অর্থনীতি
এলএনজি, সার ও মসুর ডাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন মন্ত্রিসভায়
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এলএনজি, সার ও মসুর ডাল আমদানিসহ সাতটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভায় কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা ৫৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজির একটি কার্গো আমদানি করবে, যার প্রতিটি ইউনিট ১৩ দশমিক ৬৯ ডলার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলরেট এনার্জি এলপি এলএনজি কার্গো সরবরাহ করবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের একটি প্রস্তাবে ৭২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল আমদানির জন্য কমিটির অনুমোদন পেয়েছে।
আরও পড়ুন: আয়কর আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
ভারতের উমা এক্সপো প্রা. লিমিটেড (স্থানীয় এজেন্ট: ফিউচার ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, ঢাকা) প্রতি কেজি ৯১ টাকায় মসুর ডাল সরবরাহ করবে।
কমিটি সার আমদানির বিষয়ে পৃথক দুটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপি, এসএ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করবে। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম হবে ৬১০ ডলার।
স্থানীয় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি (কাফকো) থেকে ১০৫ দশমিক ৪৩ কোটি টাকায় আরও ৩০ হাজার মেট্রিক টন দানাদার ইউরিয়া সংগ্রহ করা হবে এবং প্রতি মেট্রিক টনের জন্য খরচ হবে ৩২৭ দশমিক ৬২ ডলার।
‘বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে লক্ষ্মীপুর উন্নয়ন সড়ক’- শীর্ষক প্রকল্পের ব্যয় ১৫ কোটি ২১ লাখ টাকা বাড়ানোর জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
এদিকে, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) অধীনে ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও ওভারফ্লো কনটেইনার ইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি অপারেটরদের নিয়োগ’।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পিপিপি প্রকল্প, ২০১৮ এর জন্য প্রকিউরমেন্ট গাইডলাইন অনুযায়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
আরও পড়ুন: কৃষিপণ্যের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণে নীতিমালা অনুমোদন মন্ত্রিসভার
বিইআরসি ছাড়াই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার, মন্ত্রিসভায় সংশোধনী অনুমোদন
হজের খরচ কমানোর বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি: ধর্ম মন্ত্রণালয়
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম বলেন, হজ প্যাকেজের দাম কমানোর বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখনও আদালতের আদেশের অনুলিপি পাইনি। যদি নতুন কোনও সিদ্ধান্ত হয়, আমরা পরে আপনাকে জানাব।’
তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান প্যাকেজের অধীনে হজের নিবন্ধন আজ শেষ হচ্ছে। ইচ্ছুক হজযাত্রীদের এই সময়ের মধ্যে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হবে।
রেজিস্ট্রেশনের সময় বাড়ানো হবে কিনা তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান মতিউল।
১৫ মার্চ পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৫৬৯ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯১ হাজার ২৪৬ জন হজে নিবন্ধন করেছেন।
আরও পড়ুন: আজ শেষ হচ্ছে হজের নিবন্ধন
তিনি বলেন, নিবন্ধনের জন্য এখনও ২৫ হাজার ৪৮০টি খালি কোটা রয়েছে।
বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে হজ প্যাকেজ খরচ কমানোর উদ্যোগ নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
চলতি বছর হজের উচ্চ ব্যয় নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা শুনে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মঙ্গলবার আদালত প্রশ্ন তোলেন যে সরকার নির্ধারিত প্যাকেজের খরচে সাধারণ মানুষ কীভাবে হজ করবে।
এতে প্রশ্ন করা হয়, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সরকার কেন হজের জন্য বাজেট বরাদ্দ করে না?
এ বছর সরকারের দেয়া হজ প্যাকেজ সংশোধন নিয়ে এক রিট আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন।
এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি ধর্ম মন্ত্রণালয় একটি স্মারকলিপিতে ২০২৩ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে।
প্যাকেজ অনুসারে, একজন ব্যক্তিকে এই বছর হজ করতে ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা খরচ করতে হবে; ২০২২ সালে যার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: এত টাকা লাগলে সাধারণ মানুষ কীভাবে হজে যাবে: প্রশ্ন হাইকোর্টের
বেসরকারি হজ প্যাকেজে ন্যূনতম খরচ ৬.৭২ লাখ টাকা: হাব
ফেব্রুয়ারিতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে: বিবিএস
পাঁচমাস পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি আবারও বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, সার্বিক মূল্যস্ফীতির সঙ্গে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। তবে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারিতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। জানুয়ারিতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ছিল খাদ্যে ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং অখাদ্য পণ্যে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সেসময় নগরীতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং অখাদ্য পণ্যে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।
গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৯ শতাংশের ওপরে। গত ১১ বছর ৯ মাসে (১৪৪ মাসে) মূল্যস্ফীতির এই হার ছিল সর্বোচ্চ।
২০১১ সালের মে মাসে মূল্যস্ফীতির সর্বোচ্চ হার ছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। তখন মূল্যস্ফীতি কখনো ৯ শতাংশের বেশি হয়নি।
আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের
২০২২ সালের আগস্ট মাসের পরে, মুদ্রাস্ফীতির হার আবার কমতে থাকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা কমে ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ ছিল।
অন্যদিকে, সর্বশেষ মূল্যস্ফীতির হিসাব অনুযায়ী, শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় এখনও মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি।
ফেব্রুয়ারিতে শহরাঞ্চলে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যেখানে গ্রামাঞ্চলে এটি ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ গণনা করা হয়েছিল। সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি খাদ্য ও অখাদ্য উভয় ক্ষেত্রেই গ্রামীণ এলাকায় মূল্যস্ফীতির হার বেশি ছিল।
এদিকে, গত কয়েক মাসে সরকারের মতে মূল্যস্ফীতির হার কমলেও বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে।
এমনকি স্বল্প আয়ের মানুষের প্রোটিনের অন্যতম উৎস ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকার ঊর্ধ্বে উঠে গেছে।
ফলে সাধারণ মানুষ অনেক দিন ধরেই কমফোর্ট জোনে নেই বলে জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন।
যদিও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড়েছে, কিছু পণ্যের দাম কমলেও তা খুব কম হারে কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও চাষকৃত মাছ দেশের লাখ লাখ সীমিত আয়ের মানুষের প্রোটিনের প্রধান উৎস। দাম বাড়ার কারণে, নিম্ন-আয়ের মানুষেরা তাদের সীমিত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতে এই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: নভেম্বরে বাংলাদেশে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৮.৮৫ শতাংশ
অক্টোবরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি খানিকটা কমে ৮.৯১%
দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আকস্মিক বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠী ও নদীর তীরবর্তী মানুষের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস করার লক্ষ্যে ৪ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার 'রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন প্রজেক্ট (রিভার)' অনুমোদন করেছে।
রবিবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় আরও সাতটি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আজ আটটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে এবং প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ১২ হাজার ১৬৭ দশমিক ১৫ কোটি টাকা (এখানে শুধুমাত্র দুটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় গণনা করা হয়েছে)।’
তিনি বলেন, মোট অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ৯৭ দশমিক ৯১ কোটি টাকা জাতীয় কোষাগার থেকে, ৮ হাজার ৯১২ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে এবং বাকি ১৫৬ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে নেয়া হবে।
অনুমোদিত ৮টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প এবং বাকি ২টি সংশোধিত প্রকল্প।
এছাড়া বৈঠকে ব্যয় না বাড়িয়ে আরও চারটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: একনেকে ৭ হাজার ১৮ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন
প্ল্যান্টিং কমিশনের মতে, রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপ্টেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন প্রজেক্ট (রিভার) ৪ হাজার ৩২৩ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে ১৪টি জেলার ৭৮টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা আসবে বহিরাগত উৎস (আইডিএ) থেকে।
রিভার প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল আকস্মিক বন্যাপ্রবণ জনগোষ্ঠী ও নদীর তীরবর্তী মানুষের বন্যা ঝুঁকি হ্রাস করা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ১০০টি সৌরবিদ্যুৎ গ্রিড স্থাপন, প্রায় ২৫০টি মাঠের উচ্চতা হ্রাস করা ও ২৭৫ কিলোমিটার বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ৫০০ মিটার সেতু নির্মাণ, ১ হাজার ৩৩০ মিটার কালভার্ট নির্মাণ, ১১০ কিলোমিটার কমিউনিটি অবকাঠামো সংযোগ সড়ক উন্নয়ন, ১৫টি ল্যান্ডিং স্টেজ স্থাপন, প্রায় ৬ হাজার ৬০০টি সড়কে সোলার লাইট স্থাপন ও প্রায় ১ হাজার ৪০০টি বজ্রপাত-রোধী মেশিন স্থাপন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক চার লেনসহ একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
আরও পাঁচটি নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- অতিরিক্ত ১ হাজার ৪৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ট্রান্সমিশন-গ্রিড সম্প্রসারণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, ১২৮ দশমিক ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জেন্ডার রেসপনসিভ এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টিভিইটি সিস্টেম (প্রগ্রেস), ১ হাজার ৬৮৬ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শুল্ক আধুনিকায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ১২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা কর্তন করে ৩য় সংশোধিত নগর টেকসই প্রকল্প (ইউআরপি): প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ), ৩ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন (এসসিআরডি) প্রকল্প, ১হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ৩৪৭ দশমিক ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা-ধোনাগোদা সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন ও নদীর তীর রক্ষা।
দুটি সংশোধিত প্রকল্প হল সাউথ-ওয়েস্টার্ন পাওয়ার ট্রান্সমিশন-গ্রিডের সম্প্রসারণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প যার অতিরিক্ত ব্যয় ১ হাজার ৪৮ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা (বর্তমানে মোট ব্যয় ৪ হাজার ৩২২ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা বেড়েছে); এবং আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি): প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ) (তৃতীয় সংশোধিত) যার খরচ কমানো হয়েছে ১২ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা (এখন এর খরচ কমে হয়েছে ৩২ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা)।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
আর্থিক খাত সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছে আইএমএফ দল
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচিত ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে, আর্থিক খাত সংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি দল চলতি সপ্তাহে ঢাকা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসময় আইএমএফ দল বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তাদের সঙ্গে এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। কেননা প্রায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ রেজিলেন্স এন্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) –এর অধীনে বিতরণ করা হবে।
আরএসএফ বাংলাদেশের জলবায়ু বিনিয়োগের বিষয়টিকে সমর্থন করতে, জলবায়ু অর্থায়নকে প্রভাবিত করতে এবং আমদানি-নির্ভর জলবায়ু বিনিয়োগ থেকে অর্থপ্রদানের ভারসাম্যের চাপ কমাতে সাশ্রয়ী ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের ঋণ অনুমোদন বিবেচনা করতে পারে
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে, এখানে অবস্থানকালে প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের জন্য ঋণের পরবর্তী কিস্তি দেয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকের হালনাগাদ তথ্য জানতে চাইবে।
ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ, বৈদেশিক মুদ্রার হার, মুদ্রানীতি, ঋণ পুনরুদ্ধার, সুদের হার, জিডিপি এবং মুদ্রাস্ফীতির বিষয়সহ বিভিন্ন নীতি সংস্কার বাস্তবায়ন করছে।
প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে- বেসরকারি খাতকে জ্বালানি আমদানির অনুমতি দেয়া এবং খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো।
এছাড়া, জ্বালানি পণ্যসহ আমদানি পণ্যের দাম ব্যবহারভিত্তিক করা এবং কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হবে।
এই ব্যবস্থাগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ইতোমধ্যে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও সূত্র জানায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জন্য ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দিল আইএমএফ
বাংলাদেশ ব্যাংকের আশা আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি আগামী মাসের মধ্যে আসবে: মুখপাত্র
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ডলার সংকটের প্রভাব
১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তার আংশিক উৎপাদন পুনরায় শুরু করেছে। তবে কর্মকর্তারা এখনও ডলার সংকটের কারণে এটির নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ প্ল্যান্টের প্রধান জ্বালানি ‘কয়লা’ আমদানি আবার ব্যাহত হতে পারে।
কয়লা ঘাটতির কারণে এক মাস বন্ধ থাকার পর বুধবার থেকে কয়লাভিত্তিক প্ল্যান্টের ইউনিট-১ পুনরায় উৎপাদন শুরু করেছে।
গত মাসে বন্ধ হওয়ার আগে আগস্টে শুরু হওয়া প্ল্যান্টটি এখনও পরীক্ষামূলকভাবে চলছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) কর্মকর্তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার একটি ব্রিফিংয়ে রামপাল প্লান্টের বিআইএফপিসিএলের প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডে বলেন, প্লান্টটি চালু রাখতে হলে কয়লা আমদানির বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: কয়লার অভাবে ৮ দিন ধরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ
তিনি প্ল্যান্ট পরিদর্শনকারী একদল জ্বালানি বিষয়ক সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্ল্যান্টে ব্যবহৃত কয়লা উচ্চমানের এবং উপমহাদেশে পাওয়া যায় না।’
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, কয়লা সরবরাহের ঘাটতির কারণে ১৪ জানুয়ারি ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ইউনিট-১ বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানির কোনো লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতে পারছে না বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
সরকারের নীতিগত পর্যায়ে অনেক বোঝানোর পর কয়লা আমদানির জন্য এলসি খোলার অনুমতি দেয়া হয় এবং সরবরাহকারী ৩০ হাজার মেট্রিক টনের একটি চালান পাঠায়।
বিআইএফপিসিএল কর্মকর্তারা জানান, প্ল্যান্টের জন্য কয়লা আমদানির পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।
বিআইএফপিসিএল ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এনটিপিসি এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিক ও পরিচালক।
ওই কর্মকর্তা জানান, ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লার আরেকটি চালানও শিগগিরই দেশে আসছে।
আরও পড়ুন: রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের দৃঢ় বহিঃপ্রকাশ: প্রণয় ভার্মা
কয়লার বর্তমান মজুদ থাকায় প্ল্যান্টটি চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত চলতে পারে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ইউনিট-১ পূর্ণ ক্ষমতার সঙ্গে চালু রাখতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন কয়লা প্রয়োজন।
প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউনিট-২ চলতি বছরের জুন মাসে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং সেই সময়ে প্রতিদিন প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হবে।’
তিনি বলেন, ইউনিট-১ এখন পরীক্ষাধীন রয়েছে। কারণ বিআইএফপিসিএলের সঙ্গে বিপিডিবি’র বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) রয়েছে, তারা এখনও প্ল্যান্টের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দেয়নি।
আরও পড়ুন: রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ চুক্তি জিতল বসুন্ধরা গ্রুপ
রমজানে ১ কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
আসন্ন রমজানে মানুষ চাল নিয়ে বিব্রত কর অবস্থায় পড়বে না বলে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
তিনি বলেন, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, আমা করছি বোরোতে বাম্পার ফলন হবে। ফলে দেশে চাল আমদানির আর প্রয়োজন হবে না বলে আমি মনে করি।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে খাদ্যমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সামনে রমজান মাস, খাদ্য মন্ত্রণালয় মুলত রেশনিং, কাবিখা, টিআর, ওএমএস কর্মসূচির চাল বিতরণ করে থাকি। বিতরণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্ববৃহৎ বিতরণ ব্যবস্থা চলছে। ২৫০০ ডিলারের মাধ্যমে চাল ও আটা প্রতিনিয়তই বিতরণ চলছে। হিসেব অনুযায়ী এ সময় ওএমএস বন্ধ থাকে। শুধু সিটিতে কিছু থাকে। বর্তমানে আমাদের সিটি, জেলা উপজেলা ও পৌরসভাগুলোতে চলছে। ওএমএস'র আওতায় যারা নিম্ন আয়ের লোক তারা ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল ও ২৪ টাকা কেজি দরে ৩ কেজি আটা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী ১ মার্চ থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া শুরু হবে। এটা বছরে ৫ মাস চলে, মার্চ, এপ্রিল, মে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেয়া হয়। আমাদের ওএমএস এ এক কোটির ওপরে পরিবার বছর জুড়েই ৫ কেজি চাল ও ৩ কেজি আটা পাবে।
এছাড়া, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সেখানে মিয়নমার থেকে আমদানি করা আতপ চাল দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: চালের দাম বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই: খাদ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আমাদের বেসরকারি আমদানি খোলা রয়েছে। তবে কম আসছে। কারণ দেশে এখন প্রচুর চাল আছে। সরকারি মজুতও প্রচুর রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের বিতরণ যেমন অনেক বেশি পাশাপাশি মজুদও সবচেয়ে বেশি রয়েছে। বর্তমানে আমাদের ২০ লাখ ৩৩ হাজার ৯২৮ মেট্রিক টন মজুদ রয়েছে। আমাদের যেমন বিতরণ হচ্ছে তেমনি সংগ্রহও হচ্ছে। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টন চাল সংগ্রহ হচ্ছে। যদিও আমাদের ৫ লাখ মেট্রিকটন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিলো সেখানে আমাদের ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৩০ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। চুক্তি হয়েছিলো ৪ লাখ ৬২ হাজার ৪৭৩ মেট্রিকটন। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো। আমাদের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও মজুদ ভালো।
তাহলে ধান সংগ্রহ হয়নি কেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ধান সংগ্রহের জন্য সরকার যে রেট নির্ধারণ করে দেয়। কারণ কৃষকরা যাতে মিলার, মজুদদার বা খরিদদারের কাছে প্রতারিত না হয়। বাজারে যদি দাম কম থাকে তাহলে কৃষকরা সরকারের কাছে বিক্রি করে লাভবান হতে পারে। এবছর সরকারি মূল্য থেকে বাজারে মূল্য বেশি থাকায় কৃষকদের সরকারের কাছে ধান দেয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ কৃষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত মূল্য বাজারেই পাচ্ছে। অতএব প্রসার দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান নিতে চাই না। আমি মনে করি কৃষকরা খুব ভালো আছে, সুখে আছে।
বৈশ্বিক সংকটের চ্যালেঞ্জগুলো কোথায় জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দেশনার কারণে আমাদের দেশে বৈশ্বিক সংকটের তেমন কোন প্রভাব ফেলেনি এবং ফেলতে পারবে না। আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে, কোন দুর্বিপাক না হলে রোবোতেও বাম্পার ফলন হবে। ফলে আমদানির আর প্রয়োজন হবে না বলে আমি মনে করি।
চালের দাম কমছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে সব কিছু যদি বিচার বিশ্লেষণ করেন যেমন,-ডলারের দাম, উৎপাদন খরচ সব কিছু বিবেচনা করলে আমি মনে করি বৈশ্বিক এই সংকটে চালে দাম স্থিতিশীল আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে যে হাহাকার নেই, এটাই আমাদের জন্য অনেক বড় পাওনা।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য তো ওএমএস, কাবিখা আছে। আর অসাধারণের জন্য এরোমেটিক, প্যাকেট, সিলকি আছে। তাহলে মধ্যবিত্তরা কোথায় যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওএমএস কি শুধু সাধারণ মানুষ যায়, সেখানে অনেক মধ্যবিত্তও যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: খাদ্যশস্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
চকচকে চাল বর্জন করে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন চাল খাওয়ার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
আইএমএফের পরামর্শে নতুন ভিত্তি বছরে মার্চ থেকে মুদ্রাস্ফীতি গণনা করবে বিবিএস
বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি ও আইএমএফের পরামর্শ বিবেচনায় মুদ্রাস্ফীতি গণনায় আমূল পরিবর্তন করছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো(বিবিএস)।
বিবিএস সূত্র জানিয়েছে, ২০০৫-০৬ এর বিদ্যমান ভিত্তি বছরের পরিবর্তে ২০২১-২২ সালের জন্য মূল্যস্ফীতি গণনা করা হবে। যা বর্তমান সময়ে জীবনধারা এবং ভোক্তাদের আচরণে একটি বড় পরিবর্তনের কারণে আরও সঠিক হবে।
বিবিএস জানিয়েছে, নতুন ভিত্তি বছরে গত দেড় দশকে মানুষের ভোগের ধরনে যে পরিবর্তন এসেছে তা অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৫-০৬ সালের ভিত্তি বছরে শুধুমাত্র ৪২৬টি পণ্য ও পরিষেবা ব্যবহার করে মূল্যস্ফীতি গণনা করা হয়েছিল। নতুন ভিত্তি বছরে আরও প্রায় ৩০০ পণ্য ও সেবা বাড়ছে।
নতুন হিসাবে মোট ৭২২টি পণ্য ও সেবা থাকবে, যেগুলো ১০০ পয়েন্ট নিয়ে মূল্যস্ফীতিতে এসব পণ্যের অবদান হিসাব করা হবে।
বিবিএস কর্মকর্তা বলেন, এক্ষেত্রে চালের অবদান থাকবে ১৩টি। বাকি ৭২১টি পণ্য ও সেবার অবদান ৮৭টি। প্রথমবারের মতো খাদ্যবহির্ভূত পণ্য ও সেবার অবদান ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর মানে হলো মানুষ খাদ্য কেনার চেয়ে অন্যান্য পণ্য ও সেবা গ্রহণে বেশি খরচ করে।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ ইউএনবিকে বলেন, অবশ্যই একটি নতুন ভিত্তি বছর প্রয়োজন। কিন্তু খাদ্যপণ্যের তালিকা আমূল পরিবর্তন করতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জন্য ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন দিল আইএমএফ
তিনি বলেন, ‘বর্তমান খাদ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট-ভিত্তিক খাবার। খাদ্য পণ্য ক্যালোরির পরিবর্তে পুষ্টির মান দিয়ে তালিকাভুক্ত করা উচিত। এটি সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা দরকার।’
কোভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে গত ছয় মাসে মুদ্রাস্ফীতি বেশি হয়েছে। তারপর থেকে, অর্থনীতিবিদরা যুক্তি দিচ্ছেন যে বর্তমান ব্যবস্থা মূল্যস্ফীতির সঠিক চিত্র ধারণ করে না।
তারা মনে করেন যে মূল্যস্ফীতি আসলে আরও বেশি।
ইতোমধ্যে, সরকার মুদ্রাস্ফীতির গণনায় ভিত্তি বছর পরিবর্তন করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
এই সংস্কার প্রস্তাব অনুযায়ী বিবিএস আগামী জুলাই থেকে নতুন ভিত্তি বছর ও পদ্ধতি থেকে মূল্যস্ফীতি গণনা করবে। ফলস্বরূপ, বিবিএস কর্মকর্তারা আশা করেন যে মানুষের ব্যয় এবং ব্যয়ের প্রবণতা আরও স্পষ্টভাবে চিত্রিত হবে।
বিবিএস কর্মকর্তা বলেছেন, এরপরও কর্মকর্তারা মনে করেন যে মূল্যস্ফীতি গণনা সম্পর্কে অনেক অর্থনীতিবিদদের দীর্ঘদিনের সংশয় হ্রাস পাবে।
বিবিএস ইতোমধ্যে একটি ভিত্তি বছরে পরিবর্তিত হয়েছে এবং পণ্য ও পরিষেবার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। নতুন ভিত্তি বছরে মূল্যস্ফীতি গণনার পাইলট প্রোগ্রাম আগামী মাসে শুরু হবে।
আরও পড়ুন: আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি পেল বাংলাদেশ
জুলাই মাসে ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক জানিয়েছেন, আগামী জুলাই মাসে প্রতিদিন ফজরের সময় থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল করবে।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইস্কাটনে ডিএমটিসিএল কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোরেল চালু হলেও সীমিত সময়ের জন্য চলছে। বর্তমানে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তথা মাত্র মাত্র ৪ ঘণ্টা চলছে মেট্রোরেল।
তিনি বলেন, জুলাই মাস থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মেট্রোরেলের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু করা হবে। তখন অফিসগামী মানুষও বেশি চলাচল করতে পারবে। এখন মেট্রোরেলের চলার সময় ও অফিস টাইমের সঙ্গে মিস ম্যাস রয়েছে। আমরা আগেও বলেছিলাম পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রমে যাব। পৃথিবীর সব মেট্রোরেল কিন্তু এভাবেই শুরু হয়। এটা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড প্র্যাক্টিস। আমরাও এটা অনুসরণ করে মেট্রোরেল পরিচালনা করছি।
তিনি আরও বলেন, মেট্রোরেল পুরোদমে উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত চালু হলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার ও দৈনিক পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।
আরও পড়ুন: ২৫ জানুয়ারি থেকে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মেট্রোরেল চলবে
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব: সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল
যাত্রীদের জন্য মেট্রোরেলের পল্লবী স্টেশন খুলে দেয়া হলো আজ
এলপিজির দাম কেজি প্রতি বাড়ল ২২.১৫ টাকা
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতি কেজি ১০২ দশমিক ৭০ টাকা থেকে ২২ দশমিক ১৫ টাকা বেড়ে ১২৪ দশমিক ৮৫ টাকা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)সর্বশেষ দাম ঘোষণা করেছে।
নতুন মূল্য অনুসারে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ২৬৬ টাকা বেড়েছে। এর ফলে একজন খুচরা গ্রাহক এটি ভ্যাটসহ আগের এক হাজার ২৩২ টাকার পরিবর্তে এক হাজার ৪৯৮ টাকায় কিনতে পারবেন।
বিইআরসি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অন্যান্য মাপের সিলিন্ডারের জন্য এলপিজির দাম সাড়ে পাঁচ কেজি থেকে ৪৫ কেজি পর্যন্ত আনুপাতিকহারে বাড়বে৷
বিইআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, সৌদি সিপির (চুক্তি মূল্য) বিপুল মূল্য বৃদ্ধির কারণে দাম এত বেশি বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত মাসে সৌদি সিপি অনুসারে এলপিজির প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ছিল ৫৯৯ দশমিক ৫৯ মার্কিন ডলার। যেখানে বর্তমান মাসের সিপি প্রতি মেট্রিক টনে ১৯০ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি করে ৭৯০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশি এলপিজি অপারেটররা সাধারণত সৌদি সিপির ভিত্তিতে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার থেকে তাদের পণ্য আমদানি করে।
বিইআরসি সিদ্ধান্ত অনুসারে, ‘অটো গ্যাস’ (মোটর গাড়ির জন্য ব্যবহৃত এলপিজি) এর দামও প্রতি লিটারে ১২ দশমিক তিন টাকা বেড়ে আগের ৫৭ দশমিক ৪১ টাকা থেকে ভ্যাটসহ প্রতি লিটার ৬৯ দশমিক ৭১ টাকা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এলপি গ্যাস কোম্পানির বিপণন করা এলপিজির দাম একই থাকবে, কারণ এটি স্থানীয়ভাবে পাঁচ শতাংশের কম বাজার শেয়ার নিয়ে উৎপাদিত হয়।
আরও পড়ুন: নির্ভরযোগ্য জ্বালানির সমাধান হিসেবে কারখানায় এলপিজি ব্যবহার করা যেতে পারে: বক্তারা
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর স্থানীয় বাজারে এলপিজির দাম বেড়েছে এক হাজার ৪৩৯ টাকা (প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডার)। তবে এই ফেব্রুয়ারি মাস রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ দামের সাক্ষী হলো।
সাধারণত, বিইআরসি চেয়ারম্যান ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে প্রতি মাসের শুরুতে এলপিজির দাম ঘোষণা করেন।
এবার, বিইআরসি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের মধ্যে চারজন সদস্য সরকারের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর নেয়ায় কোনো প্রেস ব্রিফিং হয়নি।
বিইআরসির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য নতুন চেয়ারম্যান বা কোনও সদস্য এখনও নিয়োগ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমল ৬৫ টাকা