বিশ্ব
সিরিয়ায় সৈন্যদের বহনকারী বাসে বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলা, নিহত ২০
সিরিয়ায় সৈন্যদের বহনকারী একটি বাসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করেছে বন্দুকধারীরা। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির বিদ্রোহীরা।
বৃহস্পতিবার রাতের হামলাটি ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী (আইএস) সদস্যরা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গোষ্ঠীটি সিরিয়ায় ২০১৯ সালে পরাজিত হওয়ার পর থেকে দেশটির কিছু কিছু অংশে তাদের গুপ্তঘাতক দলগুলোর সাহায্যে মারাত্মক হামলা চালিয়ে আসছে।
ব্রিটেন-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ইরাকের সীমান্তবর্তী দেইর এল-জোর প্রদেশের মায়াদিনের পূর্বাঞ্চলীয় শহরের কাছে একটি মরুভূমির রাস্তায় হামলায় ২৩ সিরীয় সেনা নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত
পূর্ব সিরিয়ার সংবাদ পরিবেশনকারী আরেকটি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ বলেছে, ২০ জন সেনা নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, বৃহস্পতিবার রাতে এই হামলায় ‘অনেক সেনা নিহত ও আহত হয়েছে।’ তবে এটি বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি, বা হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কেও কিছু জানায়নি।
আইএস সিরিয়া এবং ইরাকের বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০১৪ সালের জুন মাসে খেলাফত ঘোষণা করেছিল। মাত্র তিন বছরের মধ্যে তাদের দখল করা অঞ্চলগুলো হারাতে থাকে এবং ২০১৭ সালে ইরাকে এবং এর দুই বছর পরে সিরিয়ায় পরাজিত হয় গোষ্ঠীটি।
এর আগে এক বছরের মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে আইএস’র গুপ্তঘাতক দল দেশটির কেন্দ্রীয় শহর সুখনার কাছে ছত্রাক সংগ্রহকারীদের ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ৫৩ জনকে হত্যা করেছিল। যাদের বেশির ভাগই শ্রমিক ছিল। এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে সিরিয়া সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েজন সদস্যও ছিল।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় বিমান হামলায় ২৯ তুর্কি সেনা নিহত
জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর ওপর গবেষণাকারী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চরমপন্থীদের হামলার নতুন ধারাটি সিরিয়া ও ইরাকের লাখ লাখ মানুষকে সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে শাসনকারীদের একটি নতুন পুনরুত্থানের চিহ্নিত করে কিনা তা খুব দ্রুতই ঠিক করতে হবে।
গত সপ্তাহে, আইএস সিরিয়ায় তার স্বল্প পরিচিত নেতা আবু আল-হুসেইন আল-হুসেইনি আল-কুরায়শির মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে। এই নেতা গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে চরমপন্থী সংগঠনটির প্রধান ছিলেন। মৃত্যুর আগে তার উত্তরাধিকারীর নামও ঘোষণা করেছেন তিনি। ২০১৯ সালে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের হাতে এর প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হওয়ার পর চতুর্থ শীর্ষ নেতা হিসেবে তিনি নিহত হন।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে নিহত ১৩
লোকসভায় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় লোকসভায় খারিজ হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, লোকসভায় এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব কণ্ঠভোটে বাতিল হয়েছে।
বিরোধীরা গত ২৬ জুলাই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা সেটি গ্রহণ করেছিলেন।
প্রস্তাবের তিন দিন মণিপুর সহিংসতা এবং অন্যান্য উত্তেজনাপূর্ণ ইস্যুতে সরকার ও বিরোধী জোটের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ চলে।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অন্ধ্রপ্রদেশকে একটি বিশেষ বিভাগের মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে ২০১৮ সালে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম এই প্রস্তাব আনা হয়েছিল। তবে সেটি খারিজ হয়ে যায়।
৩৩১ জন সংসদ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে এনডিএ সরকারের। এর মধ্যে বিজেপির ৩০৩ জন সংসদ সদস্যে রয়েছে। এছাড়া বিরোধী জোট ইন্ডিয়া’র ১৪৪ জন সংসদ সদস্য এবং নিম্নকক্ষে এই দুই জোটের বাইরের দলগুলোর সংসদ সদস্য সংখ্যা ৭০ জন।
আরও পড়ুন: ভারতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের আইনপ্রণেতাদের বিক্ষোভ মিছিল
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কের জবাব দেওয়ার সময় কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেছেন।
এসময় কংগ্রেসের প্রতি দেশের জনগণের আস্থা নেই বলেও তিনি বিদ্রুপ করেন।
মোদি বলেন, “কংগ্রেসের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা নেই। অহংকারের কারণে তারা বাস্তবতা দেখতে পাচ্ছে না। তামিলনাড়ুতে তারা ১৯৬২ সালে জিতেছিল এবং ১৯৬২ সাল থেকে তামিলনাড়ুর মানুষ বলছে ‘নো কংগ্রেস’। পশ্চিমবঙ্গে তারা ১৯৭২ সালে জিতেছিল, পশ্চিমবঙ্গের মানুষও বলছে ‘নো কংগ্রেস’। ইউপি, বিহার ও গুজরাটে তারা ১৯৮৫ সালে জিতেছিল এবং এই রাজ্যগুলোর মানুষও বলছে ‘নো কংগ্রেস’।’’
বিরোধীদের অনাস্থা সবসময়ই এনডিএ সরকারের জন্য সৌভাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেন মোদি।
তিনি আরও বলেন, ‘একঅর্থে বিরোধীদের অনাস্থা সবসময়ই আমাদের জন্য সৌভাগ্যজনক। আজ, আমি দেখতে পাচ্ছি, আপনারা (বিরোধীরা) ভাবছেন, আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনে এনডিএ ও বিজেপি দুর্দান্ত জয় নিয়ে ফিরে আসবে।’
তিনি বলেন, আমাদের সরকারের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা বহুবার পরীক্ষিত।
আরও পড়ুন: জি২০ অর্থমন্ত্রীদের 'সবচেয়ে নাজুক মানুষদের' দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান মোদির
মোদির তথ্যচিত্র প্রকাশের পর বিবিসির দিল্লি অফিসে তল্লাশি
হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে ৫৩ জনের মৃত্যু: গভর্নর
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাউই শহরে দাবানলে পুড়ে কমপক্ষে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) এ তথ্য নিশ্চিত করে হাওয়াইয়ের গভর্নর জোশ গ্রিন বলেন, ‘কয়েকটি জায়গা ছাড়া পুরো লাহাইনা পুড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, আগুনে এক হাজারেরও বেশি স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে, সেগুলো এখনও জ্বলছে।
গ্রিন আরও বলেন, আমরা মর্মাহত। ১৯৬০ সালের সুনামিতে বিগ আইল্যান্ডে ৬১ জন নিহত হওয়ার পর এটিই দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সরকারি হিসাবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫৩। তবে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) উত্তপ্ত গ্রীষ্মকাল এবং একটি ক্ষণস্থায়ী হারিকেনের প্রবল বাতাস থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। মাউইবাসীকে অবাক করে দিয়ে মুহূর্তে দ্বীপের বাড়িঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০১৮ সালের ক্যাম্প ফায়ারের পর থেকে এটি দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল। ২০১৮ সালে কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয় এবং প্যারাডাইস শহর ধ্বংস হয়ে যায়।
হাওয়াই ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মুখপাত্র অ্যাডাম ওয়েইনট্রাব বলেছেন, ‘আমরা এখনও জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় আছি। অনুসন্ধান ও উদ্ধার আমাদের অগ্রাধিকার।’
আরও পড়ুন: চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহে ১৪৭ জনের মৃত্যু
ওয়েইনট্রাব আরও বলেন, ফায়ার লাইনগুলো নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকারী দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভেতরে ঢুকতে পারবে না।
বস্কো বে নামে লাহাইনার এক বাসিন্দা মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তার প্রায় প্রতিটি ভবনে আগুন জ্বলছে, বাতাসের মধ্যে স্ফুলিঙ্গ ছুটে আসছে।
বে বলেন, তিনি দ্বীপের বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে একজন। তিনি দ্বীপের প্রধান বিমানবন্দরে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন তিনি বাড়ি ফেরার অনুমতির অপেক্ষায় আছেন।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা গুয়াতেমালার ৩১ বছর বয়সী বাবুর্চি মার্লন ভাসকেজ জানান, তিনি যখন ফায়ার অ্যালার্ম শুনতে পান, তখন আর গাড়ি নিয়ে পালানোর সুযোগ ছিল না।
তিনি বলেন, ‘আমি দরজা খুলে দেখি আগুন প্রায় আমার উপরে ছিল।’
বর্তমানে তিনি একটি জিমনেসিয়ামের পরিত্যক্ত একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দৌড়ে পালিয়েছিলাম। প্রায় সারারাত এবং পরের দিন পর্যন্ত আমরা দৌড়েছি। কারণ আগুন তখনও থামেনি।’
লাহাইনার বাসিন্দা কামুয়েলা কাওয়াকোয়া ও আইউলিয়া ইয়াসো দম্পতি ধোঁয়ার মধ্যে দিয়ে তাদের পালানোর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।
তারা জানান, তাদের ৬ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে তারা সুপারমার্কেটে গিয়েছিলেন। সেখানে আগুন দেখে দ্রুত তাদের অ্যাপার্টমেন্টে ফেরেন তারা। এসময় তাদের চারপাশের ঝোপগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, তারা দ্রুত পোশাক পরিবর্তন করে দৌড়ানো শুরু করেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত ৩০, আহত ৬০
বৃহস্পতিবার চেলসি ভিয়েরার নামক এক বাসিন্দা জানান, সে ও তার দাদি লুইস আবিহাই হেল মাওলুতে বাস করতেন। সে আগুন থেকে পালাতে পারলেও তার দাদির কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। দাদির বয়স ৯৭ বছর।
তিনি বলেন, মানুষ ওই দ্বীপে বসবাসরত স্বজনদের খুঁজছে এবং হাসপাতালে ফোন করছেন। আমার কাছে ফোন নেই, তাই পরিবারকেও জানাতে পারছি যে আমি নিরাপদে আছি।
তিনি বলেন, ‘তিনি (দাদি) কোথায় গেছেন, কোথায় খোঁজ করব বা কাকে জিজ্ঞাসা করব আমি জানি না।’
৯১১, ল্যান্ডলাইন ও সেলুলার পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ায় দ্বীপে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। মাউয়ের কিছু অংশেও বিদ্যুৎ চলে গেছে।
রাজ্য পরিবহন পরিচালক অ্যাড স্নিফেন জানান, দ্বীপে পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার মাউইয়ের প্রায় ১১ হাজার অধিবাসীকে এবং বৃহস্পতিবার কমপক্ষে ১৫০০ জনকে নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা রাজধানী হনলুলুর হাওয়াই কনভেনশন সেন্টারে কয়েক হাজার মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তূত করেছে।
লাহাইনার দক্ষিণ-পূর্বের কিহেইতে বুধবার রাতেও গাছ ও বাড়িতে আগুন জ্বলতে থাকায় দ্বীপটির মাটি পর্যন্ত পুড়ে লাল হয়ে গেছে।
এই গ্রীষ্মে বিশ্বজুড়ে চরম আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়ের মধ্যে এটি সর্বশেষতম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ছে।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের এনভা্য়রনমেন্টাল জিওগ্রাফি’র একজন সহযোগী অধ্যাপক টমাস স্মিথ বলেছেন, হাওয়াইতে দাবানল অস্বাভাবিক নয়। গত কয়েক সপ্তাহের আবহাওয়া একটি বিধ্বংসী দাবানলের জ্বালানি তৈরি করেছিল এবং হারিকেন ডোরা’র ফলে সৃষ্ট প্রবল বাতাস মিলে এই বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়র মিচ রথ বলেছেন, হাওয়াইয়ের বিগ আইল্যান্ডও বর্তমানে দাবানলের কবলে পড়ছে। যদিও সেখানে কোনো আহত বা ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
হাওয়াইয়ের রাজ্য প্রতিরক্ষা বিভাগের মেজর জেনারেল কেনেথ হারা বুধবার রাতে বলেছেন, তিনি কর্মকর্তাদের যোগাযোগ পুনরুদ্ধার ও খাবার পানি সরবরাহ করার কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক পুনরুদ্ধারের গতি বাড়িয়েছে বেইজিং
তিনি বলেন, ন্যাশনাল গার্ড হেলিকপ্টার আগুনের উপর ১ লাখ ৫০ হাজার গ্যালন (৫ লাখ ৬৮ হাজার লিটার) পানি দিয়েছে।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, তারা ১৪ জনকে উদ্ধার করেছে যারা আগুনের শিখা ও ধোঁয়া থেকে বাঁচতে পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিল।
মাউই কাউন্টির মেয়র রিচার্ড বিসেন জুনিয়র বুধবার বলেছেন, কর্মকর্তারা এখনও আগুনের কারণ অনুসন্ধান শুরু করেননি।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার উটাহ ভ্রমণ করে মাউই’র ঘটনাকে দেশের জন্য বড় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করেছেন।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছে, যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধ্বংস হয়েছে; অবিলম্বে তাদের সাহায্য পৌঁছানোর বিষয়টি ফেডারেল সরকার নিশ্চিত করবে।
ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের হামলায় ৬ তুর্কি সেনা নিহত : আঙ্কারা
উত্তর ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের বুধবার রাতের হামলায় অন্তত ছয় তুর্কি সেনা নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হতাহতের কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের শেয়ার করা একটি সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে জানায়, পরে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলায় বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-র চার সদস্যও মারা গেছেন।
একদিকে তুরস্ক এবং তুর্কি সমর্থিত গোষ্ঠী এবং অন্যদিকে ইরাক ও সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের মধ্যে মাসব্যাপী উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে সর্বশেষ সহিংসতা এটি।
তুরস্কের মধ্যে এক দশক ধরে বিদ্রোহ চালিয়েছে যাওয়া পিকেকে এবং সিরিয়া ও ইরাকের মিত্র কুর্দি গোষ্ঠীগুলিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে বিবেচনা করে আঙ্কারা। তুরস্ক দাবি করে যে পিকেকে সদস্যরা নিয়মিতভাবে উত্তর ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়।
বাগদাদে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, উত্তর ইরাকের কুর্দি অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে বুধবার ইরাকের সুলায়মানিয়াহ প্রদেশে পিকেকের গাড়ি লক্ষ্য করে পৃথক দুটি তুর্কি ড্রোন হামলায় দুই বিদ্রোহী নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
তুরস্ক ইরাকের একটি সীমান্ত অঞ্চলে সৈন্য মোতায়েন করে এবং সেখানে পিকেকে অবস্থানগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে। গত বছর এটি উত্তর ইরাকে পিকেকে-এর বিরুদ্ধে ‘ক্ল-লক’ নামে একটি স্থল ও বিমান অভিযান শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইরাকি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবারের বিমান হামলা দুহোক শহরের উত্তরে অবস্থানে আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি যোদ্ধাদের ওপর আইএসের হামলা
তুর্কি কর্নেল জেকি আকতুর্ক নিহত সেনাদের প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের সৈন্যরা শহীদদের রক্ত মাটিতে ছাড়বে না।একজন সন্ত্রাসী অবশিষ্ট না থাকা পর্যন্ত একই দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তুর্কি বাহিনী তাদের লড়াই চালিয়ে যাবে।’
১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কে পিকেকে-এর বিদ্রোহীরা কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
ইউক্রেনে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনকে ২০০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহায়তা সরবরাহ করবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন। যাতে পাল্টা আক্রমণে দেশটির রাজধানী কিয়েভ টিকে থাকতে পারে। দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, সামনের সারির সৈন্যরা প্রশিক্ষিত রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বড় ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই গোলাবারুদের প্যাকেজে থাকছে হাই-মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (এইচআইএমএআরএস) এবং প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ছোট কামান ও ট্যাংকের জন্য গোলাবারুদ, জ্যাভলিন রকেট, মাইন-ক্লিয়ারিং সরঞ্জাম, ১২ মিলিয়ন রাউন্ড ছোট অস্ত্রের গোলাবারুদ এবং ধ্বংসাত্মক গোলাবারুদ।
নাম প্রকাশের ওই দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সহায়তার বিষয় এখনও জনসমক্ষে ঘোষণা করা হয়নি।
ইউক্রেনের জন্য নির্ধারিত মার্কিন তহবিলের প্রায় পুরোটাই ব্যয় হয়ে গেছে এবং বাইডেন প্রশাসন এই সমর্থন অব্যাহত রাখতে কংগ্রেসের কাছ থেকে পরিপূরক সহায়তার একটি নতুন প্যাকেজের জন্য অনুরোধ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের সমালোচনা করায় শিক্ষার্থীর ৮ বছরের কারাদণ্ড
গত বছর রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে ইউক্রেন ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৪৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা পেয়েছে। এসব তহবিলের মাধ্যমে রুশ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ছোট কামান ও লাখ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদসহ নানা অস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহ করা হয়েছে। রক্তক্ষয়ী তীব্র এই যুদ্ধে সহায়তার বেশিরভাগ গোলাবারুদ ও অস্ত্র ইতোমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার বুধবার তার অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেন, দেশটির পূর্বাঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ে সামনের সারিতে অবস্থান ও নিয়ন্ত্রণে একদিনের মধ্যে ‘একাধিক পরিবর্তন’ঘটে।
বাইডেন প্রশাসন দুটি কর্মসূচির মাধ্যমে যুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থায়ন করছে। যার একটি হলো প্রেসিডেন্সিয়াল ড্রডাউন অথরিটি বা পিডিএ, যা বিদ্যমান মার্কিন মজুদ থেকে অস্ত্র সরবরাহ করে। অন্যটি হচ্ছে ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিসট্যান্স ইনিশিয়েটিভ বা ইউএসএআই, যা ট্যাংকের মতো বড় আকারের অস্ত্র ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে অর্থায়ন করে। উভয় তহবিল চলতি অর্থবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধ ও দুর্যোগে ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭১ মিলিয়ন: প্রতিবেদন
পেন্টাগন ইতোমধ্যেই এই তহবিল নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। কারণ, কংগ্রেস অতিরিক্ত তহবিল অনুমোদন না করা পর্যন্ত সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পিডিএ অর্থে প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে। এই অবশিষ্ট থেকেই ২০০ মিলিয়ন ডলারের সর্বশেষ সহায়তার প্যাকেজটি দেওয়া হচ্ছে।
পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাবরিনা সিং মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা ইউক্রেনকে যুদ্ধক্ষেত্রে যা প্রয়োজন তা সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারব। আমি কংগ্রেসের কাছে কোনো সম্পূরক বা অতিরিক্ত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কিছুতেই এগিয়ে যাচ্ছি না।’
এ ছাড়াও চলতি অর্থবছরে ইউএসএআই তহবিলে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭
ইকুয়েডরে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী খুন
ইকুয়েডরের আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিওকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় সময় বুধবার (৯ আগস্ট) রাজধানী কিতো’য় আয়োজিত একটি রাজনৈতিক সমাবেশে বক্তৃতা শেষে গাড়িতে উঠার সময় ফার্নান্দোকে গুলি করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশে সক্রিয় আন্তর্জাতিক অপরাধ সংগঠন মেক্সিকোর সিনালোয়া কার্টেলের দলের সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
ইকুয়েডরের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ফার্নান্দোর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে।
অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের গুলিতে একজন সন্দেহভাজন মারা গেছেন এবং পুলিশ কিতোতে অভিযান চালিয়ে ছয় সন্দেহভাজনকে আটক করেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবারের গোলাগুলির ওই ঘটনায় কমপক্ষে ৯ জন আহত হয়েছে। যার মধ্যে অফিসার ও একজন কংগ্রেস প্রার্থী রয়েছে।
মৃত্যুর আগে তার সর্বশেষ বক্তৃতায় ফার্নান্দো জনতাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি দেশের দুর্নীতির মূলোৎপাটন করবেন এবং দেশের ‘চোরদের’ আটক করবেন।
ফার্নান্দো এসময় জানান, তিনি মেক্সিকোর সিনালোয়া কার্টেলের সহযোগীদের কাছ থেকে একাধিকবার মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইকুয়েডরে কারাগারে দাঙ্গায় নিহত ১১৬
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি আমার আদর্শ এই ধরনের গোষ্ঠীর জন্য হুমকি। তবে আমি ওইসব দুর্বৃত্তদের ভয় পাই না।’
আগামী ২০ আগস্ট ইকুয়েডরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। মোট আটজন প্রার্থী প্রেসিডেন্ট পদে লড়ছেন।
জনমত সমীক্ষায় পাঁচ নম্বরে ছিলেন ৫৯ বছর বয়সী ফার্নান্দো। তার দলের নাম বিল্ড ইকুয়েডর মুভমেন্ট।
ফার্নান্দো ছিলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশের অন্যতম কণ্ঠস্বর। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়ার সরকারের সময় (২০০৭-২০১৭) তিনি বেশ সক্রিয় ছিলেন।
তিনি একজন স্বাধীন সাংবাদিকও ছিলেন। এ ছাড়া সাবেক সরকারের দুর্নীতির তদন্ত করেছিলেন এবং পরে দুর্নীতিবিরোধী প্রচারক হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রার্থী অটো সোনেনহোলজনার বুধবারের হত্যাকাণ্ডের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা শোকাহত, কান্নার সাগরে ডুবে যাচ্ছি এবং আমরা এভাবে বেঁচে থাকতে চাই না। আমরা দাবি করছি আপনারা (সরকার) কিছু করুন।’
ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো বলেন, ‘ফার্নান্দোর স্মৃতি এবং তার লড়াইকে সম্মান জানাতে সব দোষীদের ধরে শাস্তি দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহে ১৪৭ জনের মৃত্যু
লাসো বলেন, ‘হত্যাকারীরা’ রাস্তায় একটি গ্রেনেড ছুঁড়েছিল, কিন্তু এটি বিস্ফোরিত হয়নি। পরে পুলিশ একটি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি ধ্বংস করে।
গুইলারমো লাসো বলেন, ‘এই ধরনের সংগঠিত অপরাধীদের সাহস বেড়ে গেছে। এবার সর্বশক্তি নিয়ে তাদের মোকাবিলা করবে আইন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসারদের নিয়ে আমি জরুরি বৈঠকে বসব।’
চলতি মাসেই বন্দর নগরী মান্তার মেয়রকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর সহিংসতা রোধে প্রেসিডেন্ট লাসো ২৬ জুলাই দুটি প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
ফার্নান্দোর নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার প্যাট্রিসিও জুকুইল্যান্ড বলেন, ফার্নান্দো কমপক্ষে তিনবার হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন। যা তিনি কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছিলেন। এই অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘ইকুয়েডরের মানুষ কাঁদছে। রাজনীতির কারণে এভাবে যেন আর কারো মৃত্যু না হয়।’
তিনি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও মাদক পাচারকে দায়ী করে সহিংসতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
সাবেক সামরিক গোয়েন্দা কর্নেল এডিসন রোমো বলেছেন, দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ফার্নান্দোকে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধী সংস্থার জন্য হুমকি’ করে তুলেছিল।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের ফলে অন্য প্রার্থীরাও শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
সিটিজেন রেভুলোশনারি পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রানার লুইসা গনজালেজ বলেন, ‘যখন তারা (দুর্বৃত্তরা) আমাদের একজনের নাগাল পায়, তখন তারা আমাদের সবারই নাগাল পেয়ে যায়।’
ইকুয়েডরে মাদক ভয়াবহ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাদক পাচারকারীরা দেশের উপকূলীয় বন্দরগুলো ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে জড়িতরা প্রভাব বিস্তার করছে। ফলে সেখানে সহিংস অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে নির্বিচারে গুলির ঘটনা ঘটেছে ৪০০টিরও বেশি
পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই) -এর চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে মেনে চলার জন্য পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
সোমবার জাতিসংঘ প্রধান এই আহ্বান জানান।
গুতেরেসের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, ‘ইসলামাবাদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পরে যে চলমান বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছে তার প্রতি মহাসচিব নজর রাখছেন এবং তিনি সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর
হক নিয়মিত একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তিনি (গুতেরেস) শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।’ ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উন্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে মেনে চলার জন্য মহাসচিব কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন।’
শনিবার (৫ আগস্ট) স্থানীয় আদালত তাকে আর্থিক সম্পদ লুকানোর জন্য তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যা বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল।
আরও পড়ুন: কারাগারে থেকেও কলকাঠি নাড়তে পারেন ইমরান
চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহে ১৪৭ জনের মৃত্যু
চলতি বছরের দাবদাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিএনএন এক রিপোর্টে জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এই সংখ্যা চরম আবহাওয়ার কারণে প্রাণ হারানোর প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম।
দেশটির তিনটি রাজ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এসব রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আগস্টের প্রথম দিকে অ্যারিজোনার পিমা কাউন্টিতে ৬৪ জন মারা গেছেন; অ্যারিজোনায় ম্যারিকোপা কাউন্টিতে, ৩৯ জন মারা গেছেন; নেভাদার ক্লার্ক কাউন্টিতে ২৬ জন মারা গেছেন; টেক্সাসের ওয়েব কাউন্টিতে ১১ জন মারা গেছেন এবং এবং টেক্সাসের হ্যারিস কাউন্টিতে সাত জন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে নির্বিচারে গুলির ঘটনা ঘটেছে ৪০০টিরও বেশি
এছাড়াও দেশটির ক্যালিফোর্নিয়া, দক্ষিণ ও মধ্যপশ্চিমের কিছু অংশেও তাপজনিত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ম্যারিকোপা কাউন্টিতে কমপক্ষে ৩৯ জনের তাপজনিত মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়াও মৃত্যুর সম্ভাব্য তাপ-সম্পর্কিত কারণ উদঘাটনে আরও ৩১২টি মৃত্যু এখনও তদন্তাধীন।
সিএনএন-এর মতে, জুনের শেষের দিকে তাপমাত্রা রেকর্ড মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং জুলাই মাস পর্যন্ত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমের বেশিরভাগ অংশে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে উপকূলে ভেসে এসেছে কয়েক হাজার মরা মাছ
যুক্তরাষ্ট্রে হাইস্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ২, আহত ৫
করোনার নতুন ধরন ‘এরিস’, যুক্তরাজ্যে প্রতি সপ্তাহে ২০.৫ হারে আক্রান্ত বাড়ছে
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট এরিস (ইজি.৫.১) ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যে প্রতি সপ্তাহে ২০ দশমিক ৫ হারে আক্রান্ত বাড়ছে।
ফোর্বস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এরিসকে (ইজি.৫.১) শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর সংক্রামক করোনভাইরাস ২ (সার্স কভ-২) হিসেবে তার ভ্যারিয়েন্ট আন্ডার মনিটরিং (ভিইউএম) এর তালিকাভুক্ত করেছে।
কানাডার অন্টারিওর গুয়েলফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির অধ্যাপক টি রায়ান গ্রেগরি এক টুইটে ইজি.৫.১ ভাইরাসটির বৈচিত্র্য বর্ণনা করার জন্য ‘এরিস’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯.২৬ কোটি ছাড়িয়েছে
টুইটে গ্রেগরি লিখেছেন, ‘যতদূর আমরা বলতে পারি ইজি.৫.১ সম্পর্কে আমরা এখনো বিশেষ কিছু জানিনা।’
তবে এটি যে হারে ছড়িয়ে পড়েছে তা বিবেচনা করে, এটিকে পূর্ববর্তী ধরনগুলোর চেয়ে বেশি সংক্রামক বলে মনে হচ্ছে।
ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি অনুসারে, ২০ জুলাই পর্যন্ত, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ১৪ দশমিক ৫৫ জন ইজি.৫.১ ভেরিয়েন্টটিকে আক্রান্ত এবং যুক্তরাজ্যে প্রতি সপ্তাহে ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) কোভিড-১৯ ডেটা ট্র্যাকারের তথ্যমতে, ইজি.৫.১ এর ফলে ২২ জুলাই পর্যন্ত দুই সপ্তাহে করোনা আক্রান্তের হার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে।
এরিসের উত্থান এবং বিস্তারে আতঙ্কিত হওয়া উচিত নয়। তবে, এটি এতে বোঝা যাচ্ছে করোনা ভাইরাস কীভাবে পরিবর্তন হতে থাকে এবং একটি সমস্যা হিসেবে টিকে থাকে।
তাই প্রত্যেকের উচিত করোনার নতুন ধরনের উদ্ভব ও সেগুলোর বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি সম্পর্কে ওয়াবিবহল থাকা।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯.২২ কোটি ছাড়িয়েছে
বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯.১৬ কোটি ছাড়িয়েছে
কারাগারে থেকেও কলকাঠি নাড়তে পারেন ইমরান
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বর্তমানে পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় নেতা। সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদণ্ডের পর এখন উচ্চ নিরাপত্তাবিশিষ্ট কারাগারে বন্দী আছেন তিনি।
২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদে অনাস্থা ভোটে তিনি পদচ্যুত হন। এরপর থেকে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ইরমানের রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ের মধ্যে এখনও পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে নাটকীয় মোড়।
ইমরানের দল সরকারের সমালোচনা করে এই মামলাকে সাজানো বলে মন্তব্য করেছে। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করবে বলেও জানিয়েছে। তারা আরও বলেছে, এই মামলার লক্ষ্য হলো আসন্ন শরৎকালে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রাক্তন ক্রিকেট তারকাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। সরকার ইমরানের প্রতি রাজনৈতিক নীপিড়নকে অস্বীকার করে তার দোষী সাব্যস্ত হওয়াকে বৈধ বলছে।
দোষী সাব্যস্ত হলে ৭০ বছর বয়সী ইমরান সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। পাশাপাশি ১৯৯০ সালে তার প্রতিষ্ঠা করা তেহরিক-ই- ইনসাফের (পিটিআই) নেতৃত্ব থেকেও আইনানুযায়ী সরে যেতে হবে তাকে। এদিকে জরিপগুলো পিটিআই-এর জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচনের ইঙ্গিত দেয় এবং খানের কারাদণ্ড তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।
তার বিরুদ্ধে কী মামলা ছিল
ইমরান ক্ষমতায় থাকাকালীন বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার থেকে আয়ের প্রতিবেদন জমা দেননি বলে ইসলামাবাদের একটি আদালত শনিবার রায় দিয়েছে। পাকিস্তানে সরকারি পদ ছাড়ার পর নেতাদের এই ধরনের উপহার রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সেসব উপহারের মূল্যের একটি অংশ প্রদান করা হয়।
আদালত বলেছে, ইমরান সেই উপহারগুলোর মধ্যে কিছু বিক্রি করেছেন এবং গত বছর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি প্রতিবেদনে সেই উপার্জনগুলো উল্লেখ করেননি। এজন্য আদালত খানকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে, তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং তাকে ১ লাখ রুপি বা সাড়ে ৩০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করে।
রায়ের পরপরই, খানকে পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয় এবং রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে অ্যাটক শহরে একটি উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইমরানের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলাগুলো
ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আদালত অবমাননা থেকে শুরু করে সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা তার বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি মামলা দায়ের করেছে।
সমালোচকরা বলছেন, আইনি লড়াইয়ের এই ঝাঁকুনি খানকে সরিয়ে দিতে শাসক জোটের একটি প্রচেষ্টার অংশ। কারণ তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে বিপুল সংখ্যক সমর্থক জড়ো করতে সক্ষম হয়েছেন।
খানকে একজন দুর্নীতিবাজ প্রতারক হিসেবে চিত্রিত করতে তাকে কারাগারের বাইরে রাখার পরিববর্তে ভেতরে রাখতে আইনি কৌশল প্রয়োগ করেছে সরকার। পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীতে সরকারের সমর্থক রয়েছে, যারা তার ৭৫ বছরের ইতিহাসের বেশিরভাগ সময় ধরে দেশটিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
এই গ্রেপ্তার ভিন্ন কীভাবে?
ইমরান খানকে অ্যাটক কারাগারে রাখা হয়েছে। এটি এমনটি একটি কারাগার, দণ্ডিত জঙ্গি ও সহিংস অপরাধীদের জন্য এর কুখ্যাতি রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেছেন, সেখানকার অবস্থার সঙ্গে পরিচিত কর্মকর্তারা বলেছেন, তার জন্য একটি ফ্যান এবং আলাদা গোসলের সুবিধাসহ তার নিজস্ব সেল রয়েছে। যা কারাগারের সাধারণ কয়েদিদের মতো কঠিন অবস্থার থেকে এক ধাপ উন্নত।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করায় পিটিআই’র বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন চলছে: ইমরান খান
মে মাসে ইমরানকে আটক করার ঘটনার চেয়ে এবারের পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। এবার দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অভিযোগে আদালতের শুনানি পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেবার সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত হস্তক্ষেপ করে সেই আটককে বেআইনি ঘোষণা করেছিল। ইমরানকে পুলিশ কম্পাউন্ডে একটি গেস্ট হাউসে থাকার অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। সেসময় তার আটকের বিষয়ে আইনি যুক্তি শেষ হওয়ার সময় দর্শকরা সাক্ষাৎ করতে পেরেছিল। খান অবশেষে লাহোরে ফিরেও এসেছিলেন। সমর্থকরা গাড়িতে গোলাপের পাঁপড়ি ছিটিয়ে তাকে বরণ করেছিলেন।
এরপর কী হবে
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বিশ্বাস করেন, সুপ্রিম কোর্ট খানের দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং আপিলের সাজা বাতিল করতে পারে।
ইসলামাবাদ-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রধান গুল বলেছেন, ‘ইমরান খানের বিরুদ্ধে একেবারেই কোনো শক্ত মামলা ছিল না। তবে তাকে একটি প্রযুক্তিগত ভুলের কারণে এই দোষী সাব্যস্ত হতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানের নাম নো-ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে: পাকিস্তানের গণমাধ্যম
তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, খানের প্রতি সমর্থন কমে যাচ্ছে।
‘তিনি কিছু নিষ্পাপ, নির্বোধ সমর্থকদের প্রতারণা করতে পারেন, কিন্তু সাধারণ জনগণ এখন তার আসল চরিত্র চিনতে পেরেছে।’
তিনি লিখেছেন, ‘মুখোশ খুলে তার আসল চেহারা তুলে ধরা হয়েছে। তুচ্ছ লাভের জন্য রাষ্ট্রীয় উপহার কুক্ষিগত করেছেন।’
যদি ইমরান দোষী সাব্যস্ত হন তবে তিনি নির্বাচনে দলের নেতৃত্বও দিতে পারবেন না। কারণ অপরাধী দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে কারাগারে থেকেও তিনি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ইমরান খান আদালতে দোষী সাব্যস্ত, নিষিদ্ধ হতে পারেন রাজনীতিতে
মে মাসে তাকে আটক করার পর তার সমর্থকরা বিক্ষোভ করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করেছিল। খানের অনুগত কয়েক হাজার মানুষ শহরে তাণ্ডব চালায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সামরিক ও সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে। সরকার ক্র্যাক ডাউন করেছে, ৭ হাজারেরও বেশি আটক করেছে। কিছু মামলার বিচার এখনও চলছে।
সরকারের আরও কঠোর পদক্ষেপের আশঙ্কায় আগেরবারের তুলনায় এবার ইমরানের গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি নীরব ছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জন্য এবার তার আহ্বান বিপুল সংখ্যক সমর্থক জড়ো করতে ব্যর্থ হয়েছে।
রাজনৈতিক পতন কী?
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ আগামী সপ্তাহে সংসদ ভেঙে দিতে পারেন। সম্ভবত নভেম্বরের মাঝামাঝি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেবেন। সাম্প্রতিক আদমশুমারির ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিলে সরকার কয়েক মাস ভোট পিছিয়ে দিতে পারে।
খানের কারাবরণ তাকে এবং তার দলের বৃহত্তর নির্বাচনী সমর্থন আদায় করতে পারে। ক্ষমতা হারানোর পর তিনি যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছিলেন। এটি আরও যোগ করবে যে পাকিস্তানের সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য নির্ভীক কর্মী তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আজিম চৌধুরী বলেছেন, ‘ইমরান খানের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াই পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে জেল থেকেও তার প্রার্থীদের জন্য কার্যকরভাবে প্রচারণা চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার