���������������
মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
মধু এক প্রকারের মিষ্টি-ঘন তরল, যা একাধারে খাদ্য ও ওষুধ। মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস থেকে মধু তৈরি করে মৌচাকে সংরক্ষণ করে। বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুতিতে এর ব্যবহার চিনির চেয়েও বেশি স্বাস্থ্যকর।
মধুর গুণাগুণ ও উপকারিতা
মৌমাছি ফুল থেকে ফুলের রেণু ও মিষ্টি নির্যাস সংগ্রহ করে নিজেদের পাকস্থলীতে রাখে। তারপর তাতে মৌমাছির মুখ নিঃসৃত লালা মিশ্রিত হয়ে রাসায়নিক জটিল বিক্রিয়ায় মধু তৈরি হয়। এরপর মুখ থেকে মৌচাকে মধু জমা করে। ঠাণ্ডা কমাতে মধুর বিকল্প নেই।
মধুর পুষ্টিগুণ
মধুতে রয়েছে ৪৫টিরও বেশি খাদ্যগুণ। এরমধ্যে কয়েকটি হলো-গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ, মন্টোজ, অ্যামাইনো অ্যাসিড, খনিজ লবণ, এনকাইম, ক্যালরি, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন বি৬, আয়োডিন, জিংক, কপার, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান।
আসুন জেনে নেয়া যাক খাদ্য ও ঔষধি গুণসম্পন্ন মধু দিয়ে তৈরি কয়েকটি খাবারের পদ সম্পর্কে-
মাশরুমের পাঁচ পদের সহজ রেসিপি
মাশরুম এক ধরনের ছত্রাক। আমাদের দেশে এটি ব্যাঙের ছাতা নামে বহুল পরিচিত। অ্যাগারিকাস ছত্রাকের মাংসল কোমল ও ভঙ্গুর বীজাধারই হলো মাশরুম। এদের অধিকাংশই ব্যাসিডিওমাইকোটা, তবে কিছু অ্যাসকোমাইকোটার অন্তর্ভুক্ত।
চীন, কোরিয়া, জাপানসহ ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে কয়েক ধরনের মাশরুম খাবার হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশেও আধুনিক খাবার হিসেবে মাশরুমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটছে।
পুষ্টি উপাদান
কাঁচা অথবা রান্নাকৃত মাশরুম স্বল্প-ক্যালরিযুক্ত খাদ্য হিসেবে স্বীকৃত। কাঁচা অবস্থায় এতে ভিটামিন বি থাকে। যাতে রিবোফ্লোবিন নায়াসিন ও প্যান্টোথেনিক এসিড এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন খনিজ উপাদান থাকে।
এছাড়াও অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে মাশরুমে ভিটামিন ডি২ তৈরি হয়।
আসুন পুষ্টিগুণসম্পন্ন ও মুখরোচক এই খাবারটির পাঁচটি পদ রান্না সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
শীতের ছয়টি মজাদার পিঠার রেসিপি
পিঠা আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার। বাংলাদেশে সারা বছর বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি হয়। তবে পিঠা তৈরি ও খাওয়ার জন্য শীতকাল সবচেয়ে ভালো মৌসুম। শীতের সকাল পিঠা খাওয়ার উপযুক্ত সময়। পিঠা বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতির একটি অংশ। বেশিরভাগ পিঠাই মৌসুমী। বিশেষ করে শীতের মৌসুমেই ঘরে ঘরে পিঠা তৈরি করা হয়। কারণ কিছু উপাদান শুধুমাত্র এই সময়েই পাওয়া যায়। কিছু পিঠা নবান্ন এবং পৌষ পার্বণের মতো ফসল কাটার উৎসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
পিঠা তৈরির জন্য চালের গুড়ো, নারকেল, গুড়, দুধ, তেল ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। এটা নির্ভর করে পিঠার ধরনের ওপর। কিছু পিঠা মিষ্টি আবার কিছু নোনতা, কিছু নরম আবার কিছু শক্ত।
শীতকালের ছয়টি মজাদার পিঠার রেসিপি তুলে ধরা হল-
১. পাটিসাপটা
পাটিসাপটা হল একটি পাতলা সুইডিশ প্যানকেক বা ক্রেপ ধরনের পিঠা, খুব বিশেষ এবং বাঙালিদের কাছে খুব পছন্দের। এটি ছাড়া কোন বিশেষ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয় না। অনেক বৈচিত্র্য থাকতে পারে, কখনও কখনও গুড়ের সঙ্গে প্রস্তুতকৃত নারকেলের মিশ্রণে ব্যবহার করা হয় এবং কখনও কখনও ক্ষীর বা ক্ষীরশা ব্যবহার করা হয়। অনেকে জাফরান, শুকনো বাদাম এবং কিশমিশ ব্যবহার করে থাকে।
পাটিসাপটা পিঠা করতে যা লাগবে-
উপকরণ:
দুধ ২ লিটার,
চিনি ৫০০ গ্রাম,
সুজি দুই টেবিল চামচ,
মিহি নারিকেল কোরা আধা কাপ,
চালের গুঁড়া ১ কেজি,
ময়দা আধা কাপ,
ভাজার জন্য তেল,
পানি পরিমাণ মতো
চিনি স্বাদমতো
প্রস্তুত প্রণালী:
প্রথমে অর্ধেক চিনি আর দুধ ঘন করে জ্বাল দিতে হবে। এবার তার ভেতর সুজি আর নারিকেল কোরা ছেড়ে ক্ষীর তৈরি করে নিতে হবে। ক্ষীর ঘন হলে নামিয়ে রাখুন। চালের গুঁড়া, বাকি চিনি, পানি আর লবণ দিয়ে পাতলা গোলা করে নিন। ফ্রাই প্যানে সামান্য তেল নিয়ে গরম করে নিতে হবে। এবার আধা কাপ গোলা দিয়ে একটা পাতলা রুটির মতো বানিয়ে নিন। রুটির ওপরের দিকে শুকিয়ে এলে এক টেবিল চামচ পরিমাণ ক্ষীর দিয়ে মুড়িয়ে পাটিসাপটার আকার দিয়ে আরেকবার ভেজে নিন। এভাবে একটি একটি করে পিঠা বানিয়ে নামিয়ে আনুন। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন মজার পাটিসাপটা পিঠা।
প্যাকেটজাত আলুর চিপস কেন শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি মানুষের আকর্ষণটা বরাবরই একটু বেশি। সেখানে আলুর চিপসের ব্যাপারে অনেকেরই দুর্বলতা আছে। কালে ভদ্রে মচমচে চিপস উপভোগ করাটা খারাপ নয়; বরং তা স্বাদে ভিন্নতা আনার জন্য বেশ ভালো কাজে দেয়। কিন্তু স্ন্যাকসের তালিকায় প্রতিদিন প্রায় নিয়ম করে চিপস খাওয়াটা স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে কোন তারতম্য অনূভুত না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে ভয়াবহ স্বাস্থ্য অবনতি ঘটতে পারে। তাই চলুন জেনে নিই প্যাকেটজাত আলুর চিপসের স্বাস্থ্যহানিকর দিকগুলো সম্বন্ধে।
প্যাকেটজাত আলুর চিপসের ৭টি ক্ষতিকর দিক
রক্তচাপের ঊর্ধ্বগতি
লবণযুক্ত চিপসের প্রধান উপাদান সোডিয়াম। দেহের খনিজ উপাদান যোগানে সোডিয়ামের প্রয়োজন আছে। কিন্তু অত্যধিক সোডিয়াম রক্তচাপ বৃদ্ধিজনিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিদিনের স্ন্যাকসের তালিকায় নিয়মিত আলুর চিপস থাকা মানেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেহে উচ্চ রক্তচাপের বিকাশ ঘটানো।
আরো পড়ুন: খাদ্যতালিকায় ৫ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
চিপসে থাকা সোডিয়াম কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রক্তচাপ বৃদ্ধির ফলে স্ট্রোক, হার্ট ফেইল, করোনারি হৃদরোগ এবং কিডনি রোগের আশঙ্কা থাকে। আলুর চিপস-এ সাধারণত প্রতি আউন্সে ১২০ থেকে ১৮০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে এবং টর্টিলা চিপস-এ প্রতি আউন্সে ১০৫ থেকে ১৬০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। চিপসের প্যাকেটগুলো সাধারণত এক আউন্সের বেশি হয়ে থাকে। তাই চিপস খাওয়ার সময় সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সোডিয়াম দেহের ভেতর প্রবেশ করে।
ওজন বৃদ্ধি
চিপসে থাকা চর্বি এবং ক্যালোরির পরিমাণ ওজন বৃদ্ধি; এমনকি স্থূলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এক আউন্স প্লেইন পটেটো চিপস বা প্রায় ১৫ থেকে ২০টি চিপসে প্রায় ১০ গ্রাম ফ্যাট এবং ১৫৪ ক্যালোরি থাকে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সারের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
চিপসের লবণ উপাদান চিপসকে অত্যন্ত মুখরোচক করে তোলে, যার ফলে অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় চিপস বেশি খেয়ে নেয়। লবণের সঙ্গে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত উপাদান একত্রিত হয়ে একটি ক্ষতিকর খাবারে পরিণত হয়, যেটি যে কারও ওজন নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।
আরো পড়ুন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০টি খাবার
হৃদরোগের ঝুঁকি
যে কোন প্রক্রিয়াজাত চর্বিযুক্ত খাবার হৃদযন্ত্রের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে। আর চিপস এ ধরণের খাবারগুলোর মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। যাদের প্রিয় স্ন্যাক্স চিপস, তাদের কার্সিনোজেনিক অ্যাক্রিলামাইডের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। চিপসে থাকা এই রাসায়নিকটি হৃদরোগের বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টির জন্য দায়ী। ঘন ঘন চিপস খাওয়া কোলেস্টেরলের মাত্রায় বৃদ্ধিতেও অবদান রাখতে পারে। কারণ এতে আছে অধিক পরিমাণে বিভিন্ন ধরণের ফ্যাট।
বেশিরভাগ চিপস বেশি করে ভাজা হয়, যার ফলে এতে তৈরি হয় ট্রান্স ফ্যাট, যেটি ফ্যাটের সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরণ। এছাড়াও চিপস ভাজার জন্য ব্যবহৃত তেলগুলো স্যাচুরেটেড ফ্যাট সম্পন্ন, যা উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য সক্রিয় প্রভাবক। রক্ত প্রবাহে উচ্চ মাত্রার ট্রান্স চর্বি করোনারি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ক্যান্সারের আশঙ্কাঅ্যাক্রিলামাইড এমন একটি রাসায়নিক, যেটি মুলত প্রক্রিয়াজাত খাবারে পাওয়া যায় এবং এর কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্যের জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার হতে পারে। যারা চিপস পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি নিতান্ত ভয়ানক ব্যাপার। কারণ অনেকেই বিষয়টি উড়িয়ে দেন। আলুর চিপ্স-এ উচ্চ মাত্রায় অ্যাক্রিলামাইড থাকায় চিপসে আসক্ত ব্যক্তিরা আসলে অ্যাক্রিলামাইডে আসক্ত হয়ে পড়ে।
আরো পড়ুন বাজেটের মধ্যে ঢাকার সেরা ১০টি বুফে রেস্টুরেন্ট
সিগারেটের ধোঁয়া এবং আলুর চিপস দুটোই এই কার্সিনোজেন ধারণ করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য স্পষ্টভাবে হুমকিস্বরূপ। ধূমপায়ীদের ন্যায় এই প্যাকেটজাত আলুর চিপস খাওয়া ব্যক্তিরাও দাবী করেন যে, এটা তাদের তেমন ক্ষতি করবে না। কিন্তু চরম পর্যায়ে এই অ্যাক্রিলামাইড ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।
স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়
স্ন্যাক্স খাবার ক্ষেত্রে বিশেষ করে যখন চিপসের কথা আসে, তখন এতে থাকা অ্যাক্রিলামাইডের জন্য ব্যাপারটিকে একটু গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া উচিত। এছাড়া চিপসে থাকা প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল অনেক ক্ষেত্রে খুব খারাপ ফলাফলের অবতারণা করতে পারে। বিশেষ করে ব্যক্তির পরিবারে যদি ইতোমধ্যে পূর্বে কারো স্ট্রোকের ঘটনা থেকে থাকে।
এ ধরণের রেকর্ড থাকা পরিবারের উত্তরাধিকারীদের চিপস এড়িয়ে চলতে হবে। অন্যথায় যদি এই চর্বি ভর্তি আলু চিপসের লোভ সামলানো না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে যে কোন সময় একটি সম্ভাব্য অ্যানিউরিজমের সম্মুখীন হতে হবে। উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার থেকে চর্বি জমা হয়। এটি ধমনীতে বাধা সৃষ্টি করে এবং ফলশ্রুতিতে সরাসরি স্ট্রোকের দিকে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন গ্রীন কফি: উপকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বানানোর নিয়ম
বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি
এক প্যাকেট চিপসে থাকা চর্বি বা কোলেস্টেরল অনাকাঙ্ক্ষিত ও ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন করতে পারে। একটি মানুষের প্রতিদিনের বিপজ্জনক চর্বির যোগানের একটা বিরাট অংশ আসে চিপসে থাকা ট্রান্স ফ্যাট থেকে। এই ট্রান্স ফ্যাটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে।
তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা থেকে এমন কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে, যা চিপস পছন্দকারীদের অবিলম্বে চিপস থেকে মুখ ফিরিয়ে দিতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণায় দেখা গেছে ট্রান্স ফ্যাট মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায়। আর চিপস যেহেতু উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাটের আধার, তাই অতিরিক্ত চিপস খাওয়া মহিলাদের জন্য এটি একটি সাবধান বাণী।
শেষাংশ
নিত্যদিনের ব্যস্ততার কারণে বাধ্য হয়েই সবাই প্রস্তুতকৃত খাবারের দিকে ছুটে থাকেন। ঘরে খাবার তৈরির প্রবণতা কমে যাওয়াতে কিশোর ও তরুণরাও ঝুঁকে পড়েছেন এই খাবারগুলোর প্রতি। বিশেষ করে চিপসের একটা প্যাকেট চলতে ফিরতে বা আড্ডার মাঝে সবার হাতে হাতে দেখা যায়। কিন্তু প্যাকেটজাত আলুর চিপসের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ঘন ঘন চিপস খাওয়াটা এড়িয়ে চলা উচিত।
আরো পড়ুন জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
শুধু দৈহিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়; এই পুষ্টিহীন খাবারটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। একদম ক্যালরি শূন্য এই খাবার মানুষকে দ্রুত ক্ষুধার্ত করে তুলে। এর থেকে শুরু হয় চিপসের প্রতি নেশা, যা শরীরকে আরো খারাপ অবস্থার দিকে ঠেলে দেয়।
খাদ্যতালিকায় ৫ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য সমস্যা যা বিশ্বজুড়ে মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে আসছে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায়। ফলে কিডনি জটিলতাসহ স্ট্রোকের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভয়ঙ্কর রোগটির জন্য সচেতনতা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘস্থায়ী এই রোগের জটিলতা তুলে ধরতে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়।
দিবসটি ১৯৯১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমর্থনের জন্য আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়েছিল এবং ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ দিবসে পরিণত হয়।
তাই, আপনি যদি ডায়াবেটিক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার খাদ্যাভ্যাসের ওপর নজর রাখা জরুরি। সর্বোপরি রক্তের গ্লুকোজ, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনাকে খাদ্যগ্রহণে মনযোগী হতে হবে।
তাই বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আজকের আয়োজনে থাকছে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী কিছু খাবারের তালিকা। আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হন এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে চান তাহলে খাবারের তালিকায় এই খাবারগুলো রাখতে পারেন।
আরও পড়ুন: কাউনের চালের তৈরি নুডলস নিয়ন্ত্রণ করবে ডায়াবেটিস: শাবিপ্রবির গবেষণা
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০টি খাবার
খাদ্য মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম মৌলিক চাহিদা। তবে ভোজনরসিকদের কাছে খাদ্য হল জীবনের ভালবাসা। আপনি যদি একজন ভোজনরসিক হন, তাহলে আপনি কি এমন কোনো খাবার খেতে প্রস্তুত, যার জন্য এক হাজার ডলার বা এক লাখ টাকারও বেশি খরচ হবে? আসুন জেনে নেয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০টি খাবারের নাম। কোটিপতি হলেই কেবলমাত্র এসব খাবারের স্বাদ নেয়া যাবে।
পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি ব্যয়বহুল খাবার
ওয়াগু গরুর মাংস
আপনি যদি মাস্টারসেফ অস্ট্রেলিয়া দেখে থাকেন, তাহলে আপনি অবশ্যই ওয়াগু গরুর মাংসের কথা জানবেন। কেবল জাপানি গরুর মাংসকেই ‘ওয়াগু বিফ’ বলা হয়। জাপানের চারটি ভিন্ন প্রজাতির গরুর থেকে এ মাংস পাওয়া যায়। এ গরুর মাংস চর্বিবহুলতার জন্য বিখ্যাত।
এছাড়াও এ মাংস আর্দ্র, কোমল যা মুখে দিলে গলে যায়। এর দাম এত বেশি হওয়ার কারণ, এসব গরু প্রতিপালনে খরচ অনেক। ওয়াগু মাংস হিসেবে গণ্য হওয়ার জন্য কঠোর নিয়ম-নীতি মেনে এই গরুগুলোকে পালতে হয়। যাতে তাদের পেশীর পরতে পরতে চর্বি জমে, সেজন্যে বাছুরগুলোকে একেবারে শুরু থেকেই বিশেষ ধরনের খাবার খাওয়ানো হয়।
জাপানে সবচেয়ে দামি ওয়াগু বিফ হচ্ছে 'কোবে বিফ'। যার প্রতি কেজির দাম ৬৪০ ডলার।
খাজানায় চলছে ওপার বাংলার ফুড ফেস্টিভাল
বছর ঘুরে আবার এসছে দুর্গাপূজা। সার্বজনীন এই উৎসবকে ঘিরে বাঙালির উচ্ছ্বাসের সীমা থাকে না। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, এসময় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আর তাই দুর্গাপূজা মানে আড্ডা, ভুরিভোজ আর মণ্ডপে ঘোরাঘুরি।
পূজাকে স্বাগত জানাতে ও উদযাপন করতে খাজানা তাদের অতিথিদের জন্য ১-৬ অক্টোবর পর্যন্ত দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য পূজার বিশেষ মেন্যু প্রস্তুত করেছে।
বাজেটের মধ্যে ঢাকার সেরা ১০টি বুফে রেস্টুরেন্ট
বাঙালি শব্দটির সাথে খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর তা যদি হয় বুফে, তাহলে তো কথাই নেই! পশ্চিমা খাবার প্রথা থেকে শুরু হলেও বুফে এখন বাংলাদেশিদের জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানী জুড়ে পুরনো নামকরা রেস্টুরেন্টগুলোর পাশাপাশি নতুন অনেক ক্যাফে চালু হচ্ছে এই বুফেকে কেন্দ্র করে। শুধু তাই নয়, নানা উপলক্ষ ছাড়াও কম খরচে বুফে খাওয়ার সুবিধা দিচ্ছে রসনা নির্ভর ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন বাজেটের মধ্যে ঢাকার সেরা বুফে রেস্টুরেন্টগুলোতে সময় কাটানো মানেই আনলিমিটেড পেটপূর্তি। চলুন, সেই রেস্টুরেন্টগুলোর সেরা বুফে ডিল নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
ঢাকার সেরা ১০টি বাজেট বুফে রেস্টুরেন্ট
বুফে স্টোরিস (ধানমন্ডি, মিরপুর, গুলশান)
খাবারের স্বর্গ ধানমন্ডির বাজেট বুফের মধ্যে এই রেস্টুরেন্টটি অন্যতম। ধানমন্ডি-২ নাম্বার রোড এবং মিরপুর-১১ এর দুই শাখাতেই বেশ সাশ্রয়ী এবং পুষিয়ে নেয়ার মত মূল্যের বুফে পরিবেশন করা হয়। এদের ৬০০ টাকার ৬৫টি আইটেমের প্যাকেজটিতে আলাদা করে ভ্যাটসহ অন্যান্য খরচের কথা ভাবতে হবে না। আর খাবারের কোয়ালিটিতে যে কোন ভোজন রসিক অনুভব করবেন, যে তিনি সঠিক মূল্যের খাবারটিই নির্বাচন করেছেন। সবচেয়ে চমৎকার বিষয়টি হল যে, তারা রেগুলার পানির পাশাপাশি পছন্দনীয় একটি কোমল পানীয় দেয়। দেশি থেকে চাইনিজ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের খাবারের পাশাপাশি থাকে মিষ্টান্ন আইটেমের দারুণ সমারোহ।
গরুর মাংসের রেজালা এবং লাইভ কাবাব স্টেশন থেকে খাবার মেনুর দুটি প্রধান আকর্ষণ। যে কোন স্পট রিজার্ভ করার জন্য আগে থেকে কল করে যাওয়া উত্তম। কারণ যে কোন দিনেই রেস্তোরাঁটি খুব দ্রুত লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। সমস্যা হিসেবে শুধু এই ভিড়টাকেই বিবেচনা করা যেতে পারে। এছাড়া জায়গা বা খাবার নিয়ে কোনও উল্লেখযোগ্য অসুবিধা নেই। যেকোন ব্যক্তিগত বা কর্পোরেট ইভেন্টের জন্য ভেন্যু বুক করার জন্য উপযুক্ত একটি জায়গা বুফে স্টোরিস।
পড়ুন: গ্রীন কফি: উপকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বানানোর নিয়ম
প্রিমিয়াম লাউঞ্জ, মিরপুর
প্রিয়জনদের সাথে একটি সুন্দর বুফে লাঞ্চ বা ডিনারের জন্য যে কেউ মিরপুরে অবস্থিত এই রেস্টুরেন্টটিতে দারুণ একটি স্পট লুফে নিতে চাইবে। লাঞ্চের জন্য ৬৫-এর বেশি আইটেম এবং রাতের খাবারের জন্য ৭৫-এর বেশি আইটেম সহ বুফের সাশ্রয়ী দামগুলো দেখে আশ্চর্য হতে হয়। খাবারের কোয়ালিটি নিয়ে যেখানে কোন আপোস করা হয়নি, এরপরও আরামদায়ক ইন্টেরিয়র; সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে চাহিদা থেকেও বেশি কিছু। লাঞ্চের বুফের জন্য ৫৯০ টাকা এবং ডিনার বুফের জন্য ৬৯০ টাকা; আর যাবতীয় চার্জ এর ভেতরেই।
প্যাকেজে মিলবে ভাজা ভাত, বিরিয়ানি, নান, মুরগি, গরুর মাংস সহ আরো কিছু। তবে তাদের মিষ্টান্নের ভান্ডারটি নজর কাড়ার মত। রেড ভেলভেট কেক, ট্রাইফেল পুডিং, চকোলেট ইক্লেয়ার-এর স্বাদ একবার নেয়ার পর আবার সেখানে ফিরে যেতে মন চাইবে।
রেডরেস, শ্যামলী
শ্যামলীর রিং রোডের এই রেস্টুরেন্টটি যে কোন ছুটির দিনে বন্ধু-বান্ধব বা পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর মত দারুণ জায়গা হতে পারে। এছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে আশেপাশের অঞ্চলগুলো থেকে যে কেউ অনায়াসেই এখানে নিজের জায়গাটি বেছে নেন। ছুটি বা সপ্তাহান্তের কথা বিশেষ ভাবে বলার কারণ হচ্ছে শুধুমাত্র এই সময়গুলোতেই এখানে ৫০০ টাকায় বুফে পরিবেশন করা হয়।
পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
এই রেস্তোরাঁয় তাদের মেনুতে আনলিমিটেড চাইনিজ খাবার রয়েছে। আইটেমের মধ্যে আছে স্প্রিং রোলস, বিশেষ ফিরনি, মিষ্টি, টক চিকেন, গ্রিলড চিকেন, এবং ভাত। গরম খাবারগুলোর মধ্যে বিশেষ করে ঘন থাই স্যুপ দুর্দান্ত। অন্যান্য স্ন্যাক্স আইটেমের মধ্যে আনলিমিটেড পিৎজার কোন তুলনা হয় না। প্রচন্ড ভিড় সামলাতে না চাইলে আগে থেকেই কল দিয়ে পছন্দ মত জায়গা রিজার্ভ করে নিতে হবে।
ওয়াটার গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, বনশ্রী
দক্ষিণ বনশ্রীর বাগানবাড়িতে এই পার্টি সেন্টারটি প্রবেশমুখেই দর্শনার্থীদের স্বাগত জানায় নয়নাভিরাম কৃত্রিম ঝর্ণার দৃশ্য দেখিয়ে। একদম মুল অংশে দেয়ালে ফ্রেমে বাধা পেইন্টিংগুলো পুরো ইন্টেরিয়রে দিয়েছে নিপুন শৈল্পিকতার ছোয়া। সিড়ি বেয়ে রুফটপে উঠে গেলে একটু ভীড়মি খেতে হবে। মনে হবে অত্যাধুনিক শহর ছেড়ে যেন সবুজ অকৃত্রিম এক জগতে প্রবেশ করা হলো। ছোট ছোট টবের গাছের পাশে বাঁশে গড়া প্রতিটি বসার জায়গা।
খাবারের বিষয়ে বলতে গেলে ৬০-এর বেশি আইটেম নিয়ে এদের বুফে বেশ মান সম্মত। ৬৯৯ টাকার মধ্যে বিশাল প্যাকেজে আছে ফ্রাইড রাইস, চিকেন চিলি অনিয়ন, চাইনিজ সবজি, রোস্টেড তন্দুরি চিকেন, সেদ্ধ মাশরুম, ভাজা সবজি, ডিপ ফ্রাই পেঁয়াজ, ফ্রাইড চিকেন, গরুর মাংস সিজলিং, বিভিন্ন ধরনের কারি এবং মিক্সড সালাদ।
পড়ুন: জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
বাফেট প্যালেস, মিরপুর, মোহাম্মদপুর
প্লাস্টিকের হলেও ফুল-পাতা ও অপূর্ব আলোকসজ্জার মাঝে বসে খেতে কার না ভালো লাগে। বুফের এই প্রাসাদটি সেই ভালো লাগার পুরোটাই পুরন করবে থাই, চাইনীজ, ভারতীয় ও বাঙালী খাবারের পরিমিত মেলবন্ধন দিয়ে। এদের আনলিমিটেড মাটন কাচ্চি সহ ৭৫-এর অধিক আইটেমের বুফের মূল্য ৬৫০/= টাকা। তবে শুধুমাত্র মোহাম্মদপুর শাখায় ৫৯৯ টাকায় পরিবেশ করা হচ্ছে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারে। ৩ থেকে ৬ বছরের বাচ্চাদের জন্য অর্ধেক মূল্য।
সাধারণ বুফের আইটেম তো আছেই, তবে এদের বিশেষত্ব হচ্ছে মাটন কাচ্চি, চিকেন দম বিরিয়ানি, রুটি রশমালাই ও দোই ফুসকা। আনলিমিটেড কোমল পানীয়র সাথে থাই ও চাইনিজ আইটেমগুলোও এদের অতিথিদের ভালো লাগাটা ধরে রেখেছে।
জেড কিচেন, বসুন্ধরা
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা নতুন এই রেস্তোরাঁটি ইতোমধ্যেই স্থানীয়দের কাছে প্রিয় খাবারের জায়গায় পরিণত হয়েছে। বসুন্ধরার মত অভিজাত এলাকাতে এই কিচেনে ৬০-এর বেশি আইটেমের লাঞ্চ বুফের দাম ৬০০ টাকা। রাতে ৭০-এর বেশি আইটেমের জন্য বুফের দাম পড়বে ৭০০ টাকা। সাথে কোমল পানীয় যত খুশি তত নেয়া যাবে। ৭ বছরের ছোট বাচ্চাদের জন্য এখানে ৫০ শতাংশ এবং স্টুডেন্ট আইডি কার্ডধারীদের জন্য ১০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ছিমছাম এই রেস্টুরেন্টটি ১০০-এর বেশি অতিথিদের বসার জায়গা দিতে সক্ষম।
পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
সালাদ লাভার্স, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল
জনপ্রিয় শপিং মল বসুন্ধরায় অবস্থিত এই ফুড কোর্টটি খাবার পরিবেশন করে বুফে মাধ্যমে। দাম নির্ধারণের বিষয়টিও অভিনব। বিভিন্ন আইটেম একটি বক্সে একসাথে করার পর বক্সটির ওজন করা হয়। তারপর প্রতি গ্রাম ৯৩ পয়সা ধরে ঠিক করা হয় বুফের আসল মূল্য। অল্প খরচে বেশি আইটেমের জায়গাগুলোতে আসলে অনেকেই পেটপূর্তি করে খেতে পারেন না। অল্প একটু খাওয়ার পরেই খাওয়ার শক্তি একদম ফুরিয়ে যায়। তাদের জন্য এই সালাদ লাভার্সটি সেরা জায়গা হতে পারে।
সালাদ নাম হলেও এখানে যে শুধু সালাদ আইটেম আছে তা নয়। ফ্রাইড রাইস থেকে শুরু করে গার্লিক মাশরুম, ভেজিটেবল, স্ফ্যাগেটি, চিকেন, পাস্তা; বলতে গেলে পূর্নাঙ্গ বুফের প্রায় সবি আছে। আর আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এই বুফেটি নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্যকর।
রয়াল ক্যুসিন, উত্তরা
উত্তরা রাজলক্ষীতে অবস্তিত এই ক্যুসিনটি নামের মতই রাজকীয়। বিভিন্ন উপলক্ষের দিনগুলোতে আলবত পাল্টে যায় পুরো রেস্টুরেন্টের চেহারা। অভিজাত ইন্টেরিয়র ঘুরে বেড়ানোর পর বুফে নেয়ার সময় এর দামটা চমকে দিতে পারে। ৮৫-এর বেশি আইটেমের বুফে লাঞ্চ ৭০০ টাকা এবং ৮৫-এর বেশি আইটেমের বুফে ডিনার ৮০০ টাকা। এমন প্রাসাদতূল্য জায়গার তুলনায় দামটা একটু কমই বলা যায়।
পড়ুন: রন্ধন পাঠশালা: ঢাকায় কোথায় রান্না শেখার কোর্স করতে পারবেন?
তাছাড়া তালিকায় বাহারি আইটেমের বাহুল্যের সাথে খুব বেশি পেটুকরাও পাল্লা দিতে পারবেন না। তবে চেখে দেখার সময় অতিথিরা টের পাবেন যে, মানের দিক থেকে এগুলোতে কোন কার্পণ্য করা হয়নি। অন্য সব ঐতিহ্যবাহী বুফে আইটেমের মধ্যে এখানে চোখে পড়বে দেশ-বিদেশের সালাদ, মাছসহ বিভিন্ন সবজি। রুফটপে খেতে খেতে প্লেনের উঠা নামা উপভোগ করার জন্যও রয়াল ক্যুসিন উপযুক্ত একটি জায়গা।
ফুডল্যান্ড ক্যাফে, ওয়ারী
পরিবারের ছোট-বড় সবাইকে নিয়ে দারুণ কিছু সময় কাটানোর জন্য এই রেস্টুরেন্টটি সেরা একটি নির্বাচন হতে পারে। মনোরম ইন্টেরিয়রের পাশাপাশি প্রতিটি আরামদায়ক বসার জায়গা অতিথিদের অনেকটা নিজের ঘরের মত অনুভূতি দেয়। আর এর সাথে যুক্ত হয় এদের সাশ্রয়ী মূল্যের বুফে। ৪০-এর অধিক আইটেমের জন্য লাঞ্চ বুফের খরচ ৬০০ টাকা, যা রাতের বেলা হয়ে যাবে ৭০০ টাকা।
আইটেমগুলোর মধ্যে ঘন থাই স্যুপটি আলাদাভাবে নজর কাড়বে। এছাড়া ফ্রাইড রাইস, চিকেন, চাইনিজ, সবজির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মিক্সড সালাদে পুরো খরচটা বেশ ভালো ভাবেই উশুল হবে। আর সাথে রঙ-বেরঙের মিষ্টান্ন তো আছেই।
পড়ুন: মধু কি সত্যি অমৃত?
আইরিশ স্কাই লাউঞ্জ, খিলগাঁও
খাবারের থেকে যারা আশেপাশের সৌন্দর্যটাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তাদের জন্য এই রেস্টুরেন্টটি সঠিক জায়গা। রুফটপ রেস্টুরেন্ট হলেও খুব বেশি উপরে যে ঠিক তা নয়। চার তলায় অর্ধেক অংশ রুফটপ করে যথেষ্ট সুন্দর করে সাজানো হয়েছে খাবারের জায়গাটি। খিলগাঁওয়ের কেএফসি বিল্ডিং-এর সামনের এলাকাটি মোটামুটি একটু খোলামেলা হওয়ায় চার তলাতেই বেশ দারুণ স্কাই ভিউ পাওয়া যায়।
৪০-এর বেশি আইটেম সহ এদের বুফে প্যাকেজ ৫৬০ টাকা। সাথের পানীয়গুলোর জন্য অবশ্য আলাদা ভাবে খরচ করতে হয়। ফ্রাইড রাইস থেকে শুরু করে খাবারের শেষে মিষ্টান্ন সহ সবকিছুতেই পরিপূর্ণ বুফে। কিন্তু মানের দিক থেকে খাবারগুলো রেস্টুরেন্টটির সৌন্দর্য্যের সমকক্ষ হতে পারেনি। তাছাড়া এদের ফার্স্ট পেমেন্ট সিস্টেমটি নিয়ে দর্শনার্থীদের মধ্যে বেশ মেলানো-মেশানো প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
শেষাংশ
ভোজন রসিক বাঙালির রেস্টুরেন্টমুখী হওয়ার সাথে সাথে বাড়ছে বাজেটের মধ্যে ঢাকার সেরা বুফে রেস্টুরেন্ট-এর সংখ্যাও। নান্দনিক ডিজাইন ও আরামদায়ক পরিবেশের কারণে কর্মজীবী মানুষদের প্রিয় জায়গায় পরিণত হচ্ছে ক্যাফেগুলো। এছাড়া সময়ের সাথে কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধির গতি আরো দ্রুততর হওয়ায় রেস্তোরাগুলোর উপর আরো নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে সাধারণত মানুষ। এরই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রসনা নির্ভর ব্যবসার প্রসার। বর্তমান যুগে রন্ধন শিল্প বেশ সম্মানজনক এবং চাহিদাসম্পন্ন পেশা হয়ে দাড়িয়েছে। তাই এ ধরনের খাবারের ব্যবসার প্রসিদ্ধি দেশ জুড়ে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির নির্ণায়ক।
পড়ুন: অপরাজিতা ফুলের নীল চা: জাদুকরী স্বাস্থ্যগুণ, বানানোর পদ্ধতি
গ্রীন কফি: উপকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বানানোর নিয়ম
সুস্থ জীবনধারণ বজায় রাখা ব্যক্তিদের অনেকেরই খাদ্যাভাসে আজকাল শোভা পাচ্ছে গ্রীন কফি। গ্রীন কফি আসে মূলত গ্রীন কফির বীজ থেকে। সাধারণ কফির ন্যায় এটি কোন রকম প্রক্রিয়াজাত করা বা ভাজা হয় না; একদম কাঁচা থাকে। গ্রীন কফি বীজের নির্যাস সুইস ওয়াটার প্রক্রিয়ায় কফিকে ডিক্যাফিনেটিং করতে ব্যবহার করা হয়। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এই প্রক্রিয়াটি ১৯৮০-এর দশক থেকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড নামের এক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর মাত্রায় ধারণ করে। আর এই বৈশিষ্ট্যের কারণে অনেকেই গ্রীন কফিকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি পানীয় হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। চলুন, জেনে নেয়া যাক গ্রীন কফির উপকারিতা সহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং কিভাবে গ্রীন কফি বানাতে হয়।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গ্রীন কফির উপকারিতা
ব্লাড সুগার এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
গ্রীন কফি বা এর নির্যাস পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা এবং সামগ্রিক লিপিড প্রোফাইল উন্নতি করতে পারে। এই প্রত্যেকটি বিষয় টাইপ-২ ডায়াবেটিসের বিকাশ বা অগ্রগতির সাথে যুক্ত। গ্রীন কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে। এছাড়া বিপাকীয় সিনড্রোমের চিকিৎসা করতে পারে, যেটি মূলত প্রিডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ।
উচ্চ রক্তচাপ কমানো
উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের রক্তচাপ কমাতে গ্রীন কফি বীজ অথবা এর নির্যাসে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের ক্ষমতা অভাবনীয়। এর পাশাপাশি রক্তনালীর কার্যকারিতাও উন্নত করার প্রমাণ বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে।
পড়ুন: জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
উচ্চ কোলেস্টেরল কমানো
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গ্রীন কফি বীজের নির্যাসের প্রভাব দুর্দান্ত। গ্রীন কফি নির্যাস সাপ্লিমেন্টেশন ব্যবহার করে রোগীদের মধ্যে হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল) বা ভাল কোলেস্টেরল বৃদ্ধি এবং লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এলডিএল) বা খারাপ কোলেস্টেরলের হ্রাস হতে দেখা গেছে।
শরীরের ওজন কমানা
কফি পান করা একটি সাধারণ উপায় যা অনেকেই ওজন কমানোর জন্য বেছে নেয়। কফিতে থাকা ক্যাফেইন থার্মোজেনেসিসকে উদ্দীপিত করে যারা নিয়মিত শরীর চর্চা করে থাকেন তাদের শক্ত অনুশীলগুলো করতে সাহায্য করে। অনেক সময় ধরে পাকস্থলি পূর্ণতার পাশাপাশি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সাময়িকভাবে হ্রাসের মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে। শরীরের বিপাক বৃদ্ধি জন্য দায়ী হরমোন অ্যাডিপোনেক্টিন গ্রীন কফি বীজের নির্যাস গ্রহণে বৃদ্ধি পায়।
ত্বকের উন্নতি
গ্রীন কফি বীজ নির্যাস ত্বককে হাইড্রেটেড রেখে তার গুণমান উন্নত করতে সহায়তা করে। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড শুধুমাত্র ত্বকের আর্দ্রতা বাষ্পীভবন থেকেই রক্ষা করে না, বরং ত্বকে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহে সহায়তা করে। ফলশ্রুতিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো ত্বকে পৌছতে পারে এবং ত্বককে সুগঠিত এবং মসৃণ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ করতে পারে। গ্রীন কফি বীজের নির্যাস সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বকের নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতাও বাড়ায়।
পড়ুন: অপরাজিতা ফুলের নীল চা: জাদুকরী স্বাস্থ্যগুণ, বানানোর পদ্ধতি
তারুণ্য বজায় রাখা
ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড-এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো শরীরকে বার্ধক্য প্রক্রিয়ার জন্য দায়ী ফ্রি-র্যাডিকেলগুলো দূর করতে সহায়তা করে। ফ্রি-র্যাডিকেলগুলো ডিএনএ ভেঙ্গে ফেলে সময়ের সাথে সাথে শরীরের তারুণ্য ভাবকে ক্রমাগত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
শক্তি বর্ধক পানীয়
গ্রীন কফি বীজের নির্যাসে থাকা ক্যাফেইন একটি দারুণ দিনের সূচনা করতে শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তিতে মাঝারি পরিমাণের জ্বালানি সরবরাহ করে। সাধারণ কফিতে ব্যবহৃত ভাজা বীজগুলোর তুলনায় কাঁচা সবুজ কফি বীজগুলোতে কম ক্যাফেইন থাকে। গ্রীন কফি বীজের বর্ধিত ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়ায় যার ফলে দৈনন্দিন কাজের প্রতি মনযোগ বৃদ্ধি পায় এবং সেগুলো সর্বোত্তমভাবে সম্পাদন করা যায়। অনেকেই দিনের বেলা কাজ করতে গিয়ে শক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাদের জন্য গ্রীন কফি সঠিক বাছাই হতে পারে।
ভালো লাগার অনুভূতি বজায় রাখা
গ্রীন কফি বীজের ক্যাফিন সামগ্রী শরীরের যাবতীয় ব্যবস্থায় বৃহত্তর পরিমাণে ডোপামিন উপস্থিত থাকতে দেয়। ডোপামিন মুলত মস্তিষ্কে উৎপাদিত একটি নিউরোট্রান্সমিটার, যা শরীর ও মনে ভালো লাগার অনুভূতি সৃষ্টি করে। গ্রীন কফির নির্যাস গ্রহণে ক্যাফেইন শরীরে হরমোনের পুনঃশোষণে বাধা দেয়। এর ফলে মস্তিষ্ক সর্বাঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে ভালো লাগার অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়।
পড়ুন: গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
গ্রীন কফির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
গ্লুকোমা
গ্রীন কফিতে থাকা ক্যাফেইন খেলে চোখের ভিতরে চাপ বাড়তে পারে। এই চাপের বৃদ্ধি ৩০ মিনিটের মধ্যে শুরু হয় এবং কমপক্ষে ৯০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস)
এই কফির ক্যাফিন সেবনে বিশেষ করে যখন প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করা হয়, তখন ডায়রিয়ার অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে এবং আইবিএসের লক্ষণগুলোর আরও অবনতি ঘটাতে পারে।
হাড় পাতলা হয়ে যাওয়া বা অস্টিওপোরোসিস
সবুজ কফি এবং অন্যান্য উৎস থেকে পাওয়া ক্যাফিন প্রস্রাবে বের হয়ে যাওয়া ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। অস্টিওপোরোসিস জটিলতার ক্ষেত্রে ক্যাফেইন গ্রহণকে প্রতিদিন ৩০০ মিলিগ্রামের নিচে নামিয়ে আনতে পরামর্শ দেয়া হয় যা প্রায় ২ থেকে ৩ কাপ সাধারণ কফির সমান। এতে ক্যালসিয়ামের পরিপূরক ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট গ্রহণেও কাজ হয় না। পোস্টমেনোপজাল অথবা যেসব মহিলাদের উত্তরাধিকারসূত্রে ভিটামিন ডি প্রক্রিয়াজাতকরণ হয় না, তাদের ক্যাফিন ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত।
পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
সবুজ কফিতে থাকা ক্যাফিন ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লুকোজ প্রক্রিয়া করার উপায় পরিবর্তন করতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন সেবন রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাসের কারণও হতে পারে। এটি এখনো গবেষণাধীন রয়েছে, তাই সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীদের গ্রীন কফি পান থেকে বিরত থাকা।
হোমোসিস্টাইনের অস্বাভাবিক উচ্চ মাত্রা
অল্প সময়ের জন্য ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রা গ্রহণের ফলে প্লাজমা হোমোসিস্টাইনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা হৃদরোগের মতো জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যান্য ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া
নির্দিষ্ট কোন রোগের জন্য নিয়মিত কোনো ওষুধ চললে গ্রীন কফির সম্পূরক ব্যবহার শুরু করার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেয়া উচিত। গ্রীন কফি অনেক ওষুধের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে সেগুলোর কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। এগুলোর মধ্যে আছে রক্ত পাতলা, হার্টের সমস্যা, দুর্বল হাড়, ফুসফুসের রোগ, মেনোপজ, বিষণ্নতা এবং সিজোফ্রেনিয়ার ওষুধ। ভেষজ উদ্দীপক বা ক্যাফিনের অন্যান্য পরিপূরকগুলোর সাথে গ্রীন কফি গ্রহণ করা উচিত নয়।
পড়ুন: বাংলাদেশের বাহারি আম এবং তাদের উৎপাদনকারী অঞ্চল
গ্রীন কফি বানানোর নিয়ম
প্রথমে রাতের বেলা গ্রীন বীজগুলো ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রতি কাপ পানিতে প্রায় এক টেবিল চামচ বীজ ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজ যোগ করার সাথে সাথে অবিলম্বে পানি সবুজ হতে শুরু করবে। এভাবে কাপে ঢাকনা দিয়ে পানিতে ভেজা বীজগুলো ঢেকে রাখতে হবে।
এবার কফি বানানোর সময় বীজ ডোবানো পানি একটি পাত্রে ঢেলে নিতে হবে। অতঃপর তা চুলায় বসিয়ে দিতে হবে এবং অল্প তাপে সিদ্ধ করতে হবে। এভাবে স্বল্প আঁচে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চুলায় রেখে দিতে হবে। পানি ধীরে ধীরে আরো সবুজ হয়ে যাবে এবং তা থেকে সুগন্ধি বের হওয়া শুরু হবে। এবার চুলা বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিতে হবে।
সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা হয়ে গেলে গ্রীন কফি একটি ছাঁকনির মাধ্যমে একটি মগ বা কাপে ঢেলে নিতে হবে। অবশেষে এবার গ্রীন কফি পান করার জন্য প্রস্তুত হলো। ঘন গ্রীন কফি সরাসরি পান করা যেতে পারে। আবার আরেকটু পানি যোগ করে কিছুটা পাতলাও করে নেয়া যেতে পারে। এছাড়া স্বাদ ভালো করতে প্রয়োজন মত মধু বা চিনি যোগ করে নেয়া যেতে পারে।
পড়ুন: রন্ধন পাঠশালা: ঢাকায় কোথায় রান্না শেখার কোর্স করতে পারবেন?
এই প্রক্রিয়াটি খুব ঘনীভূত গ্রীন কফি তৈরি করবে। কিছু পান করে বাকি কফি রেফ্রিজারেটরে একটি বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
পরিশিষ্ট
টমেটো এবং বেগুনের মতো অনেক খাবারেই ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড থাকলেও গ্রীন কফিতে এর মাত্রা থাকে সবচেয়ে বেশি। কফির বীজ যখন ভাজা হয়, তখন এই ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের মাত্রা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। সেই সাথে ক্যাফেইনের পরিমাণও কমে যায়। গ্রীন কফির স্বাস্থ্যগুণ নিয়ে বেশ বিতর্ক থাকলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর ব্যাপার সন্দেহের অবকাশ নেই। তাই অতিরিক্ত গ্রীন কফি গ্রহণ থেকে বিরত থাকাই উত্তম। স্বাভাবিক সুস্থ ব্যক্তির খাদ্যাভাসে দিনে ২-৩ কাপ গ্রীন কফি রাখাটা তেমন জটিলতা সৃষ্টি করে না। এছাড়া অসুস্থতা বা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা; এমনকি জীবনধারণে পরিবর্তন আনতে গ্রীন কফি গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রথমেই পেশাদারের নিকট থেকে নিশ্চিত হয়ে নেয়া উচিত।
পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
প্রকৃতি তার বিপুল উপাচার দিয়ে পরম যত্নে আগলে রেখেছে সমস্ত প্রাণীকুলকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্রমাগত উন্নতির নেপথ্যে এক বিরাট ভূমিকা রয়েছে প্রকৃতির উদ্ভিদ জগতের। এখনো এগুলোর উপযোগিতা বিস্ময়কর ভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়। সৌন্দর্য্যের জন্য বহুল পরিচিত হলেও জবা ফুল ভেষজ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। জবা ফুলের চা বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা থেকে অনাক্রম্যতার জন্য গরম-ঠান্ডা দুইভাবেই পান করা হয়ে থাকে। উত্তর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উদ্ভূত হলেও এখন অনেক গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলেও এই চা এর জনপ্রিয়তা আছে। জবা ফুলের লাল বা গভীর ম্যাজেন্টা রঙের বৃন্ত থেকে তৈরি করা হয় টক স্বাদযুক্ত এই চা। চলুন, জবা ফুলের চায়ের স্বাস্থ্যগুণ, ব্যবহার এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে জেনে নেয়া যাক।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জবা ফুলের চায়ের উপকারিতা
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
এই পানীয় উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের এবং হালকা উচ্চ রক্তচাপযুক্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টোলিক উভয় রক্তচাপকেই উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করণে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে জবা ফুলের চা।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি জবা ফুলের চা রক্তে চর্বির মাত্রাও কমাতে সাহায্য করে। রক্তে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া হৃদরোগের দিকে ঠেলে দেয়। যাদের কোলেস্টেরল মাত্রা বেশ খারাপ পর্যায়ের, এই চা পান এক মাসের মধ্যে তাদের কোলেস্টেরলে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। কোন রকম শারীরিক অসুস্থতা ছাড়া ব্যক্তিরাও তাদের কোলেস্টেরলের মাত্রায় ভারসাম্য বজায় রাখতে এই চা পান করতে পারেন। জবা ফুলের নির্যাস ভাল কোলেস্টেরল বা হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বাড়িয়ে দেয় এবং খারাপ কোলেস্টেরল বা লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: ওজন কমাতে ১০ কার্যকরী পানীয়
ওজন কমানো
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে ঘনীভূত জবা ফুলের বৃন্তের যুগান্তকারি প্রভাব রয়েছে। এর চা-এর ফলে বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই), শরীরের ওজন, শরীরের চর্বি এবং নিতম্ব থেকে কোমরের অনুপাত কমে যায়। এটি বিশেষ করে স্থূলকায় ব্যক্তিদের জন্য যথেষ্ট সুবিধাজনক অবস্থার সৃষ্টি করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দিয়ে প্যাক করা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এমন একটি অণু, যা কোষের ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল নামক যৌগের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ বিশেষ করে পাতা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। আর তাই এটি ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে মুক্ত করতে এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা
প্রোটিন উৎপাদন থেকে শুরু করে চর্বি ভাঙ্গা সহ শরীরের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপের জন্য লিভারের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো থাকা অপরিহার্য। জবা ফুলের চা পানে লিভার ক্রমাগত ভালোভাবে কাজ করে যেতে পারে। অতিরিক্ত ওজনের মানুষের ক্ষেত্রে তিন মাস জবা ফুলের নির্যাস লিভার স্টেটোসিস উন্নত করে দিতে পারে। এতে করে লিভার এতে জমে থাকা চর্বি থেকে মুক্তি পায়।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ডালিমের খোসার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
হজমে সহায়তা
মূত্রবর্ধন প্রয়োজনীয় পানি ও লবণকে দেহে রাখতে সহায়তা করে যেগুলো প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে বেড়িয়ে যায়। এই চা প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও এটি মূলত চিনি ও ক্যাফেইন-মুক্ত পানীয় পান করার একটি ভালো মাধ্যম, যেটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে। ফলশ্রুতিতে, শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির উপস্থিতি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে হজমে সহায়তা করে।
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা
ব্যাকটেরিয়া হল এককোষী অণুজীব, যা ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া ও মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রভৃতি রোগের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিক্যান্সার বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে জবা ফুল ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে।
ই.কোলি নামের ব্যাকটেরিয়াগুলো ক্র্যাম্পিং, গ্যাসট্রিক এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে থাকে। জবা ফুলের নির্যাস এই ব্যাকটেরিয়াটির কার্যকলাপকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে এই নির্যাস বেশ কর্মক্ষম। এমনকি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসায় রীতিমত অ্যান্টিবায়োটিকের মতই কাজ করে।
আরও পড়ুন: গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
জবা ফুলের চা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
রক্তচাপ অতিরিক্ত কমে যাওয়া
কম রক্তচাপ সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য এই চা পান বিপজ্জনক হতে পারে। এই পানীয় দেহে রক্তচাপের ভারসাম্যতা যাচাই না করেই রক্তচাপ কমাতে থাকে। তাই চরম অবস্থায় নিচু রক্তচাপের আনুষঙ্গিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। যারা ইতিমধ্যেই রক্তচাপ কমানোর জন্য ওষুধ গ্রহণ করছেন তাদের জন্যও এই চা পান এড়িয়ে চলা উচিত।
রক্তচাপ অনেক কমে গেলে হ্যালুসিনেশন পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি এমনকি যারা উচ্চ রক্তচাপের জন্য ওষুধ নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রেও এই চা পানের সময় তাদের রক্তে শর্করা এবং রক্তচাপের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা উচিত। নতুবা অবস্থা আরো খারাপ দিকে মোড় নিতে পারে।
ব্লাড সুগার মাত্রাতিরিক্ত কমে যাওয়া
নিম্ন রক্তচাপের মতো রক্তে শর্করার পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হ্রাস পাওয়াও অনেক ঝুঁকি নিয়ে আসে। যাদের রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ওষুধ চলছে, তাদের এই চা না পান করাই ভালো। এছাড়া যাদের মাঝারি থেকে বড় ধরনের অস্ত্রোপচার হয়েছে, তাদেরও এই পানীয়টি এড়িয়ে চলা উচিত। স্পষ্টতই সেই পরিস্থিতিতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ আরো কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হতে পারে।
আরও পড়ুন: অপরাজিতা ফুলের নীল চা: জাদুকরী স্বাস্থ্যগুণ, বানানোর পদ্ধতি
শরীরে ওষুধের কার্যকারিতা লোপ পাওয়া
জবা ফুলের চা একটি ভেষজ পানীয় হওয়ায় ওষুধের সাথে এর সাধারণ যোগসাজস আছে। তাই সে অনুযায়ী আনুষঙ্গিক ঝুঁকিও নিয়ে আসে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিটি হলো টাইলেনলের সক্রিয় উপাদান অ্যাসিটামিনোফেন। শরীরের অভ্যন্তরে জবা ফুলের চা ও এই উপাদানের সংমিশ্রণ লিভারের জন্য চরম ক্ষতিকর হতে পারে। ফলশ্রুতিতে মূত্রবর্ধক সহ নানা ধরনে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ থেকে বাঁচার নিমিত্তে এদের পরস্পরের সাথে মিশ্রিত করা থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।
যারা ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন গ্রহণ করেন তাদের জন্য এই শক্তি বর্ধক পানীয় সেবন নিরাপদ নয়। শরীরে এর উপস্থিতি ও প্রভাব স্থায়ী করার জন্য অন্য ওষুধের কার্যকারিতাকে নিমেষেই নষ্ট করে দেয়।
জবা ফুলের চা বানানোর পদ্ধতি
টক স্বাদযুক্ত হলেও জবা ফুলের চা কে সুস্বাদু পানীয়তে পরিণত করা যায় এবং এই চা বানানোর যাবতীয় প্রস্তুতি বাড়িতেই নেয়া সহজ। চায়ের জন্য নির্ধারিত মগটিতে ভালো ভাবে পিষে নেয়া জবা ফুলের কিছু বৃন্ত রাখতে হবে। অতঃপর তাতে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দিতে হবে। এই সহজ মিশ্রণটি পাঁচ মিনিটের জন্য রেখে দেয়ার পর ছেঁকে নিলেই একদম সাধারণ মানের জবা ফুলের চা তৈরি হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
তবে ফুলের টক স্বাদে পরিবর্তন আনতে গরম পানি যুক্ত করার আগে অথবা পরে প্রয়োজন মত মধু ও লেবুর রস দেয়া যেতে পারে। এতে টক স্বাধের ভারসাম্য বজায় থাকবে আবার স্বাদ মিষ্টিও হয়ে যাবে। এছাড়াও সাধারণ রঙ চায়ের মত ছোট ছোট আদার টুকরাও যোগ করা যেতে পারে।
এটি ঠান্ডা-গরম উভয় অবস্থাতেই পান করা যায়। তৈরি চা ঠান্ডা হলে ফ্রিজে দুই দিন রেখে দিলেই দারুণ একটি আইস টি হয়ে যায়। তাছাড়া সদ্য বানানো চা ঠান্ডা করার পর কিছু বরফ কুঁচি যোগ করেও ঠান্ডা চায়ের ফ্লেভার নেয়া যায়।
জবা ফুলের চা দোকানে রেডিমেড টি-ব্যাগেও পাওয়া যায়। সেগুলো সহজভাবে গরম পানিতে প্রয়োজন মত ভিজিয়ে উঠিয়ে নিলে কম সময়েই পানের উপযোগী হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
শেষাংশ
ভেষজ পানীয় জবা ফুলের চায়ের স্বাস্থ্যগুণ নিয়ে এখনো গবেষণা হচ্ছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো উতড়ে সম্পূর্ণ উপযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে এই চা পানকারির উপর এর প্রতিটি প্রভাব সুক্ষ ভাবে যাচাই করা হচ্ছে। অবশ্য নিত্য দিনের খাদ্যাভাসে ২ থেকে ৩ কাপ জবা ফুলের চা রাখা যেতে পারে। এর বেশি পান করাটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। এদিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে পান করা হলে খাদ্যাভাসে স্বাদ পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্য সম্মত উপকারিতায় এই চা একটি দারুণ সংযোজন হতে পারে।