‘আমরা যদি সমাজকে এগিয়ে নিতে চাই তবে নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে সকলকেই কাঁধে কাঁধ রেখে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে,’ তিনি বলেন।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এতে সভাপতিত্ব করেন।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন।
নারী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য,‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি সমাজের অর্ধেক হলো নারী। সমাজের অর্ধেক যদি অকেজো থাকে, তাহলে সেই সমাজ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু চিৎকার করা আর বলা আর বক্তৃতা দেয়ার মাধ্যমে কিন্তু অধিকার আসে না।
অধিকার আদায় করে নিতে হবে। আদায় করবার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। ‘আর সেই যোগ্যতা আসবে শিক্ষা-দীক্ষা, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে,’ বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আগে ধর্ম ও সামাজিকতার নামে নারীদের ঘরে বন্ধ করে রাখার যে প্রচেষ্টা ছিল, সেই অচলায়তন ভেদ করে দেশের মেয়েরা এখন এগিয়ে যাচ্ছে।
নারীদের জন্য নেয়া সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, সরকার সব বিভাগে কর্মরত নারীদের জন্য মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করছে এবং পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলায় নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার সকল প্রতিষ্ঠানে শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার নিশ্চিত করার জন্য সকলকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে ওইসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মায়েরা তাদের বাচ্চাদের সঠিকভাবে যত্ন নিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে এটি দরকার যাতে শ্রমজীবী মায়েরা তাদের বাচ্চাদের দেখাশোনা করতে পারে এবং তাদের বাড়িতে একা রেখে যেতে না হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার নারী ও শিশুদের সব ধরনের সহিংসতা থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে আইন পাস করেছে।
তিনি আরও বলেন, নারীরা এখন রাজনীতি, কূটনীতি, শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি, গবেষণা, ব্যবসা ও বাণিজ্য, খেলাধুলা, তদন্ত এবং দুঃসাহসিকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে থেকে তার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব কীভাবে আজীবন সাহস জুগিয়ে গেছেন, অনুপ্রেরণা ও পরামর্শ দিয়েছেন সেই কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।
নারীর মর্যাদা সমুন্নত রাখতে জাতির পিতার ভূমিকার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাদের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ, মুজিববর্ষ এবং বাংলাদেশে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা সংগ্রামী পাঁচ নারীকে জাতীয় পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতার’ সম্মাননা তুলে দেন।
বিজয়ীরা হলেন- বরিশাল জেলার হাছিনা বেগম নীলা, বগুড়া জেলার মিফতাহুল জান্নাত, পটুয়াখালী জেলার মোসাম্মৎ হেলেন্নছা বেগম, টাঙ্গাইল জেলার রবিজান ও নড়াইল জেলার অঞ্জনা বালা বিশ্বাস।
পুরস্কার বিজয়ী হাছিনা বেগম নীলা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ৭ মার্চের ভাষণই স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষণা: প্রধানমন্ত্রী
কমনওয়েলথের অনুপ্রেরণাদায়ী ৩ নারী নেতার একজন শেখ হাসিনা
প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত: প্রধানমন্ত্রী