ব্যবসা
ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন
উচ্চশিক্ষা, বিদেশ ভ্রমণসহ নানাবিধ আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ের আর্থিক কর্মকাণ্ডগুলো পরিচালনার জন্য প্রয়োজন পড়ে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহারের। আর এখানেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো ডলার এনডোর্সমেন্ট।
বিশ্ব অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি পাওয়ার হাউস হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারকে বিশ্বব্যাপী সাধারণ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
কোনো একটি দেশের পণ্য বা সেবা ক্রয় করার সময় এই মুদ্রার এনডোর্সমেন্ট সংশ্লিষ্ট দেশটির মুদ্রা ব্যবহারে বৈধতা প্রদান করে। চলুন, এই ডলার এনডোর্সমেন্ট কী এবং কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ডলার এনডোর্সমেন্ট কী
এই আর্থিক কার্যক্রমটির মানে হলো দেশের অভ্যন্তরে বা বাইরে যে কোনো লেনদেনে ডলার ব্যবহারের অনুমোদন। এর মাধ্যমে বিদেশি পণ্য বা সেবা নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার ব্যবহারের বৈধতা পাওয়া যায়। এই ডলারগুলো পরবর্তীতে সরাসরি কিংবা প্রয়োজনের স্বাপেক্ষে বিশেষত বিদেশ ভ্রমণের সময় সেই দেশের মুদ্রায় পরিবর্তন করে নেওয়া যায়।
এটি শুধু বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি প্রক্রিয়াই নয়, ডলার এনডোর্সমেন্ট ছাড়া ডলার সংক্রান্ত কোনো রূপ লেনদেনে জড়িত হওয়া বেআইনি।
আরও পড়ুন: অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৯৭ বিলিয়ন ডলার
ডলার এনডোর্সমেন্টের সুবিধা
যে কাজগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পৃক্ত, এমন প্রতিটি কাজেই প্রয়োজন হয় ডলার খরচ করার। আর এই প্রয়োজনীয় খরচ সামাল দিতেই এনডোর্স করে নিতে হয় সেই পরিমাণ ডলারটি।
যেমন বিদেশে ভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা, ও চিকিৎসার জন্য সেই দেশে যাওয়ার সময় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ডলার সঙ্গে নিতে হয়। চাকরি ও ব্যবসার কাজে যে দেশেই যাওয়া হোক না কেন, প্রাথমিক ব্যয়ের খাতগুলো নিরবচ্ছিন্ন রাখতে দরকার হয় ডলারের। ফলে অবধারিত হয়ে পড়ে সেই সংখ্যক ডলার সঙ্গে রাখার অনুমতি নেওয়া।
এছাড়া দেশের ভেতরে থেকেও বৈদেশিক কাজগুলো আঞ্জাম দিতে হলে ডলারের কোনো বিকল্প নেই। বিদেশি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ, বিদেশি মার্কেট থেকে কেনাকাটা, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেশে ফিরে ডলারের বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তরের জন্যও ডলার অনুমোদনের গুরুত্ব অপরিসীম।
দেশের ভেতরে যারা ইউটিউব ও ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোসহ ইন্টারনেটের অন্যত্রে বিজ্ঞাপন দেন, তাদের প্রায় ক্ষেত্রে ডলারের বৈধতা নিশ্চিত করে নিতে হয়।
এছাড়া আমদানি বা রপ্তানি ব্যবসার কাজগুলো বৈধভাবে কার্যকার করার জন্যও দরকার হয় ডলার আদান-প্রদানের অনুমতি।
আরও পড়ুন: খোলা বাজারে ১৫ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি
ডলার এনডোর্সমেন্ট করার উপায়
আইনগতভাবে ডলার ব্যবহারের ক্ষমতা অর্জন করতে হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর অনুমোদন নিতে হয় পাসপোর্টে সীলের মাধ্যমে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইস্যু করা হয়ে থাকে সনদপত্র, যেখানে উল্লেখ থাকে নির্দিষ্ট সংখ্যক ডলারের অংক।
শুধু তাই নয়, এখানে একটি বড় বিষয় হচ্ছে অনুমোদনটি কে দিচ্ছে সেটা। অর্থাৎ ডলারগুলো কোত্থেকে ক্রয় করা হচ্ছে ও ডলার বিক্রয়ের জন্য তাদের যথাযথ অনুমোদন আছে কি না সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের ভেতরে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ব্যাংক, মানি এক্সচেঞ্জার ও ডিলাররা আইনগতভাবে ডলার কেনা-বেঁচা করতে পারে। এছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডলারের লেনদেনে জড়ানো বেআইনি।
চলুন, এবার এই এনডোর্সমেন্ট পদ্ধতিটির আরও খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।
ব্যাংক থেকে ডলার এনডোর্স করার প্রক্রিয়া
দেশের যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক পাসপোর্ট বইয়ের শেষের দিকে এনডোর্সমেন্ট পাতায় সীল দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলারের পরিমাণ লিখে দেয়। এটিই হলো অনুমোদনকৃত ডলারের পরিমাণ, যেটি এনডোর্সকারি কাগুজে ডলার উঠিয়ে কিংবা অনলাইনে ব্যবহার করতে পারেন।
এই ডলারপ্রাপ্তির জন্য এনডোর্সকারী সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা প্রদান করেন। এই পরিমাণটি ঠিক হয় বর্তমানে ডলার থেকে বাংলাদেশি টাকায় বিনিময় হার যত চলছে সে অনুসারে। এই হারটি অবশ্য একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে কমবেশি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে ডলারের সরবরাহ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি: বাংলাদেশ ব্যাংক
সোনালী ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকে ডলার এনডোর্সমেন্টের ভিন্নতা
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে শুধু সোনালী ব্যাংকে ডলার এনডোর্সের জন্য সেখানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার বা নতুন করে করার প্রয়োজন পড়ে না। শুধুমাত্র পাসপোর্ট নিয়ে গেলেই কাজ হয়ে যায়। ব্যাংক কর্মকর্তা ঐ দিনের ডলার রেট অনুসারে টাকা হিসাব করে সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলারের অংক উল্লেখ করে পাসপোর্টে সীল মেরে দেন।
অন্যদিকে, বাকি সকল ব্যাংকে এই কার্যকলাপের জন্য অ্যাকাউন্ট থাকতে হয়। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত লোকাল শাখাগুলোতে এনডোর্স করা হয় না। এই সুবিধা দিয়ে থাকে শুধুমাত্র এডি বা অনুমোদিত ডিলার, শাখা বা ফরেইন এক্সচেঞ্জগুলো। বিভাগীয় শহর ও কিছু বাণিজ্যিক এলাকা ছাড়া কোথাও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর এডি শাখা নেই।
লোকাল শাখাতে এনডোর্স করতেই হলে সেখানে একটা ফরওয়ার্ডিং লেটার দিয়ে ডলার পরিবর্তনের চেষ্টা করা যেতে পারে।
এছাড়াও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর প্রত্যেকটিতে ডলার এনডোসিং-এর শর্তগুলোতে কিছু ভিন্নতা থাকে। তাই চূড়ান্তভাবে এনডোর্সমেন্টের পূর্বে অবশ্যই সেগুলোর সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া জরুরি।
ডুয়েল কারেন্সি কার্ডের বিপরীতে ডলার এনডোর্স
গত কয়েক বছর ধরেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের ডুয়েল কারেন্সি কার্ড সেবাগুলো। অনেকেই সরাসরি ডলার না তুলে এই আন্তর্জাতিক ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে বৈধভাবে ডলার জমা করে নিচ্ছেন।
এই সেবার মাধ্যমে দেশ থেকে কার্ডে ডলার জমা করে বিদেশে নিয়ে গিয়ে সেখানে খরচ করা যায়। এমনকি প্রয়োজনে অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রাতেও পরিবর্তন করে নেওয়া যায়। তাছাড়া অনলাইন কেনাকাটার সুবিধা তো থাকছেই। এমনকি দেশের ভেতরে থেকেও বিশ্বের বিখ্যাত সব ই-কমার্স মার্কেটগুলো থেকে কোনো ঝামেলা ছাড়াই নানা সেবা ও পণ্য কেনা যায়।
বিদেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে খরচ করার জন্যও দেশি ব্যাংকের এই কার্ডগুলো বেশ উপকারি।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
এলসির মাধ্যমে ডলার এনডোর্সমেন্ট
এলসি বা লেটার অফ ক্রেডিট মুলত যারা আমদানি বা রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতে তাদের জন্য দরকারি। এই ক্ষেত্রে ডলার এনডোর্সের জন্য এলসি করা হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। এটি মূলত সেই আমদানি বা রপ্তানি কাজের জন্য ডলার বিনিময়ে বৈধতা দানকারী সনদপত্র।
মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার ক্রয় করার নিয়ম
ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো অপেক্ষা মানি এক্সচেঞ্জারগুলোর ডলার এনডোর্সিং-এর প্রক্রিয়া তুলনামূলক ভাবে সহজ। যে কোনো বৈধ পাসপোর্টধারি ঐ দিনের রেট অনুযায়ী সমপরিমাণ টাকা দিয়ে ডলার তুলে নিতে পারবেন এই এক্সচেঞ্জারগুলো থেকে। এক্সচেঞ্জ ফি দেয়া ছাড়া এখানে ব্যাংকের মতো ডকুমেন্টেশনের বাড়তি বিড়ম্বনা নেই।
তবে এই এনডোর্সমেন্ট ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য নয়। ভিসার জন্য শুধুমাত্র ব্যাংকের ডলার এনডোর্সমেন্ট গ্রহণযোগ্য।
অনেকেই অল্প কিছু টাকা বাঁচাতে যেয়ে এনডোর্স ছাড়া ডলার নিয়ে ইমিগ্রেশনে যেয়ে বিপদে পড়েন। কেননা প্রায়ই ক্ষেত্রে সেখানে ডলারের পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্টটা চেক করা হয়। তাই সার্বিক দিক থেকে ঝক্কি-ঝামেলা মুক্ত থাকার জন্য ডলার পাসপোর্টে এনডোর্স করে নেওয়া উচিৎ।
আরও পড়ুন: আপনি কি মার্কিন ডলার না কিনে বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন?
কত ডলার এনডোর্স করা যায়
ডলার এনডোর্সের পরিমাণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুষ্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি বিদেশ গমনকালে এক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার বা সমমানের বৈদেশিক মূদ্রা এনডোর্স করতে পারবেন। যারা ১২ বছরের নিচে রয়েছেন তারা এর অর্ধেক অর্থাৎ ৬ হাজার ডলার ব্যবহারের অনুমোদন নিতে পারবেন।
চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলারের অনুমোদন নেওয়া যাবে, তবে এর জন্য অবশ্যই উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে হবে। এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন হলে যথাযথ কারণ ও প্রমাণ সহ যোগাযোগ করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে।
ডলার এনডোর্সের মেয়াদ কত দিন
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মানুসারে, ডুয়েল কারেন্সি আন্তর্জাতিক ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের বিপরীতে পাসপোর্টের মেয়াদ যতদিন ততদিন থাকবে এনডোর্সমেন্টের মেয়াদ। তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে:
- খরচের পরিমাণ এনডোর্সকৃত ডলারের সর্বোচ্চ লিমিট অর্থাৎ ১২ হাজার অতিক্রম করতে পারবে না।
- সম্পূরক কার্ডধারিরা বিদেশ ভ্রমণকালে তাদের ভ্রমণ কোঠার আওতাতেই এই সুবিধা পাবেন।
- তবে ভ্রমণ কোটার যে অংশটুকু বাকি থাকবে, তা ব্যবহারের জন্য পরের বছরে স্থানান্তর করা যাবে না।
- এই সুবিধা প্রবাসী বাংলাদেশি বা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
শেষাংশ
সর্বসাকুল্যে, বাংলাদেশিদের জন্য যাবতীয় আন্তর্জাতিক লেনদেন সহজতর করার জন্যই এই ডলার এনডোর্সমেন্ট প্রক্রিয়া। অপেক্ষাকৃত সীমিত ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা থাকায় সোনালী ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জারগুলো এক্ষেত্রে সুবিধা প্রদানে এগিয়ে রয়েছে। এরপরেও প্রযোজ্য শর্তগুলো সতর্কতার সঙ্গে মেনে অগ্রসর হলে বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকেও পাওয়া যাবে কাঙ্ক্ষিত সেবা।
পরিশেষে, ডলার কী উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হবে তা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা থাকলে এনডোর্সমেন্টের নিয়মগুলোর সদ্ব্যবহার সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন যেসব দেশে
গাজীপুরে সরকার নির্ধারিত মজুরির দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে সরকার ঘোষিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী বেতন পরিশোধসহ ৬ দফা দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন।
এ সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় নগরের কোনাবাড়ী এলাকায় মেইগো বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানার কয়েকশ’ শ্রমিক সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো অনুসারে বেতন দেওয়া, ১০ ঘণ্টা কর্মদিবসের পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস হিসেবে বেতন নির্ধারণসহ ৬ দফা দাবি আদায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুর মহানগর পুলিশের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম জানান, সকালে কিছু শ্রমিকরা সড়কে নেমে আসে। পরে তাদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি আরও জনান, বর্তমানে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তাদের দাবির বিষয়গুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে বিএনপির কালো হাত আছে: কাদের
তৈরি পোশাক শিল্পে মূল্য সংযোজনের ওপর জোর দিতে হবে: বিজিএমইএ সভাপতি
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা অব্যাহত রাখতে হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে মূল্য সংযোজনের দিকে আরও মনোনিবেশ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।
তিনি বলেন, ‘পোশাক শিল্পে অ্যাকসেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্প মূল্য সংযোজনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। অ্যাকসেসরিজ ও প্যাকেজিং উপকরণ পোশাকের সামগ্রিক আবেদন এবং কাঙ্ক্ষিত মূল্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকায় গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং এক্সপোজিশন (গ্যাপএক্সপো) ২০২৪-এর ১৩তম আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য পোশাক শিল্পের মধ্যে গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ এবং প্যাকেজিংয়ে প্রযুক্তির অগ্রগতি ও উদ্ভাবন প্রদর্শন করা।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ‘প্রত্যাশিত’ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তৈরি পোশাক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বাড়তে পারে: বিজিএমইএ পরিচালক
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান এবং বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
ফারুক বলেন, বাংলাদেশের অ্যাকসেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্পে উচ্চমানের, উদ্ভাবনী ও টেকসই উপকরণ উৎপাদনের মাধ্যমে নিজেদের জন্য একটি জায়গা তৈরি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি অনন্য ও নান্দনিকভাবে আনন্দদায়ক আনুষঙ্গিক তৈরি করতে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগের গুরুত্বের উপর জোর দেন। এটি চূড়ান্ত পণ্যগুলোর সামগ্রিক মূল্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, এর মাধ্যমে অ্যাকসেসরিজ শিল্প বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে শুধু উৎপাদনই নয়, সৃজনশীল ও মূল্য সংযোজন ডিজাইনের একটি কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে ৯০ দিনের ঋণ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক
আসন্ন রমজান মাসে সরবরাহ বাড়ানোর কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে আটটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির জন্য ৯০ দিনের ঋণ অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ ও স্থিতিশীল মূল্য নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার(১১ জানুয়ারি) ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্যোগের কথা জানানো হয়েছে।
এই প্রকল্পের অধীনে অনুমোদিত আমদানির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে- ভোজ্য তেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মশলা, চিনি ও খেজুর। তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় এসব আমদানিতে বিলম্বিত অর্থ পরিশোধের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটি চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত আমদানি ও রপ্তানির জন্য কার্যকর থাকবে।
আরও পড়ুন: ইসাবের নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা এ সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘রমজানে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি রোধে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সরবরাহ শৃঙ্খল বজায় রাখার জন্য সময়মতো এসব পণ্য আমদানি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
নতুন নির্দেশিকা অনুসারে, অনুমোদিত ডিলাররা (এডি) সময়মতো পণ্য পৌঁছানোর নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রত্যয়নপত্র (এলসি) খোলার গতি ত্বরান্বিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই পদ্ধতিটি রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ নিশ্চিত করবে, ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে এবং এই পবিত্র সময়ে সম্প্রদায়ের সামগ্রিক কল্যাণে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন: ২ দিন বন্ধের পর সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
নির্বাচন: ২ দিন বন্ধের পর সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দুইদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে আবারও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন আর-রশিদ জানান, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে ৬ ও ৭ জানুয়ারি (শনিবার ও রবিবার) সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়।
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উপলক্ষে ৬ ও ৭ জানুয়ারি সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে চিঠি দেয় যুগ্ম কামিশনার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান।
আজ সোমবার ছুটি শেষে যথারীতি সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম চালু হয়েছে।
ইসাবের নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহণ
ইলেকট্রনিক্স সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইসাব) নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসাবের নতুন সভাপতি মো. নিয়াজ আলী চিশতি এবং মহাসচিব জাকির উদ্দিন আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ইসাবের আগের কমিটির সভাপতি জহির উদ্দিন বাবর ও মহাসচিব এম মাহমুদুর রশিদ নতুন পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদে রয়েছে জেষ্ঠ সহসভাপতি এসএম শাহজাহান সাজু, সহসভাপতি মতিন খান ও মোহাম্মদ ফয়সাল মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার মো. মঞ্জুর আলম ও এম মাহমুদুর রশিদ।
এছাড়াও ইসাবের যুগ্ম মহাসচিব মো. মাহমুদ-ই-খোদা, সহকারী মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহাবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মো. নূর-নবী, প্রচার সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, পরিচালক মো. ওয়াহিদ উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার মো. আল-এমরান হোসেন, মেজর মোহাম্মদ আশেক কামাল (অবসরপ্রাপ্ত) এবং মো. রফিকুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্যক্রমও সম্প্রসারিত হচ্ছে। আমাদের এখন নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই শিল্পায়নের দিকে অগ্রসর হতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ বাসা-বাড়িতেও বৈদ্যুতিক এবং অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সম্পদ ও জানমালের সুরক্ষা দিতে হবে। শুধু রপ্তানি খাত নয়, অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্যও আমাদের কমপ্লায়েন্স হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে ইসাবের ব্যাপকভাকে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’
আরও পড়ুন: ব্র্যান্ড প্র্যাক্টিশনার্সের ফুড অ্যান্ড বেভারেজ মার্কেটিং ফেস্ট ৩.০ অনুষ্ঠিত
ইসাবের নতুন সভাপতি মো. নিয়াজ আলী চিশতি বলেন, টেকসই উন্নয়ন, শিল্পের বিকাশ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্নিনিরাপত্তা এবং সুরক্ষার কোন বিকপ্ল নেই।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএর এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ হাতেম, এফবিসিসিআইর পরিচালক ও ব্যবসায়ী নেতারা।
এর আগে ইসাবের নতুন সভাপতি মো. নিয়াজ আলী চিশতি সংগঠনটির বিদায়ী পরিচালনা পর্ষদে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন: দেশের সেরা হাউজওয়্যার ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি পেল আরএফএল
কুমিল্লায় বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
কুমিল্লায় বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে ৩ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ডেনিম প্রসেসিং প্ল্যান্ট নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার(২ জানুয়ারি) কুমিল্লার চান্দিনা বেলাশ্বর এলাকায় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ করে শ্রমিকরা। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় সড়কে।
পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে সড়ক থেকে সরে যায় শ্রমিকরা।
ডেনিম প্রসেসিং প্ল্যান্টের শ্রমিক কাকলী আক্তার বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের বেতন দিচ্ছে না। গত তিন মাস ধরে তারা আমাদের দুর্দশার কথাও শুনছেন না। তাই আমরা বাধ্য হয় মহাসড়কে নামছি।
আরও পড়ুন: টেকসই ফ্যাশন: ২০২৩ সালে ২৪টি নতুন এলইইডি সবুজ কারখানা নিয়ে বাংলাদেশের পোশাক খাত নেতৃত্বে
ডেনিম প্রসেসিং প্ল্যান্টের জরুরি নম্বরে কল করলে রিসিভ করে পরিচয় না দিয়েই বলেন, এই বিষয়ে তাদের কোন বক্তব্য নেই।
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমদ সানজুর মোর্শেদ বলেন, গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে সড়ক থেকে সরে যান আন্দোলনকারীরা। এখন যানজট নেই। তবে সড়কে সামান্য ধীরগতি আছে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ‘প্রত্যাশিত’ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তৈরি পোশাক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বাড়তে পারে: বিজিএমইএ পরিচালক
২০২৪ সালে ‘প্রত্যাশিত’ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তৈরি পোশাক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বাড়তে পারে: বিজিএমইএ পরিচালক
২০২৪ সালে প্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তৈরি পোশাক শিল্পের পণ্যের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বাড়তে পারে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) এমনটাই বলেছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি অভ্যন্তরীণ সরবরাহ শৃঙ্খল বজায় রাখতে পারি, নতুন পণ্য ও বাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে পারি তবে আমরা কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনিশ্চয়তার কারণে ২০২৪ সালের গতিপথ অনুমান করা কঠিন। সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ও মুদ্রাস্ফীতির মতো কারণগুলো এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রুবেল বলেন, উপরন্তু, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে হ্রাস এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জসহ অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির ওপর চাপ রয়েছে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে শিল্পের সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০২৩ সালে পোশাক খাতের বৈশ্বিক পরিস্থিতি ২০২২ সালের মতো ভালো ছিল না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী পোশাক রপ্তানি ৫৭৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
রুবেল বলেন, ‘ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে পোশাক আমদানি ইতোমধ্যে কমে গেছে। সম্মিলিতভাবে মূল্যায়ন করা হলে বাংলাদেশের প্রধান দু’টি বাজার 'আমাদের প্রবৃদ্ধিতে' কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারেনি।’
রুবেল বলেন, অপরদিকে অপ্রচলিত বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপ্রচলিত বাজারের প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
টেকসই ফ্যাশন: ২০২৩ সালে ২৪টি নতুন এলইইডি সবুজ কারখানা নিয়ে বাংলাদেশের পোশাক খাত নেতৃত্বে
২০২৩ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প টেকসই ফ্যাশনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, যার মধ্যে ২৪টি কারখানা লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) সার্টিফিকেশন অর্জন রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত গ্রিন বিল্ডিং রেটিং সিস্টেম, পরিবেশগত দায়বদ্ধতা ও জ্বালানি দক্ষতার প্রতি অঙ্গীকারের উপর গুরুত্বারোপ করে এলইইডি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, সম্প্রতি সনদপ্রাপ্ত নতুন ২৪টিসহ বর্তমানে বাংলাদেশে মোট ২০৬টি এলইইডি সনদপ্রাপ্ত সবুজ কারখানা রয়েছে। যা পোশাক খাতের মধ্যে সবুজ উদ্যোগের প্রতি দেশের নিষ্ঠার প্রমাণ।
৭৬টি সর্বোচ্চ প্ল্যাটিনাম রেটিং এবং ১১৬টি গোল্ড রেটিং নিয়ে রেকর্ড সার্টিফিকেশনের কথা জানিয়েছে বিজিএমইএ।
বৈশ্বিক পোশাক শিল্পের টেকসই অনুশীলনের উপর ক্রমবর্ধমান মনোযোগের প্রেক্ষাপটে এই অগ্রগতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বাহ্যিক বিষয়গুলোর সঙ্গে বাণিজ্যকে জটিল না করার আহ্বান বিজিএমইএর
২৪টি নতুন এলইইডি সনদপ্রাপ্ত কারখানার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৬টি মর্যাদাপূর্ণ প্ল্যাটিনাম রেটিং পেয়েছে, বাকি ৮টি গোল্ড রেটিং অর্জন করেছে।
২০২৩ সালে স্ট্যান্ডআউট পারফর্মারদের মধ্যে এস এম সোর্সিং ১০৬ পয়েন্ট এবং ১০৪ পয়েন্ট অর্জন করেছে গ্রিন টেক্সটাইলস লিমিটেড ইউনিট-৪।
বিজিএমইএ'র তথ্য অনুযায়ী, ইন্টিগ্রা ড্রেসেস ও নিট এশিয়া লিমিটেড ৯৯ পয়েন্ট, লিডা টেক্সটাইল অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড ৯৭ পয়েন্ট এবং লিজ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড ৯৬ পয়েন্ট অর্জন করেছে।
বিশ্বব্যাপী ১০০টি এলইইডি সনদপ্রাপ্ত সবুজ কারখানার মধ্যে ৫৪টি দেশে অবস্থিত, এই অর্জন বাংলাদেশকে বৈশ্বিক টেকসই ফ্যাশন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বিজিএমইএ'র তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে শীর্ষ ১০টির মধ্যে ৯টি এবং বিশ্বের শীর্ষ ২০টি এলইইডি সনদপ্রাপ্ত কারখানার মধ্যে ১৮টি রয়েছে।
বিজিএমইএ'র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্বের সুযোগ বৃদ্ধিতে এটিকে সম্ভাব্য অনুঘটক হিসেবে তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: পোশাক খাতে নারী নেতৃত্বকে এগিয়ে নিতে সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন: আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এই সার্টিফিকেশনগুলোর ভৌগলিক বিস্তার স্থায়ীত্বের প্রতি তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যাপক অঙ্গীকারের উপর গুরুত্বারোপ করে।
২০২৩ সালের সার্টিফিকেশনগুলোর বেশির ভাগই ছিল গাজীপুরে (১৫টি কারখানা), এরপর ঢাকায় ৪টি, চট্টগ্রামে ৩টি এবং ময়মনসিংহে ২টি। এর থেকেই বুঝা যায় এলইইডি নীতিমালা দেশব্যাপীই গ্রহণ করা হচ্ছে।
বর্তমানে ৫০০টিরও বেশি বাংলাদেশি কারখানা তাদের এলইইডি সার্টিফিকেশন পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে, যা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে সবুজ নীতি মেনে চলার শক্তপোক্ত ও চলমান প্রতিশ্রুতির ইঙ্গিত দেয়।
টেকসই ফ্যাশনের দিকে এই পদক্ষেপ কেবল বৈশ্বিক পরিবেশগত লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বরং সবুজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে একটি অগ্রগামী নেতৃত্ব হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করছে।
২০২৩ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে এলইইডি সনদপ্রাপ্ত সবুজ কারখানার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি টেকসই ফ্যাশনের প্রতি শিল্পের অঙ্গীকারের একটি স্পষ্ট সূচক।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এলইইডি রেটিং অর্জনের জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে এটি পরিবেশগত তত্ত্বাবধানেরও একটি মানদণ্ড এবং আরও টেকসই উৎপাদন অনুশীলনের বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টায় নেতৃত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি মূল্যের পোশাক কিনতে কেয়ারফোরের প্রতি বিজিএমইএ সভাপতির আহ্বান
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষতা উন্নয়ন জরুরি: বিজিএমইএ সভাপতি
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, পরবর্তী বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দক্ষতা উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বুধবার(২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত 'স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি)' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশেষ করে অটোমেশন, ক্লাইমেট অ্যাকশন এবং ডিজিটাইজেশনের কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিবর্তনের কারণে বিজিএমইএ সভাপতি আসন্ন বৈশ্বিক প্রবণতার সঙ্গে ক্রমাগত খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।আরও পড়ুন: কার্ডের মাধ্যমে বিদেশে টাকা উত্তোলন বন্ধ করল ব্র্যাক ব্যাংক, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা
তিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের দ্রুত পরিবর্তিত চাহিদার সঙ্গে কর্মীদের দক্ষতা একত্রিত করার গুরুত্বও তুলে ধরেন।
২০১৪ সালে এসইআইপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৮ লাখ দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠেছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থ সচিব ড. মোঃ খায়রুজ্জামান মজুমদার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
আরও পড়ুন: 'রপ্তানি উন্নয়নে মৎস্য খাতে ই-ট্রেসেবিলিটি সিস্টেম চালুর আহ্বান'