হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রবিবার দুপুরে ছাত্রলীগের একাংশের ডাকা অবরোধ চলাকালে চবি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে লাগানো তালা খুলে দেয়ার জন্য আমরা ছাত্রলীগ নেতাদের অনুরোধ করেছিলাম। তারা তালা না খুললে পুলিশ গিয়ে তালা খুলে দেয়ার চেষ্টা করে। এসময় তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এতে আমাদের একজন কনস্টেবল আহত হয়েছে। পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দিয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মাতায়েন রয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রলীগ ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ছাত্রলীগ গোয়েন্দা পুলিশের একটি গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবাসিক হলের সামনে কাঠের গুড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছাত্রলীগের কর্মীদের ককটেল ছুঁড়তেও দেখা গেছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ কনেস্টেবল ফরিদ, ছাত্রলীগের সাদি মুর্শেদ, সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র মুখলেছ, নৃবিজ্ঞান বিভাগের রমজান। এছাড়া আরও দুজন ছাত্রলীগ কর্মী ও দুজন পথচারী আহত হয়েছেন। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও বিভিন্ন হল থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ছয় ছাত্রলীগ কর্মীর মুক্তি ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে রবিবার সকাল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেয়।
রবিবার সকাল ৭টার দিকে শাটল ট্রেনের হোসপাইপ কেটে দেয় ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে শাটল ট্রেনের চালককে ট্রেন থেকে নামিয়ে নিয়ে যায় তারা।
অপরদিকে চট্টগ্রাম-ঢাকা রেল রুটও অবরোধ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে করে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
অবরোধে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে সকালে ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষকদের কোনো বাস শহরে যেতে পারেনি। বন্ধ রয়েছে ক্যাম্পাসে রিকশা ও সিএনজি চলাচলও। মূল ফটকে তালা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয় অবরোধকারীরা। এসময় কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়।