রাজনীতি
‘নৌকায়’ ভোট দিয়ে আ. লীগকে আরেকবার সুযোগ দিন: রংপুরের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী
‘নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেন।’ বুধবার রংপুরের জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় জনগণের কাছে এভাবেই ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন। আমি আপনাদের উন্নতির জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত।’
এসময় সমাবেশে আসা জনতা উল্লাস প্রকাশ করে স্লোগান দেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির ‘সহিংসতার’ বিরুদ্ধে ১৪ দলের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি
রংপুর জিলা স্কুল মাঠে রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ জনসভাটির আয়োজন করে। জনসভার মাঠ পূর্ণ হয়ে আশেপাশের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা আওয়ামী লীগের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও উৎসাহী জনতার ঢল নেমে জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চ থেকে বক্তব্য দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকা জিতলেই দেশের উন্নয়ন হয়। কৃষকদের অবস্থার পরিবর্তন আনে, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি তার পরিবারের বাবা-মা, ভাইসহ সবাইকে হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আ. লীগ কখনো জনগণকে ছেড়ে পালায় না: প্রধানমন্ত্রী
তিনি অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রয়োজনে আমার বাবার মতো আমিও বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করব।’
তিনি ব্যানার-দোলান ও স্লোগান-স্লোগানে মুখরিত জনতার কাছে জানতে চান- ‘আপনারা কি নৌকায় ভোট দেবেন? দয়া করে আমাকে বলবেন।’
জনতা ‘হ্যাঁ’ বলে তাদের হাত তুলে এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাদের ধন্যবাদ জানান।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন, সড়কে খেলা হবে। আমরা আমরা রাজপথে এবং নির্বাচনে তাদের (বিরোধী দল বিএনপি) মোকাবিলা করব।
আওয়ামী লীগের শিকড় বাংলাদেশের মাটির গভীরে গেঁথে যাওয়ায় দেশ থেকে পালিয়ে যাবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জনসভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একেএম সায়াদত হোসেন বকুল, আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশেকুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে উৎসবমুখর পরিবেশ রংপুরে
তারেক-জোবাইদার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ
দুর্নীতির মামলায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের রায়ের প্রতিবাদে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছে বিএনপির শত শত নেতা-কর্মী।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যে বুধবার (২ আগস্ট) দুপুর ১টা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে।
আদালতের রায় ঘোষণার পর বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দলের সিনিয়র নেতাদের নেতৃত্বে নয়াপল্টন থেকে নাইটিঙ্গেল ক্রসিংয়ের দিকে মিছিল বের করেন বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলনে আ.লীগ গুগলিতে বোল্ড আউট হয়ে গেছে: ফখরুল
তারা ‘শেখ হাসিনার রায়’ মানি না বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
২০০৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা একটি মামলায় তারেককে ৯ বছরের কারাদণ্ড এবং জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক ও জোবাইদার বিরুদ্ধে এ রায় দেন।
একই সঙ্গে তারেককে ৩ কোটি টাকা ও জোবাইদাকে ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত।
এদিকে বিএনপিপন্থী একদল আইনজীবীও সকাল থেকে ঢাকা কোর্ট এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
এর আগে মঙ্গলবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশঙ্কা করেছিলেন, সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী দুর্নীতি মামলার ‘আজ্ঞাবহ’ রায়ে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের সাজা হতে পারে।
আরও পড়ুন: আ.লীগ বাংলাদেশকে ‘ডিপ স্টেটে’ পরিণত করেছে: ফখরুল
অসহিষ্ণুতা থেকে সহিংসতা-সন্ত্রাসের উৎপত্তি: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা জাগ্রত করতে পারলে জাতির মধ্যে স্থায়ী শান্তি আসতে পারে।
তিনি বলেন, আসুন আমরা এমন একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য একসঙ্গে কাজ করি।
পররাষ্টমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে এখানে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সব দেশ ও জাতির শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ঢাকার সবুজবাগে অনুষ্ঠিত “বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্ম ও বৌদ্ধ সার্কিট উন্নয়ন” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন।
মোমেন বলেন, বৌদ্ধ সংগঠন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ভগবান বুদ্ধের শিক্ষা শান্তিপূর্ণ সমাজ ও অঞ্চলের জন্য অমূল্য ভিত্তি হতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় বিশ্বাস করতেন যে উন্নয়নের জন্য শান্তি অপরিহার্য।
বঙ্গবন্ধুর দর্শন অনুসরণ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তির শক্তিশালী প্রবক্তা হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ইসিতে অডিট রিপোর্ট: গত বছর আ. লীগের উদ্বৃত্ত ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সবার শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
এ ছাড়া তিনি শান্তির সংস্কৃতি শিরোনামে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাব প্রচার করেছিলেন।
তিনি বলেন, সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ অন্যদের প্রতি অসহিষ্ণুতা ও অসম্মানের মানসিকতা থেকে সৃষ্টি হয়।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সব ধর্মের মানুষ একে অপরকে ভালোবাসে, সহানুভূতিশীল, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমর্থন করে।
তিনি বলেন, দেশের প্রতি তাদের গভীর অনুরাগ স্পষ্ট। কারণ তারা সম্মিলিতভাবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন।
মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন। তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রচার করছেন। আমরা বৈষম্য করি না।’
মোমেন আরও বলেন, বাংলাদেশে সব ধর্মের প্রতি সমান আচরণ করা হয়।
তিনি বলেন, বৌদ্ধধর্ম হলো বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ধর্ম। যার অনুসারী ৫২০ মিলিয়নেরও বেশি। বা বিশ্ব জনসংখ্যার ৭ শতাংশেরও বেশি। বাংলাদেশে প্রায় ১০ মিলিয়ন বৌদ্ধ বসবাস করেন।
তিনি বলেন, মূল শিক্ষার উপর ভিত্তি করে বৌদ্ধধর্ম বিভিন্ন ঐতিহ্য, বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিক অনুশীলনগুলিকে ধারণ করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বৌদ্ধ। বৌদ্ধ জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশের বেশি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত।
মোমেন বলেন, দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মের ঐতিহাসিক ভিত্তি ও উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক পরিক্রমা রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া বৌদ্ধ ধর্মের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। যা দুই দেশের মধ্যে জনগণের যোগাযোগ ও বন্ধনকে আরও গভীর করতে পারে।
মোমেন এই ক্ষেত্রে আরও সম্পৃক্ততার জন্য পাঁচটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, বৌদ্ধধর্ম ও এর ঐতিহ্যকে দেশগুলোর মধ্যে 'বন্ধুত্বের' মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার কো প্রয়োজন।
এ জন্য তিনি বলেন, এসব ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও প্রচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, এটি শুধু আধ্যাত্মিক অনুসারীদের জন্যই নয়। যারা দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য অনুসন্ধান করতে আগ্রহী তাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
মোমেন বলেন, যদিও আমরা দ্বিপাক্ষিকভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারি তাহলে আমাদেরও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটি আঞ্চলিক-স্তরের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য এই অঞ্চলের বৌদ্ধ ঐতিহ্যের সম্ভাবনাকে উন্মোচন করতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটিকে সম্প্রসার করতে হবে।
তিনি বলেন, সার্ক ও বিমসটেকের মতো আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর মধ্যে কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। যাতে এই অঞ্চলে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রচারের উপায় বের করা যায়। বিশেষ করে বৌদ্ধ ধর্মের দর্শন প্রচার করা।
আরও পড়ুন: বিএনপির ‘সহিংসতার’ বিরুদ্ধে ১৪ দলের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি
মোমেন বলেন, এ অঞ্চলের সামগ্রিক টেকসই উন্নয়নের পরিপূরক হিসেবে টেকসই পর্যটন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করতে হবে।
তিনি বৌদ্ধ ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচার সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং চ্যালেঞ্জগুলো ভাগ করে নেওয়ার জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং পর্যটন উন্নয়নের উপর নিয়মিত আঞ্চলিক ফোরাম এবং সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব করেন।
থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী এবং বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো প্রমুখ।
আরও পড়ুন: আ. লীগ কখনো জনগণকে ছেড়ে পালায় না: প্রধানমন্ত্রী
অপপ্রচার রোধ: ফেসবুকের সঙ্গে ইসির বৈঠক বৃহস্পতিবার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার রোধে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করবে ফেসবুকের একটি প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ফেসবুকের প্রতিনিধি দল সাক্ষাতের সময় চেয়েছে।
সাক্ষাতের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেন অপপ্রচার বন্ধ করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
ফেসবুকের সিঙ্গাপুর অফিসের ৩ কর্মকর্তা সিইসির সঙ্গে বৈঠক করবেন। ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটা’র বাংলাদেশবিষয়ক হেড অব পাবলিক পলিসি রুজান সারোয়ারের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধি দল আসবে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।
৪ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চায় জামায়াত
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী শুক্রবার (৪ আগস্ট) সমাবেশ করতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
এজন্য সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে আবেদন করেছে দলটি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে ২২ জুলাই সমাবেশ করতে চায় জামায়াত
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) জামায়াতের পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে একটি আবেদন জমা দেন।
চিঠি জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মঙ্গলবার ১ আগস্ট পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও পুলিশের সহযোগিতা না পাওয়ায় আমরা সমাবেশ করতে পারিনি।
তাই শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি পুলিশের কাছ থেকে শতাভাগ সহায়তা পাব।
এদিকে আবেদনটি গ্রহণ করেন ডিএমপি সদর দপ্তরের উপপুলিশ কমিশনার সৈয়দ শিমুল মোস্তফা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫০০ জামায়াত-শিবির কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াতের ১৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে উৎসবমুখর পরিবেশ রংপুরে
বুধবার রংপুরে একটি জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি উত্তরাঞ্চলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জনসভা হবে বলে মনে করেন দলটির নেতারা।
মঙ্গলবার রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় জনসভার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি আগাম প্রতিনিধি দল।
দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন শেষে কাদের বলেন, ‘রংপুরে এটিই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বড় জনসভা।’ ‘এখানকার মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে এবং তার কথা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা বিকাল ৩টায় জনসভায় ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বুধবার দুপুর দেড়টায় হেলিকপ্টারযোগে বিকাল সাড়ে ৩টায় রংপুরে পৌঁছার কথা রয়েছে তার। তারপর তাকে জনসভাস্থলের একটি বড় নৌকা আকৃতির মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হবে।
সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং প্রায় ১ হাজার ২৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারসহ পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির ‘সহিংসতার’ বিরুদ্ধে ১৪ দলের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি
প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন এ অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং, আমরা অস্ত্রের ওপর নয় জনগণের উপর নির্ভরশীল। আমরা সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করি না। আমাদের শক্তি দেশের জনগণ।’
আরও পড়ুন: ইসিতে অডিট রিপোর্ট: গত বছর আ. লীগের উদ্বৃত্ত ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা
তিনি আরও বলেন, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশকে দুর্বৃত্ত, স্বৈরাচারী, অর্থপাচারকারী, জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হাত থেকে রক্ষা করা। ‘আমরা আমাদের মাতৃভূমি এই ধরণের লোকদের হাতে তুলে দিতে পারি না। এটি আমাদের প্রতিশ্রুতি।’
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত শত শত অস্থায়ী গেট, ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টারে সাজানো হয়েছে পুরো রংপুর।
আরও পড়ুন: আ. লীগ কখনো জনগণকে ছেড়ে পালায় না: প্রধানমন্ত্রী
আ.লীগ বাংলাদেশকে ‘ডিপ স্টেটে’ পরিণত করেছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আঁকড়ে ধরে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশকে 'ডিপ স্টেটে' পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (আ.লীগ) আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ, প্রশাসনসহ রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করছে। এর মানে তারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে একটি ‘ডিপ স্টেটে’ পরিণত করেছে।’
মঙ্গলবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবেই একটি সন্ত্রাসী দল কারণ তারা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মতো জাতীয় নেতাকে পিটিয়ে দল থেকে বের করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সংঘর্ষের পর গয়েশ্বর ও আমানসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক করেছে পুলিশ
তিনি আরও বলেন, ‘তারা (আ.লীগ) নিজেরাই সন্ত্রাসী। তাই তারা দেশকে একেবারেই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়ে টিকিয়ে রাখা দল। তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছুই নেই।’
শনিবার ধোলাইখালে দলের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপির কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ শাখা।
পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন এবং আটকের পর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দলীয় নেতা আমানউল্লাহ আমানের জন্য উপহার পাঠানোর বিষয়ে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে দিতে সরকার এটা করেছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির আন্দোলনে আ.লীগ গুগলিতে বোল্ড আউট হয়ে গেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে এতটাই দেউলিয়া হয়ে গেছে যে তাদের এখন এসব করতে হচ্ছে এবং ভিডিও ছড়াতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ শিষ্টাচার জানে? তারা এটা জানেন না. আওয়ামী লীগ কখনই ভদ্রলোকের দল ছিল না। সুতরাং, তাদের কাছ থেকে ভদ্রতা আশা করার কোন কারণ নেই।’
তিনি আরও বলেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমান উল্লাহ আমানের দেশপ্রেম নতুন করে প্রমাণ করার দরকার নেই। ‘তারা তাদের আজীবন রাজনীতি এবং গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে তাদের দেশপ্রেম প্রমাণ করেছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ২৮ জুলাই নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে লাখ লাখ মানুষের সমাগম দেখে সরকার ভীত হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন,বিএনপি নয় অগ্নিসংযোগে লিপ্ত আওয়ামী লীগ। ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে সরকারকে পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল। ‘সংকট কাটিয়ে ওঠার এটিই একমাত্র উপায়।’
আরও পড়ুন: হামলার প্রতিবাদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসমাবেশ শুরু
বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আবারও আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি যে সন্ত্রাসী সংগঠন, তা আবারও আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত হলো।
মঙ্গলবার (০১ আগস্ট) দুপুরে রংপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্র প্রকল্পস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ইতোপূর্বে বিএনপির কয়েকজন সদস্য যখন কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। কানাডার একটি আদালত সেসময় তাদের রায়ে বলেছিলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং তারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে বল প্রয়োগ করে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। তারা গাড়ি-ঘোড়া ও মানুষ পোড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন, ইইউ-মার্কিন সফর ইতিবাচক: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, এরপর আবার কয়েক দিন আগে বিএনপির আরেকজন সদস্য সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন এবং সে ক্ষেত্রে কানাডার ফেডারেল আদালত আবার একই রায় দিয়েছেন যে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সুতরাং তাদেরকে আর রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া যাবে না এবং এই মর্মে তার আবেদন তারা খারিজ করে দিয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির লজ্জা থাকা উচিত যে কানাডার আদালত পঞ্চমবারের মতো তাদেরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিলো এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এভাবে যখন বিএনপি সদস্যরা আবেদন করেছে, অনেক জায়গাতেই প্রায় অনুরূপ মন্তব্য করেছে।
বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান ও ডিবি কার্যালয়ে গয়েশ্বর রায়কে সরকারের পক্ষ থেকে উন্নত খাবার ও সেবাদান নিয়ে বিএনপির বিরূপ মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, এটি আওয়ামী লীগের শিষ্টাচার এবং ১৫ বছর তাদের আদর করা হয়নি সেটি সঠিক নয়। যখনই তারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের ডিভিশন দেওয়া হয়েছে এবং কারাগারের মধ্যে যতটুকু সম্ভব ভালো রাখা যায়, সে চেষ্টা সব সময় করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এবং আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে অনেক নেতা যখন গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের খোঁজখবর নিয়েছি, যাতে কোনো অসুবিধা না হয়।
হাছান বলেন, এটি আমাদের দলের শিষ্টাচার, যা আমাদের আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিখিয়েছেন। এই শিষ্টাচার বিএনপির মধ্যে নাই, এর মর্মও তারা বোঝে না।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ বেগম মতিয়া চৌধুরীকে রাসেল স্কোয়ারে টানাহেঁচড়া করেছে, আমাদের জ্যেষ্ঠ নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে পুলিশ লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। তাদের সেবা-শুশ্রূষা তো দূরের কথা, কোনো কিছুই করা হয়নি।
বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা যেটি করেছেন, এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচার। এটির প্রশংসা আমানউল্লাহ আমান নিজেও করেছেন। আবার বের হওয়ার পর ভোল পাল্টিয়েছেন।
সোমবারের সমাবেশ প্রসঙ্গে হাছান বলেন, তারা নিজেরাই তো বোল্ড-আউট হয়েছে। বিএনপি ঢাকা অবরোধ করতে চেয়েছিল, সেখান থেকে পালিয়েছে। সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের জনসভা দেখে আমার নিজেরই লজ্জা লাগলো যে, ফাঁকা মাঠ, বিএনপির জনসভায় মানুষ এতো কম কেন!
এর আগে বিটিভি রংপুর কেন্দ্র প্রকল্প নিয়ে বলেন, আমাদের সরকার প্রত্যেকটি বিভাগে টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সে জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, একনেকে অনুমোদন হয়েছে।
তিনি বলেন, রংপুর বিভাগেও বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপনের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। সেটি হলে এখানকার শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী সবাই সংস্কৃতির নানা বিষয়ে তাদের দক্ষতা সারা দেশে তুলে ধরার সুযোগ পাবে এবং স্থানীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতিকেও তুলে ধরার সুযোগ পাবে।'
আরও পড়ুন: ইসির সক্ষমতায় বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আশ্বস্ত: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির ‘ আগুনসন্ত্রাস’ বন্ধ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
সংকট সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ প্রয়োজন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে বলেছেন, দেশে চলমান সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি এবং তারাও বিশ্বাস করে যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রকৃতপক্ষেই সংলাপের প্রয়োজন আছে। আমি তাকে বলেছি, সংলাপ ছাড়া রাজপথে সংকট সমাধান করা যাবে না।’
আরও পড়ুন: গণ অধিকার পরিষদসহ ১০টি দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাল ইসি
মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সিইসি।
আউয়াল বলেন, ‘একটি বিষয় আমরা স্পষ্ট করেছি যে নির্বাচনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন, যা আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে সবসময় বলে থাকি। দেশের সংকট রাজনৈতিক। এর সঙ্গে আমার কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পর্ক নেই।’
সিইসি বলেন, রাজনৈতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান হলে ইসির জন্য নির্বাচন করা আরও স্বাচ্ছন্দ্য ও সহজ হবে। ‘আমরা আশা করি যে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজমান অনেক সমস্যা যেকোন মূল্যে সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের তফসিল অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের আগে নয়: সিইসি
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘এই কমিশনের পক্ষ থেকে আমি মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোর এক টেবিলে বসে একসঙ্গে চা খাওয়া উচিত। তারপর তাদের উচিত এই সংকট নিয়ে কথা বলে সমাধানের পথ খুঁজে বের করা।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, অক্টোবরে তাদের (মার্কিন) প্রাক-মূল্যায়ন দল বাংলাদেশে আসবে।
আউয়াল আরও বলেন, ‘তারা শুনেছে, এখানে যতগুলো রাজনৈতিক দল আছে, তারা ইসির নিবন্ধন পায়নি। যাদের নিবন্ধন করা হয়েছে তারা সেভাবে প্রাণবন্ত নয়। জবাবে আমরা বলেছিলাম যে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আমাদের নিয়মানুযায়ী যে মানদণ্ড পূরণ করতে হবে তা আমরা কঠোরভাবে অনুসরণ করেছি। এ কারণে অনেক দল নিবন্ধন পায়নি।’
আরও পড়ুন: ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করতে ডিসিদের নির্দেশ
আ. লীগ কখনো জনগণকে ছেড়ে পালায় না: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালানোর পথ পাবে না বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না।
আরও পড়ুন: ২৮ কর্মকর্তা ও ২ প্রতিষ্ঠানকে 'বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পুরস্কার' দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান শীর্ষক’ এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের কাছ থেকে আমরা শুনছি যে- আমরা (আওয়ামী লীগ) না কি পালানোর পথ পাবো না। তারা সংসদে না থাকায় যদিও তাদের বিরোধী দল বলা যায় না- তবুও আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কখনও পালায়নি এবং কখনও পালাবেও না।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের প্রভু জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। এরপর এরশাদ ও খালেদা জিয়া চেষ্টা করেও সফল হয়নি।
তিনি বলেন, খালেদা তার শাসনামলে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার মতো ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের প্রায় ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। অনেকের ওপর নির্যাতন করা হয়। বাড়ি-ঘর দখল করাসহ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা এমন অপকর্ম করেও টিকতে পারেনি।
খালেদার ছেলে তারেক রহমান আর রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে ২০০৭ সালে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যাদের দলের নেতা সাজাপ্রাপ্ত, তারাই এখন বড় বড় কথা বলছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হুমকি ও কঠোর বাধা সত্ত্বেও তিনি দেশে ফিরে আসেন।
তিনি বলেন, আপনারা (বিএনপি নেতারা) ইতিমধ্যে পলাতক রয়েছেন। একজন দণ্ডিত পলাতক আসামির তত্ত্বাবধানে তারা এত বড় মন্তব্য করতে পারে কীভাবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে।
২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে সংঘটিত অগ্নিসংযোগ এবং আ.লীগ নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপি কর্তৃক অত্যাচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যদি এক শতাংশ প্রতিশোধ (এসব অপকর্ম) নিতাম, এখন আপনার হদিস পাওয়া যাবে না। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না।
শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ হন তাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দ। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী ও মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: রংপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী
আন্দোলনে আপত্তি নেই, জ্বালাও-পোড়াও সহ্য করব না: প্রধানমন্ত্রী