শিক্ষার্থী
গাজা বিক্ষোভ: শিক্ষার্থীদের ‘ডাবল অ্যাবসেন্টের’ হুমকি, ড্যাফোডিল শিক্ষিকা বরখাস্ত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ডাকা কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিলে তাদের ‘ডাবল অ্যাবসেন্ট’ দেওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক। পরে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে সোমবার (৭ এপ্রিল) শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন ভাষায় কথা বলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) জার্নালিজম, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রভাষক তাহমিনা রহমান। যারা বিক্ষোভে অংশ নেবেন, তাদের ‘ডাবল অ্যাবসেন্ট’ করে দেবেন বলেও তিনি হুমকি দেন তিনি।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলে রকেট হামলা চালালো হামাস, আহত ৩
ডিআইইউর মুখপাত্র এবং এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু এমন তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে তাহমিনা রহমানকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হবে।’
রাজু জানান, ‘তাহমিনা হোয়াটস্যাপ গ্রুপে শিক্ষার্থীদের বলছেন যে গাজার গণহত্যার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ক্লাসে না এলে ডাবল অ্যাবসেন্ট দেবেন। প্রথমত বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে, সেখানে তিনি আলাদা করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন না। আবার ক্লাস উপস্থিতি যদি কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকেন, তাহলে সর্বোচ্চ একটি উপস্থিতি কাটতে পারবেন। ডাবল অ্যাবসেন্ট দেয়ার যে হুমকি তিনি শিক্ষার্থীদের দিয়েছেন, তা নিয়মবহির্ভূত।’
এর বাইরে সেই গ্রুপে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি যে ভাষায় কথা বলেছেন এবং যেসব শব্দ ব্যবহার করেছেন, তা একজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাষক হিসেবে শোভনীয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবহির্ভূত এসব আচারণের কারণেই তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র।
এর আগে রোববার (৬ এপ্রিল) সারাবিশ্ব এবং দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরাও ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ পালনের সিদ্ধান্ত নেন। সে হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সোমবার ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিলে প্রভাষক তাহমিনা তাদের ডাবল অ্যাবসেন্ট দেয়ার হুমকি দেন এবং গাজার প্রতি সংহতি জানানো এসব কর্মসূচি নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: গাজার ৫০ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে, নিজ ভূমিতে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা
তার হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে এই শিক্ষিকাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির সঙ্গে তারা একাত্মতা ঘোষণা করেছেন আগেই। কেন এই শিক্ষিকা এমন আচারণ করলেন তা খতিয়ে দেখা হবে?
ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে তাহমিনা নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চান। বলেন, ‘তিনি অনলাইন ক্লাস নিতে চেয়েছিলেন। কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা চাইলে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারতো। পুরো ঘটনাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেন এ প্রভাষক।’
৬ দিন আগে
জুনের আগে ডাকসু নির্বাচনের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের
চলতি বছরের জুন মাসের আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির একদল শিক্ষার্থী।
রবিবার (৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সায়মা হক বিদিশার কাছে স্মারকলিপি জমা দেন তারা। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ।
স্মারকলিপি জমা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ডাকসু নির্বাচন পেছাতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুনের আগে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন না করলে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
জুলাই অভ্যুত্থানের ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও ডাকসু নির্বাচনের কোনো রূপরেখা দেয়া হয়নি বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বারবার তাগাদা দেয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, উপ-উপাচার্য শিক্ষার্থীদের দ্রুত নির্বাচন দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের আয়োজন করার আহ্বান জানান তারা।
এর আগে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বারবার স্মারকলিপি দেয়ার পরেও নির্বাচনের কোনো সন্তোষজনক অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাবি প্রশাসনের কাছে নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেছেন তারা। কালক্ষেপণ করা হলে বড় আন্দোলনের ডাক দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্ছ্বাস
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিবেচনা করছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব।’
তবে দ্রুত নির্বাচন দিতে গিয়ে কোনো ভুল হোক সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উপ-উপাচার্য বলেন, সব কাজ গুছিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন নির্বাচন দিতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। বিভিন্ন কমিটির মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি দ্রুত আগাচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
৭ দিন আগে
হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেট পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
ভোকেশনাল ও পলিটেকনিক থেকে পাশ করা প্রকৌশলীদের একই গ্রেডে অন্তর্ভুক্তির হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) সকাল থেকে সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে একটি মিছিল নিয়ে কাজির বাজার এলাকায় অবস্থান নেয় তারা।
এ সময় রাস্তার দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আটক রিকশাচালক নির্দোষ: দাবি পরিবারের
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা চারবছর ডিপ্লোমা করার পর চাকরিতে দশম গ্রেড পান। অথচ ভোকেশনাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করে দশম গ্রেডে চাকরি পাবে, এটা যৌক্তিক না। হাইকোর্টের আদেশের ফলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরিপ্রাপ্তি সংকুচিত হবে। তাই হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
অন্যথায় ক্লাস, পরীক্ষা বর্জনসহ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
২৫ দিন আগে
ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাহমুদ খলিল নামে এক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছেন মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা। খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী।
যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ও গ্রিনকার্ডধারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
গত বসন্তে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘঠিত বিক্ষোভের জড়িত থাকার কারণেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কর্মকর্তারা।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
গত শনিবার (৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবন থেকে মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা। বর্তমানে তাকে লুইজিয়ানার জেনায় একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের গলফ রিসোর্টে হামলা
সেখানে তিনি পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে।
একজন শিক্ষার্থী ও গ্রিন কার্ডধারীর সঙ্গে এহেন কর্মকান্ডে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ফিলিস্তিনকে সমর্থন করায় তিনি সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে অভিযোগ করে ফেডারেল সরকার যা করছে, তা অবৈধ ও অন্যায় বলে অভিহিত করেছেন সমালোচকরা।
গ্রিনকার্ড থাকার পরও কি যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত হতে হয়?
সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীরা গ্রিনকার্ড নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়ে থাকেন। তবে খলিলের গ্রিনকার্ড থাকার পরও তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার শঙ্কা থাকায় এই বিষয়টি আলোচনায় এসেছে গ্রিনকার্ড মূলত কতটুকু সুরক্ষা দেয় অভিবাসীদের?
এ বিষয়ে কর্নেল ল স্কুলের ইমিগ্রেশন আইনের অধ্যাপক জ্যাকলিন কেলি-উইডমার বলেন, গ্রিনকার্ডধারীদের সাধারণত অনেক সুরক্ষা থাকে এবং নাগরিকত্ব ছাড়া এরা সবচেয়ে বেশি সুরক্ষিত হওয়ার যোগ্য।’
তবে এই সুরক্ষারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ, নির্দিষ্ট কিছু অপরাধের জন্য, ঠিকানা পরিবর্তনের তথ্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে না জানানো, বা জালিয়াতির মাধ্যমে বিয়ে করলে গ্রিনকার্ডধারীরাও নির্বাসিত হতে পারেন বলে জানান অধ্যাপক জ্যাকলিন।মাহমুদ খলিলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইহুদিবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের নিবার্হী আদেশের আওতায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।
ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।
ট্রাম্পের মতে, গাজার ক্ষমতায় থাকা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে’ সমর্থন করে ওই শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অধিকার হারিয়েছেন।
তবে ট্রাম্পের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন, এমনকি তাদের সঙ্গে কিছু ইহুদি শিক্ষার্থী ও তাদের কয়েকটি সংগঠনও ছিল।
অবশ্য কখনো-কখনো আন্দোলনকারীদের হামাস ও হিজবুল্লাহর নেতাদের সমর্থন করতে দেখা গিয়েছে। এই দুটি সংগঠনকেই যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গণ্য করে থাকে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, যা দেশের জন্য হুমকি হতে পারে এই অজুহাতেই খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও খলিল কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত নন, তাকে এমন কোনো অভিযোগে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইন অনুযায়ী, গ্রিনকার্ডধারীদের কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত না করেও তাদের ‘বহিষ্কারযোগ্য’ ঘোষণা করা যায় বলে জানান জ্যাকলিন।
আরও পড়ুন: কেমন কাটছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জীবন?
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি বা অ্যাটর্নি জেনারেলের যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে তারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন বা ভবিষ্যতে জড়িত হতে পারেন, তাহলে তাদের নির্বাসন দেওয়া যেতে পারে বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি।
তবে গত বছরের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে মামলা হওয়ার মতো কোনো ঘটনা তার চোখে পড়েনি বলে মত দেন জ্যাকলিন। একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় কিভাবে খলিলকে সন্ত্রাসমূলক কার্যক্রমে অভিযুক্ত করা যায় এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এর জবাবে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলকে হামলায় সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরই জেরে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ফিলিস্তিনিপন্থি ও ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। কয়েক মাস ধরে চলে এই বিক্ষোভ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় ফিলিস্তিনিপন্থি শিক্ষার্থী বিক্ষোভকারীদের পক্ষের প্রধান আলোচকদের একজন ছিলেন মাহমুদ খলিল। এই ভূমিকার জন্য বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এ কারণেই তাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়েই ইহুদীবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে ট্রাম্পের নিবার্হী আদেশের কার্যকারিতা শুরু হয়েছে বলে মনে করেন সমালোচকরা।
এ ঘটনার পর রবিবার (৯ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ‘আমেরিকায় হামাস সমর্থকদের ভিসা ও গ্রিনকার্ড বাতিল করবে প্রশাসন, যাতে তাদের নির্বাসন দেওয়া যায়।’
এদিকে, খলিলের আইনজীবীরাও তার আটকের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেছেন। আদালত মামলাটি বিবেচনা করা পর্যন্ত খলিলকে নির্বাসন না দেওয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন নিউ ইয়র্ক সিটির একজন ফেডারেল জজ। আগামী বুধবার (১২ মার্চ) এই মামলার শুনানির দিন নির্ধারিত হয়েছে।
৩৩ দিন আগে
জাবিতে অটোরিকশা বন্ধে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ, কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ আছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে পরীক্ষামূলকভাবে জাবিতে ইলেকট্রনিক কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৬৯৭.৯৬ একরের বৃহৎ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিলো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। কিন্তু তা বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা যাতায়াতে প্যাডেলচালিত রিকশা ব্যবহার করছেন। কিন্তু তা ব্যবহারে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সফলতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, গত চার মাস আগে জাবিতে অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে যাতায়াতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে প্রশাসন কিছু প্যাডেলচালিত অটোরিকশা অনুমোদন দিলেও তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। এই রিকশার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। চলাচলে সময় অপচয়, অত্যাধিক ভাড়া আদায়, উঁচু রাস্তায় নেমে যাওয়াসহ আরও নানান সীমাবদ্ধতার কথা জানা যায়।
এছাড়া প্রতিদিন রুটিন করে ক্যাম্পাসের ভিতর শাটল বাস চললেও শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। অনেককে দীর্ঘসময় রিকশার জন্য অপেক্ষা করতে হয় অথবা বাসে উঠে বসে থাকতে হয়, সময়মতো বাস পাওয়া যায় না। যার ফলে ক্যাম্পাসে ইজি বাইক বা কার্ট গাড়ি চালু করা জরুরি হয়ে পড়ে। অবশেষে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, এতবড় ক্যাম্পাসে চলাচল করার জন্য অটোরিকশা লাগে। যাদের বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল আছে, তাদের কোনো অসুবিধা নেই কিন্তু যাদের এসব নেই তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও রিকশা পাওয়া যায় না। ক্লাস পরীক্ষায় দেরি হয়, সময় অপচয় হয়। শুনলাম প্রশাসন কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
আরও পড়ুন: জাবিতে ‘হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের’ পরিচয়ধারী এক ভুয়া শিক্ষার্থী আটক
ক্যাম্পাসে কার্ট গাড়ি চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গবেষণা কারখানার সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান জানান, রমজানে শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা মাথায় রেখে দুইটি গাড়ি নিয়ে এসেছি । আমাদের ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলো যেহেতু উঁচু-নিচু তাই পরীক্ষামূলকভাবে ট্রায়াল দেবো। এটাতে ৮-১০ টি সিট থাকে। এটা পরিবেশবান্ধব হওয়ায় কোন সমস্যা নেই। আশা করি একটা ভালো ও স্থায়ী সমাধান আসবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা মাথায় রেখেই আমরা দীর্ঘদিন থেকে এমন কিছু করার পরিকল্পনা করছিলাম। কয়েকটি মিটিংও করেছি এ ব্যাপারে। এছাড়া কয়েকটি গাড়ি কোম্পানির সাথে আমাদের কথাও হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দুইটি গাড়ি নিয়ে এসেছি। ভালো ফলাফল পেলে মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ আমরা আরও ১০-১৫ টি গাড়ি নিয়ে আাসবো। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আশা করি আগামী দুই তিন মাসের মধ্যেই আমরা একটা ভালো সমাধান দিতে পারবো এবং এই সার্ভিস সম্পূর্ণভাবে চালু করতে পারবো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাঁচির অটোরিকশার ধাক্কায় নিহতের ঘটনায় ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যায়।
৩৭ দিন আগে
কুয়েটের আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো আবাসিক হল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আগামীকাল (বুধবার) সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আদেশ জারি করা করে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: কুয়েটের ভিসির বাসভবনে তালা, আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিচুর রহমান ভূঁঞা স্বাক্ষিরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুয়েটের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অংশ নেয় স্থানীয় বহিরাগতরাও। এ নিয়ে কুয়েটের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর শুক্রবার রাতে কুয়েট প্রশাসনের ৯৮তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনের ফটকে তালাও ঝুলিয়ে দেন তারা।
৪৭ দিন আগে
পাঁচ দাবিতে মমেক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, অন্যথায় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেডিকেল কলেজ চত্ত্বরে মমেক ও কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভে অংশ নেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল হাসপাতাল ক্যাম্পাসসহ চরপাড়া এলাকায় সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে মেডিকেল কলেজ গেইটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না—বিএমডিসির এই আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সালে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করেছে, তাদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
তারা জানান, ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবি না মানলে আগামীকাল (সোমবার) ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হবে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, এই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা ও অনিশ্চয়তা দূর হবে, তেমনই রোগী ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
আরও পড়ুন: পাঁচ দফা দাবিতে খুমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো—
১. এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না—বিএমডিসির এই আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। এছাড়া, ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি ড্রাগ লিস্টের বাইরে ড্রাগ প্রেসকিবেল করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে—
ক. দ্রুত ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সকল শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে।
খ. প্রতি রবছর ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
গ. ডাক্তারদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
৪. সকল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিতে হবে। সেই সঙ্গে ইতোমধ্যে এসএসসি পাস করা (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, পাঁচ দফা দাবিতে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চললেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। আমাদের দাবি পূরণের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাদের এই উদাসীনতায় আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা মনে করি, তারা আমাদের দাবিগুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমাদের যৌক্তিক পাঁচ দাবি মানা না পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরব না এবং দাবি শিগগিরই না মানলে কাল থেকে হাসপাতাল ও ক্যাম্পাস কমপ্লিট শাটডাউন করতে বাধ্য হব।
৪৯ দিন আগে
কুয়েটের ভিসির বাসভবনে তালা, আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৯৮তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাতে ‘রক্তাক্ত কুয়েট’ চিত্র প্রদর্শনী শেষে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। পরে মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘রক্তাক্ত কুয়েট’ সহিংস ঘটনার চিত্র তুলে ধরে এই প্রদর্শনী আয়োজন করেন। তারা জানান, ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের কিছু শিক্ষার্থীর সহায়তায় বহিরাগতরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা চালায়, তার প্রমাণস্বরূপ এই প্রদর্শনী।
প্রদর্শনী শেষে কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক ঘোষণায় বলেন, আমাদের মূলত দাবি ছিল ৬টা। সিন্ডিকেটে কিছু কিছু দাবি কৌশলে এড়িয়ে নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার সঙ্গে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই একমত না। সুতরাং দাবি না আদায় পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
এদিন রাত ১০টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি, একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ
এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আমাদের ড. মাসুদ স্যারকে (ভিসি) নাকি নির্যাতন করেছি বলে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে— তা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা। আমরা যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে আচরণ করেছি। তার শরীরে একটি টোকা দিয়েছি এমন কোনো প্রমাণ বা ভিডিও কেউ দেখাতে পারবে না।
তারা বলেন, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি ইতোপূর্বে সিন্ডিকেট মিটিংয়ে কঠোরভাবে পালনের নির্দেশনা দেওয়া হলেও, তা মেনে চলা হচ্ছে না। তাই এ বিষয়টি প্রশাসনিক অধ্যাদেশ গুরুত্বের সঙ্গে কার্যকর করতে হবে।
আরও পড়ুন: কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত
তারা আরও বলেন, অপপ্রচার চালানো হয়েছে প্রশাসন আমাদের পাঁচটি দাবি মেনে নিয়েছেন। অথচ এটি মিথ্যা। আমাদের কেবল আশ্বস্ত করা হয়েছে। তারা যে কমিটি গঠন করেছে, সেখানে সাধারণ ছাত্রদের কাউকে রাখা হয়নি। এ কমিটির প্রতি আমাদের কোনো আস্থা নেই।
উল্লেখ্য, গেল ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অংশ নেয় স্থানীয় বহিরাগতরাও। এ নিয়ে কুয়েটের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
৫০ দিন আগে
কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলার প্রতিবাদে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে এই বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে আবার বটতলায় এসে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’; ‘লীগ গেছে যে পথে, দল যাবে সেই পথে’; ‘টেম্পু না শিক্ষা, শিক্ষা শিক্ষা’; ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’; ‘চাঁদাবাজদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘সন্ত্রাস করে দুই দল, লীগ আর ছাত্রদল’; ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’; ‘চাঁদাবাজি না শিক্ষা, শিক্ষা শিক্ষা’; ‘ছাত্রদল হামলা করে, ইন্টিরিম কি করে’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে জাবি ক্যাম্পাস।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ছাত্র নাহিদ হাসান ইমন বলেন, ‘দেশের কোনো একটি রাজনৈতিক দলকে মসনদে বসানোর জন্য দেশের জনগণ আন্দোলন বা গণঅভ্যুত্থান করেনি। আমরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা বিএনপি এবং ছাত্রদলকে অনুরোধ করছি, তারা যেন আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিস্ট না হয়। যদি তারা তেমন করে, তবে তাদেরও আওয়ামী লীগের মতোই পরিণতি হবে।’
আরও পড়ুন: কুয়েটের ১০ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে তিনজনের সাজা
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, ’আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, এই নতুন বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে কেউ পার পাবে না। আমরা ছাত্রদলকে বলে দিতে চাই, আপনারা জুলাইকে ভুলে যাবার চেষ্টা করবেন না। আপনারা জুলাইকে ধারণ করুন। আপনারাও আমাদের সাথে হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ রেখে স্বৈরাচার পতনে ভূমিকা রেখেছেন। আপনারা এমন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে গেলে হাসিনার মতোই অবস্থা হবে আপনাদের।’
সমাবেশে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘আজকে কুয়েটে যখন আমার ভাইদেরকে হামলা করা হয়, তখন আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। কুয়েটে সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি লোভী রাজনৈতিক দল দেশের মানুষকে নিয়ে বিভ্রান্তির রাজনীতি করছে। আমরা আপনাদের বলে দিতে চাই, সাত মাস আগে স্বৈরাচারকে হটাতে আমাদের বেশি সময় লাগেনি, আপনারা যদি এভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখেন তাহলে আপনাদেরকেও ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত করতে আমাদের সময় লাগবে না।’
৫৪ দিন আগে
জাবির ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে শিক্ষার্থী-বড় বোন আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের (৫৪তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ ও মোবাইল দেখে লেখার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীসহ তার বড় বোনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাবির ‘বি’ ইউনিটের (সমাজবিজ্ঞান অনুষদ) দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা চলাকালীন সময় ঐ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
আটক ওই শিক্ষার্থীর নাম পারমিতা দত্ত ভুমি (১৭) এবং তার বড় বোনের নাম নিবেদিতা দত্ত (২১)।
তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ছোট বোনের পরীক্ষা উপলক্ষে জাবিতে এসেছেন। তারা দুজন কিশোরগঞ্জ সদরের নন চন্দ্র দত্তের মেয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি জানায়, সোমবার ছিলো জাবি ভর্তি পরীক্ষার শেষ দিন। ‘বি’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা চলছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ ভবনের ১৯ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা দেখতে পান এক শিক্ষার্থী মোবাইল দেখে (ওএমআর) উত্তরপত্র পূরণ করছেন। পরে তার কাছে গিয়ে দেখা যায় ফোন দিয়ে প্রশ্নের ছবি তুলে বাইরে পাঠাচ্ছে এবং অপর প্রান্ত থেকে উত্তর পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে তাকেসহ কেন্দ্রের বাইরে থাকা তার বড় বোনকেও আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মামলা, একমঞ্চে ছাত্রদল-শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী ওই পরীক্ষার্থী নিয়মবহির্ভূতভাবে পরীক্ষার কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করে। এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। ওই পরীক্ষার্থীকে মোবাইল ফোন দেখে ওএমআর শিট পূরণ করতে দেখে ফেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। পরে তারা শৃঙ্খলা কমিটিকে খবর দিলে তারা এসে ওই শিক্ষার্থী আটক করে। তিনি তার বোনকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠাচ্ছিলেন ও তার বড় বোন উত্তর পাঠাচ্ছিলেন; এমনটাই স্বীকার করেছেন ওই শিক্ষার্থী।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ বছর মোবাইল কোর্ট চালু করিনি। সেজন্য জালিয়াতি বা প্রতারণার দায়ে কোনো মামলা রুজু করতে পারিনি। তবে এটা প্রক্রিয়াধীন। সর্বশেষ তাদেরকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা মামলা করব।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৬টি ইউনিটে মোট ১ হাজার ৮১৪টি আসনের বিপরীতে ২ লাখ ৬২ হাজার ৪৯০টি আবেদন জমা পড়েছে। প্রতিটি আসনের বিপরীতে প্রায় ১৪৫জন শিক্ষার্থী লড়ছেন।
উল্লেখ্য, এ বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ সেশনের (৫৪তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গত রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়ে আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ‘বি’ ইউনিটের (সমাজবিজ্ঞান অনুষদ) পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়েছে।
৫৫ দিন আগে