
আরো পড়ুন বাজেটের মধ্যে ঢাকার সেরা ১০টি বুফে রেস্টুরেন্ট
সিগারেটের ধোঁয়া এবং আলুর চিপস দুটোই এই কার্সিনোজেন ধারণ করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য স্পষ্টভাবে হুমকিস্বরূপ। ধূমপায়ীদের ন্যায় এই প্যাকেটজাত আলুর চিপস খাওয়া ব্যক্তিরাও দাবী করেন যে, এটা তাদের তেমন ক্ষতি করবে না। কিন্তু চরম পর্যায়ে এই অ্যাক্রিলামাইড ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।
স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়
স্ন্যাক্স খাবার ক্ষেত্রে বিশেষ করে যখন চিপসের কথা আসে, তখন এতে থাকা অ্যাক্রিলামাইডের জন্য ব্যাপারটিকে একটু গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া উচিত। এছাড়া চিপসে থাকা প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল অনেক ক্ষেত্রে খুব খারাপ ফলাফলের অবতারণা করতে পারে। বিশেষ করে ব্যক্তির পরিবারে যদি ইতোমধ্যে পূর্বে কারো স্ট্রোকের ঘটনা থেকে থাকে।
এ ধরণের রেকর্ড থাকা পরিবারের উত্তরাধিকারীদের চিপস এড়িয়ে চলতে হবে। অন্যথায় যদি এই চর্বি ভর্তি আলু চিপসের লোভ সামলানো না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে যে কোন সময় একটি সম্ভাব্য অ্যানিউরিজমের সম্মুখীন হতে হবে। উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার থেকে চর্বি জমা হয়। এটি ধমনীতে বাধা সৃষ্টি করে এবং ফলশ্রুতিতে সরাসরি স্ট্রোকের দিকে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন গ্রীন কফি: উপকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বানানোর নিয়ম
বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি
এক প্যাকেট চিপসে থাকা চর্বি বা কোলেস্টেরল অনাকাঙ্ক্ষিত ও ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন করতে পারে। একটি মানুষের প্রতিদিনের বিপজ্জনক চর্বির যোগানের একটা বিরাট অংশ আসে চিপসে থাকা ট্রান্স ফ্যাট থেকে। এই ট্রান্স ফ্যাটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে।
তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা থেকে এমন কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে, যা চিপস পছন্দকারীদের অবিলম্বে চিপস থেকে মুখ ফিরিয়ে দিতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণায় দেখা গেছে ট্রান্স ফ্যাট মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায়। আর চিপস যেহেতু উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাটের আধার, তাই অতিরিক্ত চিপস খাওয়া মহিলাদের জন্য এটি একটি সাবধান বাণী।
শেষাংশ
নিত্যদিনের ব্যস্ততার কারণে বাধ্য হয়েই সবাই প্রস্তুতকৃত খাবারের দিকে ছুটে থাকেন। ঘরে খাবার তৈরির প্রবণতা কমে যাওয়াতে কিশোর ও তরুণরাও ঝুঁকে পড়েছেন এই খাবারগুলোর প্রতি। বিশেষ করে চিপসের একটা প্যাকেট চলতে ফিরতে বা আড্ডার মাঝে সবার হাতে হাতে দেখা যায়। কিন্তু প্যাকেটজাত আলুর চিপসের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ঘন ঘন চিপস খাওয়াটা এড়িয়ে চলা উচিত।
আরো পড়ুন জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
শুধু দৈহিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়; এই পুষ্টিহীন খাবারটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। একদম ক্যালরি শূন্য এই খাবার মানুষকে দ্রুত ক্ষুধার্ত করে তুলে। এর থেকে শুরু হয় চিপসের প্রতি নেশা, যা শরীরকে আরো খারাপ অবস্থার দিকে ঠেলে দেয়।