������������������������
ফের বাড়ল এলপিজির দাম
অক্টোবর মাসে তরলিকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কেজিতে ৬ টাকা ৬ পয়সা বেড়ে ১১৩ টাকা ৬১ পয়সা হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে প্রতি কেজি এলপিজির দাম ছিল ১০৭ টাকা ০১ পয়সা।
সোমবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নতুন দাম ঘোষণা করে বলেছে, খুচরা ক্রেতাদের এখন ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের আগের দাম ১২৮৪ টাকার পরিবর্তে ভ্যাটসহ ১৩৬৩ টাকায় কিনতে হবে।
অর্থাৎ, ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৭৯ টাকা বেড়েছে।
ঢাকায় বিইআরসি অফিসে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলণে বিইআরসি চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন বলেন, সাড়ে ৫ কেজি থেকে ৪৫ কেজি পর্যন্ত অন্যান্য আকারের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম যুক্তিসঙ্গতভাবে বাড়বে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ১২ কেজি এলপিজির দাম বাড়ল ১৪৪ টাকা
বিইআরসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘অটো গ্যাস’ (মোটর গাড়ির জন্য ব্যবহৃত এলপিজি) এর দামও প্রতি লিটার (ভ্যাটসহ) ৫৮ টাকা ৮৭ পয়সা থেকে বেড়ে ৬২ টাকা ৫৪ পয়সা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতি লিটারে ৩ দশমিক ৬৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এলপি গ্যাস কোম্পানির বাজারজাত এলপিজির দাম একই থাকবে, কারণ এটি স্থানীয়ভাবে ৫ শতাংশের কম বাজার শেয়ার নিয়ে উৎপাদিত হয়।
বিইআরসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সৌদি সিপির (চুক্তি মূল্য) দাম বৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারে এলপিজির দাম বাড়বে।
বাংলাদেশি এলপিজি অপারেটররা সাধারণত সৌদি সিপির ভিত্তিতে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার থেকে তাদের পণ্য আমদানি করে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় বাজারে এলপিজির সর্বোচ্চ দাম ছিল ১ হাজার ৪৯৮ টাকা (প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডার)।
আরও পড়ুন: আগস্টে ১২ কেজি এলপিজির দাম বাড়ল ১৪১ টাকা
প্রতিকেজি এলপিজির দাম ১৩ টাকা ৪২ পয়সা কমেছে
অর্থনীতিকে করোনা পূর্ববর্তী অবস্থায় ফেরাতে চায় সরকার
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ নাগাদ প্রবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতিকে কোভিড পূর্ববর্তী গতিতে ফিরিয়ে আনার আশা করছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি নথিতে সরকারি বিবরণ অনুযায়ী ২০২০-২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত অর্থনীতির বৃদ্ধির গতি থামিয়ে দিয়েছে মহামারি। এই পরিস্থিতি থেকে বিশ্ব পুনরুদ্ধার করার আগেই ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। ফলে বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অব্যাহত অস্থিরতার কারণে পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যেতে আবারও বাধাগ্রস্ত হয়।
একটি নোটে আইএমএফ প্রবৃদ্ধির অনুমান সংশোধন করেছে এবং বিশ্বব্যাপী পূর্বে যা প্রত্যাশিত ছিল তার চেয়ে বেশি পরিমিত বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ তার অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে প্রস্তুত। তবে, প্রকৃত তথ্য দেখায় যে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের বৃদ্ধির সময়েও বাংলাদেশ চিত্তাকর্ষকভাবে কাজ করেছে এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ নাগাদ কোভিড পূর্ব প্রবৃদ্ধির গতিপথে ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণমান নেতিবাচকে নামাল ফিচ
সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে এবং 'অনুমান' অনুযায়ী চলতে থাকলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এতে বলা হয়েছে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পরিকল্পিত প্রবৃদ্ধি থেকে প্রকৃত বিচ্যুতি সামান্য রয়ে গেছে। পুঁজি সঞ্চয় করা উন্নয়নের চাবিকাঠি এবং তাই সরকার সরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্য রাখতে হবে।
২০২১-২২ অর্থবছরে মোট বিনিয়োগ জিডিপির ৩২ দশমিক শূন্য শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ব্যক্তিগত এবং সরকারি খাতের অবদান যথাক্রমে ২৪ দশমিক পাঁচ এবং ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
তবে এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে দীর্ঘ ও মধ্যমেয়াদী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে বিনিয়োগের মাত্রা আরও বাড়াতে হবে।
নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে সরকারি বিনিয়োগের বাস্তবায়নের হার বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। যদি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের গতি বাড়ানো যায় তবে বিনিয়োগের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা যেতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘সরকার প্রকল্পের নকশা এবং বাস্তবায়ন উভয় স্তরেই কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।’
সরকারি নথিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। রাশিয়া জ্বালানির একটি প্রধান বৈশ্বিক সরবরাহকারী। তাই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই পণ্যের দাম দ্রুত বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: বাংলদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ২১.১৫ বিলিয়ন ডলার, যা বলছেন অর্থনীতিবিদরা
প্রায় সব দেশের মতো বাংলাদেশও এর ভুক্তভোগী হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে, পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়ায় এবং তারপরে ২০২৩ সালের মার্চে আরও এটি ৯ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হয়।
যাইহোক, বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম ইতোমধ্যেই কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নীতিগত হার বাড়িয়েছে এবং এর কারণে আশা করা হচ্ছে যে আগামী মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে।
আইএমএফ এও অনুমান করেছে যে সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা মধ্যমেয়াদে মুদ্রাস্ফীতি কমাতে সাহায্য করবে। অর্থ বিভাগ (এফডি) অনুমান করেছে যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হবে সাড়ে ৭ শতাংশ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা ৬ দশমিক শূন্য শতাংশে নেমে আসবে৷
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবং দরিদ্রদের আয় রক্ষার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছে। একই সঙ্গে ধীরে ধীরে মুদ্রানীতি কঠোর করছে।
নথিটি বলে যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দরিদ্রদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার ভর্তুকি ও প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করেছে।
আরও পড়ুন: ৬ মাসের জন্য শিল্প ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ১০.২০% নির্ধারণ
এতে বলা হয়েছে, কৃষি খাতে উৎপাদনে সহায়তা করার জন্য ঋণ বিতরণও বাড়ানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ কৃষি ঋণ এবং অ-কৃষি পল্লী ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ২১০ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন, যা বছরে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশের বেশি।
নথিতে বলা হয়েছে, সরকারের সহায়ক নীতির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসে শিল্প উৎপাদনের সাধারণ সূচক (মাঝারি এবং বড় আকারের উৎপাদন) ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শিল্প উৎপাদনে সামান্য সম্প্রসারণকে প্রতিফলিত করে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে দেশে ৪০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিটেন্স এসেছে
সেপ্টেম্বরে দেশে ৪০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিটেন্স এসেছে
বাংলাদেশে সেপ্টেম্বর মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৭ শতাংশ (১৯৬ মিলিয়ন ডলার) কমে ১ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। যা প্রায় গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, সেপ্টেম্বরে রেমিটেন্স প্রবাহ আগের মাস আগস্টের তুলনায় ২২৫ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার কমেছে।
প্রবাসীরা আগস্ট মাসে প্রায় ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে, যা ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। ফেব্রুয়ারি মাসে এর পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার।
সেপ্টেম্বরে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও একধাপ কমে ১ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে, যা গত ৪০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
সর্বশেষ ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছিল। এরপরে, কোভিড-১৯ মহামারির সময়েও অভ্যন্তরীণ রেমিটেন্সের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশি প্রবাসীরা চলতি বছরের জুন মাসে ২ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছে এবং জুলাই মাসে তা ছিল ১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।
এই খাতের সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, যখন খোলা বাজারে বিনিময় হার ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়ে বেশি হয়ে যায়, তখন হুন্ডিতে লেনদেন বেড়ে যায়। আর হুন্ডির চাহিদা বাড়লে রেমিটেন্স কমে যায়।
গত মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলের তুলনায় খোলা বাজারে ডলারের বিনিময় হার ছিল ৬ থেকে ৭ টাকা বেশি।
তাই বেশি লাভের আশায় প্রবাসীরা বৈধ মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: ২০২৩’ অর্থবছরে ২১.৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে, এ যাবৎকালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ
গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) বাংলাদেশ মোট ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে।
এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন।
২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পেয়েছে। যার পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার।
'অব্যবস্থাপনার রেসিপি'
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তিনটি ভিন্ন শিরোনামে মার্কিন ডলারের মূল্য নির্ধারণ করছে।
বর্তমানে ব্যাংকগুলো প্রবাসী আয়ের প্রতি ডলারের দাম দিচ্ছে ১১০ টাকা ৫ পয়সা। রপ্তানি বিল ক্যাশিং প্রতি ডলারে 109 টাকা 5 পয়সা দেওয়া হয় এবং আমদানি ও আন্তঃব্যাংক লেনদেনের জন্য ১১০ টাকা ৫ পয়সা দেওয়া হয়।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর ইউএনবিকে বলেছেন, এটি অর্থনীতির অব্যবস্থাপনার একটি রেসিপি।
তিনি বলেন, মার্কিন ডলারের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় প্রবাসীরা অবৈধ চ্যানেলের (হুন্ডি) মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। খোলা বাজার এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দর একই রকম না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি শিগগিরই উন্নতি নাও হতে পারে।
মনসুর বলেন, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি আস্থার অভাবে বাংলাদেশি প্রবাসীরা দেশে কম রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে, কারণ দেশ থেকে নির্বিচারে অর্থ পাচার হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে রেকর্ডসংখ্যক শ্রমিক রপ্তানি করলেও, রেমিট্যান্সের পরিমাণ ক্রমাগত কমছে; যা পরিসংখ্যানের সঙ্গে মেলে না।
আরও পড়ুন: কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বেড়েছে রেমিটেন্সের গতি
২০২২ সালে রেমিটেন্স প্রাপ্তি ৩.১৭% হ্রাস পেতে পারে: আরএমএমআরইউ
৬ মাসের জন্য শিল্প ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ১০.২০% নির্ধারণ
অক্টোবর মাস থেকে ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১০ দশমিক ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র।
যে পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে এখন সুদের হার নির্ধারণ করা হচ্ছে, সেটি ‘স্মার্ট’ বা ‘ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের মুভিং এভারেজ রেট’ নামে পরিচিত। প্রতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ হারের কথা জানায়।
নতুন সুদের হার নির্ধারণের পদ্ধতিটি ২০২৩ সালের ১ জুলাই চালু করা হয়েছিল।
এর আগে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ।
সে অনুযায়ী চলতি অক্টোবর মাসে বড় আকারের শিল্প ঋণে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ২০ শতাংশ সুদ নিতে পারবে।
অন্যদিকে, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করে ঋণের বিপরীতে সুদ নিতে পারে। তাদের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ১২ দশমিক ২০ শতাংশ এবং আমানতের উপর ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে অক্টোবরে নির্ধারিত ঋণের সুদের হার আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তন করা যাবে না।
এর ফলে সেপ্টেম্বরে কৃষি ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৯ দশমিক ১৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: সিএমএসএমই ঋণে ১% তদারকি চার্জ অবিলম্বে প্রত্যাহার চায় দোকান মালিক সমিতি
সিএমএসএমই, ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার ঋণের উপর অতিরিক্ত ১ শতাংশ তত্ত্বাবধান চার্জ ধার্য করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮২ দিনের ট্রেজারি বিলের ৬ মাসের গড় সুদের হার প্রকাশ করেছে।
গত জানুয়ারিতে স্মার্ট রেট ছিল ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এরপর প্রতি মাসে তা ধীরে ধীরে বেড়ে গত মে মাসে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশে পৌঁছে। কিন্তু জুন ও জুলাইয়ে তা কিছুটা কমে ৭ দশমিক ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে আগস্টে তা বেড়ে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ২০ শতাংশে পৌঁছেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারভিত্তিক সুদের হার ব্যবস্থা চালু করেছে।
ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ৯ শতাংশ সুদের হারের সীমা আরোপ করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি গবেষণা প্রতিবেদনেও সুদের হার সীমা প্রত্যাহার বা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু সরকার ইতিবাচক সম্মতি না দেওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক নীরব ছিল।
আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের একটি শর্ত হলো সুদের হার বাজারভিত্তিক করা। সেই শর্তের আলোকে নতুন সুদের হার ব্যবস্থা চালু করা হয়।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যতে ব্যাংক ঋণের সুদ বাড়বে: সালমান এফ রহমান
নভেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে পারে বাংলাদেশ
বাংলদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ২১.১৫ বিলিয়ন ডলার, যা বলছেন অর্থনীতিবিদরা
বাংলদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। রিজার্ভ কমে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু কারণকে দায়ী করছে সামষ্টিক অর্থনীতিবিদ এবং নীতি বিশ্লেষকরা।
তাদের মতে রিজার্ভ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো বিলম্বিত পাওনা পরিশোধ, বিনিয়োগকারীদের বিদেশে এফডিআই মুনাফা গ্রহণের প্রবণতা, অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস, মূলধন উত্তোলন এবং মানি লন্ডারিং।
বুধবার(২৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আইএমএফের রিজার্ভ গণনা পদ্ধতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মঙ্গলবার বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে।
আরও পড়ুন: নতুন টাকা ছাপবেন না: বিবিকে ড. ওয়াহিদউদ্দিনের পরামর্শ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, এক সপ্তাহ আগে ২১ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কয়েক দিনের মধ্যে ৩০০ মিলিয়ন ডলার কমে ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
ম্যাক্রোইকোনমিস্ট ও পাবলিক পলিসি অ্যানালিস্ট ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ইউএনবিকে বলেন, জ্বালানি আমদানি রপ্তানি বিলম্বিত হওয়া এবং পশ্চিমা বিনিয়োগকারীদের এফডিআই মুনাফা বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কারণে এটি ঘটেছে।
তিনি বলেন, বিলম্বিত পাওনা পরিশোধ না করা হলে কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আমদানি, বিশেষ করে জ্বালানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কথা বিবেচনা করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও তাদের মুনাফা বিদেশে নিয়ে যাওয়ার চাপে রয়েছেন।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর ইউএনবিকে বলেন, রেমিট্যান্স আহরণ কমে যাওয়া এবং মানি লন্ডারিং বেড়ে যাওয়ার ফলে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, অনিশ্চয়তা থাকায় আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। তিনি বলেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে যদি একটি স্থিতিশীল সরকার গঠিত হয়, তাহলে আস্থার মাত্রা উন্নত হওয়ার কারণে অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধার হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, সেপ্টেম্বরের শুরুতে দেশের গ্রস রিজার্ভ (ইডিএফ তহবিল এবং রিজার্ভ থেকে ঋণ অন্তর্ভুক্ত) ছিল ২৯ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: ডলারের বিনিময় হার না বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও আবারও বেড়েছে
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) শুরুতে তা কমে দাঁড়ায় ২৭ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
বর্তমানে, গড় মাসিক আমদানি ব্যয় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই হিসাবে তিন মাসের আমদানি চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন হবে ১৮ বিলিয়ন ডলার।অর্থাৎ, বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে, নিয়ন্ত্রিত ব্যয় ব্যবস্থার বাংলাদেশ ব্যাংক নীতির অধীনে তিন মাসের সামান্য বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো যেতে পারে। আমদানিতে আরও কমারে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।
সূত্র জানায়, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় বাজারে ডলারের প্রবাহ কমেছে। এদিকে নতুন এলসি খুলতে হবে এবং আগের এলসির ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণসহ অন্যান্য ঋণও পরিশোধ করতে হয়।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (এসিইউ) সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বকেয়া অর্থ পরিশোধ করতে হবে নভেম্বরের শুরুতে। এতে রিজার্ভ আরও কমতে পারে।
আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ৪৮০ মিলিয়ন ডলার নভেম্বরে মওকুফ হতে পারে।
এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কিছু ঋণও সে সময় ছাড় দেওয়া হতে পারে। তখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বাড়তে পারে। বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণমান নেতিবাচকে নামাল ফিচ
দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণমান নেতিবাচকে নামাল ফিচ
আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা ফিচ রেটিংস বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচকে নামিয়ে এনেছে এবং আইডিআর ‘বিবি মাইনাসে’ (বিবি-) নিশ্চিত করেছে।
আইডিআর ইস্যুকারীর (যেমন কোনো সংস্থা বা সরকার) আর্থিক বাধ্যবাধকতাগুলো খেলাপি হওয়ার আপেক্ষিক সম্ভাবনার মূল্যায়নকে প্রতিনিধিত্ব করে। দীর্ঘমেয়াদী বৈদেশিক মুদ্রা আইডিআর দীর্ঘমেয়াদে বৈদেশিক মুদ্রায় এর আর্থিক বাধ্যবাধকতা পূরণের ক্ষমতা নির্দেশ করে।
ফিচের রেটিং অ্যাকশনের অর্থ হলো- খ্যাতনামা এই ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন, যদিও পরিস্থিতি এখনও 'পরিচালনাযোগ্য'।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ হ্রাস এবং এর অপর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়া রয়ে গেছে বলে এই পতনের একটি বড় অংশ চালিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি
ফিচের ভাষ্যমতে, ‘নেতিবাচক আউটলুক বাহ্যিক বাফারগুলোর (অর্থনীতিতে অভিঘাত প্রশমনের মতো উপাদান) অবনতিকে প্রতিফলিত করে, যা অভিঘাতগুলো ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এটি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকেও প্রতিফলিত করে যে বিনিময় হার ব্যবস্থার পরিবর্তন ও বিদেশি ঋণদাতাদের অব্যাহত সমর্থনসহ দেশের ক্রমবর্ধমান নীতি প্রতিক্রিয়া বৈদেশিক রিজার্ভের পতন রোধ করতে এবং অভ্যন্তরীণ মার্কিন-ডলারের তারল্য চাপ সমাধানের জন্য অপর্যাপ্ত।’
তারা আরও বলেছে, ‘ক্রমবর্ধমান আমদানি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার হস্তক্ষেপের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপের মধ্যে থাকবে বলে আমরা পূর্বাভাস দিচ্ছি। আমরা হিসাব করে দেখেছি, ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে মোট রিজার্ভ ১৯ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন তহবিলে বরাদ্দকৃত অংশ বাদ দিয়ে।’
২০২৫ সালের মধ্যে দেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি আরো বড় হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ফিচ। সংস্থাটি বলেছে, নিয়ন্ত্রিত বিনিময় হার, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও আমদানিতে বিধিনিষেধ শিথিলের মধ্যে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি এখন বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে।
যাইহোক, আইডিআর নিশ্চিত করার সময় ফিচের আরও ভাল কিছু বলার আছে।
আরও পড়ুন: ৪.৫ মিলিয়ন সুদসহ ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ বাংলাদেশকে পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা
তারা বলেছে, ‘রেটিংগুলোয় নিশ্চিত করা হয়েছে- যা বাংলাদেশের পরিচালনাযোগ্য বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের প্রোফাইল, এখনও অনুকূল প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা ও সরকারি ঋণকে প্রতিফলিত করে। যা সমকক্ষদের চেয়ে কম। এটি নিম্ন সরকারি রাজস্ব ও মাথাপিছু আয়ের পাশাপাশি দুর্বল ব্যাংকিং খাত এবং দুর্বল শাসন সূচকদ্বারা ভারসাম্যপূর্ণ।’
নিম্ন বাহ্যিক বাফার সত্ত্বেও ফিচ বলেছে, বাংলাদেশের ২০২৪-২০২৫ সালের মধ্যে বৈদেশিক ঋণের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে সক্ষম হওয়া উচিৎ, যেহেতু বৈদেশিক ঋণ সেবা সমকক্ষদের তুলনায় কম রয়েছে।
বিশ্লেষক ও ব্যাংকাররা বলছেন, যদি কোনো দেশের আউটলুক নেতিবাচকভাবে উপস্থাপিত হয়, তবে আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারে তহবিল সংগ্রহের সময় এটি উচ্চতর ঋণ ব্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে।
তারা বলেন, এতে দেশের সরকার ও ব্যবসায়ের জন্য আন্তর্জাতিক মূলধন প্রাপ্তি বা সংগ্রহ আরও ব্যয়বহুল করে তুলতে পারে।
আরেকটি প্রভাব বিদেশি বিনিয়োগের ওপর হতে পারে, কারণ নেতিবাচক ক্রেডিট রেটিং আউটলুকের অর্থ বিদেশিদের জন্য ক্রেডিট প্রোফাইলের অবনতিশীল দেশে বিনিয়োগের জন্য কম আগ্রহ হতে পারে।
আরও পড়ুন: জনশক্তি রপ্তানি বাড়লেও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ জানতে বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী
জনশক্তি রপ্তানি বাড়লেও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ জানতে বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী
বিপুল জনশক্তি রপ্তানি এবং বিদেশে শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও রেমিট্যান্স প্রবাহ কেন প্রত্যাশিত মাত্রায় বাড়ছে না তার কারণ চিহ্নিত করতে অর্থনীতিবিদ ও এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের উদ্ভাবনী পরামর্শ চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, নীতিমালা সংস্কার এবং দেশে কাঙ্ক্ষিত রেমিট্যান্স বাড়াতে পরামর্শ গ্রহণ করবে সরকার ।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ডলার
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় 'বাংলাদেশের পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল রিফর্মস ইনিশিয়েটিভস'-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলাই সেক, গভর্নেন্স গ্লোবাল প্র্যাকটিস-সাউথ এশিয়া রিজনের প্র্যাকটিস ম্যানেজার হিশাম ওয়ালি, ফিন্যান্স সেক্রেটারি ড. মো. খাইরুজ্জামান মজুমদার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: আগস্টে রেমিট্যান্স ৬ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ১.৬ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকার কাঠামোগত পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রবাসীরা এক মাসে দেশে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা তার বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। যদি এই প্রবাহ অব্যাহত থাকে তবে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট হবে না।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু জনশক্তি রপ্তানি এবং শিক্ষার্থী রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ার পরও কেন তা কমছে, তা আমরা জানতে চাই।’
আরও পড়ুন: হুন্ডি পরিহার করা হলে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে: রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী
ব্লক ইট ব্যবসায়ীদের জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রেখেছে সরকার: পরিবেশ সচিব
সরকার ব্লক ইট ব্যবসায়ীদের জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রেখেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।
তিনি বলেন, পোড়ানো ইটের পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব ব্লক ইটে রূপান্তরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি এন্ড ট্রান্সফরমেশন প্রকল্পে ৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সোমবার পরিবেশ অধিদপ্তরে বায়ুদূষণ হ্রাস ও কৃষিজমি সংরক্ষণে সরকারি নির্মাণ কাজে পোড়ানো ইটের পরিবর্তে ব্লক ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ সচিব এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ব্লক ইটে রূপান্তরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রণোদনা, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এই অর্থ ব্যবহার করা হবে। ব্লক ইটে রূপান্তর সহজ করার জন্য, সকল প্রকারে উদ্যোক্তাদের সহায়তা করার জন্য সরকার বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে চায়।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশের মানোন্নয়নসহ সকল প্রকার উন্নয়ন টেকসই করতে প্রাইভেট সেক্টরের সহযোগিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবেশ সচিব বলেন, ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বায়ুমানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা হবে। নাগরিকদের সুরক্ষা, কার্বন নিঃসরণ কমানো সংক্রান্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য সবুজ প্রযুক্তির ব্যবহারসহ অন্যান্য বিষয়ে অংশীজনদের সকল সুচিন্তিত পরামর্শ স্বাগত জানানো হবে।
আরও পড়ুন: ক্ষতি নয়, বরং পরিবেশ রক্ষা করে সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে: ড. হোসেন জিল্লুর রহমান
তিনি বলেন, বায়ুদূষণ হ্রাস ও কৃষি জমি সংরক্ষণের লক্ষ্যে সরকারি বিভিন্ন নির্মাণে পোড়ানো ইটের পরিবর্তে ব্লক ইটের ব্যবহার বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্দেশ্য সফল করতে বেসরকারি নির্মাণেও ব্লকের ইটের ব্যবহার বাড়াতে আমাদের সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, এডিমন গিন্টিং, কান্ট্রি ডিরেক্টর, এডিবি, বাংলাদেশ অফিস এবং মো. মিজানুর রহমান, এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মির্জা শওকত আলী।
অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, বেসরকারি সংস্থা, সমিতি এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: হাতির আক্রমণে মানুষের মৃত্যু রোধে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: পরিবেশ ও বনমন্ত্রী
ডলারের বিনিময় হার না বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও আবারও বেড়েছে
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে মার্কিন ডলারের বিনিময় হারে বড় ধরনের পরিবর্তন না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
ওই বৈঠকে গভর্নর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বাজার বা বৈদেশিক মুদ্রার বাজার নিয়ে কোনো নীতিগত পরিবর্তন করবে না।
এ সিদ্ধান্তের পরও সব ক্ষেত্রে ডলারের দর ৫০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। রপ্তানি ও প্রবাসীদের আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ১১০ টাকা এবং আমদানির ক্ষেত্রে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
গতকাল রবিবার আবারও ডলারের দর বাড়ানো হয়েছিল, যা আজ সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ ১ বছরের জন্য ডলার বুকিং নীতি চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মন্দার পর ২০২৩ সালের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক শুরুতেই ডলারের দাম নির্ধারণ করে। এতে সংকট আরও বেড়েছে। পরে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ডলারের দাম নির্ধারণ থেকে সরে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে- অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনকে (বাফেদা)।
এরপর থেকে দুই সংস্থা যৌথভাবে রপ্তানি, রেমিট্যান্স আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের জন্য ডলারের মূল্য নির্ধারণ করে আসছে।
আরও পড়ুন: নতুন টাকা ছাপবেন না: বিবিকে ড. ওয়াহিদউদ্দিনের পরামর্শ
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমেছে ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে
সর্বোচ্চ ১ বছরের জন্য ডলার বুকিং নীতি চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য উচ্চ হারে একটি মার্কিন ডলার বুকিং নীতি চালু করেছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এক বছর পর ‘স্মার্ট’ রেট দিয়ে বর্তমান ডলারের দামের চেয়ে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বেশি চার্জ নিতে পারবে ব্যাংক।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
নতুন নিয়মে এক বছর পর্যন্ত বুকিং দিয়ে ডলার রাখা যাবে। এ জন্য ক্রেতাকে বাড়তি টাকা দিতে হয়। এখন যে পদ্ধতিতে ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করা হচ্ছে, তার মাধ্যমে এটা নির্ধারণ করা হবে।
বর্তমানে আমদানির জন্য ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা ৫ পয়সা। কেউ যদি ভবিষ্যতের জন্য একটি ডলার বুক করতে চান, তাকে এক বছর পর ডলারপ্রতি ১২৩ টাকা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমেছে ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে
নতুন টাকা ছাপবেন না: বিবিকে ড. ওয়াহিদউদ্দিনের পরামর্শ
ডলারের বিনিময় হার না বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও আবারও বেড়েছে