���������������
কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
প্রায় সব বয়সের লোকেদেরই হাল্কা নাস্তা হিসেবে প্রিয় পছন্দ কেক ও বিস্কুট। জন্মদিন সহ বিভিন্ন উৎসবমুখর অনুষ্ঠানে সবচেয়ে ভালো লাগা উপহারগুলোর মাঝে অনায়াসেই জায়গা করে নেয় এই মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো। কিন্তু খাবারগুলো যে কতটা ক্ষতিকর তা দুঃখজনকভাবে সবার দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। নিত্য দিনের খাদ্যাভাসে এই খাবার দু’টির উপস্থিতি দীর্ঘ মেয়াদে ভয়াবহ স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। কিন্তু কেক ও বিস্কুটের বিকল্প হিসেবে এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা নিমেষেই মুক্তি দিতে পারে সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি থেকে। চলুন, কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলোর পাশাপাশি সেই বিকল্প পুষ্টিকর খাবারগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
কেক ও বিস্কুট খেলে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হয়
কেক ও বিস্কুট রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়, কারণ এতে থাকে প্রচুর চিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অধিক পরিমাণে খাওয়া হলে চূড়ান্ত পর্যায়ে ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ হতে পারে।
এ ধরণের বেকারি পণ্যগুলোতে সাধারণত তরল উদ্ভিজ্জ তেল, মাখন, পাম এবং নারকেল তেল ব্যবহার করা হয়। ফলে, এগুলোতে থাকা চর্বিগুলো কম ঘনত্বের কোলেস্টেরল (এলডিএল) বাড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য, পাম তেল সস্তা এবং খাওয়ার জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকারক তেলগুলোর মধ্যে একটি। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
এছাড়া শর্করা এবং স্টার্চ সম্পন্ন খাবারের কারণে দাঁতে ক্যাভিটিস হতে পারে। কেক ও বিস্কুটের কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বি ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুন: জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
সাধারণ মিষ্টি বিস্কুটে প্রতি ২৫ গ্রামে শূন্য দশমিক ৪ গ্রাম লবণ থাকে। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এছাড়া এতে দেহে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, বিধায় শরীর ভরপুর অনুভূত হয় এবং ওজন বৃদ্ধি পায়।
এ ধরণের বেকারি পণ্যে থাকে বিউটিলেটেড হাইড্রোক্সাইনিসোল (বিএইচএ) এবং বুটিলেটেড হাইড্রোক্সিটোলুইন (বিএইচটি)। এগুলো হলো প্রিজার্ভেটিভস যা মানুষের রক্তের জন্য ক্ষতিকর।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০ কফি
কাজের একঘেয়েমিতা কাটানোতে যে কোনও পানীয় -এর এক যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে কফি। পাশাপাশি পুষ্টিগুণেও পিছিয়ে নেই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে চাষকৃত এই উদ্ভিজ্জ উপাদানটি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে নিজের এক সমৃদ্ধ ইতিহাসকে লালন করে এই শক্তিবর্ধক পানীয় এখনও সকলের প্রিয়। শুধুমাত্র যে জীবনধারায় একটি স্বতন্ত্র সংযোজন তা নয়, সামাজিক মর্যাদারও এক অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই কফির। স্বভাবতই ধরন ভেদে বিভিন্ন কফিতে দামের বেশ তারতম্য থাকে। শুধু কি তাই, এগুলোর ভেতর কিছু কিছুর দাম একদম চোখ কপালে তুলে দেয়ার মতো! তেমনি কয়েকটি দামী কফির তথ্যসমগ্র এই নিবন্ধটি। চলুন, বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০টি কফি সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
পৃথিবীর সব থেকে দামি ১০টি কফি
ব্ল্যাক আইভরি
থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে সুরিন প্রদেশে এর উৎপত্তি। মূলত চিয়াং সেনের গোল্ডেন ট্রায়্যাঙ্গেল এশিয়ান এলিফ্যান্ট ফাউন্ডেশনে এটি প্রথম উৎপাদিত হয়েছিল।
ব্ল্যাক আইভরি তার অনন্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য বিশ্ববিখ্যাত। অ্যারাবিকা কফি বীজগুলো প্রথমে হাতিদের খাওয়ানো হয়। অতঃপর সেগুলো সংগ্রহ করা হয় তাদের বর্জ্য থেকে। বীজগুলো হাতির পেটে বিভিন্ন এনজাইমের মাধ্যমে পরিপাক ক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয়। হাতির পাচক এনজাইম বীজের প্রোটিন ভেঙ্গে ফেলে, যার ফলে কফি মসৃণ ও কম অম্লীয় হয়। এই অনন্য গাঁজন প্রক্রিয়াটি কফির ব্যতিক্রমী ঐতিহ্যবাহী স্বাদের জন্য দায়ী।
এই স্বাদের জন্য এটি বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল কফি হিসেবে পরিচিত, প্রতি কিলোগ্রামে যার মূল্য প্রায় ২ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা ২ লাখ ১৮ হাজার ৮৬১ টাকা। বিলাসবহুল হোটেলগুলোতে এই অসাধারণ কফির এক কাপ প্রায় ৫০ মার্কিন ডলারে পরিবেশন করা হয়।
আরও পড়ুন: খাদ্যতালিকায় ৫ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
কপি লুওয়াক
ইন্দোনেশিয়া, সুমাত্রা, জাভা, বালি, সুলাওয়েসি এবং পূর্ব তিমুরে উৎপাদিত হয় এর বীজ। এর উৎপাদনের আরও একটি জায়গা ফিলিপাইন, যেখানে এর বিভিন্ন আঞ্চলিক নাম শোনা যায়। অবশ্য সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনই বহুলাংশে প্রসিদ্ধ।
এই কফি তৈরি পদ্ধতির সঙ্গে এশিয়ান পাম সিভেট নামের বিড়ালের হজম প্রক্রিয়া ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর এই কারণে এটি সিভেট কফি নামেও পরিচিত। সিভেট কফি চেরি খাওয়ার পর এদের মল থেকে সংগ্রহ করা পরিবর্তিত বীজগুলো। সিভেটের পরিপাক প্রণালীর ভেতর দিয়ে যাবার সময় গাঁজনের মাধ্যমে এগুলোর আভ্যন্তরীণ গঠন পরিবর্তন হয়। আর এই গাঁজনের ফলেই কফি এক স্বতন্ত্র স্বাদের অধিকারী হয়।
এই ব্যতিক্রমী স্বাদ কফি লুওয়াককে দিয়েছে আকাশচুম্বী দাম। প্রাথমিক অবস্থায় সংগৃহীত এর বীজের জন্য খরচের অঙ্ক প্রতি কেজিতে ১ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যা বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তর করলে দাড়ায় ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬০ টাকা। অবশ্য বীজের উৎপত্তিস্থল এবং গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে খুচরা মূল্য ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
ওসপিনা গ্র্যান ক্যাফে
কলম্বিয়ার আন্দিজের আগ্নেয়গিরির উচ্চভূমি বিশেষ করে ফ্রেডোনিয়া ও অ্যান্টিওকিয়া অঞ্চল এই কফি বীজের উৎপাদনস্থল।
কলম্বিয়ান সংস্কৃতিতে ওসপিনা কফি অপরিসীম তাৎপর্য বহন করে। ১৮৩৫ সালে ডন মারিয়ানো ওসপিনা রদ্রিগেজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এই কফি বিশ্বব্যাপী কফির জনপ্রিয়তায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষা, উদ্ভাবন এবং শিল্পের অগ্রগতির প্রতি ওসপিনা পরিবারের নিবেদন এখনও প্রভাবিত করে চলেছে কলম্বিয়ান কফি সংস্কৃতিকে। তাই শুধু তার ব্যতিক্রমী স্বাদের জন্যই নয়, এর ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্যও ওসপিনা কফি বিশ্ব জুড়ে সুপরিচিত।
এই কফির রেসিপিতে ব্যবহৃত নির্দিষ্ট উপাদান, কফির উৎপত্তিস্থল এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির কারণের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয় এর দাম। এর কিছু সাধারণ জাত প্রতি পাউন্ড ১২০ মার্কিন ডলারে(১৩ হাজার ১৩২ বাংলাদেশি টাকা) বিক্রি হয়। কিন্তু একচেটিয়া ওসপিনা গ্র্যান্ড শ্রেণীর লোকেরা এর প্রতি পাউন্ডের জন্য ১ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার(১ লাখ ৫৩ হাজার ২০৩ বাংলাদেশি টাকা) ব্যয় করে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০টি খাবার
এল ইঞ্জেরতো পিবেরি
এই কফির উৎপত্তি উচ্চ-মানের কফি উৎপাদনের জন্য স্বনামধন্য মধ্য আমেরিকার গুয়াতেমালায়। এগুলো প্রকৃতপক্ষে সিয়েরা দে লস কুচুমাটানেসের নিকটবর্তী হুয়েহুতেনাঙ্গোর উচ্চভূমিতে জন্মে। খামারের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৯২০ মিটার পর্যন্ত।
আগুইরে পরিবার কয়েক প্রজন্ম ধরে গুণমান এবং স্থায়িত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়ে খামার পরিচালনা করে আসছে। খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ এল ইঞ্জেরতো লাভাবিহীন মাটি, প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং সর্বোত্তম তাপমাত্রা দ্বারা প্রভাবিত অঞ্চলের সুবিধা পায়।
কফির বিশেষত্ব বাড়ানোর জন্য এটি এক সুক্ষ্মতিসুক্ষ্ম প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। খামারে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পৃথকীকরণ পদ্ধতিতে পিবেরি বীজগুলো আলাদা করা হয়। অতঃপর এগুলোকে একক-চ্যানেল ওয়াশিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পরিচালিত করা হয়। এখানে দুই রাউন্ডে বীজ ভাঙ্গন চলতে থাকে। এই প্রক্রিয়াগুলো সামগ্রিকভাবে কফিতে একটি দারুণ ঘ্রাণ যুক্ত করে।
এর প্রিমিয়াম মূল্য সঠিক যত্ন ও দক্ষতা সহ ব্যতিক্রমী বীজ উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল কফিগুলোর সারিতে শামিলকৃত এল ইঞ্জেরতোর মূল্য পাউন্ড প্রতি প্রায় ৫০০ মার্কিন ডলার(৫৪ হাজার ৭১৫ বাংলাদেশি টাকা)।
আরও পড়ুন: প্যাকেটজাত আলুর চিপস কেন শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
এস্মারেল্ডা গেইশা
একে সংক্ষেপে গেইশা কফি নামেই সবাই চেনে। কফির দেশ ইথিওপিয়ার গোরি গেশা বনে এর উৎপত্তি। সর্বপ্রথম ইথিওপিয়াতে উদ্ভূত হলেও, এটি এখন আফ্রিকা, এশিয়া এবং আমেরিকার বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত হয়। পানামানিয়ান গেইশা জাতটি বিশেষভাবে তার অদ্বিতীয় জেনেটিক ফিঙ্গারপ্রিন্টের জন্য বিখ্যাত।
এস্মারেল্ডার গেইশার মুখে লেগে থাকা স্বাদের নেপথ্যে রয়েছে জুঁই ফুলের নির্যাস, চকোলেট, মধু এবং কালো চা। যথাযথ যত্নের মধ্যে নির্দিষ্ট ধরনের চাষ এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির ফলাফল এই অস্থিরতা দূর করা পানীয়টি। এর ব্যতিক্রমী স্বাদ সৃষ্টির জন্য বীজগুলো সাবধানে হাতে বাছাই করা হয়, যেন ক্ষেত থেকে কেবল পরিণতগুলোই উঠে আসে। উপরন্তু ভেজা অথবা শুকনো প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কফির চূড়ান্ত স্বাদের বৈশিষ্ট্যকে অক্ষুন্ন রাখা হয়।
এর আন্তর্জাতিক খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে বেরে চলেছে এর দাম। কয়েক বছর ধরেই পৃথিবীর সব থেকে ব্যয়বহুল কফিগুলোর একটি হিসেবে এর নাম উঠছে। এস্মারেল্ডা গেইশার রেকর্ড মূল্য পাউন্ড প্রতি ৬০১ মার্কিন ডলার (৬৫ হাজার ৭৬৮ বাংলাদেশি টাকা)।
আরও পড়ুন: মাশরুমের পাঁচ পদের সহজ রেসিপি
সেন্ট হেলেনা
নামকে অনুসরণ করে সঙ্গত কারণে এই কফি জন্মে ব্রিটিশদের বিদেশি অঞ্চল আটলান্টিক দ্বীপ সেন্ট হেলেনাতে। এখানকার আগ্নেয়গিরির মাটি এবং হালকা জলবায়ুতে একচেটিয়াভাবে চলে এই কফির চাষ।
এই কফির নেপথ্যে রয়েছে ১৮ শতকে দ্বীপে আগত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইতিহাস। তাদের মাধ্যমেই দ্বীপবাসীদের মধ্যে কফির আগ্রহ স্থাপন হয়। এখনও এটি কফি উৎসাহীদের শক্তি বর্ধক তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি দ্বীপের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই কফি তৈরির প্রক্রিয়ার জন্য সেন্ট হেলেনা দ্বীপের অনূকুল পরিবেশ প্রধান প্রভাবক। দ্বীপের আগ্নেয়গিরির মাটি এবং হালকা জলবায়ু সাহায্য করে এর বেড়ে ওঠাতে। সেই সঙ্গে যত্নশীল চাষাবাদ এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি এতে দান করে জগদ্বিখ্যাত স্বাদ। এসব কিছু একত্রে অবদান রাখে আমুল বৈচিত্র্যে, যার জন্য এর একটি আলাদা জায়গা তৈরি হয়েছে কফি শিল্পে।
সেন্ট হেলেনা কফির সীমিত যোগান এবং ব্যতিক্রমী স্বাদ নির্ধারণ করে এর প্রিমিয়াম মূল্য। নিয়মিত জাতগুলো প্রতি পাউন্ডে প্রায় ৮০ মার্কিন ডলারে(৮ হাজার ৭৫৪ বাংলাদেশি টাকা) বিক্রি হয়। এই ধরনের কফির সমকক্ষ না থাকায় কখনো এর দামের পরিধি বিস্তৃত হয় পাউন্ড প্রতি ১৪৫ মার্কিন ডলার(১৫ হাজার ৮৬৭ বাংলাদেশি টাকা) পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
মোলোকাই প্রাইম
অসাধারণ হাওয়াইয়ান এই ঐশ্বর্য্য স্থানীয় আগ্নেয়গিরির মাটিসহ পুরো মোলোকাই দ্বীপের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের কেন্দ্রবিন্দু। এই কফির জাতটি প্রাথমিকভাবে লাল কাতুয়াই বীজের সমন্বয়ে গঠিত, যা দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চাষ করা হয়ে আসছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮০-এর দশকে। মোলোকাই দ্বীপের অনন্য ভৌগলিক অবস্থান এবং খনিজ সমৃদ্ধ মাটি এই গাছের বিকাশের জন্য একটি আদর্শ ভিত্তি প্রদান করে।
এই কফির মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর শক্তিশালী, সতেজ ও মজবুত গঠন। এর বীজ অধিক তাপে রোস্ট করার জন্য বেশ উপযুক্ত। এই গভীর শক্ত মেটে ভাবটা এসেছে আগ্নেয়গিরির মাটিতে বেড়ে ওঠার কারণে। ফলশ্রুতিতে, এর প্রক্রিয়াকরণটিও সম্ভব হয় বেশ ঝক্কি-ঝামেলামুক্তভাবে।
ব্যতিক্রমী মানের মোলোকাই প্রাইম কফির দামের তারতম্য ঘটে এর চাষ এবং প্রক্রিয়াকরণের সময় গৃহীত যত্নের উপর ভিত্তি করে। সাধারণত এর প্রতি পাউন্ডের মূল্য ৬০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৬ হাজার ৫৬৬ টাকা।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
কোনা এক্সট্রা ফ্যান্সি
এই কফি এসেছে হাওয়াইয়ের বিগ আইল্যান্ডের বিখ্যাত কোনা অঞ্চল থেকে। কফি চাষের সর্বোত্তম পরিবেশের জন্য বেশ সুপরিচিত এই জায়গা। হুয়ালালাই এবং মাউনা লোয়া ঢাল সহ কোনা জেলাগুলো এক সুবিধাজনক পরিবেশ প্রদান করে। এই পরিবেশে অন্তর্ভুক্ত রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল ও বিকালের মেঘ-বৃষ্টি, শীতল রাত এবং খনিজ সমৃদ্ধ আগ্নেয়গিরির মাটি। পরিবেশের অসাধারণ এই সমন্বয় সাধনটিই নামের মত কফিটির স্বাদেও দিয়েছে ফ্যান্সি ফ্লেভার।
এর বিশেষত্ব হচ্ছে- এর স্বাদের ভারসাম্য এবং পানীয়ের রঙের উজ্জ্বলতা। দামের তাৎপর্যটি মূলত কোনা অঞ্চলের নামের সঙ্গে সংযুক্ত। এর সঙ্গে অবদান রাখে যত্ন সহকারে প্রক্রিয়াকরণটিও। পাউন্ড প্রতি ৭৫ মার্কিন ডলার (৮ হাজার ২০৭ বাংলাদেশি টাকা) খরচ করা হয় এই কফির পেছনে।
আরও পড়ুন: চিপসের পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবার
ফ্যাজেন্ডা স্যান্তা ইনেস
এই ব্রাজিলিয়ান রত্নের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ মিনাস গেরাইসের কারমো দে মিনাস অঞ্চলে। মান্টিকেইরা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান এই খামারের, যেটি কয়েক যুগ ধরে গুণমান নিশ্চিত করে কফি চাষ করে আসছে।
বীজগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যায়। আবাদের সময় বীজের ত্বক শুকানোর কারণে ফলের স্বাদগুলো বীজের মধ্যে ঢুকতে পারে।
ফ্যাজেন্ডা স্যান্তা ইনেসের বিশেষ দিকগুলো হলো এর পানীয় এর মিষ্টি, উজ্জ্বল অম্লতা এবং লেবু-লবঙ্গ ফ্লেভার। এর চকোলাটি বডি এবং ক্রিমি মাউথফিল প্রতিটি চুমুককে স্বাদ এবং একই সঙ্গে সুগন্ধের আমেজ দেয়।
কফির বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি, ঐতিহ্য এবং উদ্ভাবনের জন্য এর দামেও বেশ তারতম্য আসে। পাউন্ড প্রতি এই কফির মূল্য ৫০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৫ হাজার ৪৭১ টাকা।
আরও পড়ুন: জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে নাটোরের কাঁচাগোল্লা
জ্যামাইকান ব্লু মাউন্টেন কফি
জ্যামাইকার বিখ্যাত নীল পাহাড়ে জন্মানো কফির জাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঐশ্বর্য্যমন্ডিত কফি হচ্ছে এই ব্লু মাউন্টেন। এই অঞ্চলের উচ্চতা, জলবায়ু এবং মাটির সমন্বয় কফির ব্যতিক্রমী এবং পৃথিবী বিখ্যাত স্বাদে অবদান রাখে। প্রায় ৫ হাজার ফুট উপরে জন্মানো কফি চেরিগুলো সাবধানে হাতে বাছাই করা হয়। অন্যান্য কফি বীজের মত এগুলোতে হালকা তীক্ত স্বাদ নেই। আর এই ভিন্নতা বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে এদের প্রসিদ্ধি।
এই কফিটি টিয়া মারিয়া কফি লিকার তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। এটি কফিটিকে শুধুমাত্র এক কাপ পানীয় থেকে নিয়ে গেছে অনেকটা দূরে, যা এর বহুমুখিতার পরিচায়ক।
জ্যামাইকান ব্লু মাউন্টেন কফি বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল এবং সব থেকে কাঙ্ক্ষিত কফিগুলোর মধ্যে একটি। এর দাম প্রতি পাউন্ডে ১৪০ মার্কিন ডলার (১৫ হাজার ৩২০ বাংলাদেশি টাকা)।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর সতেজ রাখতে আইস-টি
পরিশিষ্ট
বিশ্বের সবচেয়ে দামি এই ১০টি কফি প্রমাণ করে যে, এই পানীয় এর যে কোনও প্রজন্মকে জয় করার শক্তি আছে। হোক সেটা অন্ধ কোনও গলি-ঘুপচির টঙের দোকানে বা চোখ ধাঁধানো আলোয় ভরা কোন পাঁচ-তারকা রেস্তোরাঁয়। কফি উৎসাহী হলেই প্রত্যেকে অকপটে আবিষ্কার করবে নিজেকে কফি কাপ হাতে। প্রতি চুমুকে স্বাদের আহ্বান ছাড়াও হাজারও আড্ডা ও সঞ্জীবনী শক্তির এক অনন্য রহস্যময়তার ধারক এই পানীয়। সেখানে এই কফিগুলোর সীমা ছাড়ানো দামের পরিধিতে বিচরণ করে অসংখ্য মানুষের জীবিকা। আর সেই অগণিত প্রথম চুমুকের শব্দ লুটায় যেন খেত থেকে লাখো লাখো কফি বীজ নিঙড়ানোর ইতিহাসের প্রতিধ্বনিতে।
আরও পড়ুন: কিডনি পরিশোধনকারী ১০টি ভেষজ চা
কিডনি পরিশোধনকারী ১০টি ভেষজ চা
কিডনি এমন এক প্রাকৃতিক ফিল্টার, যেটি অবিরাম রক্ত পরিশুদ্ধ করে ভারসাম্য বজায় রাখে মানবদেহে। এই স্বয়ংক্রিয় কার্যপ্রণালীতে কিঞ্চিত অসঙ্গতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সামগ্রিক রেচনজনিত কার্যাবলীতে।সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে এটি গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার দিকে অগ্রসর হয়। ভেষজ চা পান এই আশঙ্কা থেকে মুক্তির একটি প্রতিরোধমূলক উপায় হতে পারে। শুধুমাত্র নিয়ত জীবন ধারার একটি জনপ্রিয় অভ্যাসই নয়; পরিমিত চা পান সুস্থতায় সমৃদ্ধির পারিচালক। তাই কিডনি থেকে দূষিত পদার্থ নিগমনে সাহায্যকারী ১০টি ভেষজ চা-এর কার্যকারিতা নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের নিবন্ধ। চলুন, চা পানের অভ্যাস থেকে সর্বোচ্চ উপযোগিতা বের করে আনতে এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
কিডনিকে সুস্থ রাখার ১০টি ভেষজ চা
ড্যান্ডেলিয়ন চা
এই চা-এর উৎস ড্যান্ডেলিয়ন নামক উদ্ভিদ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Taraxacum officinale। গাছের পাতা, শিকড় এবং ফুল; প্রত্যেকটি অবদান রাখে এই চা উৎপাদনে।
এর পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে, ই এবং ফোলেট। মানবদেহে প্রয়োজনীয় খনিজের মধ্যে এটি আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়ামের যোগান দিতে পারে। এর শিকড়ে আছে প্রচুর পরিমাণে ইনুলিন, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে।
ড্যান্ডেলিয়নের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। রক্তে শর্করা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ড্যান্ডেলিয়ন চা বেশ কার্যকর।
ড্যান্ডেলিয়ন চা বানানোর জন্য এর পাতা বা শিকড় সংগ্রহ করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পাতা থেকে চা বানাতে পাতাগুলো গরম পানিতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হয়। আর শিকড়ের বেলায় পিষে রস বের করে নিতে হয়।
আরও পড়ুন: রোজায় সুস্থ থাকার ৫টি উপায়
নেটল চা
নেটল চা-এর উদ্ভিদের নাম স্টিঙ্গিং নেটল (Stinging Nettle), যার বৈজ্ঞানিক নাম Urtica dioica।
এই গাছের পাতা চা তৈরির প্রধান উপাদান। এই পাতায় আছে ভিটামিন সি, ডি এবং কে। আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ উপাদানের পাশাপাশি আছে ফ্যাটি অ্যাসিড। এই চা পলিফেনল এবং ক্যারোটিনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস।
নেটল চায়ে থাকা যৌগ প্রদাহ কমাতে এবং আর্থ্রাইটিসের মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। মূত্রনালীর সংক্রমণ উপশমে এটি বেশ সহায়ক। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য জয়েন্টের ব্যথা এবং পেশির খিঁচুনি থেকে মুক্তি দিতে পারে।
নেটল চা বানাতে হলে প্রথমে হাতে গ্লাভস পরে তাজা নেটল পাতা সংগ্রহ করতে হবে। পাতাগুলোকে গরম পানিতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পরেই এটি চা হিসেবে পানের উপযোগী হয়ে ওঠে।
হিবিস্কাস চা
হিবিস্কাস চা-এর উদ্ভিদের নাম হিবিস্কাস; বৈজ্ঞানিক নাম Hibiscus sabdariffa। গাছের শুকনো ক্যালিস তথা ফুলের বাইরের অংশ থেকে চা তৈরি করা হয়। লাল রঙের এই চায়ে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আয়রন ও ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ।
স্বতন্ত্র ট্যাঞ্জি গন্ধের জন্য সুপরিচিত এই চা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি নিয়মিত সেবনে স্বল্প মাত্রার কোলেস্টেরল উন্নত হতে পারে। হিবিস্কাস চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ফ্রি র্যাডিক্যাল এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এছাড়া এর হজমে সহায়তা করা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষমতা আছে।
হিবিস্কাস ক্যালিস সংগ্রহের পর শুকানোর পরে সেগুলো ৫-১০ মিনিট গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখলেই চা তৈরি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর সতেজ রাখতে আইস-টি
পার্সলে চা
পার্সলে গাছের (বৈজ্ঞানিক নাম Petroselinum crispum) পাতা থেকে প্রাপ্ত পার্সলে চা প্রচুর পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন। অন্যান্য ভেষজ চায়ের থেকে ভিন্ন এই চা বেশ সুস্বাদু। ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ সমৃদ্ধ পার্সলে চা কিডনির কার্যকারিতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। এতে করে দেহ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি পায়।
পার্সলে চায়ে আছে মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য। এতে থাকা তেলের মতো উপাদানগুলোর কারণে প্রস্রাবের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এতে করে শরীরে থাকা টক্সিন বের হয়ে যায় এবং একই সঙ্গে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে যায়।
পার্সলে চায়ের উপকারিতা উপভোগ করতে গরম পানিতে এক মুঠো তাজা পার্সলে পাতা প্রায় ৫-১০ মিনিট জ্বাল দেওয়াই যথেষ্ট।
ক্র্যানবেরি চা
Vaccinium macrocarpon বৈজ্ঞানিক নামের ক্র্যানবেরি উদ্ভিদের ফল থেকে তৈরি হয় ক্র্যানবেরি চা। সুস্বাদু এই ফলটি অনেক স্বাস্থ্যগুণের আধার। এতে থাকা প্রাকৃতিক যৌগ প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিন্স মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।
এই চায়ে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ফলে এটি শরীরকে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষম করে তোলে। মূত্রনালীর প্রদাহ এবং অস্বস্তি দূর করাতেও এই চা অপরিসীম ভূমিকা পালন করে।
ক্র্যানবেরি চা তৈরি করতে হলে প্রথমে পানি সিদ্ধ করে সামান্য ঠাণ্ডা করতে হবে। অতঃপর তা তাজা ক্র্যানবেরি ভর্তি কাপে ঢেলে ঢেকে রাখতে হবে। প্রায় ১০-১৫ মিনিট পর তৈরি চা পানের উপযোগী হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: এই গরমে ট্যানিং এড়াতে কিছু টিপস
গরমে শরীর সতেজ রাখতে আইস-টি
চায়ের কোনো ঋতু নেই! তবে এই গ্রীষ্মে প্রাত্যহিক পানের গরম চায়ের পরিবর্তে শীতল, সতেজ ও সুস্বাদু আইস-টি খেতে পারেন। আইসড-টি আপনার শরীর ও মনকে চাঙ্গা ও রিফ্রেশড রাখতেও সহায়তা করে।
বর্তমানের সর্বাধিক জনপ্রিয় কয়েকটি আইস-টি হলো-
ব্ল্যাকবেরি আইসড চা
ফ্রেশ বা ফ্রোজেন ব্ল্যাকবেরি দিয়ে এই চা বানাতে পারেন। প্রথমে মিষ্টি ব্ল্যাকবেরিগুলো ব্লেন্ড করে নিন, তারপরে পুদিনা ও বেকিং সোডার সঙ্গে মেশান। এরপর পাত্রে পানি গরম করে তাতে চা পাতা দিয়ে ২/৩ ফুটিয়ে নিন। এরপর ছেঁকে নিয়ে তাতে ব্ল্যাকবেরির মিশ্রণ মেশান। স্বাদ অনুযায়ী চিনি বা মধু মিশিয়ে ১ ঘন্টার জন্য ফ্রিজে রাখুন। পরিবেশন করার আগে প্রয়োজনে পানি মিশিয়ে ঠাণ্ডা কমান।
আইসড পুদিনা চা
চায়ে পুদিনা পাতা দিলে সত্যিই দারুণ স্বাদ পাওয়া যায়। পাত্রে পানির মধ্যে পুদিনা পাতা দিয়ে ১৫ মিনিট ফোটান, এরপর চা পাতা দিয়ে ২/৩ ফোটান। এবা চা ছেঁকে নিয়ে তাতে স্বাদমতো চিনি বা মধু মেশান। কিছুটা ঠান্ডা হলে ১ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখলেই আইসড পুদিনা চা তৈরি।
তবে আপনি যদি হালকা পুদিনা স্বাদ পছন্দ করেন, তবে পুদিনা পাতা ৫ মিনিট পানিতে দিয়ে ফোটান, এরপর তুলে ফেলুন। এরপর চা পাতা দিয়ে ২/৩ মিনিট পর চা ছেঁকে নিন। এতে স্বাদ অনুযায়ী চিনি বা মধু মিশিয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
তরমুজ ও তুলসী আইসড চা
গ্রীষ্মে আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে ভুলবেন না। গরম আবহাওয়ায় বিভিন্ন ঠাণ্ডা পানীয় আপনাকে সতেজ রাখবে এবং আপনার তৃষ্ণা নিবারণ করবে। এক্ষেত্রে তরমুজ ও তুলসীর আইসড চা খুবই উপকারী। তরমুজ বিভিন্ন রিফ্রেশিং পানীয় তৈরির উপাদান হিসেবে বহুল সমাদৃত।
এই চা বানানোর জন্য তরমুজের টুকরোগুলোকে ব্লেন্ড করে নিন। পাত্রে পানি ফুটিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিয়ে তাতে গ্রিন টি ব্যাগ ও পুদিনা পাতা দিন ও ৩/৪ মিনিট ঢেকে রাখুন। এরপর টি ব্যাগ ও পুদিনা পাতা ছেঁকে নিয়ে স্বাদমতো চিনি বা মধু মেশান।এরপর চায়ের সঙ্গে তরমুজের পেস্ট মিশিয়ে ঠাণ্ডা না হওয়া পর্যন্ত মিশ্রণটি ফ্রিজে রাখুন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে বীজ সরাতে মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। পুদিনা তরমুজ আইসড চা পরিবেশন করুন বরফের কিউব দিয়ে।
হিবিস্কাস (জবা ফুল) আইসড-টি
হিবিস্কাস (জবা ফুল) চা গ্রীষ্মে প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখার একটি দারুণ পানীয়। লাল রঙ ও সতেজ স্বাদের জন্য এই চা বিখ্যাত। এই চা পুষ্টিকর ও রক্তচাপ কমায়।
চায়ের কাপে জবা ফুলের পাঁপড়ি নিন। এর মধ্যে গরম পানি ঢেলে ৫/৭ মিনিট রাখুন। এরপর ছেঁকে নিয়ে স্বাদমতো চিনি বা মধু মিশিয়ে কমপক্ষে এক ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। আপনার আইসড-টি পরিবেশন করার জন্য প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: চিপসের পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবার
লেবু পানি আইসড চা
এই গরমে আপনাকে সতেজ ও হাইড্রেটেড রাখতে এটি একটি দারুণ পানীয় লেবু পানি আইসড চা। সহজলভ্য উপাদান ব্যবহৃত হওয়ায়, আপনি চাইলে প্রতিদিন এটা পান করতে পারেন।
গরম পানিতে চা পাতা দিয়ে ৫ মিনিট ফোটান। এরপর ছেঁকে নিয়ে কিছুটা ঠাণ্ডা করুন এবং তাতে লেবুর রস ও স্বাদমতো চিনি বা মধু মেশান। তারপর এটি ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে পান করুন।
আরও পড়ুন: মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে নাটোরের কাঁচাগোল্লা
উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও অন্যতম সেরা মিষ্টান্ন নাটোরের কাঁচাগোল্লা এবার জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে।
নাটোরের রাজ দরবার থেকে যাত্রা শুরু হওয়া দুই শতাধিক বছরের প্রাচীন এই মিষ্টান্নকে নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নাটোরের জেলা প্রশাসন।
এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ তার কার্যালয়ে নিবন্ধনের এফিডেভিট কপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
রোজায় সুস্থ থাকার ৫টি উপায়
এসে গেছে পবিত্র রমজান মাস। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস করা হয় এই একটি মাস। তাই শরীর নিয়মিত প্যাটার্নের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার আগে রোজার শুরুর কয়েক দিন কেউ কেউ অসুবিধা অনুভব করতে পারে। খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমের ধরণে সব পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্মে রমজান মাসে ফিট থাকা কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
তো, চলুন দেখে নেয়া যাক পবিত্র এই মাসে সুস্থ থাকার কিছু টিপস।
চিপসের পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবার
ব্যস্ত লাইফস্টাইল, কাজের চাপ এবং মানসিকতার পরিবর্তনের কারণে প্রায়ই আমরা এমন কাজ করি, যা আমাদের শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অফিসে কাজের ফাঁকে বা টিভি দেখতে দেখতে আমরা হালকা কিছু খাবার খেয়ে থাকি। যেগুলো খেলে পেট খুব বেশি না ভরে উঠলেও, শরীরে অস্বাস্থ্যকর পদার্থের পুরু স্তর জমে। আমাদের স্বল্প সময়ের ক্ষুধা মেটানোর জন্য বেশিরভাগই আমরা ভাজা চিপস ও চর্বিযুক্ত বিভিন্ন খাবার বেছে নিই।
এগুলোর বিকল্প হিসেবে আমরা যদি এমন খাবার বেছে নেই যেগুলো সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর; এর চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।
আসুন বিকল্প কিছু স্ন্যাক্সের কথা জানা যাক, যেগুলো আমাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে কাজে লাগতে পারে।
পপকর্ন
সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যকর এমন খাবারের মধ্যে পপকর্ন সেরা বিকল্পগুলোর একটি। এটি আলুর চিপসের মতোই তৃপ্তিদায়ক ও মুড়মুড়ে। তবে এতে আলুর চিপসের তুলনায় অর্ধেক ক্যালোরি এবং অনেক কম চর্বি রয়েছে।
এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে এমন পপকর্ন খেতে হবে যা বেশি তেল বা মাখনে ভাজা হয়নি এবং মুখরোচক বিভিন্ন মশলার বদলে যাতে শুধুমাত্র হালকা লবণ থাকবে।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
গরমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা। আর তাই গরমে ক্লান্তি ও ডিহাইড্রেটেশন কমাতে আমাদের এমন খাবার খাওয়া উচিত, যেগুলো শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে এবং সারাদিন কর্মশক্তি ধরে রাখে। তাই গরমে এই খাবারগুলো হতে পারে আপনার পানিস্বল্পতা দূর করার হাতিয়ার।
মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
মধু এক প্রকারের মিষ্টি-ঘন তরল, যা একাধারে খাদ্য ও ওষুধ। মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস থেকে মধু তৈরি করে মৌচাকে সংরক্ষণ করে। বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতিতে এর ব্যবহার চিনির চেয়েও বেশি স্বাস্থ্যকর।
মধুর গুণাগুণ ও উপকারিতা
মৌমাছি ফুল থেকে ফুলের রেণু ও মিষ্টি নির্যাস সংগ্রহ করে নিজেদের পাকস্থলীতে রাখে। তারপর তাতে মৌমাছির মুখ নিঃসৃত লালা মিশ্রিত হয়ে রাসায়নিক জটিল বিক্রিয়ায় মধু তৈরি হয়। এরপর মুখ থেকে মৌচাকে মধু জমা করে। ঠাণ্ডা কমাতে মধুর বিকল্প নেই।
মধুর পুষ্টিগুণ
মধুতে রয়েছে ৪৫টিরও বেশি খাদ্যগুণ। এরমধ্যে কয়েকটি হলো-গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ, মন্টোজ, অ্যামাইনো অ্যাসিড, খনিজ লবণ, এনকাইম, ক্যালরি, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন বি৬, আয়োডিন, জিংক, কপার, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান।
আসুন জেনে নেয়া যাক খাদ্য ও ঔষধি গুণসম্পন্ন মধু দিয়ে তৈরি কয়েকটি খাবারের পদ সম্পর্কে-
মাশরুমের পাঁচ পদের সহজ রেসিপি
মাশরুম এক ধরনের ছত্রাক। আমাদের দেশে এটি ব্যাঙের ছাতা নামে বহুল পরিচিত। অ্যাগারিকাস ছত্রাকের মাংসল কোমল ও ভঙ্গুর বীজাধারই হলো মাশরুম। এদের অধিকাংশই ব্যাসিডিওমাইকোটা, তবে কিছু অ্যাসকোমাইকোটার অন্তর্ভুক্ত।
চীন, কোরিয়া, জাপানসহ ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে কয়েক ধরনের মাশরুম খাবার হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশেও আধুনিক খাবার হিসেবে মাশরুমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটছে।
পুষ্টি উপাদান
কাঁচা অথবা রান্নাকৃত মাশরুম স্বল্প-ক্যালরিযুক্ত খাদ্য হিসেবে স্বীকৃত। কাঁচা অবস্থায় এতে ভিটামিন বি থাকে। যাতে রিবোফ্লোবিন নায়াসিন ও প্যান্টোথেনিক এসিড এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন খনিজ উপাদান থাকে।
এছাড়াও অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে মাশরুমে ভিটামিন ডি২ তৈরি হয়।
আসুন পুষ্টিগুণসম্পন্ন ও মুখরোচক এই খাবারটির পাঁচটি পদ রান্না সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।