মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. জিয়াউর রহমান সোমবার কলেজপড়ুয়া ভুক্তভোগীকে ‘কল্প’ নামে অভিহিত করে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আসামি যুবায়ের হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভুক্তভোগী পাবেন হবে নির্দেশনা দেন বিচারক।
দেশের বিচার ব্যবস্থায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি কিংবা বিচারপ্রার্থীর নিজ নামের পরিবর্তে প্রতীকী নামে রায় ঘোষণার ইতিহাস এটিই প্রথম বলে জানা গেছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে ঘনিষ্ঠতার সুযোগে ওই কলেজছাত্রীর ব্যক্তিগত কিছু ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করেন জুবায়ের। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটি তার সাথে সম্পর্কের ইতি টানেন। এ অবস্থায় মোবাইল থাকা ছবিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে দেন জুবায়ের।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ওয়াজেদা বেগম তার মক্কেলের নাম গোপন রাখা প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় এ ধরনের রায়ের কোনো নজির না থাকায় বিচারক ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ‘নির্ভয়া’র মামলা এবং ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত দুই আসামির প্রকৃত নামের পরিবর্তে ‘এন ওয়ান’ এবং ‘এইচ ওয়ান’ অভিহিত করে রায় দেয়ার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন।
মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী শফিকুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ‘ব্রিটেন আইন করে ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ নিষিদ্ধ করেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ধর্ষণসহ যৌন অপরাধে ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ নিষিদ্ধ। আমাদের দেশেও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ১৪ ধারা অনুযায়ী ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ পায় এমন কিছু প্রকাশ নিষিদ্ধ। কিন্তু তা কেউ মানছেন কেউ মানছেন না। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ না করে রায় দেয়ার ঘটনা অবশ্যই ইতিবাচক।’