খাবার
পবিত্র রমজান ২০২৫-এ ইফতারের জন্য ঢাকার সেরা ১০টি রেস্টুরেন্ট
রমজান মাসে ইফতার শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, এটি মুসলমানদের খাদ্য সংস্কৃতিরও এক বিরাট অংশ। তারই এক অভাবনীয় বৈচিত্র্য দেখা যায় ঢাকার রেস্টুরেন্টগুলোতে। প্রতিবারই এই পবিত্র মাসকে কেন্দ্র করে নানা ধরণের ইফতার প্ল্যাটারের আয়োজন করা হয়। এখানে ঐতিহ্যবাহী খাবারের সাথে থাকে আধুনিক খাবারের অপূর্ব সংমিশ্রণ। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের তেমনি কয়েকটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টকে নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের নিবন্ধ। চলুন, ইফতার করার জন্য ঢাকার ১০টি সেরা রেস্টুরেন্টের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ঘরের বাইরে ইফতারের জন্য ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি রেস্টুরেন্ট
.
মুম্বাই এক্সপ্রেস (Mumbai Express)
উত্তরার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মুম্বাই এক্সপ্রেস ইফতার আয়োজনের এক অভিজাত গন্তব্য। রমজানে এখানকার পরিপূর্ণ মেনুতে মেলে স্বাদ ও ঐতিহ্যের মিশ্রণ।
এ বছর Mumbai Express-এর পরিবেশনায় রয়েছে তিনটি প্ল্যাটার। নান ইফতার নামক প্ল্যাটারে পাওয়া যাবে ৯টি আইটেম, যার মূল্য শুরু ৬৫০ টাকা থেকে। ৮টি বাহারি পদের বিরিয়ানি ইফতারের দামও একই। ন্যূনতম ৭৫০ টাকা থেকে শুরু হওয়া শাহী ইফতার-এ রয়েছে ৯টি পদ।
এর বাইরে মেনুর মূল আকর্ষণে আছে ৫৫০ টাকার মাটন হালিম। মিষ্টান্নর মধ্যে নজর কাড়ছে উপাদেয় স্বাদের রেশমি জিলাপি যার দাম পড়বে ২৮০ টাকা। আর একটু মোটা বোম্বে জিলাপির দাম ২০০ টাকা।
ঠিকানা: হাউস-১৬/এ, রোড-৪, সেক্টর-৪, উত্তরা।
বাহারি সেট মেনু:
https://www.facebook.com/mumbaiexpressbd/posts/pfbid02TWmF1s9Wk58LoHHzSQQKZ7nWYA9gm1hPkikjDpMi78XoPWJMUeWq2KzHRDz1Hiwyl
আরো পড়ুন: খেজুরের রকমফের: জেনে নিন ১০ প্রকার খেজুরের পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও দাম
যাত্রা বিরতি (Jatra Biroti)
বনানীর এই রেস্তোরাঁটি তাদের ইফতার প্ল্যাটারগুলোতে রেখেছে স্বাস্থ্যকর ও বৈচিত্র্যময়তার ছাপ। Jatra Biroti-এর খাবারগুলোর বিশেষ দিক হচ্ছে নিরামিষের প্রাধান্য।
এবারের রমজানে এখানে বাছাইয়ের জন্য থাকছে ৬টি প্ল্যাটার, যেগুলোর প্রত্যেকটির দাম ৪২০ টাকা। প্রতিটির সাধারণ খাবার হলো খেঁজুর, পিয়াজু, বেগুনী, ছোলা ভুনা, পালং শাক ভাজা, খেঁজুরের গুড়ের বিশেষ টক দই এবং খেঁজুর ও লেবুর শরবত।
লেটকা খিচুড়ি প্ল্যাটারে রয়েছে সব্জি ও ভাজা বেগুনের সংযোজন। চিড়ার পোলাও প্ল্যাটারে মশলাদার চাল ও মাশরুম কারি পাওয়া যায়। সবজি বিরিয়ানিতে সুগন্ধি সবজি বিরিয়ানি ও নারকেলের দুধে রান্না করা তরকারির স্বাদ।
নতুনের মধ্যে পরখ করা যেতে পারে মাশরুম র্যাপ প্ল্যাটার, যেখানে মশলাদার মাশরুম হালিম পরিবেশন করা হয়। ডাল-রুটি প্ল্যাটারের আইটেম হচ্ছে বাদামী গমের রুটি, ঘন মসুর ডাল ও মটরশুটির তরকারি। সর্বশেষ দই-চিড়া প্ল্যাটারে আছে লুচি ভাজা, আলুর দম এবং খেঁজুরের গুড়ে মিশ্রিত দই-চিড়া।
ঠিকানা: বাড়ি ৬৩, রোড ১৭/এ, ব্লক-ই, বনানী।
একত্রে ৬টি প্ল্যাটার:
https://www.facebook.com/jatrabirotiworld/posts/pfbid023qtBn8NgD18Qe7Q11Q8pgXPc9uJyUzmLXioKDjMJXqtu67Eb4sUUyagqJ1VK3ahDl
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
হাব রুফটপ (The Hub Rooftop)
ছাদের মুক্ত পরিবেশে সাশ্রয়ী মূল্যে ইফতারের জন্য দারুণ একটি স্থান মিরপুরের হাব রুফটপ। বন্ধু কিংবা পরিবার নিয়ে আড্ডার পাশাপাশি প্রধানত দুটি প্ল্যাটারকে ঘিরে অতিথিদের সমাগম হচ্ছে। প্রায় কাছাকাছি আইটেম বিশিষ্ট দুটো প্ল্যাটারেরই দাম ৪৫০ টাকা।
ইফতার প্ল্যাটার-১-এ আছে শর্মা, ফ্রাইড রাইস, চিকেন মাঞ্চুরিয়ান, ফ্রাইড চিকেন, স্প্রিং রোল, ফিশ টোস্ট (২টি), আঙ্গুর, খেজুর, পানি এবং ট্যাং জুস। ইফতার প্ল্যাটার-২তে সবই একই, কেবল ফ্রাইড রাইসের বদলে চাওমিন দেওয়া হয়।
কিছুটা সংকীর্ণ জায়গায় হওয়ায় The Hub Rooftop ছোট গ্রুপের জন্য উপযুক্ত। ছুটির দিনগুলোতে আগে থেকে কল করে বুকিং দিয়ে যাওয়াটা উত্তম।
ঠিকানা: ২৯, চিড়িয়াখানা রোড, ১\জি, মিরপুর-১ (ইয়োলো/আগোরা সুপারশপের বিপরীতে)।
https://www.facebook.com/thehubrooftop/posts/pfbid0s8FzrYRVvwHB1vsAwt3WhhtDtur5TpQA3n72NT3DjyQdEA4u6TFjV9jc5VpREDjWl
আরো পড়ুন: স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য যেসব খাবার উপকারী
গ্রাইন্ড হাউস মিউজিক ক্যাফে (GRIND HOUSE Music Cafe)
মনোরম ইন্টেরিয়র ও সুবিস্তৃত পরিসরে পারিবারিক ও কর্পোরেট অনুষ্ঠানের জন্য সেরা জায়গা গ্রাইন্ড হাউস। রমজান উপলক্ষে খিলগাঁওয়ের এই ক্যাফেটি পাঁচটি ভিন্ন প্ল্যাটার রেখেছে। তন্মধ্যে প্ল্যাটার-১, ২, ও ৩ একজনের জন্য আর ৪ ও ৫ দুইজনের জন্য।
প্ল্যাটার-১ (৫০০ টাকা) সাজানো হয়েছে ফল, স্প্রিং রোল, আলু ওয়েজ, ফ্রাইড রাইস, বারবিকিউ চিকেন স্টেক, সবজি, ও শরবত দিয়ে। প্ল্যাটার-২ (৫২০ টাকা)-তে একই আইটেম, তবে বারবিকিউ চিকেন স্টেকের বদলে দেয়া হয়েছে চিকেন চিলি পেঁয়াজ। আর সাথে অতিরিক্ত সযোজন হয়েছে ছোট ছোট করে কাটা গরুর মাংস। প্ল্যাটার-৩ (৪৫০ টাকা) প্ল্যাটার-২-এর মতই, শুধু চিকেন চিলি পেঁয়াজ ও কাটা গরুর মাংসের পরিবর্তে থাই ফ্রাইড চিকেন ও রেড চিকেন কারি দেয়া হয়েছে।
প্ল্যাটার-৪ (৯৯৯ টাকা) সমসাময়িক ইফতার আইটেম থেকে একদমি ভিন্ন। এতে আছে GRIND HOUSE Music Cafe-এর নিজস্ব গ্রাইন্ড পাস্তা এবং ১০ ইঞ্চি মেক্সিকান পিৎজা। প্ল্যাটার-৫ (৯৯৯ টাকা)-এ আছে নান রুটি (মাখন-রসুন মিশ্রিত), দুটি চিকেন তান্দুরি, দুটি রেশমি কাবাব, এবং দুটি হরিয়ালি কাবাব। সাথে ফলসহ ডাল তরকারি, ও শরবত।
ঠিকানা: ৩৬৮/বি নাজমা টাওয়ার, মিনিসো বিল্ডিং (লেভেল-৮), খিলগাঁও (তালতলা সুপার মার্কেটের কাছে)।
একসাথে সবগুলো প্ল্যাটার:
https://www.facebook.com/grindhousebd/posts/pfbid0YMSBjBMZvdMXoaYB4Vr1Py9ZJboAcwg7nxdenA4MtoeiWn9Q2AydCwcwHBaEXGq4l
আরো পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
রোডসাইড কিচেন (Roadside Kitchen)
সাশ্রয়ী খরচে ইফতার করার আরও একটি জায়গা বসুন্ধরার রোডসাইড কিচেন। তাদের ৪৫০ টাকার প্ল্যাটারটি একজনের জন্য নির্ধারিত হলেও তাতে অনায়াসেই দুজনের ইফতার হয়ে যায়। কেননা এতে আছে আচারের রাইস, ফ্রাইড চিকেন; সাথে ডিম, কোল্স্ল, চিলি চিকেন, চিকেন মাঞ্চুরিয়ান এবং দুটি গ্রিল চিকেন।
ইফতার পাশাপাশি সেহরির সময়েও সমান উদ্দীপনায় মুখর হয়ে থাকে Roadside Kitchen।
ঠিকানা: আর/এ, ক-৯/এ, ১ম তলা, বসুন্ধরা।
প্ল্যাটারের বিস্তারিত:
https://www.facebook.com/reel/611653048349338/
আরো পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
বাঙালিয়ানা ভোজ
ইফতার ও সেহরিতে ওয়ারীর বাঙালিয়ানা ভোজ মানেই দেশীয় ঐতিহ্যের বর্ণিল আয়োজন। এখানে আদ্যোপান্ত দেশীয় খাবারের সম্ভারে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন সেট মেনু। মাত্র ১৫০ টাকার প্যাকেজে পাওয়া যাবে চিকেন ও ডিমের কম্বো, এবং ২৫০ টাকায় বিফ ও ডিম। হাঁসের মাংস ও ডিমের সেট মেনুর দাম ২৯৯ টাকা।
যারা ভর্তা উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য রয়েছে ১৬৯ টাকায় ভাত, ডাল ও ১১ পদের ভর্তা।
রেস্তোরাঁটির বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে দুটি ভ্যারিয়েন্টের গ্র্যান্ড খিচুড়ি প্ল্যাটার। একটি বিফ কালাভুনা দিয়ে, আরেকটি চিকেন ঝাল ফ্রাই দিয়ে।
এছাড়াও আলাদা ভাবে অর্ডার করা যাবে গরম খুদের পোলাও, বেগুন ভাজা, কষা মাংস, বাসমতী চালের ভাত ও বুটের ডাল মাটন।
ঠিকানা: গ্রাউন্ড ফ্লোর, ফরচুন গার্ডেন, ৮ নং র্যাংকিং স্ট্রিট, ওয়ারী।
ওয়ারীসহ বাঙালিয়ানা ভোজ-এর মোট ৬টি শাখা রয়েছে- মিরপুর, বসুন্ধরা, মোহাম্মদপুর, পান্থপথ ও নারায়ণগঞ্জ।
বিশদ তথ্যের জন্য:
https://www.facebook.com/BangalianaBhoj
আরো পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
১৮ দিন আগে
খেজুরের রকমফের: জেনে নিন ১০ প্রকার খেজুরের পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও দাম
পবিত্র রমজান মাস আসার সঙ্গে সঙ্গে যে ফলটির চাহিদা সর্বাধিক বৃদ্ধি পায় তা হলো খেজুর। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশিদের কাছেও এটি ইফতার শুরুর একটি ঐতিহ্যবাহী উপায়। জাতভেদে প্রতিটিরই রয়েছে অনন্য স্বাদ। এছাড়া অধিকাংশ খেজুরেরই রং, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগুণ প্রায় কাছাকাছি। রোজা ছাড়া প্রতিদিনের জলখাবার বা ভারী খাবারের সঙ্গেও খেজুর দারুণ একটি সংযোজন। এই ফলটি নিয়েই আজকে স্বাস্থ্য বিচিত্রা। চলুন, দেশের বাজারে চলমান বিশ্ব নন্দিত ১০টি খেজুরের জাত, উৎস, পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও বাজার দর সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।
বর্তমান বাজারের জনপ্রিয় ১০টি খেজুর
.
আজওয়া
মাঝারি ডিম্বাকৃতি কুঁচকুঁচে কালো বর্ণের আজওয়া খেজুর উৎপন্ন হয় সৌদি আরবের মদিনায়। সম্পূর্ণ চর্বিহীন এই ফল প্রাকৃতিক চিনির শর্করা উপাদানসহ প্রোটিনে ভরপুর। এতে আরও আছে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাসিয়াম। খনিজ পুষ্টিগুলো হাড়ের গঠনকে মজবুত করে। পেশীর ফাংশন ও হৃদযন্ত্রে সামগ্রিক সুস্থতার বিকাশ ঘটায়। আর ফাইবার হজমশক্তি ত্বরান্বিত করে পরিপাকতন্ত্র স্বাভাবিক রাখে।
আরও পড়ুন: বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদন বাকৃবি গবেষকের
মানের ভিত্তিতে খুচরা কাঁচা বাজারে আজওয়ার দাম কেজি প্রতি ৬৪০-৮০০ টাকা। কোনো কোনো বাজারে এগুলো ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়।
মেডজুল
বৃহদাকৃতি ও সুমিষ্ট স্বাদের জন্য বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত মেডজুল। এই খেজুর উৎপন্ন হয় মরক্কোর তাফিলাল্ত অঞ্চলে। এগুলো ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা প্রজাতির উদ্ভিদ থেকে চাষ করা হয়। বর্তমানে এগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইস্রায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়।
শরীরের পর্যাপ্ত ক্যালরির জন্য মাত্র দুটি মেডজুলই যথেষ্ট। এর কার্বহাইড্রেটের বিশাল অংশ হচ্ছে অর্গানিক শর্করা, যা দেহে প্রয়োজনীয় শক্তির ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে। মেডজুলে বিদ্যমান পুষ্টিকর ফাইবার ও প্রোটিন হজমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এতে আরও আছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ও আয়রনের মতো খনিজ পদার্থ।
এই উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্পন্ন উপাদানগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফাইবার সামগ্রী রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে ও ওজন ঠিক রাখার ক্ষেত্রে উপযোগী ভূমিকা পালন করে। আকার ও বাজারের পৌঁছানোর পূর্বে প্রক্রিয়াকরণের উপর ভিত্তি করে এই খেজুরের দামে যথেষ্ট তারতম্য হয়। এই পরিধি নিম্নে ৯২০-৯৬০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০০- ১৮০০ টাকা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: খেজুর আমদানিতে আগাম কর প্রত্যাহার
মারিয়াম
প্রাথমিকভাবে ইরানে চাষকৃত এই খেজুর মাঝারি থেকে বড় আকারের হয়ে থাকে। ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা প্রজাতি ভুক্ত গাছ থেকে উৎপন্ন এই খেজুর মুখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গলে যায়। প্রাকৃতিক শর্করার আধার এই ফল মানবদেহে শক্তি যোগানের একটি মূল্যবান উৎস।
পুষ্টি উপাদান হিসেবে হজম-সহায়ক ফাইবারের উপস্থিতি হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ অংশ নেয়। পাশাপাশি বিদ্যমান পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের মতো খনিজ উপাদানগুলো রক্তনালীগুলোকে শিথিল রাখে ও হাড়কে শক্তিশালী করে। বিভিন্ন স্থানীয় বাজারভেদে বর্তমানে মারিয়াম খেজুরের দাম ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে।
খুরমা খেজুর
দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি খুরমা খেজুরের উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর মধ্যে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ারও ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। বাংলাদেশে খেজুরের এই জাতকে সাধারণত শুকনো খেজুর বলা হয়। বাজারজাত করার পূর্বে কড়া রোদে শুকানো হয় বিধায় এগুলো খাওয়ার জন্য উপযোগী গঠন ও মিষ্টি স্বাদ পায়।
শুকনো খেজুর কার্বোহাইড্রেট ও প্রাকৃতিক ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা দেহে শক্তি যোগায় ও হজম এবং অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজের উপস্থিতি থাকায় এগুলো হৃদরোগ, পেশীর নড়াচড়া ও রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে অবদান রাখে। এ ছাড়াও এতে রয়েছে পরিশোধিত চিনি সমৃদ্ধ জৈব শর্করা, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের অধিকারি। সুতরাং নিত্য আহারে এই ফল রাখা মানে শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্তি পাওয়া। দেশের নানা স্থানের কাঁচা বাজারগুলোতে এগুলোর দাম প্রতি কেজিতে ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা। তবে প্রিমিয়াম জাতের মূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকাও ছাড়িয়ে যায়।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় রস সংগ্রহে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত গাছিরা
সুক্কারি
ক্যারামেল ও মধুর মিশ্রণযুক্ত স্বাদ ও সোনালী বর্ণযুক্ত সৌদি আরবের সুক্কারি সারা বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয়। অধিকাংশ নরম খেজুরগুলোর মতো এটিও মুখে দিতেই ব্যতিক্রমি স্বাদে পুরো মুখ ভরে যায়। পুষ্টিগত দিক থেকে সুক্কারি দ্রুত শক্তিবর্ধক অর্গানিক শর্করায় ভরপুর। এতে থাকা ফাইবারগুলো পরিপাক সচল রেখে হজমের সুস্বাস্থ্যে অবদান রাখে।
খনিজ উপাদানগুলোর মধ্যে পটাসিয়ামের আধিক্য বেশি, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতার বিকাশ ঘটায়। এগুলোর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরকে প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। মান ও জাতের ভিন্নতার উপর নির্ভর করে সুক্কারির প্রতি কেজির দাম ২৫০ থেকে ৬৩০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
মাবরুম
সৌদি আরবে চাষকৃত মাবরুম খেজুর বেশ লম্বাকৃতি ও লালচে-বাদামী রঙের হয়। এর আবরণটি বেশ দৃঢ় হয় ও অন্যান্য খেজুর থেকে এর মিষ্টতা কিছুটা কম। চিনি কম থাকলে মাবরুম হজম-সহায়ক ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা পরিপাকতন্ত্রের যাবতীয় সমস্যা নিরসণে অংশ নেয়।
ফলটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ৬ ও আয়রন সরবরাহ করে থাকে। পুষ্টি উপাদানগুলোর পরিমিত সমন্বয় হৃদরোগ, রক্ত, পেশী ও মস্তিষ্ক-জনিত স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলো দূর করে। প্রতি কেজি ৪০০-৪৫০ টাকা। তবে সৌদিতে বাছাইকৃতগুলোর মূল্য ১২০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হয়।
আরও পড়ুন: খেজুরের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
কালমি
সৌদি আরবের মদিনায় উৎপন্ন হওয়া এই খেজুরের আরেক নাম সাফাভি। আকারে মাঝারি থেকে লম্বা, রঙ কালো। বাহ্যিক আবরণ হাল্কা আর্দ্র ও নরম। এটি দ্রুত শক্তিবর্ধকের জন্য অপরিশোধিত শর্করা ও স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের বিকাশে উপযোগী ফাইবারের যোগান দেয়।
খনিজ পদার্থের এই ভান্ডারে রয়েছে পটাসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমিত সমন্বয়। এগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হৃদপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য, পেশীর সচলতা, স্নায়ুর কার্যকারিতা ও হিমোগ্লোবিনের সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কালমির বর্তমান বাজারের দর কেজি প্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে।
আম্বার
ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা গাছ ও মদিনায় উৎপন্ন খেজুরের এই জাতকে ‘আনবারা’ নামেও ডাকা হয়। মোটা খেজুরগুলোর গঠন একটু ব্যতিক্রম আকৃতির ও রঙে গাঢ় বাদামীর সঙ্গে থাকে কালচে আভার মিশ্রণ। আম্বারের প্রধান পুষ্টিগুনগুলোর মধ্যে রয়েছে— অপরিশধিত শর্করা ও ফাইবার, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম।
তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আম্বার খেজুর রাখা মানে হজম, রক্তচাপ, পেশী ও হাড়ের সমুন্নত কার্যকারিতা বজায় রাখা। স্থানীয় বাজারে প্রাপ্যতা ও চাহিদার উপর ভিত্তি করে এগুলোর প্রতি কেজির মূল্য ৭০০-১৬০০ টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করে।
আরও পড়ুন: নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
জাহেদী
হালকা সোনালী-বাদামী রঙের ও ডিম্বাকৃতির মাঝারি আকারের এই খেজুরের উৎপত্তিস্থল ইরাক। বাইরের বাদামের গন্ধ বিশিষ্ট আবরণটি আধা-শুষ্ক ও দৃঢ় এবং স্বাদ হাল্কা মিষ্টি।
জাহেদী খেজুর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হজমকারী ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, শর্করা, পটাসিয়াম ও সোডিয়াম সরবরাহ করে। এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি৬, আয়রন, ফ্ল্যাভোনয়েড ও অ্যামিনো অ্যাসিড। এগুলো সক্রিয়ভাবে পরিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্ত প্রবাহে অক্সিজেন পরিবহন বাড়ায়। বাজার প্রতি কেজির মূল্য ন্যূনতম ২২০-২৫০ টাকা।
দাব্বাস
একদম ছোট থেকে মাঝারি গড়নের গাঢ় বাদামী রঙের দাব্বাস খেজুর চাষের প্রধান অঞ্চল সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রায় সব ধরণের খেজুরের মতো এটিও সংগৃহীত হয় ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা উদ্ভিদ থেকে।
এই ফলে আছে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও সেলেনিয়াম। পুষ্টি উপাদানগুলো সামগ্রিক ভাবে হজম, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ও রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে কার্যকরি অবদান রাখে। এই খেজুরের অ্যান্টি-ডিহাইড্রেশন, সোডিয়াম ও পটাসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখার বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। এগুলোর মূল্য সাধারণত প্রতি কেজিতে কমপক্ষে ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা।
আরও পড়ুন: গ্রামে নগরায়নের ছোঁয়া, খুলনায় মিলছে না খেজুরের রস
শেষাংশ
বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে উৎসরিত অনন্য স্বাদের এই ১০ রকম খেজুর রমজানে রোজাদারদের স্বাস্থ্যের সামগ্রিক উন্নতিতে অবদান রাখে। তন্মধ্যে কালো বর্ণের আজওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। আকারে বড় ও সুমিষ্ট খেজুর হিসেবে স্বীকৃত মেডজুল ও আম্বার, অন্যদিকে নমনীয়তার দিক থেকে মারিয়াম খেজুর প্রসিদ্ধ।
দাব্বাসের ভেতরটাও একই রকম কোমল। দক্ষিণ এশিয়ার প্রসিদ্ধ খাবার খুরমা খেজুর, আর সুক্কারির জনপ্রিয়তা তার ক্যারামেল-সদৃশ স্বাদের জন্য। দীর্ঘক্ষণ মুখে রেখে সুঘ্রাণ সৃষ্টির জন্য মাবরুম বেশ উপযোগী। জাহেদীতে রয়েছে হালকা বাদামের স্বাদ, আর অন্যান্য খেজুরের তুলনায় অত্যধিক খনিজ উপদান মিলবে কালমি বা সাফাভিতে। সব মিলিয়ে রোজাকালীন আহার থেকে দীর্ঘ বিরতিতে এই খেজুরগুলো হতে পারে দেহের শক্তি সঞ্চয়ের উৎকৃষ্ট মাধ্যম।
আরও পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
২১ দিন আগে
শবে বরাত: মুখরোচক ৫ হালুয়ার রেসিপি
শবে বরাতের জন্য বিশেষ কিছু মুখরোচক মিষ্টান্ন তৈরি করতে চান? হালুয়া একটি সুস্বাদু ও ভিন্নধর্মী মিষ্টান্ন, যা বাসায় সহজেই তৈরি করা যায়। এটি খেতে নরম, মুচমুচে ও সুগন্ধযুক্ত হয়। নিচে ৫টি সুস্বাদু হালুয়ার রেসিপি দেওয়া হলো, যা এই পবিত্র রাতে মিষ্টিমুখ করার জন্য অতুলনীয়!
ডিমের হালুয়া রেসিপি
উপকরণ:
ডিম – ৪টি
চিনি – ১/২ কাপ (স্বাদ অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে)
দুধ – ১/২ কাপ
ঘি – ২ টেবিল চামচ
গুঁড়া দুধ – ২ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক)
এলাচ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
কিশমিশ – ২ টেবিল চামচ
কাজু বাদাম – ২ টেবিল চামচ (কুঁচি করা)
পেস্তা বাদাম – ১ টেবিল চামচ (সাজানোর জন্য)
প্রস্তুত প্রণালী:
একটি পাত্রে ডিমগুলো ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। এর মধ্যে চিনি, দুধ ও গুঁড়া দুধ দিয়ে আবার ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
এখন একটি প্যানে ঘি গরম করে দিন। এতে ফেটানো ডিমের মিশ্রণ ঢেলে দিন এবং হালকা আঁচে রান্না করুন। কিছুক্ষণ পর ডিম শক্ত হয়ে গেলে কাঠের চামচ দিয়ে ভেঙে নেড়ে নিন, যাতে ছোট ছোট দানা তৈরি হয়।
মিশ্রণটি যখন শুকিয়ে আসবে, তখন এতে এলাচ গুঁড়া, কিশমিশ, কাজু বাদাম দিন। ভালোভাবে নেড়ে আরও ৫ মিনিট রান্না করুন, যতক্ষণ না হালুয়া মসৃণ ও মাখনের মতো হয়ে আসে।
চাইলে এক চিমটি জাফরান বা কেওড়া জল যোগ করলে সুন্দর সুগন্ধ আসবে। মিষ্টি বেশি পছন্দ হলে চিনি পরিমাণমতো বাড়িয়ে নিতে পারেন। এটি গরম বা ঠান্ডা, দুইভাবেই দারুণ লাগে!
অতঃপর নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন অথবা ঠান্ডা করে পেস্তা বাদাম ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
গাজরের হালুয়া রেসিপি
উপকরণ:
গাজর (কুঁচি করা) – ১ কেজি
তরল দুধ – ১ লিটার
চিনি – ১ কাপ (স্বাদ অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে)
ঘি – ৪ টেবিল চামচ
কনডেন্সড মিল্ক – ১/২ কাপ (ঐচ্ছিক, স্বাদ বাড়ানোর জন্য)
এলাচ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
কিশমিশ – ২ টেবিল চামচ
কাঠবাদাম ও কাজু – ২ টেবিল চামচ (কুঁচি করা)
গাজর তৈরি করার পদ্ধতি:
গাজর ভালো করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে কুচি করে নিন।
এখন একটি ভারী তলার প্যানে দুধ দিয়ে গাজর সিদ্ধ করুন। চুলার আঁচ মাঝারি রাখুন এবং মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন, যাতে নিচে লেগে না যায়।
গাজর যখন নরম হয়ে যাবে এবং দুধ প্রায় শুকিয়ে আসবে, তখন চিনি ও কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে দিন। এই পর্যায়ে হালুয়ার রঙ গাঢ় লালচে হয়ে আসবে।
এবার ঘি ঢেলে দিন এবং ভালো করে নাড়তে থাকুন। এলাচ গুঁড়া, কিশমিশ, কাঠবাদাম ও কাজু মিশিয়ে দিন। ৫-৭ মিনিট ভালোভাবে নাড়ুন, যতক্ষণ না হালুয়া ঘন হয়ে আসে এবং ঘি ছাড়তে শুরু করে।
যদি বেশি ক্রিমি স্বাদ চান, তাহলে কনডেন্সড মিল্ক ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে একটু জাফরান বা কেওড়া জল দিতে পারেন, এতে সুগন্ধ আরও বাড়বে। নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন, অথবা ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে পরে উপভোগ করুন!
বুটের হালুয়া রেসিপি
উপকরণ:
বুটের ডাল – ১ কাপ (৩-৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে নেওয়া)
চিনি – ১ কাপ (স্বাদ অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে)
ঘি – ১/২ কাপ
দুধ – ১/২ কাপ
কনডেন্সড মিল্ক – ২ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক)
এলাচ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
কিসমিস – ২ টেবিল চামচ
কাজু ও কাঠবাদাম – ২ টেবিল চামচ (কুঁচি করা)
বুটের হালুয়া প্রস্তুত প্রণালী:
৩-৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা বুটের ডাল ভালো করে ধুয়ে নরম করে সেদ্ধ করুন। পানি ঝরিয়ে সেদ্ধ ডাল ব্লেন্ড করে মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন।
অতঃপর কড়াইতে ঘি গরম করে তাতে বুটের ডালের পেস্ট ঢেলে দিন। মাঝারি আঁচে ক্রমাগত নেড়ে নেড়ে ডাল ভালোভাবে ভাজতে থাকুন। ডালের রঙ হালকা সোনালি হয়ে আসলে এতে দুধ ও চিনি দিন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নেড়েচেড়ে দিন।
মিশ্রণটি ঘন হয়ে আসলে কনডেন্সড মিল্ক ও এলাচ গুঁড়া দিন। তারপর বাদাম ও কিশমিশ দিয়ে ভালোভাবে নাড়িয়ে আরও ৫-৭ মিনিট রান্না করুন। যখন ঘি ছাড়তে শুরু করবে এবং হালুয়া নরম ও মসৃণ হবে, তখন নামিয়ে নিন।
হালুয়ার স্বাদ বাড়াতে চাইলে ১ টেবিল চামচ কেওড়া জল যোগ করতে পারেন। বাদাম ও কিশমিশ ছাড়াও পেস্তা বাদাম কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করা যায়। মিষ্টি বেশি বা কম করতে চাইলে চিনি স্বাদ অনুযায়ী বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিন।
এখন গরম গরম অথবা ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন সুস্বাদু বুটের হালুয়া!
আরও পড়ুন: মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আম কেন এত দামি
পেঁপের হালুয়া রেসিপি
উপকরণ:
কাঁচা পেঁপে – ১টি (মাঝারি সাইজের, খোসা ছাড়িয়ে কুঁচি করা)
চিনি – ১/২ কাপ (স্বাদ অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে)
দুধ – ১/২ কাপ
ঘি – ৪ টেবিল চামচ
গুঁড়া দুধ – ২ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক)
এলাচ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
কিশমিশ – ২ টেবিল চামচ
কাজু ও বাদাম কুচি – ২ টেবিল চামচ
কেওড়া জল – ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক)
পেঁপের হালুয়া প্রস্তুত প্রণালী:
কাঁচা পেঁপে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট কুচি করুন। কড়াইতে পানি দিয়ে ১০-১৫ মিনিট সেদ্ধ করুন, যাতে পেঁপে নরম হয়ে যায়। পানি ঝরিয়ে সেদ্ধ পেঁপে ভালোভাবে চটকে নিন।
অতঃপর কড়াইতে ঘি গরম করে এতে চটকে রাখা পেঁপে ঢেলে দিন। মাঝারি আঁচে ক্রমাগত নেড়ে নেড়ে ভাজতে থাকুন। ৮-১০ মিনিট পর দুধ ও গুঁড়া দুধ দিন এবং ভালোভাবে মেশান।
যখন পেঁপে ভালোভাবে মিশে যাবে, তখন চিনি ও এলাচ গুঁড়া যোগ করুন। মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে কিশমিশ ও বাদাম দিন। চাইলে এই সময় ১ চা চামচ কেওড়া জল যোগ করতে পারেন সুগন্ধ বাড়ানোর জন্য।
মিষ্টি বেশি চাইলে চিনি পরিমাণমতো বাড়িয়ে নিন। ঘন ও মজাদার স্বাদের জন্য কনডেন্সড মিল্ক ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে শুকনো নারকেল কুচি দিয়েও সুগন্ধ ও স্বাদ বাড়ানো যায়।
যখন হালুয়া ঘন হয়ে ঘি ছাড়তে শুরু করবে, তখন নামিয়ে পরিবেশন করুন। চাইলে ওপর থেকে কিছু বাদাম কুচি ও কিশমিশ ছড়িয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন: স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য যেসব খাবার উপকারী
সুজির হালুয়া রেসিপি
উপকরণ:
সুজি – ১ কাপ
চিনি – ১/২ কাপ (স্বাদ অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে)
পানি – ২ কাপ (দুধ ব্যবহার করলে স্বাদ আরও ভালো হবে)
ঘি – ৪ টেবিল চামচ
কিশমিশ – ২ টেবিল চামচ
কাজু ও বাদাম কুচি – ২ টেবিল চামচ
এলাচ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
সুজির হালুয়া প্রস্তুত প্রণালী:
একটি প্যানে ২ টেবিল চামচ ঘি গরম করুন। এতে সুজি দিয়ে মাঝারি আঁচে নাড়তে থাকুন, যতক্ষণ না এটি হালকা বাদামি হয়ে যায় এবং সুন্দর ঘ্রাণ আসে।
এখন অন্য একটি পাত্রে পানি ও চিনি একসঙ্গে গরম করে নিন। চাইলে এতে ১/২ চা চামচ এলাচ গুঁড়া দিয়ে সুগন্ধ বাড়াতে পারেন। সিরা ফুটে উঠলে নামিয়ে রাখুন।
অতঃপর ভাজা সুজির মধ্যে ধীরে ধীরে গরম সিরা ঢেলে নেড়ে দিন। অল্প আঁচে রান্না করুন এবং ক্রমাগত নেড়ে দিন, যাতে কোনো দানা না থাকে।
যখন হালুয়া ঘন হয়ে আসবে, তখন এতে বাদাম, কিসমিস ও বাকি ঘি দিয়ে দিন। আরও কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন যতক্ষণ না হালুয়া মসৃণ ও মাখনের মতো হয়ে আসে।
দুধ দিয়ে বানালে হালুয়ার স্বাদ আরও মজাদার হবে। বেশি ঘন ও মজাদার স্বাদের জন্য এক চা চামচ কেওড়া জল যোগ করা যায়। চিনি কম বা বেশি করতে পারেন স্বাদ অনুযায়ী।
গরম গরম সুজির হালুয়া পরিবেশন করুন, অথবা ঠান্ডা করে খেতে পারেন! চাইলে ওপর থেকে কিছু বাদাম ও কিসমিস ছড়িয়ে দিতে পারেন।
উপসংহার
পবিত্র শবেবরাতে সিয়াম সাধনার পাশাপাশি মুখরোচক এই পাঁচটি হালুয়া আপনার ও পরিবারের সদস্যদের দিতে পারে প্রশান্ত। কিন্তু যাদের ডায়াবেটিস বা অন্য রোগ রয়েছে তারা উপকরণগুলো কিছুটা বদলে নিতে পারেন।
আরও পড়ুন: অফিসে কাজের ফাঁকে হালকা ক্ষুধা মেটাতে পুষ্টিকর শুকনো খাবার
৩৮ দিন আগে
অফিসে কাজের ফাঁকে হালকা ক্ষুধা মেটাতে পুষ্টিকর শুকনো খাবার
খুব সকালে নাস্তার পর দীর্ঘক্ষণ না খাওয়া অবস্থায় থাকলে দুপুরের খাবারের আগেই মস্তিষ্ক পাকস্থলি থেকে ক্ষুধার সংকেত পেতে থাকে। একই ব্যাপার মধ্যাহ্ন ভোজ আর রাতের খাবারের মাঝের সময়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এই উপোসের সময়টা যখন মানসিক বা শারীরিক পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই খাদ্য গ্রহণের তাড়না একটু বেড়ে যায়। কর্মক্ষেত্রে একটানা দীর্ঘক্ষণ কাজ করার কারণে প্রত্যেকেই হালকা ক্ষুধার পাশাপাশি কর্মস্পন্দন ফিরে পাওয়ার তাগিদ অনুভব করেন। তাই এই হালকা ভোজে এমন কিছু থাকা প্রয়োজন যা শুধু ক্ষুধাই মেটাবে না, সেই সঙ্গে নতুন উদ্যমে কাজে যোগ দেওয়ার শক্তিও যোগাবে। তাই চলুন, অফিসে কাজের ফাঁকে ক্ষুধা নিবারণের জন্য কিছু স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
অফিসে ব্যস্ততার ফাঁকে হালকা ক্ষুধা নিবারণের জন্য ১০টি স্বাস্থ্যকর খাবার
শুকনো ফল
প্রোটিন, ভিটামিন ই, রাইবোফ্ল্যাভিন, ট্রেস খনিজ ও স্বাস্থ্যকর চর্বিতে ভরপুর বাদাম সবচেয়ে জনপ্রিয় শুকনো ফলগুলোর একটি। নিয়মিত বাদাম খাওয়া ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং সারাদিন ধরে শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই উপযোগিতার নেপথ্যে রয়েছে ফাইবার, প্রোটিন এবং চর্বিগুলো। ক্যালরি কম হওয়ায় বেশি খাওয়াতেও স্থূলতার আশঙ্কা নেই।
সর্বাধিক প্রচলিত চীনাবাদাম অপেক্ষা কাজু, পেস্তা, আখরোট ও কাঠবাদামের গুণাগুণ আরও বেশি। এগুলোর রয়েছে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর ক্ষমতা, যা হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। কেক, বিস্কুট, ফল বা অন্যান্য মিষ্টিজাত খাবারে স্বাদের আলাদা মাত্রা যোগ করতে ব্যবহৃত হয় বাদাম।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
ভারী খাবারের বিকল্প হিসেবে সুপরিচিত শুকনো ফলটি হচ্ছে খেজুর। এতে আছে কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি-৬, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং কপার। শরীরকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সতেজ রাখতে আকারের বিবেচনায় খেজুরের কোনো জুড়ি নেই। এই ছোট্ট ফলটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, হাড়ের স্বাস্থ্য এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
বীজ
স্বাদের বিচারে খুব একটা এগিয়ে না থাকলেও পুষ্টিগুণের দিক থেকে এটি একটি সর্বোৎকৃষ্ট খাবার। চিয়া, শন, তিল, সূর্যমুখী ও কুমড়ার বীজ শরীর গঠনের জন্য সাধারণ খাদ্যাভ্যাসে রাখা হয়। এগুলো মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট, উদ্ভিদজাত প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং সহজে হজমযোগ্য ফাইবার সমৃদ্ধ। এই পুষ্টিগুলো যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে কর্মোদ্দীপনা ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট। অল্প পরিমাণে বেশি ক্যালরি থাকাতে স্বল্প আহারেই কয়েক ঘণ্টা ভরপেট অনুভূতি পাওয়া যায়।
অন্যান্য সুস্বাদু খাবার বা সালাদের সঙ্গে মেশানো হলে আরও মুখরোচক হয়ে ওঠে। তবে সেক্ষেত্রে ক্যালরির পরিমাণে সতর্ক থাকা দরকার।
আরো পড়ুন: স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য যেসব খাবার উপকারী
আপেল
কোলেস্টেরল কমানো নিয়ে যারা চিন্তায় থাকেন, তাদের ডেস্কে সর্বদা আপেল রাখা উচিত। এর বহিরাবরণে থাকে ফেনোলিক নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ, যা দেহের কোষগুলোর কার্যক্ষমতা ও রক্ত প্রবাহকে সমুন্নত করতে সহায়তা করে। স্বাদ আরও বাড়াতে আপেলের সঙ্গে মাখন বা দই মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
গাজর
কাজ ও খাওয়া একসঙ্গে করতে চাইলে গাজর হতে পারে স্বাস্থ্যসম্মত পছন্দ। এই সবজি বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার, ভিটামিন কে-১, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। হজম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, চোখ, হৃদপিণ্ড, ত্বক ও হাড়ের স্বাস্থ্য বাড়ানোতে গাজরের ভূমিকা অপরিসীম। প্রতিদিন কাজের পাশাপাশি গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়লে কোলেস্টেরলের মাত্রা, রক্তচাপ এবং ওজন নিয়ে আর ভয় থাকবে না।
ছোলা-মুড়ি
বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে খুব কমই এমন রয়েছে, যেখানে একটির নাম বললে সঙ্গে সঙ্গেই অপরটির নাম চলে আসে। কেবল সহজলভ্যই নয়, স্বতন্ত্রভাবে দুটি খাবারেই রয়েছে যথেষ্ট পুষ্টি।
ছোলাতে আছে ফলেট, খাদ্য আঁশ, আমিষ, ট্রিপ্ট্যোফান, কপার, ফসফরাস এবং আয়রন। এতে থাকা ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুরেটেড, যা রক্তের চর্বি কমাতে অংশ নেয়। এর পটাসিয়াম, ভিটামিন 'সি' এবং ভিটামিন বি-৬ পুষ্টি উপাদান হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। এছাড়াও ছোলার রয়েছে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, কোষ্ঠকাঠিন্য সারানোর ক্ষমতা। এছাড়া ছোলা বয়ঃসন্ধি পরবর্তীকালে মেয়েদের হার্ট ভালো রাখতেও সাহায্য করে। ছোলায় থাকা ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে অ্যাজমার প্রকোপ কমিয়ে দেয়। এতে থাকা পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম হাড় মজবুত করে।
আরো পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
অন্যদিকে, মুড়ির পুষ্টিগুলো হলো নিয়াসিন, ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম, ফাইবার, আয়রন, থিয়ামিন ও রাইবোফ্ল্যাভিন। এতে সোডিয়াম ও অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম থাকায় রক্তচাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে না। তবে এই উপকার শতভাগ পেতে হলে মুড়িতে তেল ও লবণ মেশানো যাবে না। তবে ছোলা-মুড়ির সঙ্গে বাদাম ও শসা যোগ করা যেতে পারে। অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারের মতো এটিও শরীরে দ্রুত শক্তি জোগাতে পারে।
ওটমিল বিস্কুট
ময়দা, চিনি, ডিম, তেল, চর্বি ও মাখনের সমন্বয়ে তৈরি এই বিস্কুটের প্রধান উপাদান ওটস। তবে কিশমিশ, চকলেট বা বাদামের সন্নিবেশে স্বাদ ও পরিবেশনে দারুণ মাত্রা যোগ হয়। কোনো কোনো ব্র্যান্ড কলা, বাদাম, মাখন ও ওমেগা -৩ সমৃদ্ধ শন ও চিয়া বীজের মতো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েও তৈরি করে থাকে।
ওটমিল কুকির ওট্স যেহেতু একটি সম্পূর্ণ শস্য, তাই এর মাধ্যমে ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। ফাইবারে গুণাগুণের মধ্যে রয়েছে হজমের উন্নতি ও ওজন কমানো।
কার্বোহাইড্রেট দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে, ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যে কোনো কাজে সক্রিয় থাকা যায়।
আরো পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
অধিকাংশ বিস্কুটের মত এটিও প্রোটিন সরবরাহের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর পেশি গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়ামের মতো খনিজ উপাদানে ভরপুর।
পপ কর্ন
শুধুমাত্র অফিসেই নয়, কাজের যে কোনো বিনোদনের মূহূর্তে সেরা নাস্তা পপ কর্ন বা খৈ ভাজা। প্রধান কাঁচামাল ভূট্টা হওয়ায় ভূট্টার সব পুষ্টিই পাওয়া যায় এতে। অর্থাৎ এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ও জিঙ্কে পরিপূর্ণ।
পপ কর্ন রক্ত সঞ্চালন ও হজম উন্নত করতে এবং হৃদরোগ, স্থূলতা এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করে।
ডার্ক চকলেট
এই মিষ্টান্ন খাবারটি মূলত শুকনো ফলের ভান্ডার। তবে বেশি পরিমাণে থাকে বিভিন্ন ধরনের বাদাম। অধিকাংশ ডার্ক চকলেটের প্রতি দেড় আউন্সে থাকে ১৯০ ক্যালরি, ১২ গ্রাম ফ্যাট, ২৪ গ্রাম কার্ব, ৩ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার, ২ গ্রাম প্রোটিন, ৭ গ্রাম ক্যালসিয়াম, এবং ২০৩ গ্রাম পটাসিয়াম। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রদাহ, ডায়াবেটিস এবং জীবাণু প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী।
আরো পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
তবে কেনার সময় ডার্ক চকলেটের মোড়কে লিপিবদ্ধ উপাদানগুলো ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত। অনেক সময় এগুলোতে কৃত্রিম রাসায়নিক অ্যাল্কালি প্রসেসিং থাকে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টকে সরিয়ে দেয়।
সিদ্ধ ডিম
স্বল্প পরিমাণে হলেও মানবদেহের প্রয়োজনীয় সবগুলো পুষ্টি একসঙ্গে পেতে হলে খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে হবে সিদ্ধ ডিম। ৫০ গ্রামের একটি বড় ডিমে ৬ গ্রামেরও বেশি প্রোটিন থাকে। চর্বিহীন এই প্রোটিন অনেক বেশি ক্যালোরি না দিয়েও দীর্ঘক্ষণ যাবৎ পাকস্থলি পরিপূর্ণ রাখবে, যা ওজন কমানোর জন্য সহায়ক। অন্যান্য পুষ্টিগুণগুলো হলো লোহা, ক্যালসিয়াম, কোলিন, ভিটামিন এ, বি-৬, বি-১২ এবং ডি।
এতে থাকা লুটেইন এবং জেক্সান্থিনে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য, যা চোখের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সক্ষম।
চিড়া
স্বল্প আহারে অধিক স্বাস্থ্যগুণের অধিকারী হওয়ার জন্য অন্যতম সুষম খাদ্য চিড়া। প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ এই খাবার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, কেননা পাকস্থলি নিঃসৃত অ্যাঞ্জাইম ফাইবার শোষণ করতে ও ভেঙে ফেলতে পারে না।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
একদিকে ক্যালোরি, চর্বি ও চিনির পরিমাণ যথেষ্ট কম, অন্যদিকে খনিজ ও ভিটামিনের মাত্রা বেশি। এই কারণে চিড়া শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়িয়ে ওজন কমানোর প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
শেষাংশ
অফিসের নিত্যদিনের কর্মব্যস্ততার ফাঁকে এই শুকনো খাবারগুলো শুধু ক্ষুধাই মেটাবে না, পাশাপাশি পূরণ করবে দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা। তন্মধ্যে ডেস্কে হাতের কাছেই রাখা যেতে পারে ওটমিল বিস্কুট, ডার্ক চকলেট, বাদাম, পপকর্ন ও কিছু ফলমূল। জনপ্রিয় সান্ধ্যকালীন খাবার ছোলা-মুড়িকে কর্মদিবসের কোনো কোনো দিনে সিদ্ধ ডিমের সঙ্গে বদলে নেওয়া যায়। উপরন্তু, সুষম খাবার হিসেবে উৎকৃষ্ট সংযোজন হতে পারে গাজর, বীজ, বা চিড়া। সর্বোপরি, ফলমূল, গাজর, বাদাম, চিড়া, ছোলা বা বীজের মধ্যে থেকে পছন্দ মতো যেকোনো সন্নিবেশে সালাদ বানিয়েও তৈরি করা যায় মুখরোচক খাবার।
আরো পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
২০৭ দিন আগে
বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
ক্রমাগত দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির নিষ্পেষণে বিপর্যস্ত জনজীবন। নিত্য আহারে প্রয়োজনীয় রান্নার জ্বালানিও এই পীড়নের বাইরে নয়। বিশেষ করে সিলিন্ডার গ্যাসের অস্থির বাজারের তাড়নায় প্রত্যহ ধকল সামলাতে হয় হিসাবি পরিবারগুলোকে। এই অনিশ্চয়তাকে মোকাবিলা করার জন্য চিরায়ত রন্ধন প্রক্রিয়া এবং চুলা ব্যবহারের অভ্যাসে পরিবর্তন আনা অপরিহার্য। তাই চলুন, বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমানোর কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক-
সিলিন্ডার গ্যাস খরচ বাঁচিয়ে রান্না করার ১০টি ব্যবহারিক উপায়
চুলা ব্যবহারের পূর্বে নিয়মিত রান্নার পাত্র ও চুলা পরিষ্কার করা
রান্না বা সিদ্ধ করার পাত্রে লেগে থাকা বিন্দু বিন্দু পানি বাষ্পীভবনের জন্য অতিরিক্ত গ্যাস গ্রহণ করে। একইভাবে পূর্ণ শক্তির তাপ পেতে চুলা ময়লা বিশেষ করে পানিমুক্ত হওয়া প্রয়োজন। উজ্জ্বল নীল বর্ণ মানেই চুলা পূর্ণ শক্তিতে জ্বলছে।
আর, হলুদ বা কমলা শিখা আংশিক অথবা কম শক্তিতে জ্বলনের ইঙ্গিত করে। আর এই হলুদ বা কমলা রঙের শিখা সাধারণত অপরিষ্কার চুলাতেই দেখা যায়। আংশিক দহনের ফলে রান্নার সময় পাত্র গরম করতে আরও বেশি গ্যাসের প্রয়োজন হয়। তাই পরিপূর্ণ তাপশক্তি পাওয়ার জন্য চুলা ও এর উপর বসানো পাত্র দুটোই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: বর্ষা-বন্যায় বসতবাড়িতে সাপের উপদ্রব মোকাবিলা করবেন যেভাবে
চুলায় বসানোর আগে রান্নার যাবতীয় সামগ্রী প্রস্তুত করে নেওয়া
শাক-সবজিসহ রান্নার যাবতীয় কাঁচামাল ধোয়া, কাটা ও মেশানোর কাজ করতে হবে চুলা জ্বালানোর আগে। এমনকি অনেকে আগে থেকে পাত্র গরম করার উদ্দেশ্যে চুলা জ্বালিয়ে রান্নার সামগ্রী প্রস্তুত করতে থাকেন। এই কাজটিও ঠিক নয়। বরং রান্না শুরুর আগেই সমস্ত কাঁচামাল প্রস্তুত করে চুলার কাছাকাছি রাখতে হবে।
চুলার ওপর পাত্র বসিয়ে তাতে তৈরি কাঁচামালগুলো চড়িয়ে সবশেষে চুলা জ্বালানো উচিত। এতে করে সর্বনিম্ন সম্ভাব্য সময়ের জন্য চুলার চালু রাখার ব্যাপারটি নিশ্চিত করা যায়। তাছাড়া আগে থেকে গরম পাত্রে প্রস্তুতকৃত কাঁচামাল চড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে তা পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চুলা চালু করার আগে রান্নার সামগ্রী প্রস্তুতের সময় সেগুলোর ছোট ছোট টুকরো করা উচিত। খাবারের ছোট টুকরাগুলো বড়গুলোর চেয়ে দ্রুত সিদ্ধ বা রান্না হয়। কারণ ছোট টুকরোগুলোর আয়তনের তুলনায় তাদের পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল বেশি থাকে, যার কারণে তাপ দ্রুত খাবারগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এই পদ্ধতিটি মূলত শাকসবজি, মাংস এবং অন্যান্য শক্ত উপাদানগুলোর জন্য উপযোগী।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
রান্নার আগে হিমায়িত খাবার গলিয়ে নেওয়া
ফ্রিজে রাখা কোনো খাবার বের করার সঙ্গে সঙ্গে চুলায় চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। কেননা এ ক্ষেত্রে খাবারটি রান্না করতে সাধারণত দুটি পর্যায়ে তাপের দরকার হয়। প্রথমে জমাট বাঁধা খাবারটিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসার জন্য এবং তারপর সেটাকে গরম করার জন্য। খাবারের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে অনেক খাবার গলাতে অনেক বেশি তাপের দরকার হতে পারে। ফলশ্রুতিতে, রান্নার সময়টি দীর্ঘায়িত হয় আর বাড়তে থাকে গ্যাসের খরচও।
তাই রান্নার জন্য নির্ধারিত খাবারটিকে আগে থেকে ফ্রিজ থেকে বের করে গলিয়ে নিতে হবে। এর ফলে খাবারটি আংশিক রান্না বা আধা সিদ্ধ হওয়ার ঝামেলা থাকে না। এমনকি অনেকে ঠান্ডা খাবার অনেকক্ষণ চুলায় রাখতে হবে ভেবে খাবার পুড়িয়ে ফেলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সেই বিড়ম্বনাও নেই। বরং এই প্রক্রিয়াতে খাবারের স্বাদ অটুট থাকে।
এমন রান্নার পাত্র ব্যবহার করা যা সম্পূর্ণভাবে চুলাকে ঢেকে ফেলে
পাত্রটিকে চুলায় এমনভাবে রাখা উচিত, যেন এটি আগুন বের হওয়ার পুরো জায়গাটিকে ঢেকে রাখে। পাত্রের পাশ ঘেঁষে আগুনের শিখা বের হওয়া মানে চুলাটি অনেক বেশি তাপশক্তি নিয়ে জ্বলছে। একই সঙ্গে এই শিখা অতিরিক্ত গ্যাস অপচয়ের বিষয়টিও নিশ্চিত করে।
এই অপচয় রোধের ক্ষেত্রে গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির পাত্রের পরিবর্তে সমতল পৃষ্ঠের পাত্র অনেক বেশি কার্যকর। সমতল পৃষ্ঠের পাত্রটি একদম চুলার বার্নারের সমান না হলে স্বাভাবিকভাবেই এই পাত্রের গা ঘেঁষেও শিখা বেরিয়ে আসতে পারে। এমতাবস্থায় আগুন পাত্রের নিচে থাকা পর্যন্ত চুলা কমিয়ে রাখতে হবে। অন্যথায়, এই পাত্রও কোনো কাজে আসবে না।
আরো পড়ুন: বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়
আগুন পাত্রের সমতল পৃষ্ঠদেশের সর্বত্র ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে পাত্রের নিচে প্রতিটি অংশে সমান তাপ বিতরণ হয় বিধায় রান্না দ্রুততর হয়। অন্যদিকে, ডিম্বাকৃতি বা গোলাকার তলদেশের পাত্রের সব জায়গায় সমানভাবে তাপ লাগতে পারে না। অসম অংশগুলোতে তাপ পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় রান্নার সময়ও দীর্ঘায়িত হতে থাকে।
যতটা সম্ভব কম তাপে রান্না করা
রান্নাঘরে একসঙ্গে অনেক কাজ করার সময় অনেকেই চুলা একদম বাড়িয়ে দেন। এতে খাবার পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া উচ্চ তাপে রান্নার ফলে খাবারের প্রয়োজনীয় পুষ্টি নষ্ট হয়ে যায়। সর্বোপরি, এতে গ্যাসের অনেক অপচয় হয়। তাই সব সময় যতটা সম্ভব কম আঁচে রান্নার চেষ্টা করা উচিত।
যেমন, পানি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোর পরেও চুলা পুরোটা বাড়ানো থাকলে সেই পানি বাষ্পীভূত হয়ে যাবে। ফলে ফুটন্ত পানি পেতে আবার চুলায় পানি চড়াতে হবে। এতে অতিরিক্ত গ্যাস অপচয় হওয়ার পাশাপাশি চরম অবস্থায় পাত্রের পৃষ্ঠদেশ পাতলা হয়ে যেতে পারে। আর ঘন ঘন এমন ঘটনা ঘটলে পাত্র ফুটো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তাপ সঞ্চয়ের একটি উপযোগী উপায় হচ্ছে চুলা বন্ধ করার পরে অবশিষ্ট তাপকে কাজে লাগানো।
আরো পড়ুন: বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
যেমন, ভাত বা পাস্তার মতো খাবারগুলো রান্নার সময় রান্না সম্পন্ন হওয়ার কয়েক মিনিট আগে চুলা বন্ধ করে দেওয়া যায়। অতঃপর অবশিষ্ট তাপে শেষ করা যায় বাকি রান্না। এই প্রক্রিয়া খাবারের মানের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না।
রান্নার সময় পাত্রে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখা
খাবার গরম করার সময় বদ্ধ পাত্রের ভেতর থেকে তাপ বাইরে যেতে পারে না। অন্যদিকে, পাত্রের ওপরে ঢাকনা দেওয়া না থাকলে, যথেষ্ট পরিমাণে তাপ বাতাসে চলে যায়। ফলে হারিয়ে যাওয়া তাপের ঘাটতি পূরণে চুলার অতিরিক্ত তাপের যোগান দিতে হয়। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে পুরো রন্ধন প্রণালী সম্পন্ন হতে অনেকটা সময় লেগে যায়।
এছাড়াও রান্না চলাকালীন পাত্রে ঢাকনা থাকলে ভেতরের আর্দ্রতা অক্ষুণ্ন থাকে। ফলে খাবারের গুণগত মান ও স্বাদ নষ্ট হয় না।
পরিমিত পানি ব্যবহার
কি ধরনের খাবার রান্না করা হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ হিসাবি হওয়ার উচিত। কেননা পানি কম হলে যেমন রান্না পরিপূর্ণ হবে না, আবার উপাদানগুলো পানিতে ডুবে গেলে হারিয়ে যেতে পারে কাঙ্ক্ষিত স্বাদ। পাত্রে পরিমিত পরিমাণে পানি দেওয়ার মাধ্যমে কম সময়েই পছন্দসই তাপমাত্রায় পৌঁছানো যায়। আবার পাত্রে একদম কম পানি থাকলেও স্বল্প তাপেই খাবার সিদ্ধ বা রান্না হয়ে যায়। তাই এক্ষেত্রে খাবারের প্রকৃতির দিকে খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়।
আরো পড়ুন: এমপক্সের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
একসাথে একাধিক খাবার তৈরি
আলাদা আলাদা করে ভিন্ন খাবার তৈরি করার বদলে একবারে পাঁচমিশালী করাটা অধিক সাশ্রয়ী উপায়। অবশ্যই এখানে যে খাবারগুলো একই ধরনের তাপমাত্রায় বা পদ্ধতিতে রান্না হওয়ার উপযোগী, সেগুলোকে নির্বাচন করা উচিত। এগুলোকে ওয়ান-পট মিল বা এক পাত্রের খাবারও বলা হয়ে থাকে।
চুলায় দেওয়ার আগে প্রস্তুতিতে বেশ সময় লাগলেও গ্যাসের খরচ বাঁচাতে এটি বেশ কার্যকরী একটি পদ্ধতি।
এছাড়া একটি খাবার থেকে নিঃসৃত তাপকে অন্য একটি খাবার সিদ্ধ করতে কাজে লাগানো যায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য প্রয়োজন হবে বিশেষ পাত্রের, যেখানে উপর-নিচ করে দুটি ভিন্ন খাবার রাখার জায়গা থাকবে।
জ্বালানী-সঞ্চয়ী পাত্র ব্যবহার
ঢালাই লোহা বা তামার মতো পৃষ্ঠ সম্পন্ন পাত্রগুলো তাপকে সমানভাবে বিতরণ করতে পারে। এগুলো সাধারণ রান্নার পাত্রের চেয়ে বেশি সময় ধরে তাপ সঞ্চয় করে রাখতে পারে। ঢালাই লোহা দীর্ঘ সময় ধরে গরম থাকে, যা কম আঁচে রান্নার জন্য বেশ উপযোগী। এমনকি চুলা বন্ধ করে দেওয়ার পরেও অবশিষ্ট তাপ দিয়ে রান্না শেষ করা যায়।
আরো পড়ুন: ঘরে রান্নার কাজে নিরাপদে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের উপায়
আর তামা একটি উৎকৃষ্ট তাপ সঞ্চালনকারী পদার্থ বিধায় এটি দ্রুত উত্তপ্ত হতে পারে এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এই উপকরণগুলো রান্নার সময় কমিয়ে দেয় এবং কম গ্যাস খরচ করেই রান্নায় ভিন্নতা আনা যায়।
পাত্রের নিচে তাপ ধরে রাখার পাথর ব্যবহার
বেশ পুরনো হলেও ঐতিহ্যবাহী এই পদ্ধতিটি গ্যাস ব্যবহারকে সাশ্রয়ী করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর। পাথরের রয়েছে তাপীয় ভর, যার কারণে এগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য তাপ শোষণ করতে পারে। এগুলোর মধ্য থেকে আংশিক মসৃণ ও প্রায় বৃত্তাকারগুলো সংগ্রহ করে বার্নারের ঠিক মাঝের গর্তে একটি বসানো যেতে পারে। অতঃপর চুলায় পাত্র বসিয়ে চুলা জ্বালিয়ে দিলে পাথরটি ধীরে ধীরে উৎপাদিত তাপ শোষণ করতে থাকবে। গরম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাথরটি পাত্রের মধ্যে উষ্ণতা ছড়াতে শুরু করে। এর ফলে অল্প গ্যাসেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তাপশক্তি পাওয়া যায়।
শেষাংশ
বাসা-বাড়িতে রন্ধন প্রণালী ও চুলা ব্যবহারের এই উপায়গুলো সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারকে অনেকাংশে সাশ্রয়ী করে তুলতে পারে। চুলায় রান্নার পাত্র বসানোর আগে পরিচ্ছন্নতা, হিমায়িত খাবার গলানো, এবং অল্প পানি ব্যবহারের মতো পূর্বপ্রস্তুতিগুলো স্বল্প সময়ে রান্নার সহায়ক হয়। ঢাকনা এবং সঠিক পাত্র ব্যবহার একদিকে যেমন রান্নাকালীন গ্যাস অপচয় রোধ করে, অন্যদিকে পাত্রের নিচে পাথর ব্যবহার উৎপাদিত তাপ ধরে রাখতে সহায়তা করে।
উপরন্তু, একসঙ্গে একাধিক খাবার রান্না করা গ্যাস সঞ্চয়ের কার্যকরী উপায়। সব মিলিয়ে লক্ষ্য হতে হবে- রান্নার সময়টাকে যথাসম্ভব কমিয়ে আনা এবং অল্প তাপে রান্না শেষ করা।
আরো পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
২১৪ দিন আগে
স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য যেসব খাবার উপকারী
একাডেমিক পড়াশোনা, গবেষণাধর্মী কাজ ও কর্মজীবনের উন্নতির জন্য সৃজনশীলতার পাশাপাশি আরও একটি প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে স্মরণশক্তি। প্রতিটি মানুষেরই স্বাভাবিক বিকাশের পরিচয় বহন করে এই শক্তি। শুধু তাই নয়, নিত্য-নৈমিত্তিক জীবনে এর তুলনামূলক উপস্থিতির ভিত্তিতে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে বিশেষত্ব সৃষ্টি হয়। চর্চা বা সাধনার পাশাপাশি এই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে কিছু পুষ্টিকর খাবার। সময়মতো সুফল পেতে এই খাবারগুলোতে শৈশব থেকেই অভ্যস্ত হওয়া জরুরি। চলুন, স্মৃতিশক্তি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সেরা খাবারগুলোর তালিকা দেখে নেওয়া যাক।
স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে উপকারী ১০টি খাবার
হলুদ
যে কোনো রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এই উপকরণে রয়েছে পুষ্টি উপাদান কারকিউমিন। এটি মূলত এক ধরনের যৌগ, যার মধ্যে আছে উৎকৃষ্ট প্রদাহ-বিরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। কারকিউমিন মস্তিষ্ক থেকে প্রাপ্ত নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর বাড়ায়, যা মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধি ও রক্ষণাবেক্ষণে কাজে লাগে। এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত হয় ও স্মৃতিশক্তি হারানোর ঝুঁকি হ্রাস করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কারকিউমিন মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনে যাবতীয় বাধা অতিক্রম করে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলোকে সতেজ রাখে। এভাবে তরকারিতে নিয়মিত হলুদ ব্যবহারের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদে স্মৃতি ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো যেতে পারে। এটি আলঝেইমারের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ (স্মৃতিশক্তির পর্যায়ক্রমিক অবনতি) রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
আরও পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
চর্বিযুক্ত মাছ
মলা, ঢ্যালা, আইলা, টুনা, সরপুটির মতো সামুদ্রিক মাছগুলো যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই অপরিহার্য চর্বিগুলো মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওমেগা -৩ স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, প্রদাহ কমায় ও মস্তিষ্কের কোষগুলোর পারস্পরিক যোগাযোগ বজায় রাখে।
এই পুষ্টি উপাদান কোষগুলোর কাঠামোগত অখণ্ডতায়ও অবদান রাখে। নিয়মিত চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া মস্তিষ্ক জনিত যাবতীয় সমস্যা রোধ করে সামগ্রিক মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। এটি মস্তিষ্কের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য-উপাদানের একটি বৃহৎ অংশের যোগান দেয়। সপ্তাহে অন্তত ২ বার ভারী খাবারে চর্বিযুক্ত মাছ রাখা উচিৎ।
পালং শাক
ঘন পাতাযুক্ত এই সবুজ শাক ভিটামিন কে, ই, ও ফোলেট সমৃদ্ধ। ভিটামিন কে স্ফিংগোলিপিড গঠনে সহায়তা করে, যেটি মূলত মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কোষ গঠন ও কোষের সঠিক কার্যক্ষমতার জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন-ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
আর ফোলেট জ্ঞানীয় কার্যক্রমগুলোতে সাহায্য করে, যার কারণে বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের সাধারণ অবনতির ঝুঁকি কমে। নিয়মিত পালং শাক খাওয়া মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ায় এবং নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের বিরুদ্ধে মস্তিষ্ককে রীতিমতো দুর্গ বানিয়ে তোলে। প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তত এক বেলা পালং শাক রাখা হলে দীর্ঘ মেয়াদে কাঙ্ক্ষিত জ্ঞানীয় সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
বাদাম
আখরোট, কাজু বাদাম, এমনকি চিনাবাদাম শুধু মস্তিষ্কের জন্যই নয়; সমস্ত দেহের জন্য বেশ উপকারী। এই বাদামগুলো ভিটামিন ই, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো মস্তিষ্ক-সহায়ক উপাদানে ভরপুর। ভিটামিন-ই মস্তিষ্কের কোষের অম্লতা-জনিত ক্ষতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর চর্বি মস্তিষ্কের ভেতরে কোষের গঠনে অংশ নেয় এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতায় সাহায্য করে। বাদামে ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান রয়েছে, যা জ্ঞানীয় স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সরাসরি অংশ নেয়। বাদাম স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি দারুণ সংযোজন হতে পারে। স্ন্যাক্স হিসেবে বিভিন্ন ধরনের বাদাম নিত্যদিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে যথেষ্ট। বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে এগুলোকে আরও মুখরোচক করে তোলা যায়।
আরও পড়ুন: মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আম কেন এত দামি
গাজর
বিটা-ক্যারোটিনের এই চমৎকার উৎসটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। বিটা-ক্যারোটিন মস্তিষ্কের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। এই স্ট্রেসের কারণে জ্ঞানীয় কার্যক্রমগুলোর ধীরে ধীরে অবনতি হয়। বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার স্মৃতিশক্তি এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ সমুন্নত রাখে।
গাজরে থাকা ভিটামিন সি ফ্রি-র্যাডিক্যালের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি প্রতিরোধ করে মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে। বার্ধক্য-জনিত স্মৃতিশক্তি হ্রাস থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত গাজর খাওয়া যেতে পারে। সালাদ, জুস, এমনকি রান্না করা খাবারের মাধ্যমেও গাজর অন্তর্ভুক্ত করা যায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়।
মুরগির ডিম
এই বহুমুখী ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারটি কোলিন ও ভিটামিন বি-১২ সহ একটি সুস্থ মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। কোলিন হলো অ্যাসিটাইলকোলিনের প্রধান উপাদান, যেটি স্মৃতি ধরে রাখা ও কোনো কিছু শিখতে সাহায্য করে। যে কোনো বয়সেই জ্ঞানীয় কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রাখতে ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস রোধ করার জন্য পর্যাপ্ত কোলিন গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
আরো পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
ভিটামিন বি-১২ স্নায়বিক অংশগুলোর অখণ্ডতা বজায় রেখে মস্তিষ্ককে অটুট রাখে। এটি স্নায়ু তন্তুর সুরক্ষা এবং কোষগুলোর মাঝে পারস্পরিক যোগাযোগ নিশ্চিত করে। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য প্রতিদিন মুরগির ডিম খাওয়া আবশ্যক। শুধু সকালের নাস্তাতেই নয়, অন্যান্য তরকারির সঙ্গে ডিমের অতিরিক্ত সংযোজন খাবারটিকে বেশ উপাদেয় করে তোলে। এছাড়া শুধু সিদ্ধ ডিমও প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগান দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
কুমড়োর বীজ
পুষ্টির পাশাপাশি সুস্বাদু সবজিগুলোর মধ্যে চালকুমড়ো অন্যতম। এর বীজে আছে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপে অংশ নিয়ে কোনো কিছু শেখা এবং স্মৃতি ধারণ প্রক্রিয়া চালু রাখে। এটি নিউরোট্রান্সমিটার সিগন্যালিং নিয়ন্ত্রণ তথা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যকার পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। জিঙ্ক নিউরোপ্রোটেকশনে অবদান রাখে, যা যে কোনো পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কের প্রক্রিয়া চালু রাখার জন্য জরুরি।
কুমড়োর বীজের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে দূরে রাখে। তাই স্মৃতিভ্রষ্ট থেকে বাঁচতে হলে নিয়মিত এই বীজ খাওয়া আবশ্যক। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে জুড়ে নিমেষেই এটি উপাদেয় মিশ্রণ তৈরি করতে পারে।
আরও পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
মসুর ডাল
ফোলেট, আয়রন ও ফাইবারে ভরপুর এই সহজলভ্য খাবারটি মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য অপরিহার্য। সেরোটোনিন, ডোপামিন ও নোরপাইনফ্রিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটার সংশ্লেষণের কাজ করে ফোলেট। এর মাধ্যমে মেজাজ, স্মৃতিশক্তি ও যাবতীয় জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে।
পর্যাপ্ত ফোলেট গ্রহণ স্মৃতিভ্রষ্ট সম্পর্কিত নানা ধরণের রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। অন্যদিকে আয়রনের কাজ হলো মস্তিষ্কে অক্সিজেন পরিবহন করে জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া চালু রাখা।
মস্তিষ্কের সঠিক কার্যাবলির জন্য মস্তিষ্কের পাশাপাশি দেহের অন্যান্য অংশও ঠিক থাকা জরুরি। বিশেষ করে অন্ত্র সুস্থ থাকলে মস্তিষ্ক তার প্রয়োজনীয় রসদ থেকে বঞ্চিত হয় না। আর এই বিষয়টি নিশ্চিত করে ফাইবার।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
ফুলকপি
ভিটামিন কে ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি উৎকৃষ্ট উৎস হচ্ছে ফুলকপি। ভিটামিন কে-এর কাজ মস্তিষ্কের কোষ গঠনে দরকারি উপাদান সরবরাহ করা। সালফোরাফেনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। ফুলকপিতে থাকা যৌগগুলো জ্ঞানীয় কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও স্মরণশক্তি উন্নয়নে সহায়ক। বার্ধক্যে স্মরণশক্তির অবনতি থেকে বাঁচতে কম বয়স থেকেই ফুলকপির খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা আবশ্যক। রান্না ছাড়াও সালাদে বা সাইড ডিশ হিসেবে ফুলকপি একটি উযুক্ত খাবার।
কমলা
নানা ধরনের সতেজ ফলের মধ্যে স্মরণশক্তির জন্য সহায়ক ফল হলো কমলা। বাদাম ও গাজরের মতো এটিও মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে পারে, কেননা এতে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি সেরোটোনিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের উৎপাদনে সহায়তা করে, যা সঠিক মানসিক অবস্থার জন্য দরকার।
এছাড়া কোলাজেন সংশ্লেষণেও এটি একটি আবশ্যিক উপাদান, কারণ এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে কোষ ও রক্তনালীগুলোর গঠন বজায় থাকে। প্রতিদিন অন্তত একটি পুরো কমলা খাওয়া দীর্ঘমেয়াদে জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতাকে উন্নত রাখার সহায়ক হতে পারে।
আরো পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
তাছাড়া বয়সের সঙ্গে জ্ঞানীয় অবনতির ঝুঁকি কমাতেও এই অনুশীলন আবশ্যক। সরাসরি ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি কমলার তাজা জুস একটি জনপ্রিয় কোমল পানীয়।
পরিশিষ্ট
এই ১০টি পুষ্টিকর খাবার সর্বাঙ্গীনভাবে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারে। হলুদের প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য থেকে শুরু করে কমলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পর্যন্ত প্রতিটি খাবারেই রয়েছে অনন্য পুষ্টিগুণ। পুরো সপ্তাহের খাদ্যাভাসে এই খাবারগুলোকে যুক্ত করার মাধ্যমে মস্তিষ্ককে যে কোনো কাজের জন্য প্রস্তুত করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে উত্তরোত্তর অনুশীলনও চালিয়ে যেতে হবে যুগপৎভাবে। এরই দৌলতে ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবন পর্যন্ত যে কোনো প্রতিযোগিতায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
২৬৫ দিন আগে
মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আম কেন এত দামি
একটির দাম প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আর প্রতি কেজির প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে এমনি অদ্ভূত দাম মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আমের। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাপক হারে চাষ হয়েছে বিশ্বের সব থেকে দামি এই আমের। আমের অন্যান্য জাত থেকে ব্যতিক্রমী ফলন হওয়ায় ফলচাষীসহ ফলপ্রেমীদের মাঝে দারুণ সাড়া ফেলেছে বিদেশি আমটি। বিশেষ পরিবেশে বেড়ে ওঠা এই আম রঙ, স্বাদ ও আকারে অন্য সব আম থেকে একদমি আলাদা। মিয়াজাকি বা সূর্যডিম আমের এমন অদ্ভূত নাম হলো কীভাবে, আর আকাশচুম্বি দামের পেছনে আসল কারণটাই বা কী, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আমের নাম মিয়াজাকি বা সূর্যডিম কেন
উৎপত্তিস্থল জাপানের কিউশু রাজ্যের মিয়াজাকি নামক শহরে হওয়ায় শহরের নামটি যুক্ত হয়ে গেছে আমের নামের সঙ্গে। তবে জাপানি ভাষায় আমগুলো পরিচিত ‘তাইয়ো-নো-তামাগো’ নামে, যার বাংলা অর্থ ‘সূর্যের ডিম’। তাই বাংলা ভাষাভাষি অঞ্চলে ‘সূর্যডিম’ নামেই আমটি অধিক পরিচিতি পেয়েছে।
অবশ্য আমের রঙ অনেকটা গাঢ় লাল হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে ‘রেড ম্যাংগো’ বা ‘লাল আম’ নামটিই অধিক প্রসিদ্ধ।
জাপানে মিয়াজাকি আমের প্রথম চাষের সময়কাল ১৮৬৮ থেকে ১৯১২ সাল হলেও ফলটি সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পায় ১৯৭০ দশক থেকে।
আরও পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
মিয়াজাকি আম দেখতে কেমন
তাইয়ো নো তামাগো আম দেখতে অনেকটাই মুরগির ডিমের মতো। আমগুলোর ওজন সর্বোচ্চ ৩৫০ গ্রাম এবং এতে চিনির পরিমাণ ১৫ শতাংশ বা তার বেশি। আকারে এটি সাধারণ আমের চেয়ে বেশ বড় ও লম্বা এবং গন্ধ ও স্বাদে মিষ্টতাও বেশি। রঙ গাঢ় লাল বা লাল ও বেগুনীর সংমিশ্রণ।
ওপরের খোসার নিচে ভেতরের সুস্বাদু খাওয়ার অংশটি একেবারেই আঁশমুক্ত এবং উজ্জ্বল হলুদ সুগন্ধযুক্ত।
উত্তর আমেরিকার ডোল ব্র্যান্ডের আমের সঙ্গে এর কিছুটা মিল আছে। তবে মূল্যের দিক থেকে তাইয়ো নো তামাগো অনেকটাই এগিয়ে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ ব্রয়লার মুরগি কী, কেন খাবেন
মিয়াজাকি আমের দাম এত বেশি কেন
২০১৬ সালে জাপানের ফুকুওকায় নিলামে এক জোড়া মিয়াজাকি আমের মূল্য উঠেছিল ৫ লাখ জাপানি ইয়েন। মূল্যটি সে সময়ের বাজার রেট অনুযায়ী ৪ হাজার ৫৪৭ মার্কিন ডলারের সমতূল্য ছিল। ইন্টারনেটের সুবাদে এই খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই মূলত সবার নজর কাড়ে জাপানি আমটি।
তাইয়ো নো তামাগোর সর্বোচ্চ ফলন হয় এপ্রিল থেকে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে। গাছ থেকে সংগ্রহের পর সেরা আমগুলোর সরাসরি চলে যায় নিলামে। প্রতি বছর এপ্রিল মাসে মিয়াজাকি শহরের পাইকারি বাজারে শুরু হয় এই নিলাম। স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে আমের রঙ, মিষ্টতা, স্বাদ, ও আকার-আকৃতির বিচারে নির্ধারিত হয় সেরা মানের আম।
নিলামে দেশের বড় বড় ফল ডিস্ট্রিবিউটররা সেগুলোর জন্য বিড করে। গড়পড়তায় নিলামের মূল্য থাকে আম প্রতি ৫০ মার্কিন ডলার বা ৫ হাজার ৮৬৩ টাকা (১ মার্কিন ডলার = ১১৭ দশমিক ২৫ বাংলাদেশি টাকা)। তবে কখনও কখনও এই মূল্য অনেক বেড়ে যায়। এখন পর্যন্ত একটি আমের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ২ হাজার মার্কিন ডলার (২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৩ টাকা)।
২০১৯ সালে জাপানে এক জোড়া তাইয়ো নো তামাগোর দাম উঠেছিল প্রায় ৫ হাজার মার্কিন ডলার, যা সে সময়ের বাজার রেট অনুসারে প্রায় ৪ লাখ টাকারও বেশি। ২০২৩ সালে ভারতে এই আমের কেজি বিক্রি হয়েছে আড়াই লাখ রুপিতে।
এমন চোখ কপালে তোলা দামের নেপথ্যে রয়েছে আমটির সুনির্দিষ্ট চাষাবাদ পদ্ধতি এবং দুষ্প্রাপ্যতা। সঠিক পরিবেশের মাঝে সুক্ষ্ম পরিচর্যার মাধ্যমে যে উন্নত মানের আমের উৎপাদন হয় তা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। এছাড়া পরিপক্কতা লাভের পর যে গভীর লাল বর্ণটি আসে তা আমের অন্যান্য জাতের মধ্যে বেশ দুর্লভ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই আমগুলোর কেনাবেচা শুধুমাত্র সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বিভিন্ন কর্পোরেট উপহার এবং বিশেষ উদযাপনের দিনগুলোতে উপহার হিসেবে বিক্রি হয় এই আম। এমনকি হাত বদলের আগে এগুলোকে যত্ন সহকারে সুক্ষ্ম কারুকাজ মেশানো বাক্স বা মোড়কে ভরা হয়।
আরও পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
২৭৪ দিন আগে
নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
অনন্য স্বাদ ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলের স্ট্রিট ফুডের সঙ্গে মিশে থাকে স্থানীয় ঐতিহ্য। আবাসিক ও অনাবাসিক এলাকাগুলোতে নির্বিশেষে গড়ে ওঠা খাবারের ছোট্ট দোকানগুলোর থাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। আবার কোনো কোনো খাবারের রন্ধন প্রণালী ও উপকরণ একচ্ছত্রভাবে শুধু একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলেই পাওয়া যায়। আর এই আবহ গোটা জেলার মধ্যে খাবারসহ দোকানটিকে প্রসিদ্ধ করে তোলে। কিন্তু এই প্রসিদ্ধির সান্নিধ্য পেতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্মুখীন হতে হয় স্বাস্থ্য ঝুঁকির। কেননা রাস্তার পাশের এই খাবারগুলো নানা ধরনের দূষিত পদার্থের সংস্পর্শে থাকে। এছাড়া রন্ধন প্রণালী ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মধ্যেও থাকে যথেষ্ট ঘাটতি। তাই সুস্বাদু হলেও খাবারগুলো চেখে দেখার আগেই সাবধান হওয়া জরুরি। চলুন, ঝুঁকি এড়িয়ে নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক-
স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি নিরাপদ উপায়
জনপ্রিয়তার পাশাপাশি গ্রাহকদের ভিন্নতা
একটি খালি স্টলের চেয়ে দীর্ঘ লাইন থাকা স্টল ভালো। আপাতদৃষ্টে ভিড় থাকা মানে উচ্চ চাহিদাকেই বোঝায়। আর এই একই কারণে জনপ্রিয় স্টলগুলোর নাম মুখে মুখে রটে যায়। কেবল ভালো স্বাদই নয়, অধিক লোকসমাগমের পেছনে একটি বড় কারণ থাকে খাবারের গুণগত মান। সাধারণত লোকজন সেই দোকানেই ভিড় জমান, যেখানকার খাবারের প্রতি তাদের নির্ভরতা আছে।
কিন্তু এর থেকেও আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- স্টলটিতে কারা খেতে যাচ্ছেন। মুলত স্টলের গ্রাহকদের মধ্যে যত বেশি বৈচিত্র্য থাকবে স্টলটি তত বেশি নিরাপদ। বিশেষ করে ভিড়ের মধ্যে নারী ও শিশুসহ পরিবার নিয়ে খেতে আসা লোকেরাও থাকলে অনায়াসেই সেই স্টলগুলো সেরা পছন্দ হতে পারে।
আরো পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
স্টলের অবস্থান
মূল পণ্য খাবার হওয়ায় দোকানের চারপাশের পরিবেশ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ডাস্টবিন এবং কলকারখানার পেছনে বর্জ্য বা রাসায়নিক নিষ্কাশনের জায়গায় আশেপাশে হলে সে স্টল এড়িয়ে চলতে হবে। নির্মাণাধীন ভবনের আশেপাশে এবং উচ্চ ট্রাফিক থাকা রাস্তার ফেরিগুলোতে বিক্রি হওয়া খাবার অধিক দূষণের শিকার হয়। এছাড়া স্টলের কাছে খোলা ম্যানহোল বা জমে থাকা পানি থাকলে সেই স্টলের খাবার না খাওয়াই ভালো।
স্বচ্ছ এবং আবৃত স্টোর
বাংলা হোটেলসহ রাস্তার অধিকাংশ ফুড কোর্টগুলো পথচারীদের প্রলুব্ধ করার জন্য তাদের পণ্যগুলো উন্মুক্ত করে রাখে। এই খাবারগুলো যে কতক্ষণ যাবৎ এরকম খোলা অবস্থায় রয়েছে তা জানার কোনো উপায় নেই। টাটকা বানিয়েই কোনো খাবার ঢেকে না রাখলে দূষিত পদার্থের সংস্পর্শে আসে। আর দীর্ঘক্ষণ রাখা হলে তা অনেক আগেই কুখাদ্যে পরিণত হয়।
অপরদিকে এমন অনেক স্টল দেখা যায় যেগুলো চারপাশ থেকে কাঁচ দিয়ে ঘেরা; শুধু যিনি রান্না করছেন তার দিকে অংশটা খোলা। শতভাগ না হলেও এগুলো উন্মুক্ত স্টলগুলো থেকে উত্তম। এখানে গ্রাহকরা খালি চোখেই খাবারগুলোর বর্তমান অবস্থা বা কিভাবে তা বানানো হচ্ছে- তা দেখতে পারেন।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
রান্নার জন্য ভেতরে রাখা উপকরণগুলো সঠিকভাবে ঢেকে রাখা হলে নিরাপত্তা আরও একধাপ বেড়ে যায়।
সদ্য তৈরি করা খাবার
স্ট্রিট ফুড খাওয়ার সেরা উপায় হচ্ছে সেই স্টলগুলোতে যাওয়া যেগুলো অর্ডার করার পর তাৎক্ষণিকভাবে খাবার বানিয়ে দেয়। সময় বেশি লাগলেও এই স্টলগুলোকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ইতোমধ্যে যে খাবারগুলো বানিয়ে রাখা হয়েছে সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। কেননা এগুলোর খাদ্যবাহিত রোগজীবাণুতে পরিপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা হজমজনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।
যারা আচার পছন্দ করেন, তাদের রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া আচারগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত। অনেক আগে বানানো থাকায় ইতোমধ্যে সেগুলো ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়। এমনকি আচারযুক্ত অন্যান্য খাবারও শরীরের জন্য ভালো নয়।
আরো পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
ভিড় থাকা দোকানগুলোতে পরিবেশনে তাড়াহুড়ো করায় খাবার কাঁচা থেকে যাচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রাঁধুনির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
ঘরের ভেতর-বাহির নির্বিশেষে যিনি খাবার বানানোর দায়িত্বে আছেন তার পরিষ্কার থাকা অপরিহার্য। ভ্রাম্যমাণ কিচেনের পেছনে বিক্রেতাকে হাতে গ্লাভ্স এবং মাথায় লম্বা টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখা গেলে এটি একটি ভালো লক্ষণ। তবে এই গ্লাভ্স নিয়মিত পরিবর্তন করা হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল দেওয়া দরকার। আবার এই গ্লাভ্স পরিহিত অবস্থায় খাবার তৈরি এবং টাকা লেনদেন করা উচিত নয়। অনেক দোকানে একজন খাবারের দায়িত্বে থাকেন, আরেকজন পরিচালনা করেন লেনদেনের দিকটা। এমন পরিষেবা উন্নত দোকানের পরিচায়ক।
বিক্রেতা তার বাসনপত্র কোথায় পরিষ্কার করছেন এবং রান্নার তেল কীভাবে রাখছেন সেগুলো খুঁটিয়ে দেখা দরকার।পাশাপাশি স্টলের আশেপাশে খাবারের উচ্ছিষ্ট পড়ে স্তূপ হয়ে থাকাটা রাঁধুনির অপরিচ্ছন্নতার কথা জানান দেয়।
আরো পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
২৮০ দিন আগে
ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ, অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি এমনকি মানসিক সুস্থতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই। শরীরের অভ্যন্তরে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নানাবিধ কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে উপযুক্ত খাবার। পাশপাশি প্রতিদিনের বিভিন্ন কাজে শরীরকে প্রাণবন্ত রাখার জন্য প্রত্যেকেরই আলাদা নজর থাকে পুষ্টিকর খাবারের প্রতি। তাই সঙ্গত কারণেই বিগত কয়েক বছর ধরে চলে আসছে ওমেগা-৩ ডিম নিয়ে গুঞ্জনটা। ডিমের বাজারে ব্যাপক হারে উপস্থিতির কারণে এটি সাধারণ ডিমের বিকল্প হিসেবেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। চলুন, ওমেগা-৩ ডিম আসলেই স্বাস্থ্যসম্মতো কি না তা যাচাই করে নেওয়া যাক।
ওমেগা-৩ কী
পিইউএফএ (পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড) এর যতগুলো ধরন রয়েছে সবগুলো একটি নির্দিষ্ট পুষ্টিগ্রুপের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ গ্রুপটির মাধ্যমে সরাসরি বোঝানো হয় পিইউএফএকে। আর এই পুষ্টিগ্রুপের নাম ওমেগা-৩, যেটি মূলত মাছের তেল এবং অন্যান্য খাদ্য উৎসে পাওয়া যায়। অবশ্য অনেকেই মাছের তেল ও ওমেগা-৩ কে একই জিনিস ভেবে থাকেন। কিন্তু ওমেগা-৩ একটি পুষ্টি উপাদান, আর মাছের তেল হচ্ছে সেই পুষ্টির অনেক উৎসের মধ্যে একটি।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো ৩ ধরনের। আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড (এএলএ), আইকোস্যা-পেন্টিনোয়িক অ্যাসিড (ইপিএ) এবং ডোকোস্যা-হেক্সিনোইক অ্যাসিড (ডিএইচএ)। এগুলোর মধ্যে ইপিএ এবং ডিএইচএ প্রধানত প্রাণিজ খাবার বিশেষত সামুদ্রিক খাবারে (প্রধানত মাছ) পাওয়া যায়। আর এএলএ’র সর্বোত্তম উৎস হলো উদ্ভিদজাত খাবার, যেমন আখরোট, তিসির বীজ, সয়াবিন এবং ক্যানোলার তেল।
আরও পড়ুন: নিরাপদ ব্রয়লার মুরগি কী, কেন খাবেন
ওমেগা-৩ ডিম বৃত্তান্ত
যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া মুরগি যে ডিম দেয়, সেগুলোই মূলত ওমেগা-৩ ডিম নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে মুরগি পালনের সময় এদের খাদ্য তালিকায় তিসির বীজ অথবা মাছের তেল মেশানো হয়। মুরগির বেশি বেশি ওমেগা-৩ গ্রহণ করার ফলে তাদের টিস্যুগুলোতে এই ফ্যাটি অ্যাসিডের কার্যকারিতা শুরু হয়। তিসির বীজ হজমের সময় এতে থাকা এএলএ এবং ডিএইচএ উভয় ফ্যাটি অ্যাসিড ডিমের কুসুমে গঠনে অংশ নেয়। ফলস্বরূপ ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিম তৈরি হয়।
ওমেগা-৩ মুরগির ডিম স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারি
স্বাস্থ্যকর কোষ ঝিল্লি
মানবদেহের প্রতিটি কোষ প্রধানত ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ কোষ ঝিল্লি দিয়ে পরিবেষ্টিত। এই ঝিল্লি দিয়ে কোষে সঠিক পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রবেশ করতে পারে এবং একই সঙ্গে কোষ থেকে বর্জ্য পদার্থগুলো দ্রুত বেরিয়ে যায়। এই কাজগুলোর সুষ্ঠু সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন হয় কোষ ঝিল্লির অখণ্ডতা এবং তারল্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।
ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতিতে কোষগুলো পানি এবং গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি ধরে রাখার ক্ষমতা হারায়। সেই সঙ্গে এগুলো অন্যান্য কোষের গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নেওয়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে। কোষ ঝিল্লিকে কার্যকরভাবে তার সর্বোত্তম অবস্থায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে ওমেগা-৩।
আরও পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
ত্বকের সুরক্ষা
মানব ত্বক একটি বেষ্টনি দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে, যেটি ত্বকের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ এবং এপিডার্মিসের ক্ষতি রোধ করতে সহায়তা করে। যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-৩ গ্রহণ এই বেষ্টনিকে আরও মজবুত করতে পারে। সেই সঙ্গে এটি ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানির যোগান নিশ্চিত করে।
এছাড়া ত্বকের বেষ্টনিতে কোটি কোটি উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। এগুলো বাইরে থেকে আগত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ত্বকের ভেতরে প্রবেশের আগেই ধ্বংস করে ফেলে। একটি ত্বকে ওমেগা-৩-এর পরিমাণ যত বেশি হয়, আক্রমণকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে এটি তত শক্তিশালী হয়।
হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস
ওমেগা-৩ এর গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড এএলএ হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে ‘প্ল্যাক’ কমায়। ধমনী প্ল্যাক হলো ধমনীর আভ্যন্তরীণ আস্তরণে এক ধরনের জমাট, যেটি সৃষ্টি হয় কোলেস্টেরল, চর্বি বা কোষীয় বর্জ্য পণ্যের মতো পদার্থের মাধ্যমে। এই জমাট বাধার কারণে ধমনী সরু এবং শক্ত হয়ে রক্ত প্রবাহকে বাধা দিতে পারে। প্ল্যাক ফেটে গেলে টিস্যুগুলোতে রক্ত না পৌঁছানোর কারণে সেগুলোতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এতে করে চূড়ান্ত অবস্থায় টিস্যুগুলো নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং হার্ট-অ্যাটক ও স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
টানা ৬ বছর ধরে এএলএ উচ্চ মাত্রায় গ্রহণ করলে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৫৯ শতাংশ কমে যায়। প্রতিদিন ১ থেকে ১ দশমিক ২ গ্রাম করে এএলএ গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এতে করে হৃদরোগ আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ঝুঁকি ২০ শতাংশেরও বেশি কমে যায়। এটি সুস্থ ব্যক্তির হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
ডিম ও ফ্যাটি অ্যাসিডের স্বাস্থ্যকর সমন্বয়
সাধারণ ডিমের পুষ্টিগুণ
ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ হোক বা না হোক, ডিম একাই প্রোটিন, ভিটামিন ডি, আয়রন এবং বি-১২ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিতে ভরপুর।
ডিমে থাকে কোলিন, যা মানবদেহের সুস্থ কোষঝিল্লি, মানসিক কার্যকারিতা এবং স্মৃতিশক্তির জন্য প্রয়োজন। এছাড়া এই কোলিন শরীরে হোমোসিস্টাইনের মাত্রা কম রাখতে সাহায্য করে। প্রোটিন সংশ্লেষণ ও বিপাক ব্যাহত করার পাশাপাশি হোমোসিস্টাইন কোষের বিভিন্ন কার্যকারিতা বিশেষ করে ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
ডিমে থাকা সেলেনিয়াম নামক খনিজটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য দরকার।
ভিটামিন বি এর পাওয়ার হাউজ হচ্ছে ডিম। এর মৌলিক উপাদান ফোলেট এবং রাইবোফ্ল্যাভিন শরীরের জন্য দরকারি খাবারগুলোকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। ফোলেট হোমোসিস্টাইনের মাত্রা কমাতে এবং জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে অংশ নেয়।
এছাড়া ডিম ভিটামিন এ ও ই এর একটি ভালো উৎস। ভিটামিন এ রাতের দৃষ্টিশক্তির প্রখরতা, কোষের সাধারণ বৃদ্ধি এবং ত্বকের সুস্থতায় কাজ করে। ভিটামিন এ এর সঙ্গে সম্পর্কিত দুটি উপাদান লুটেইন এবং জিয়াজান্থিন, যেগুলো পাওয়া যায় ডিমের কুসুমের হলুদ রঞ্জক পদার্থে। এগুলো চোখের রেটিনায় ম্যাকুলার অবক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে। ম্যাকুলার অবক্ষয় বার্ধক্যের সময় স্থায়ী ভাবে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেয়।
আরও পড়ুন: কাঁসা, পিতল ও তামার তৈজসপত্র ব্যবহার কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, বিজ্ঞান কী বলে?
ভিটামিন ই একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ভিটামিন সি এবং সেলেনিয়ামের সঙ্গে মিলে শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেল মুক্ত করে। ফ্রি-র্যাডিকেলের কারণে প্রদাহ জনিত রোগ এবং টিস্যুর ক্ষয় হয়ে থাকে।
ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিমের পুষ্টিগুণ
একটি ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিমে ৬০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকতে পারে, যা সাধারণ ডিমের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। এই ডিমগুলো সাধারণ ডিমের তুলনায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং সামান্য কম কোলেস্টেরল প্রদান করে। ওমেগা-৩-এর কার্ডিও-প্রতিরক্ষামূলক প্রভাবের কারণে এই ডিমগুলো উচ্চ কোলেস্টেরল থাকা এবং হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বেশ উপকারী।
এছাড়া ইপিএ এবং ডিএইচএ বিভিন্ন খাবার উৎসে পাওয়া যায়। কিন্তু এএলএ’র সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য উৎস হচ্ছে ডিমের কুসুম। তাই এএলএ’র উপরোক্ত উপযোগিতাগুলো পেতে হলে ওমেগা-৩ ডিম খেতে হবে।
আরও পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
শেষাংশ
ওমেগা-৩ এর এএলএ (আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড) পুষ্টি উপাদানের স্বাস্থ্যগুণের বিচারে ওমেগা-৩ মুরগির ডিম নিঃসন্দেহে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য। বিশেষ করে ওমেগা-৩ এর অন্যান্য উৎসগুলোর তুলনায় ডিম সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার সব থেকে পরিচিত এবং উপাদেয় এই খাবারটি বাড়ন্ত বয়স থেকে শুরু করে সব বয়সেই প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। সেখানে ৫ গুণ বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি বিকল্প দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসে আরও বেশি সহায়ক হতে পারে।
আরও পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
২৯৬ দিন আগে
তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে মাত্রাতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর আশঙ্কাজনক হারে পানি হারাতে শুরু করে। পরিণতিতে দেখা দেয় পানিশূন্যতা, যার দীর্ঘস্থায়ীত্ব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। মানবদেহের এই ভারসাম্যহীনতা মাথা ঘোরা, ক্লান্তি ও শুষ্ক মুখমণ্ডলের মতো উপসর্গের মাধ্যমে প্রকাশ পেতে শুরু করে। এই অসহনীয় খরতাপের সময়টাকে মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে উচ্চ পানীয় উপাদান সমৃদ্ধ শাকসবজি। এই খাবারগুলো শরীরের হারানো পানি পুনরায় ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দেহের রোগমুক্তিতেও সাহায্য করে। চলুন, তীব্র গরমে পানিশূন্যতা দূর করতে সেই শাকসবজিগুলোর ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
যে সবজিগুলো তীব্র গরমে শরীরে পানির ঘাটতি মেটাতে সক্ষম
শসা
প্রায় ৯৫ শতাংশ পানিতে পরিপূর্ণ শসা গরমের জন্য উপযোগী সবজিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে সহায়তা করে। শসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে বিটা ক্যারোটিন। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরের ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফ্রি র্যাডিকেল হলো জোড়াহীন ইলেকট্রন, যা কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণ হতে পারে।
রোদের তীব্র রশ্মির কারণে ত্বকে রোদে পোড়া ব্যথা, ফোলাভাব এবং ত্বকের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অবস্থা থেকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থায় সাহায্য করতে পারে শসা। চোখের নিচে এক বা দুই টুকরো শসা রাখলে চোখের কালো দাগ ও ফোলাভাব কমে আসে।
আরও পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
টমেটো
বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও পটাশিয়ামের আধার টমেটোতে পানির পরিমাণ প্রায় ৯৫ শতাংশ। লাইকোপিন নামক পদার্থ টমেটোর উজ্জ্বল লাল রঙের কারণ। শুধু তাই নয়, এই উপাদানের মধ্যে রয়েছে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্য। তাই এই ফলের রয়েছে মানবদেহের কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা।
এই একই কারণে টমেটো ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। লাইকোপিনের পাশাপাশি অন্যান্য উদ্ভিদ যৌগ রোদে পোড়া থেকে রক্ষার কাজে অংশ নেয়।
স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারের মতো ডিজিটাল ডিভাইস থেকে এক ধরনের নীল আলো নির্গত হয়, যা চোখের জন্য ক্ষতিকর। টমেটোতে থাকা লুটেইন এবং জিক্সানথিন নামক পদার্থ এই নীল আলোর বিরুদ্ধে চোখের সুরক্ষায় কাজে লাগে।
উপরন্তু, এগুলো চোখের ক্লান্তি এবং চোখের উপর চাপ জনিত কারণে মাথাব্যথা উপশমে সাহায্য করতে পারে।
আরও পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
পালং শাক
তাজা, হিমায়িত, বাষ্প বা দ্রুত সিদ্ধ যে কোনো অবস্থায়ই পালং শাক বেশ পুষ্টিকর একটি খাবার। কাঁচা পালং শাকে রয়েছে ৯১ শতাংশ পানি, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন ও ফোলেট। এই শাকে থাকা লুটিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বার্ধক্যজনিত কারণে চোখের রোগ ও ছানি পড়া থেকে রক্ষা করে।
এছাড়া লুটেইন চোখের লেন্সের উপর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
শরীরের ত্বকসহ নানা ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের টিস্যু বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন এ অপরিহার্য, যা পালং শাকের অন্যতম উপাদান। শুধু তাই নয়, ভিটামিন এ ত্বকের পানিশূন্যতা দূর করতেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এর ফলে মুখে সূক্ষ্ম রেখা এবং বলিরেখা কমে যায়।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে করণীয়
মূলা
মাঝারি পরিমাণ ভিটামিন সি সম্পন্ন কাঁচা মূলায় পানির অংশ ৯৫ শতাংশ। তবে এর পাতায় থাকে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। শিকড়ের চেয়ে পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যাটিচিন, পাইরোগালল, ভ্যানিলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য ফেনোলিক যৌগ। এগুলো সম্মিলিতভাবে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে শরীরকে রীতিমতো একটি প্রতিরক্ষা দূর্গে পরিণত করে।
এছাড়াও মূলায় রয়েছে কিডনি বিশোধনের ক্ষমতা। এটি পাকস্থলির বিভিন্ন এনজাইমকে সক্রিয়করণে সাহায্য করে। এই এনজাইমগুলো নানা ধরনের বিষক্রিয়া থেকে কিডনিসহ আভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাকে মুক্ত রাখে।
আরও পড়ুন: নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
৩৩৩ দিন আগে