বিশ্ব
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কে কী বলল
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ। তিনি বলেছেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটি একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
এমন বাস্তবতায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে ভারতের হামলার মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা এই পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন।
‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধান’ খোঁজার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না হয়, সে লক্ষ্যে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধানের’ পথ খুঁজে বের করতে ভারত ও পাকিস্তানকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ মে) ওয়াশিংটন ডিসিতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনা একটি চলমান পরিস্থিতি। আমরা এখনও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দেশদুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ব্রুস বলেন, ‘এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কেবল দর্শকের ভূমিকা পালন করছে না, আমরা সক্রিয়ভাবে দুই পক্ষের সঙ্গে যুক্ত আছি। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই পরিস্থিতির মধ্যেও চলমান বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে অবগত রয়েছি।’
এর আগে, হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের এই হামলাকে লজ্জাজনক উল্লেখ করে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটি সত্যিই দুঃখজনক। আমি শুধু চাই, দ্রুত এই সংকটের অবসান ঘটুক।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের সঙ্গে তিনি একমত। তিনিও দ্রুত এই সংকটের অবসান কামনা করেন।
পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বের করতে ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার কথাও বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব সামলানো রুবিও।
সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জাতিসংঘের
ভারত-পাকিস্তানের এই সামরিক উত্তেজনা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তার মুখপাত্র বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের সামরিক অভিযান নিয়ে (জাতিসংঘ) মহাসচিব অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’
তিনি উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। গুতেরেসের ভাষ্যে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোনো সামরিক সংঘাত হলে তার ভার বিশ্ব বহন করতে পারবে না।
কূটনৈতিক উপায়ে উত্তেজনা নিরসন সম্ভব: রাশিয়া
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারত ও পাকিস্তানে সামরিক সংঘাত বৃদ্ধিতে রাশিয়া উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না হয়, সে জন্য দুই পক্ষকেই সংযম দেখানোর অনুরোধ করছি।
বিবৃতিতে রাশিয়া আশা প্রকাশ করেছে যে, শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক উপায়ে উত্তেজনা নিরসন করা সম্ভব।
উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব চীনের
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ভারত ও পাকিস্তান এমন প্রতিবেশী, যাদের চাইলেও আলাদা করা যায় না। তারা চীনেরও প্রতিবেশী।’
‘তাই শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অগ্রাধিকার দিয়ে দুপক্ষকেই আমরা শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি (চলমান) পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে, এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে উভয় দেশকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
এছাড়া দুই দেশের মধ্যকার এই উত্তেজনা কমাতে প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাবও দিয়েছে চীন।
এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের বর্তমান উত্তেজনা কমাতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে চায় চীন। এ ক্ষেত্রে আমরা আান্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।’
শান্তি স্থাপনে দুই দেশকেই সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
চলমান উত্তেজনা প্রশমনে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশকেই যুক্তরাজ্য সহযোগিতা করতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস।
এ বিষয়ে বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের বার্তা হলো, আমরা দুই দেশেরই বন্ধু ও অংশীদার। ফলে উভয় দেশকেই সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।’
‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, সংলাপ, উত্তেজনা প্রশমনে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশেরই যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে এবং এসব বিষয়ে সহযোগিতা লাগলে তা করার ইচ্ছা আমাদের আছে।’
পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা জাপানের
পাকিস্তানে ভারতের অপারেশন সিঁদুর পরিচালনার ঘটনায় পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাপান।
পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানায় জাপান। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।’
‘ওই ঘটনার পর সৃষ্ট বর্তমান পরিস্থিতি পাল্টাপাল্টি প্রতিশোধমূলক হামলার দিকে গড়াতে পারে এবং তা পূর্ণ মাত্রার সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আমরা ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন সংযম প্রদর্শন করে এবং সংলাপের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করে।’
সংযম দেখানোর আহ্বান ফ্রান্সেরও
ভারত ও পাকিস্তানকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্সও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ভারতের অভিপ্রায়ের বিষয়টি আমরা বুঝি। তবে উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে এবং নিজ নিজ দেশের বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই সংযম অনুশীলন করার আহ্বান জানাই।’
দেশটির টিএফ১ টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই আহ্বান জানান।
এ সময় ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের কারোরই যে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের দিকে যাওয়ার ইচ্ছা আছে, তা আমার মনে হয় না।’
শান্তি ও সংযমের আহ্বান বাংলাদেশের
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বুধবার (৭ এপ্রিল) এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুই দেশকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উদ্ভূত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার।’
‘আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ আশাবাদী যে, কূটনৈতিকভাবে এই উত্তেজনা নিরসন হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে অপারেশন সিঁদুর নামে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্র এবং পাঁচজন গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ।
সীমান্তে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর পাল্টা গোলায় ৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারতীয় পুলিশ ও চিকিৎসকরা।
২২২ দিন আগে
ভারত-পাকিস্তান হামলা: ‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধান’ খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান
দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ‘দায়িত্বশীল সমাধানের’ পথ খুঁজে বের করতে ভারত ও পাকিস্তানকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ মে) ওয়াশিংটন ডিসিতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনা একটি চলমান পরিস্থিতি। আমরা এখনও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দেশদুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ব্রুস বলেন, ‘এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কেবল দর্শকের ভূমিকা পালন করছে না, আমরা সক্রিয়ভাবে দুই পক্ষের সঙ্গে যুক্ত আছি। অত্যন্ত সংবেদনশীল এই পরিস্থিতির মধ্যেও চলমান বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে অবগত রয়েছি।’
এর আগে, মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের অন্তত ছয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।’
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় শিশুসহ ৩১ পাকিস্তানি নিহত
আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’
যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটি একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
ভারতের দাবি, গত মাসে ভারতশাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের হত্যায় যোগসাজশ থাকা জঙ্গিদের ব্যবহার করা অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে তারা।
ভারতের হামলার জবাবে কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। এর মধ্যে দুটি বিমান ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গিয়ে পড়েছে।
পাকিস্তানের গোলায় সাত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারতীয় পুলিশ ও চিকিৎসকরা। এ ছাড়াও ৩৫ জন আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৩
২২২ দিন আগে
ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় শিশুসহ ৩১ পাকিস্তানি নিহত
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ হামলায় একটি শিশুরও প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া ভারতীয় গোলায় আরও পাঁচ পাকিস্তানি নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।’ তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’
যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটা একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৩
ভারত বলছে, ‘গেল মাসে ভারতশাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের হত্যায় যোগসাজশ থাকা জঙ্গিদের ব্যবহার করা অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে তারা।’ জবাবে কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। এরমধ্যে দুটি বিমান ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গিয়ে পড়েছে।
পাকিস্তানের গোলায় সাত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় পুলিশ ও চিকিৎসকরা। এছাড়াও ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
গেল মাসে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে ২৬ পর্যটককে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এ ঘটনার পর দুদেশের সম্পর্ক নতুন করে তলানিতে চলে যায়। পরবর্তীতে দুপক্ষই প্রতিবেশী দেশের কূটনীতিক ও নাগরিকদের বহিষ্কারে করেছে, সীমান্ত এবং আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘ভারত যে যুদ্ধ পরিস্থিতি চাপিয়ে দিয়েছে, তার সমুচিত জবাব দেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের আছে। এই হামলার কঠিন জবাব দেওয়া হবে।’
এই হামলাকে ‘নিবৃত্তিমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিক্রম মিসরি। নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘তার দেশের কাছে মনে হয়েছে, এই হামলা চালানোর মধ্যদিয়ে নিবৃত্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ নিজভূখণ্ডে সন্ত্রাসী অবকাঠামোর বিরুদ্ধে চোখেপড়ার মতো কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান।’
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ‘তিনটি রাফায়েল পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ভারতীয় আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হচ্ছে।’
২২২ দিন আগে
পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৩
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের অন্তত ছয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১৩ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।
তিনি জানান, ভারত মোট ২৪টি হামলা চালিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে (পাকিস্তানের) পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরের কাছে আহমেদপুর শারকিয়ায়। সেখানে একটি মসজিদ প্রাঙ্গণে হামলায় এক শিশুকন্যাসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া পাঞ্জাবের মুরিদকে শহর, শিয়ালকোটের কাছে একটি গ্রাম এবং শাকরগড়েও হামলা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ ও কোটলিতেও হামলা হয়েছে। সেখানের হামলায় দুটি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। তাছাড়া এই হামলায় ১৬ বছর বয়সী এক তরুণী ও ১৮ বছর বয়সী এক তরুণও নিহত হয়েছে বলে জানান আহমেদ শরীফ।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর ইস্যুতে চলমান উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের
গত ২২শে এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ হামলা চালানো হলো। শুরু থেকেই হামলার জন্য পাকিস্তানতে দায়ী করে আসছিল ভারত। যদিও পাকিস্থান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল।
এদিকে, ভারতের এই হামলার জবাবে হুমকি দিয়েছে পাকিস্তান। এই ঘটনায় পরমাণু শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বুধবার (৭ মে) সকালে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সেনারা ভারতের ৫টি বিমান ভূপাতিত করেছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে এমন বলা হয়েছে।
এছাড়া অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় সেনাদের ওপর পাল্টা হামলার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সূত্র: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে নেওয়া।
২২২ দিন আগে
কানাডা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে গণভোটের প্রস্তাব আলবার্টার প্রধানমন্ত্রীর
পর্যাপ্ত সংখ্যক মানুষের সম্মতি পেলে কানাডা থেকে আলাদা হতে আগামী বছর একটি গণভোটের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির তেলসমৃদ্ধ প্রদেশ আলবার্টার প্রধানমন্ত্রী ড্যানিয়েল স্মিথ।
সোমবার (৫ মে) সরাসরি সম্প্রচার হওয়া এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘প্রদেশটি কানাডা থেকে বিছিন্ন হয়ে যাক, আমি ব্যক্তিগতভাবে তা চাচ্ছি না।’ এ সময়ে ঐক্যবদ্ধ কানাডার মধ্যে একটি শক্তিশালী ও সার্বভৌম আলবার্টা নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ড্যানিয়েল স্মিথ বলেন, ‘গত এক দশকে আমাদের প্রদেশের ওপর অটোয়া যেভাবে চেপে বসেছে, সেটা চলতে থাকবে কিনা; আলবার্টার জনগণ সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।’
আরও পড়ুন: কানাডার নির্বাচনে জয় পেল প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসার এক সপ্তাহ পর ড্যানিয়েল স্মিথের এমন ঘোষণা এসেছে। এছাড়া প্রতিবেশী দেশের অর্থনীতির ওপর ক্রমাগত শুল্কারোপের হুমকি দিয়ে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কানাডাকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একান্নতম অঙ্গরাজ্য হিসেবে একীভূত করতে চাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৬ মে) হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে মার্ক কার্নির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
একটি প্রাদেশিক গণভোটের জন্য আবেদনকারীদের যেসব শর্ত পূরণ করতে হতো, সেই বাধা কমিয়ে আনতে একটি আইন প্রণয়ন করেছে আলবার্টার ক্ষমতাসীল দল ইউনাইটেড কনজারভেটিভ। তবে আইনটি এখনো পার্লামেন্টে পাস হয়নি।
আইনটি পাস হয়ে গেলে নাগরিকদের নেওয়া উদ্যোগে গণভোটের নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি গণভোটের জন্য ১০ শতাংশ ভোটারের সই লাগবে, আগে যেটা ছিল ২০ শতাংশ।
এছাড়া আবেদনে এক লাখ ৭৭ হাজার ভোটারের সইয়ের জন্য আগে যেখানে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, সেটা বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।
আলবার্টার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো বিশেষ সুবিধা কিংবা সহায়তা চাচ্ছি না, বরং উন্নয়ন এগিয়ে নিতে আলাদা হতে চাচ্ছি, যাতে আমাদের বিপুল সম্পদ আমরা রফতানি করতে পারি।’
‘জনগণকে কীভাবে আমরা স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সামাজিক সুবিধা দেব, আমরা সেটা বেছে নেওয়ার জন্য স্বাধীনতা চাই; এমনকি সেটা যদি অটোয়ার পরিকল্পনার তুলনায় ভিন্নভাবেও করা হয়,’ বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব নীতির কারণে আলবার্টার লোকজন ক্ষুব্ধ, সেগুলোর অবসানে একটি আলোচক টিম গঠন করবেন বলেও জানিয়েছেন ড্যানিয়েল স্মিথ। আলবার্টাবাসীর কষ্ট ও আইডিয়ার কথা শুনতে ধারাবাহিকভাবে একটি প্যানেল আলোচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এডমন্টনের ম্যাকইওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জন সরোসকি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ক্ষোভ থাকতে পারে। সেটা যে একেবারে বিচ্ছিন্নতার দিকে যাবে, তা আমি বলতে পারছি না। তাদের অভাব-অনুযোগ গুরুতর। কিন্তু বিচ্ছিন্নতার শঙ্কা একেবারে অসম্ভব।’
আরও পড়ুন: মরক্কো ছেড়ে কানাডায় যাওয়া রাষ্ট্রদূত হারুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার
এরআগে ১৯৮০ ও ১৯৯৫ সালে কানাডা থেকে আলাদা হয়ে যেতে গণভোটের আয়োজন করে ফরাসিভাষী প্রদেশ কুইবেক। কিন্তু দুবারই তারা ব্যর্থ হয়েছে।
এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘আমি মনে করি না, স্মিথ বিচ্ছিন্নতা চাচ্ছেন। যেহেতু আলবার্টার লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ আছে, সেই ভাবনা থেকে কানাডার কাছ থেকে কিছু সুবিধা আদায় করতে চাচ্ছেন তারা।’
২২৩ দিন আগে
পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি নির্বাচন করা হবে যেভাবে
পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামীকাল বুধবার। তবে নতুন পোপ নির্বাচন সম্পন্ন করতে অনুসরণ করা হবে কয়েক শতাব্দীর পুরোনো একটি জটিল ও দীর্ঘ আনুষ্ঠানিকতাকে। সেই আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলে অনুষ্ঠিত হবে কনক্লেভ (পোপ সম্মেলন)। সেখানেই কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচন করা হবে নতুন পোপ।
কারা করবেন পোপ নির্বাচন?
ক্যথলিক চার্চসমূহের শীর্ষ ধর্মযাজকরা ‘কলেজ অব কার্ডিনালস নামে’ পরিচিত। এসব কার্ডিনালসদের সকলেই পুরুষ এবং সরাসরি পোপ কর্তৃক নিযুক্ত হন। মূলত তারাই ভোটাভুটি করে নতুন পোপ নির্বাচন করেন। তবে, নতুন ভোটে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মকানুন বেঁধে দেওয়া আছে। কার্ডিনালদের বয়স ৮০ বছরের বেশি হলে তারা সরাসরি ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তাই, বর্তমানে সারাবিশ্বে মোট ২৫২ জন ক্যাথলিক কার্ডিনাল থাকলেও্র নতুন পোপ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন ১৩৫ জন। বাকি কার্ডিনালরা নতুন পোপ হিসেবে কাকে নির্বাচিত করা উচিত, সেই বিতর্কে অংশ নিয়ে তারা নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন।
আরো পড়ুন: নতুন পোপ নির্বাচন শুরু ৭ মে
তবে, ভ্যাটিকান সূত্র মতে, ৮০ বছর অনূর্ধ ১৩৫ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে ২ জন কার্ডিনাল স্বাস্থ্যজনিত কারণে নাম প্রত্যাহার করেছেন বলে জানা যায়। ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের কনক্লেভে অংশ নিবেন ৭১টি ভিন্ন ভিন্ন দেশের ১৩৩ জন কার্ডিনাল, ফলে এটি হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে ভৌগোলিকভাবে বৈচিত্র্যময় পোপ নির্বাচনী সম্মেলন।
এবার, এশিয়া, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপ থেকে আসা ধর্মযাজকদের মধ্যে থেকেই পরবর্তী পোপ নির্বাচনের সম্ভাবনা বেশি। পোপ নির্বাচিত হতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ কার্ডিনালসদের ভোট পেতে হয়। ফলে এবারের কনক্লেভে পোপ নির্বাচিত হতে হলে ৮৯টি ভোট পেতে হবে।
এবারের কনক্লেভে ইতালি থেকে সবোর্চ্চ সংখ্যক (১৭ জন) কার্ডিনাল অংশ নেবেন। এছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ জন, ব্রাজিলের ৭ জন, ফ্যান্স ও স্পেন থেকে ৫ জন করে এবং আর্জন্টিনা, কানাডা, ভারত, পোলান্ড এবং পর্তুগাল থেকে ৪ জন করে ভোটার অংশ নেবেন।
মহাদেশভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী ইউরোপের কার্ডিনালসদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এবারের কনক্লেভে ইউরোপ মহাদেশ থেকে ৫৩ জন কার্ডিনাল অংশ নেবেন। এছাড়া, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ২৩ জন, আফ্রিকা থেকে ১৮ জন, মধ্য আমেরিকা থেকে ৪ জন, দক্ষিণ আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকা থেকে যথাক্রমে ১৭ ও ১৬ জন এবং ওশেনিয়া মহাদেশ থেকে ৪ জন কার্ডিনাল কনক্লেভে অংশ নিয়ে নতুন ক্যাথলিক ধর্মগুরু নির্বাচন করবেন।
আরো পড়ুন: ব্যর্থ প্রেমিক থেকে যেভাবে পোপ ফ্রান্সিস হয়ে ওঠেন হোর্গে বারগোগ্লিও
এই নির্বাচন প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করে থাকেন ৯ জন কার্ডিনাল। তবে ঐতিহ্যগতভাবে পোপ নির্বাচনের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে এই শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ভোটের কার্যক্রম কয়েক পর্বে অব্যাহত থাকে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রতিটি পর্বে ব্যালট কেমিক্যাল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এসময় কালো বা সাদা ধোঁয়া তৈরি হয়। যেটি মূলত ফলাফলের সংকেত দেয় বিশ্ববাসীকে। এরমধ্যে কালো ধোঁয়া সংকেত দেয় যে সিদ্ধান্ত হয়নি। আর সাদা ধোঁয়া সংকেত দেয় সিদ্ধান্ত হয়েছে। সর্বশেষ পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর একজন শীর্ষ কার্ডিনাল সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা থেকে নতুন পোপের নাম ঘোষণা করবেন।
এবারের পোপ নির্বাচনকে স্বচ্ছ করতে ভ্যাটিকান কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। পোপ কনক্লেভ শুরু উপলক্ষে স্থানীয় সময় বুধবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভ্যাটিকানে সকল প্রকার মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই সময়ে কার্ডিনালসরা যাতে বাইরের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন। অথবা বাইরে থেকে পোপ নির্বাচনকে যাতে কেউ প্রভাবিত করতে না পারেন- মূলত সেজন্যই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
২২৩ দিন আগে
পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে নতুন পরিকল্পনা ইসরায়েলের
গাজা উপত্যকার পুরো অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানের নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এই পরিকল্পনায় ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দুই কর্মকর্তা। নতুন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে আরও ব্যাপক হারে অভিযান প্রসারিত করবে ইসরায়েল। এতে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক বিরোধিতার মুখেও পড়বে দখলদার বাহিনীটি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান হাজার হাজার রিজার্ভ সৈন্য সমাবেশ করার নতুন পরিকল্পনা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই সোমবার ভোরে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় ভোটাভুটির মাধ্যমে পরিকল্পনাটি অনুমোদিত হয়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা হামাসকে ধ্বংস করা ও গাজায় বন্দী থাকা ইসরায়েলিদের মুক্ত করার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। এর ফলে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ গাজায় ঠেলে দেওয়া হবে। যেখানে ইতোমধ্যে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন বিমান হামলায় ইয়েমেনে কারাগারে ৬৮ অভিবাসী নিহত
চলতি বছরের ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় পুনরায় ব্যাপকহারে সামরিক অভিযান শুরু করে। এতে ওই অঞ্চলে বিমান হামলায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন, নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও লাখো মানুষ। এখন পর্যন্ত গাজার প্রায় ৫০ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)।
বাস্তবতা হলো যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ইসরায়েল গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও পানিসহ সমস্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। ফলে প্রায় ১৯ মাসের যুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে অঞ্চলটির বাসিন্দারা।
হামাসের উপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টায় ইসরায়েল
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন পরিকল্পনায় অঞ্চলটি দখলের বিষয়টি রয়েছে। একই সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার চেষ্টাও করা হবে। কারণ, তাদের এই কার্যক্রমগুলো গাজায় হামাসের শাসনকে শক্তিশালী করেছে বলে মনে করে ইসরায়েল। এই পরিকল্পনায় হামাসের স্থাপনাগুলোতে শক্তিশালী হামলা চালানোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখল এবং সেখানকার ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র স্থানান্তর করার পরিকল্পনা সম্পর্কে ইসরায়েল বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এটিকে ইসরায়েল ‘স্বেচ্ছায় অভিবাসন’ বলে অভিহিত করেছে। ইসরায়েলের এই পরিকল্পনাটি ইউরোপ এবং আরব বিশ্বে নিজেদের মিত্রদের কাছে ব্যাপক নিন্দিত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উভয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সামরিক পরিকল্পনাটি ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হবে।
হামাসকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনায় নমনীয় করতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চাপ প্রয়োগ করে আসছে ইসরায়েল। কিন্তু আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা হামাসকে নমনীয় পর্যায়ে নিতে পারেনি। ইসরায়েলের পদক্ষেপগুলোর কারণে হামাস আলোচনা থেকে সরে যেতেও পারে বলে মনে হচ্ছে।
ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ইসরায়েলিদের পরিবারগুলোতে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। জিম্মি পরিবারগুলোর ফোরাম সোমবার বলেছে, নতুন পরিকল্পনাটি প্রতিটি জিম্মিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। জিম্মিদের মুক্তিকে অগ্রাধিকার দিতে ইসরায়েল সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সোমবার নেসেট কমিটির বৈঠক থেকে আইনব জাঙ্গাউকার ‘সৈন্যদের আদর্শিক ও নৈতিক কারণে ডিউটিতে না ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। জাঙ্গাউকার জিম্মি থাকা মাতানের বাবা।
মানবিক সহায়তা বিতরণ থেকে হামাসকে বিরত রাখতে চায় ইসরায়েল
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে বলেন, মানবিক সাহায্য বিতরণে হামাসকে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে ইসরায়েল। কর্মকর্তাদের একজন বলেন, ‘মন্ত্রীরা সহায়তা বিতরণের বিকল্প অনুমোদন করেছেন।’
আন্তুর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোর একটি অভ্যন্তরীণ চিঠিতে এপি দেখতে পেয়েছে, ইসরায়েল জাতিসংঘকে জানিয়েছে যে, তারা গাজায় সাহায্য বিতরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বেসরকারি নিরাপত্তা কোম্পানিগুলোকে কাজে লাগাবে। তবে রবিবার জাতিসংঘ ইসরায়েলের এমন পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে- কারণ এটি তাদের নীতিবিরুদ্ধ।
আরও পড়ুন: গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৬
এদিকে গতরাতে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস অভিযান চালানোর পর থেকে যুদ্ধ শুরু হয়। সেই অভিযানে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। ইসরায়েল বলছে, জিম্মিদের মধ্যে এখনো ৫৯ জন গাজায় হামাসের হাতে রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ৩৫ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তবে নিহতদের সামরিক ও বেসামরিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় গাজা দখল করে নিয়েছিল আইডিএফ। পরে ২০০৫ সালে বসতিস্থাপনকারী ও সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয় ইসরায়েল। দুই বছর পর হামাস অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।
২২৪ দিন আগে
কুখ্যাত সেই কারাগারটি ফের চালু করার নির্দেশ ট্রাম্পের
ষাট বছরেরও বেশি সময় আগে বন্ধ হওয়া একটি কুখ্যাত কারাগার নতুন করে চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোর দুর্গম দ্বীপ আলকাট্রাজে ১৯৩৪ সালে এই কারাগারটি স্থাপন করা হয়েছিল। পরে ১৯৬৩ সালে সেটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এবার কারাগারটি কেবল চালু করাই না, এটিকে আরও বড় করে পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রবিবার (৪ মে) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘এক সময় আমেরিকার জনগণকে রক্ষায় দেশটির বিপজ্জনক অপরাধীদের আলকাট্রাজ কারাগারে আটকে রাখা হতো। সেই কারাগারটিই আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকা হিংস্র ও সহিংস অপরাধীদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এমনকি কিছু কিছু অপরাধী বারবারই সহিংস কার্যকলাপ করে দেশটির ক্ষতি করে আসছেন। আমি বিচার বিভাগ, ফেডারেল ব্যুরো অব আমেরিকা (এফবিআই) ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সঙ্গে কারাগার ব্যুরোকে একীভূত করে আলকাট্রাজ কারাগারটি ফের চালু ও সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছি। সেখানে আমেরিকার সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও সহিংস অপরাধীদের রাখা হবে।’
এ বিষয়ে ফ্লোরিডা থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারাগারটির একটি দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এটি আইন ও শৃঙ্খলার প্রতীক।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিসহ ১০ অভিবাসীকে গুয়ান্তানামো বে পাঠানোর সিদ্ধান্ত, মামলা
প্রসঙ্গত, সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরে অবস্থিত আলকাট্রাজ কারাগারটি ৬৩ বছর ধরে বন্ধ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ প্রিজনসের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, ভঙ্গুর অবকাঠামো ও উচ্চব্যয়ের কারণে ১৯৬৩ সালে কারাগারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দ্বীপে অবস্থিত হওয়ার কারণে এটি পরিচালনার খরচ ছিল অন্য যেকোনও ফেডারেল কারাগারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ।
এছাড়া দ্বীপের অবস্থান, তীব্র স্রোত এবং বরফ শীতল পানির কারণে আলকাট্রাজকে আমেরিকার সবচেয়ে নিরাপদ কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে এ কারাগার থেকে কোনো বন্দির পালানোর রেকর্ডও নেই। এফবিআইয়ের তথ্যমতে, কারাগারটি চালু থাকাকালীন ৩৬ জন আসামি অন্তত ১৪ বার পালানোর চেষ্টা করেও সফল হননি। সবাই কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছেন। এটি বর্তমানে সান ফ্রান্সিসকোর অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ।
এদিকে, ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করেছেন সাবেক হাউস স্পিকার ও ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা ন্যান্সি পেলোসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘ষাট বছরেরও বেশি সময় আগে আলকাট্রাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এটি এখন অত্যন্ত জনপ্রিয় জাতীয় উদ্যান এবং প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। ট্রাম্পের প্রস্তাবটি যথোচিত নয়।’
শুরুতে আলকাট্রাজ একটি নৌ প্রতিরক্ষা দুর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০ শতকের প্রথম দিকে এটিকে একটি সামরিক কারাগারে রূপান্তর করা হয়। ১৯৩০-এর দশকে বিচার বিভাগের অধীনে নেওয়া হয় এই কারাগারটি। এরপর থেকে ফেডারেল বন্দিদের এ কারাগারে পাঠানো শুরু করা হয়।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ৩০ বছর জেল খাটার পর নির্দোষ প্রমাণিত
এখানে রাখা কয়েদিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কুখ্যাত গ্যাংস্টার আল কাপোন, মিকি কোহেন এবং জর্জ মেশিন গান কেলি।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ১৯৬২ সালে বার্ট ল্যাঙ্কাস্টার অভিনিত ‘বার্ডম্যান অফ আলকাট্রাজ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমেও বিখ্যাত হয়েছিল কারাগারটি। এছাড়াও ১৯৯৬ সালের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘দ্যা রকে’র শুটিংও হয় এই দ্বীপে। ওই মুভিতে বিখ্যাত অভিনেতা শন কনারি ও নিকোলাস কেজ অভিনয় করেন।
২২৪ দিন আগে
মার্কিন বিজ্ঞানীদের টানতে প্রণোদনা ঘোষণা করতে যাচ্ছে ইউরোপ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নানা বিতর্কিত পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত বিজ্ঞানীদের ইউরোপে নিয়ে যেতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে ফ্রান্স ও ইউরোপীয় কমিশন (ইইউ)। তাদের ইউরোপে থিতু করতে প্রণোদনা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাঁখো ও ইইউ প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দার লিয়েন।
স্থানীয় সময় সোমবার (৫ মে) সকালে প্যারিসের সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ ও গবেষকদের সঙ্গে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই প্রণোদনার ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল কাঁটছাটসহ মার্কিন প্রশাসনের আরোপিত বেশ কিছু নীতির ফলে নিজেদের কাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত দেশটির অনেক গবেষক। সেসব মার্কিন গবেষকদেরই ইউরোপে আমন্ত্রণ জানাতেই ইউরোপীয় কমিশনার ও একাডেমিকদের মিলিত উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, একাডেমিক স্বাধীনতা হুমকির মুখে থাকায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইউরোপকে একটি আকর্ষণীয় মহাদেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এই বিবৃতিতে।
দেশটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউরোপ এমন একটি জায়গা, যেখানে গবেষণার স্বাধীনতা রয়েছে, কোনো বিষয়ই এখানে নিষিদ্ধ নয়।’
ফ্রান্স ও ইউরোপের এই উদ্যোগ গবেষণার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেবে বলে মনে করেন তিনি। সোমবারে আয়োজিত ‘চুজ ইউরোপ ফর সায়েন্স’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটিতে স্বাস্থ্য (সংক্রামক রোগ), জলবায়ু গবেষণা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক বিজ্ঞানীদের আকৃষ্ট করতে ফ্রান্স বিশেষভাবে আগ্রহী বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: গবেষণায় ট্রাম্পের তহবিল বন্ধের প্রতিবাদে বিজ্ঞানীদের বিক্ষোভ এর আগে, এ বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয় ১৩টি ইউরোপীয় দেশ। পরে এপ্রিল মাসে ফ্রান্স নিজস্ব উদ্যোগে চুজ ফ্রান্স ফর সায়েন্স চালু করা হয়। এই উদ্যোগের আওতায় আন্তর্জাতিক গবেষকদের জন্য আবেদন প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়।
ফরাসি গবেষণা মন্ত্রণালয় জানায়, কিছু বিদেশি গবেষক ইতোমধ্যেই ফ্রান্সে এসে দেশটির অবকাঠামোর সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন এবং তারা তহবিল ও প্ল্যাটফর্মের অপেক্ষায় আছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে হুমকির মুখে রয়েছেন এমন ও বিদেশে ফরাসি গবেষকদের আকৃষ্ট করতে নতুন একটি কর্মসূচি চালু করেছে ফ্রান্সের শীর্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস)।
সিএনআরএসের প্রেসিডেন্ট আঁতোয়ান পেতি বলেন, ‘ট্রাম্পের আমেরিকায় যেসব গবেষকরা নিজেদের সন্তানদের বড় করতে চান না, তাদের ফিরিয়ে আনতে এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।’
এদিকে, মার্চে চালু হওয়া এক্স-মার্সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেইফ প্লেস ফর সায়েন্স’ কর্মসূচির অধীনে জুন মাসে প্রথম বিদেশি গবেষকরা সেখানে যোগ দেবেন।
মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে লেখা এক চিঠিতে ফ্রান্সের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণামন্ত্রী ফিলিপ বাতিস্তে বলেন, ‘অনেক নামকরা গবেষক এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমরা স্বাভাবিকভাবেই তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে স্বাগত জানাতে চাই।’
তবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণায় বিনিয়োগ বহু বছর ধরেই ইউরোপের চেয়ে বেশি। দশকের পর দশক ধরে ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রগুলো বিনিয়োগের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে রয়েছে।
তাছাড়া তুলনামূলকভাবে কম বেতন ও অনিরাপদ চুক্তির মতো সমস্যাগুলো নিয়ে প্রায়শই অভিযোগ জানিয়ে আসছে ফরাসি গবেষকরা। গড় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের চেয়ে কম বেতন পান ফরাসি গবেষকরা।
আরও পড়ুন: চাঁদের দূরবর্তী অংশের অজানা তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা
গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ভালো চুক্তি, উন্নত বেতন কাঠামো ও সার্বিকভাবে আরও বেশি অর্থায়নের দাবি জানিয়ে আসছে ফ্রান্সের বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন।
জার্মানির আসন্ন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎসে গত মাসে বলেন, ‘আমেরিকান সরকার বর্তমানে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর বলপ্রয়োগ করছে, যার ফলে এখন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এটি আমাদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ।’
২২৪ দিন আগে
দীর্ঘ জীবনের রেসিপি দিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি
দক্ষিণ ইংল্যান্ডের শিপটন বেলিঙ্গার গ্রামের বাসিন্দা ইথেল ক্যাটেরহাম, বয়স ১১৫ বছর। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি তিনি। কারও সঙ্গে তর্ক না করা— এটিই তার এই দীর্ঘ জীবনের রহস্য বলে জানিয়েছেন এই নারী।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জেরেন্টোলজি রিসার্চ গ্রুপের (জিআরজি) তথ্যমতে, গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) ব্রাজিলিয়ান সিস্টার ইনাহ কানাবারো ১১৬ বছর বয়সে মারা যান। এরপর থেকে ইথেলই বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধেরও পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ১৯০৯ সালের ২১ আগস্ট শিপটন বেলিঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ইথেল। আট ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।
নিজের এই দীর্ঘ জীবনের রহস্য জানতে চাইলে ইথেল বলেন, ‘আমি কখনো কারও সঙ্গে তর্ক করি না। আমি সবার কথা শুনি, তবে যেটা আমার ভালো লাগে সেটিই করি।’
ইথেল তার জীবনে বেশ ঘোরাঘুরিও করেছেন। তিনি মাত্র ১৮ বছর বয়সে একটি ব্রিটিশ পরিবারে সঙ্গে শিশুদের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ভারতে এসেছিলেন। তিন বছর থাকার পরে আবার ইংল্যান্ডে ফিরে যান।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তির খেতাব পেলেন ১১৫ বছর বয়সী মারিয়া ব্রানিয়াস
জিআরজির ভাষ্যে, ইথেলের স্বামী নরম্যান ব্রিটিশ আর্মিতে মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৩১ সালে একটি ডিনার পার্টিতে তাদের পরিচয় হয়েছিল। চাকরি সূত্রে পরে হংকং ও জিব্রাল্টারেও ছিলেন তারা। এই দম্পতির দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। নরম্যান ১৯৭৬ সালে মারা গিয়েছিলেন।
ইথেল বর্তমানে হলমার্ক লেকভিউ লাক্সারি কেয়ার হোম নামক একটি পরিচর্যাকেন্দ্রে রয়েছেন। সেখান থেকেই গত বৃহস্পতিবার (১ মে) ১১৫ লেখা একটি মুকুট পরিয়ে কেক কাটা অবস্থায় তার একটি ছবি দেওয়া হয় ফেসবুকে।
সেখানে পৃথিবীর প্রবীণতম ব্যক্তি হওয়ার জন্য ইথেলকে অভিনন্দন জানানো হয়। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি ছিলেন ফ্রান্সের জ্যাঁ কালমঁ, যিনি বেঁচে ছিলেন ১২২ বছর ১৬৪ দিন।
২২৫ দিন আগে