বিনোদন
সেন্সরবোর্ড পুনর্গঠন করে হচ্ছে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড
সেন্সরবোর্ড পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন অনুযায়ী সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড এবং জুরি বোর্ডের নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় শেষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।তিনি বলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড এবং জুরি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আজ দুই কমিটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছিল। সেন্সর বোর্ড নিয়ে আমরা কিছু আলোচনা করেছি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশনের আইনের গেজেট হয়েছিল, সেই গেজেটের বিধিমালা তৈরি হয়নি এখন পর্যন্ত। বিগত সময়েও যে সেন্সর বোর্ডটি গঠন করা হয়েছিল সেটিও কিন্তু ১৯৬৩ সালের যে আইন সে আইন অনুযায়ী করা হয়েছিল। যেহেতু গেজেটের বিধিমালা ছিল না। সেই ধারাবাহিকতায় সেটিকে অনুসরণ করেই আপদকালীন সিনেমার জগতে যেন আর্থিক ক্ষতি না আসে সেজন্য আপদকালীন একটা সেন্সর বোর্ড তৈরি করেছিলাম।
তিনি বলেন, 'আমরা দেখতে পাচ্ছি ২০২৩ সালে যেহেতু একটি আইনের গেজেট হয়ে গেছে, সেটি পর্যালোচনা করে সবার মতামতের ভিত্তিতে সেন্সর যে শব্দটি সেটিকে বাদ দিয়ে দিচ্ছি। আমাদের যে ২০২৩ সালের আইন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন সেই আইন অনুযায়ী দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়ে সার্টিফিকেশন বোর্ডটাকে পুনর্গঠন করব।'
আরও পড়ুন: জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠন করা হবে: উপদেষ্টা নাহিদ
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের যে আইন রয়েছে সেটি অনেক ত্রুটিপূর্ণ, সেগুলো নিয়ে আজকে আলোচনা হয়েছে। সেই আইনটিও নানান অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধনের জন্য আমরা কাজ করব। সে প্রস্তাবনা তৈরি করা হবে। যেহেতু বেশকিছু সংখ্যক সিনেমা ঝুলে রয়েছে সেগুলোকে দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করার জন্যই সার্টিফিকেশন বোর্ড সেটি পুনর্গঠন করা হবে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন অনুযায়ী সার্টিফিকেশন বোর্ড করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়ে একটা সার্টিফিকেশন বোর্ড করব, সেন্সরবোর্ডকে পুনর্গঠন করে।
কেন এটি পরিবর্তন করতে হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র জগতের যারা আছেন তারা দীর্ঘদিন ধরে সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন। তাদের এক ধরনের কার্যক্রমের জন্যই কিন্তু সার্টিফিকেশন আইনের কথা ভাবা হয়েছিল বিগত সময়ে। নতুন আইন অনুযায়ী আমরা ছবি পরিচালনার কাজগুলো চলমান রাখব।
আরও পড়ুন: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের ১৪ সেপ্টেম্বর সম্মান জানাবে সরকার: উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
৪৫৩ দিন আগে
২০২৬-এর ঈদ চলচ্চিত্রে মুখোমুখি শাহরুখ ও রণবীর
মহা ধুন্ধুমার হতে চলেছে ২০২৬-এ বলিউডের ঈদ আয়োজন। এই একই মৌসুমকে ঘিরে ঠিক হলো শাহরুখ খানের ‘কিং’ এবং রণবীর কাপুরের ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’ চলচ্চিত্রের মুক্তির দিনক্ষণ। উপমহাদেশ জুড়ে ভক্তদের প্রত্যাশার সয়লাবে যেন জোয়ার তুলেছে এই ঘোষণা। সেই সঙ্গে পুরোনো ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে চলেছে ছবি দুটি। চলুন, এখনও নির্মাণের মঞ্চে না ওঠা সিনেমা দুটি নিয়ে আকর্ষণীয় কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
ঐতিহাসিক পূণর্মিলনী
শাহরুখ অভিনীত ফারাহ খানের পুনর্জন্ম কাহিনী ‘ওম শান্তি ওম’ ছিল ২০০৭-এর দীপাবলির ব্লকবাস্টার। একই সময়ে সঞ্জয় লীলা বনসালির ‘সাওয়ারিয়া’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে রণবীর কাপুরের। তারপর থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর পর বক্সঅফিসে বলিউড বাদশার মুখোমুখি হতে চলেছেন রণবীর। বলাই বাহুল্য যে, এখন তিনি আর সেই ‘সাওয়ারিয়া’র রণবীর নেই।
নির্মাতা বনসালির সঙ্গে চলচ্চিত্র যুদ্ধে এসআরকে সেবার জিতে গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু ২০১৫’তে শাহরুখের ‘দিলওয়ালে’ খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি বনসালির ‘বাজিরাও মাস্তানি’র কাছে। এবার তৃতীয়বারের মতো কিং খানের সঙ্গে বক্সঅফিস প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে যাচ্ছেন ১৫ বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জয়ী এই চলচ্চিত্র নির্মাতা।
আরও পড়ুন: ‘কাঁটা’ আসছে বঙ্গতে
শাহরুখের ‘কিং’
পরপর ‘পাঠান’, ‘জওয়ান’ এবং ‘ডানকি’র মতো হিট মুভি দেওয়ার পর শাহরুখের এবারের চমকের নাম ‘কিং’। বহুল প্রত্যাশিত এই ক্রাইম ড্রামার মধ্য দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য পর্দায় প্রকাশিত চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে শাহরুখ-কন্যা সুহানা খানের। ছবিটির পরিচালনায় থাকবেন সুজয় ঘোষ।
এসআরকে’র রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্টের সঙ্গে সিনেমার সহ-প্রযোজনায় অংশ নেবে সিদ্ধার্থ আনন্দের মারফ্লিক্স পিকচার্স।
২০১৩-এর ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’-এর দুর্দান্ত সফলতার পর থেকে দীর্ঘ বিরতির এই প্রথম ঈদের মৌসুমে ছবি প্রকাশ করছেন কিং খান।
ছবিতে প্রধান খলনায়কের ভূমিকায় দেখা যাবে অভিষেক বচ্চনকে। তারকাশিল্পীদের মধ্যে আরও থাকবেন সম্প্রতি সাড়া জাগানো হরর-কমেডি মুঞ্জিয়া-খ্যাত অভিনেতা অভয় ভার্মা।
আরও পড়ুন: মেহজাবীন অভিনীত ভিকি জাহেদের ‘তিথিডোর’ নিয়ে কেন এত আলোচনা
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ অভূতপূর্ব কিছু অ্যাকশন সিকোয়েন্স এবং নজরকাড়া কিছু ভিজুয়াল ইফেক্ট দিয়ে সাজানো হবে মুভিটিকে। সঙ্গত কারণে বেশ সময় নিয়ে পরিকল্পনা চলছে ছবি নির্মাণে। সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে আগস্ট বা সেপ্টেম্বর নাগাদ শেষ হবে নির্মাণের যাবতীয় কাজ।
রণবীরের ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’
প্রথম দিকে ২০২৫-এর ক্রিসমাসে মুক্তি পাওয়া কথা থাকলেও সময় পিছিয়ে নতুন তারিখ ঠিক করা ২০২৬-এর ২০ মার্চ। সেই থেকেই ‘কিং’-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’-এর।
সঞ্জয় লীলা বনসালি পরিচালিত এই এপিক রোমান্টিক মুভিতে অভিনয় করবেন রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাট এবং ভিকি কৌশল। ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান (২০২২)-এর পর এটি দম্পতি রণবীর-আলিয়ার প্রথম চলচ্চিত্র।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ বিরতির পর ‘নীল জোছনা’ নিয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন শাওন
বলিউডের ঈদ আয়োজনে এই পরিবর্তনের পটভূমি
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ঈদে ছবি মুক্তি থেকে বলিউডের ভাইজান-খ্যাত সুপারস্টার সালমান খানের সরে দাঁড়ানো থেকে। বছরের পর বছর ধরে অনেকটা একচেটিয়া ভাবেই ঈদ মৌসুমকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে সালমান খানের মুভিগুলো। কিন্তু এই ধারাবাহিকতা ভেঙে ২০২৬ সাল থেকে যাচ্ছে একটু ভিন্ন রকমের।
২০২৫ সালের ঈদের জন্য নির্ধারিত ‘সিকান্দার’ মুভির কাজ শেষ করেই পরিচালক অ্যাটলির সঙ্গে পরবর্তী মেগা-বাজেটের ছবি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সালমান। ব্যাপক শুটিং ও ভিএফএক্স নিয়ে এই নতুন প্রজেক্টে রয়েছে বেশ ভারী কাজের চাপ। স্বভাবতই অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজনীয়তা ছবি মুক্তির দিনক্ষণকে ঠেলে দিয়েছে ২০২৬ সালের দ্বিতীয়ার্ধে। এতে ২০২৬-এর ঈদ মৌসুমে সৃষ্টি হয় বিগ বাজেটের চলচ্চিত্র-শূন্যতা। আর এই শূন্যস্থান পূরণেই মুক্তির তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ‘কিং’ এবং ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’-এর।
শেষাংশ
২০২৬-এ বলিউডের ঈদ আয়োজনে শাহরুখ ও রণবীরের মুখোমুখি হওয়াটা জন্ম দিয়েছে নতুন মাত্রার ব্লকবাস্টার প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা। একদিকে ‘কিং’-এর আবেগপূর্ণ পিতা-কন্যার আবেগঘন চিত্রনাট্য, অন্যদিকে ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’-এ প্রেম ও সংঘর্ষের চিরনবীন পটভূমি। সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ২০২৬-এর ঈদুল ফিতর হতে চলছে বলিউডের সবচেয়ে প্রত্যাশিত আয়োজনগুলোর মধ্যে একটি। কার মাথায় মুকুট উঠবে তা নিয়ে রুদ্ধঃশ্বাস প্রতীক্ষার পাশাপাশি মুভিপ্রেমীরা পাচ্ছে এক স্মরণীয় উৎসবমুখর সপ্তাহের হাতছানি।
আরও পড়ুন: আসছে নিশো-তমা জুটির নতুন সিনেমা ‘অসিয়ত’
৪৫৬ দিন আগে
রাহুল আনন্দর বাড়িতে হামলাসহ দেশব্যাপী সহিংসতার বিচার দাবি সংস্কৃতিকর্মীদের
দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া সহিংসতা এবং দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।
৫ আগস্ট ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল জনপ্রিয় গায়ক ও সংস্কৃতিকর্মী রাহুল আনন্দের বাড়ি। এ ঘটনাসহ দেশে সংঘটিত সব অরাজকতার প্রতিবাদে মিছিল ও সমাবেশ করেন প্রাচ্যনাট ও রাহুলের বন্ধুরা।
সমাবেশে তারা সহিংসতা বন্ধে এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা কমপ্লেক্সের সামনে 'শিল্পা, স্থাপত্য ও শিল্পাঙ্গন ধ্বংসের বিরুদ্ধে অবস্থান' ব্যানারে শিল্পী সম্প্রদায় জড়ো হন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন তারা।
প্রাচ্যনাটের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর ও অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে যখন ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন কোটা সংস্কার আন্দোলন তুঙ্গে ছিল এবং এটি স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে একটি বিশাল আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল, তখন শিল্পীরা সর্বোচ্চ সমর্থন নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও প্রাচ্যনাটের নাট্যকর্মী এবং জলের গানের ফ্রন্টম্যান রাহুল আনন্দের উপর যে নৃশংসতা চলছে তা দেখে আমরা হতবাক। শুধু শিল্পী সম্প্রদায় নয়, সবাইকে রক্ষার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি, আমরা সহিংসতার অবসান দেখতে চাই।’
আরও পড়ুন: আসছে নিশো-তমা জুটির নতুন সিনেমা ‘অসিয়ত’
৪৯৪ দিন আগে
রক কিংবদন্তি শাফিন আহমেদের মরদেহ দেশে, দাফন আজ
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পী এবং কিংবদন্তি ব্যান্ড মাইলসের সাবেক প্রধান গায়ক শাফিন আহমেদের মরদেহ দেশে পৌঁছেছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে হৃদযন্ত্র ও কিডনি বিকল হয়ে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই রক বেজ গিটারিস্ট, গায়ক-গীতিকার ও রেকর্ড প্রযোজক।
এই তারকা সংগীতশিল্পীর মৃত্যুতে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে দেশের সংগীত জগত।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিকালে শাফিনের লাশ দেশে পৌঁছায় বলে জানান শাফিনের বড় ভাই ও মাইলস ব্যান্ডের প্রধান হামিন আহমেদ।
এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর ১টায় ভার্জিনিয়ার দার আল নূর ইসলামিক কমিউনিটি মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
হামিন আহমেদ জানান, আজ (৩০ জুলাই) বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে শাফিনের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এরপর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে কিংবদন্তি এই রক তারকাকে।
হামিন আরও জানান, আগামী শুক্রবার (২ আগস্ট) বাদ জুমা বনানী কবরস্থানের পাশে গুলশান কমিউনিটি মসজিদে শাফিন আহমেদের কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে।
পরিবার ও স্বজনদের পক্ষ থেকে সবাইকে শাফিন আহমেদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে তার জানাজা ও কুলখানিতে উপস্থিত হতে অনুরোধ জানিয়েছেন হামিন আহমেদ।
১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় উপমহাদেশের অগ্রণী সংগীতশিল্পী কমল দাশগুপ্ত ও ফিরোজা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।
শৈশবে ঢাকায় চলে আসার পর শাফিন আহমেদ নয় বছর বয়সে নজরুল সংগীত শেখার মাধ্যমে তার সংগীত জীবন শুরু করেন। ঢাকার সেন্ট জোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশোনা শেষে বড় ভাই হামিন আহমেদের সঙ্গে ইংল্যান্ডে পড়তে যান। সেসময় পশ্চিমা সঙ্গীতের সংস্পর্শে আসেন তিনি।
১৯৭৯ সাল থেকে মাইলসের কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও বেজ গিটারিস্ট ছিলেন শাফিন আহমেদ। ২০০৯ সালে মাইলস ছাড়ার পর ২০১০ সালে রিদম অব লাইফ নামে নিজের ব্যান্ড গড়েন শাফিন, যা ২০১৪ সাল পর্যন্ত চলে।
মাইলস (১৯৮২) দিয়ে শুরু করে মাইলসের প্রতিটি অ্যালবামের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন শাফিন আহমেদ। মাইলস (১৯৮২) অ্যালবামের পর অ্যা স্টেপ ফারদার (১৯৮৬), প্রতিশ্রুতি (ব্যান্ডের প্রথম বাংলা অ্যালবাম, ১৯৯১), প্রত্যাশা (১৯৯৩), প্রত্যয় (১৯৯৬), প্রয়াস (১৯৯৭), প্রবাহ (২০০০), প্রতিধ্বনি (২০০৬), প্রতিচ্ছবি (২০১৫) ও প্রবর্তন (২০১৬) অ্যালবামে গান করেন তিনি।
মাইলসের প্রথম বাংলা অ্যালবাম 'প্রতিশ্রুতি'র জনপ্রিয় গান 'চাঁদ তারা' ১৯৯২ সালে বিটিভির ঈদ স্পেশালে প্রচারিত হয়। দেশজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় গানটি। তারপরে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মাইলসকে।
মানাম আহমেদের সুরে শাফিন আহমেদ 'ফিরিয়ে দাও', 'ধিকি ধিকি', 'নীলা', 'চাঁদ তারা সূর্য', 'কি জাদু', 'জানি তুমি'সহ অসংখ্য জনপ্রিয় ও সুপারহিট গানের জন্য শ্রোতাদের ভালোবাসা পেয়েছেন।
শাফিন আহমেদ সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন 'আজ জন্মদিন তোমার' গানটি দিয়ে। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর এই গানটি এখনও জন্মদিন উদযাপনের গান হিসেবে বাজানো হয়। বিশিষ্ট সংগীত প্রযোজক প্রিন্স মাহমুদের লেখা ও সুরে গানটি প্রথম প্রিন্সের মিক্সড অ্যালবাম দাগ থেকে যায় (২০০৪)-এ প্রকাশিত হয়।
এছাড়াও শাফিন আহমেদ তোমাকে (১৯৮৭), পাগলা ঘণ্টি (১৯৯৮), ছবি আর স্মৃতিগুলো (১৯৯৯), বেস্ট অব শাফিন আহমেদ (২০০১), কতদিন দেখি না তোমায় (২০০৬), ভাইরাস (২০০৬), হারানো সুখ (২০০৭), মাই লাভ সংস (২০১০) ও মনে পড়ে আজসহ (তার মা ফিরোজা বেগমের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলিস্বরূপ নজরুল গানের অ্যালবাম, ২০১৬) বেশ কয়েকটি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন।
৫০৩ দিন আগে
ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ আর নেই
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পী এবং কিংবদন্তি ব্যান্ড মাইলসের সাবেক প্রধান গায়ক শাফিন আহমেদ আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
বাংলাদেশ ব্যান্ড মিউজিক ফ্যানস কমিউনিটি (বিবিএমএফসি) জানিয়েছে, হৃদযন্ত্র ও কিডনি বিকল হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন জনপ্রিয় এই রক বেজ গিটারিস্ট, গায়ক-গীতিকার ও রেকর্ড প্রযোজক।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী কমল দাশগুপ্ত ও ফিরোজা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন শাফিন আহমেদ।
তার ভাই আরেক তারকা সংগীতশিল্পী হামিন আহমেদের সঙ্গে প্রথমে অ্যাকুয়েস্টিক গিটারিস্ট হিসেবে মাইলসে যাত্রা শুরু করেন এবং পরে ১৯৯১ সালে ব্যান্ডের প্রধান গায়ক এবং বেজ গিটারিস্ট হয়েছিলেন।
শৈশবে ঢাকায় চলে আসার পর শাফিন আহমেদ নয় বছর বয়সে নজরুল সংগীত শেখার মাধ্যমে তার সংগীত জীবন শুরু করেছিলেন। ঢাকার সেন্ট জোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশোনা শেষে বড় ভাই হামিন আহমেদের সঙ্গে ইংল্যান্ডে পড়তে যান। সেসময় পশ্চিমা সঙ্গীতের সংস্পর্শে আসেন তিনি।
১৯৭৯ সাল থেকে মাইলসের কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও বেজ গিটারিস্ট ছিলেন শাফিন আহমেদ। ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো ব্যান্ড ছাড়েন তিনি। এরপর ২০১৪ সালে পুনরায় যোগ দিয়ে ২০১৭ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যান্ড ছাড়েন শাফিন। তারপর ২০১৮ সালে আবার যোগ দিয়ে ২০২১ সালে চিরতরে মাইলসের সঙ্গে যাত্রার ইতি টানেন তিনি।
মাইলস (১৯৮২) দিয়ে শুরু করে মাইলসের প্রতিটি অ্যালবামের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন শাফিন আহমেদ। মাইলস (১৯৮২) অ্যালবামের পর অ্যা স্টেপ ফারদার (১৯৮৬), প্রতিশ্রুতি (ব্যান্ডের প্রথম বাংলা অ্যালবাম, ১৯৯১), প্রত্যাশা (১৯৯৩), প্রত্যয় (১৯৯৬), প্রয়াস (১৯৯৭), প্রবাহ (২০০০), প্রতিধ্বনি (২০০৬), প্রতিচ্ছবি (২০১৫) ও প্রবর্তন (২০১৬) অ্যালবামে গান করেন তিনি।
২০০৯ সালে মাইলস ছাড়ার পর ২০১০ সালে রিদম অব লাইফ নামে নিজের ব্যান্ড গড়েন শাফিন, যা ২০১৪ সাল পর্যন্ত চলে।
শাফিন আহমেদ সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন 'আজ জন্মদিন তোমার' গানটি দিয়ে। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর এই গানটি এখনও জন্মদিন উদযাপনের গান হিসেবে বাজানো হয়। বিশিষ্ট সংগীত প্রযোজক প্রিন্স মাহমুদের লেখা ও সুরে গানটি প্রথম প্রিন্সের মিক্সড অ্যালবাম দাগ থেকে যায় (২০০৪)-এ প্রকাশিত হয়।
মাইলসের প্রধান গায়ক হিসেবে শাফিন আহমেদ 'ফিরিয়ে দাও', 'ধিকি ধিকি', 'নীলা', 'চাঁদ তারা সূর্য', 'কি জাদু', 'জানি তুমি'সহ অসংখ্য জনপ্রিয় ও সুপারহিট গানের জন্য শ্রোতাদের ভালোবাসা পেয়েছেন।
এছাড়াও শাফিন আহমেদ তোমাকে (১৯৮৭), পাগলা ঘণ্টি (১৯৯৮), ছবি আর স্মৃতিগুলো (১৯৯৯), বেস্ট অব শাফিন আহমেদ (২০০১), কতদিন দেখি না তোমায় (২০০৬), ভাইরাস (২০০৬), হারানো সুখ (২০০৭), মাই লাভ সংস (২০১০) এবং মনে পড়ে আজসহ (তার মা ফিরোজা বেগমের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলিস্বরূপ নজরুল গানের অ্যালবাম, ২০১৬) বেশ কয়েকটি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন।
সফল সংগীতজীবনের পাশাপাশি দেশের রাজনীতিতেও অংশ নিয়েছিলেন শাফিন আহমেদ। ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।
৫০৮ দিন আগে
‘কাঁটা’ আসছে বঙ্গতে
‘ফাইল আটকে ঘুষ আদায়’ সংবাদপত্রে এমন খবর প্রায়ই চোখে পড়ে। নিজেদের অবস্থানের অপব্যবহার করে অনেকেই এভাবে ‘উপরি কামাই’ করেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। তেমনই এক উপরি কামাই করা কর্মচারীর গল্প নিয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ’তে আসছে নতুন নাটক ‘কাঁটা’।
রিয়াদ মাহমুদের লেখা ও পরিচালনায় নির্মিত এই নাটকটি শুক্রবার ( ১২ জুলাই) মুক্তি পাচ্ছে বঙ্গ প্ল্যাটফর্মে।
সম্প্রতি বঙ্গ’র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তি পায় এই নাটকের ট্রেইলার। এতে দেখা যায়, নাটকের মূল চরিত্র ফজলু একজন কেরানি। মানুষের ফাইল আটকে রেখে তিনি উপরি কামাই করেন। সেই কামাইতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে তার সংসার, জীবনযাপন। হঠাৎ একদিন খাবার খাওয়ার সময় তার গলায় একটি মাছের কাঁটা বিঁধে যায়। এবার কী করবেন তিনি?
আরও পড়ুন: ফারুকীর ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলম্যান’ আসছে বঙ্গ-তে
সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল পর্যন্ত।
ভিন্নধর্মী এই নাটকটি নিয়ে বঙ্গ'র চিফ কন্টেন্ট অফিসার মুশফিকুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘কাঁটা খুবই সময়োপযোগী একটি গল্প। হাস্যরসের ছলে বর্তমান সমাজের একটি রুঢ় বাস্তবতা ফুঁটে উঠেছে এখানে। বঙ্গ সবসময়ই তাদের দর্শকদের ভিন্নধর্মী গল্প বলার চেষ্টা করে। সেদিক থেকে দর্শক ‘কাঁটা’ গল্পটির সঙ্গে খুব ভালোভাবেই সংযোগ স্থাপন করতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস।’
কাঁটা গল্পের মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক শরাফ আহমেদ জীবন। এছাড়া আরও আছেন, সোলায়মান খোকা, টুইঙ্ক ক্যারোল, সাইফুল ইসলাম রাফি ও সুষমা সরকার।
আগামীকাল থেকে বঙ্গ অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে দেখা যাবে নাটকটি।
আরও পড়ুন: আসছে নিশো-তমা জুটির নতুন সিনেমা ‘অসিয়ত’
৫২২ দিন আগে
আসছে নিশো-তমা জুটির নতুন সিনেমা ‘অসিয়ত’
ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র সুড়ঙ্গের জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় বড় পর্দায় ফের জুটি বাঁধতে চলেছেন আফরান নিশো ও তমা মির্জা। আগের মত এবারও চলচ্চিত্রের শিরোনাম এক শব্দের ও চিত্তাকর্ষক। নতুন এ সিনেমার নাম ‘অসিয়ত’। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না এলেও তুমুল হইচই শুরু হয়ে গেছে নেটিজেনদের মধ্যে। চলুন, চলচ্চিত্রটির নির্মাণ, মুক্তির দিনক্ষণ ও সম্ভাবনা নিয়ে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
চলচ্চিত্র ‘অসিয়ত’ বৃত্তান্ত
সিনেমাটির নির্দেশনায় থাকবেন ‘তুফান’ খ্যাত নির্মাতা রায়হান রাফী। বর্তমানে তার ‘তুফান’ সিনেমাটি বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ‘সুড়ঙ্গ’ ও ‘তুফান’ চলচ্চিত্রটির মতো ‘অসিয়ত’ চলচ্চিত্রটির সঙ্গেও জুড়ে আছে ভারতের চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ (শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস) এবং বাংলাদেশের আলফা-আইয়ের নাম। চলচ্চিত্র দুইটির প্রযোজনায় ছিল আলফা-আই, আর পরিবেশক হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিল এসভিএফ। তবে ‘অসিয়ত’ চলচ্চিত্রটির প্রযোজনায় থাকছে স্টুডিও দুইটির সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি কোম্পানি এসভিএফ আলফা-আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড।
আরও পড়ুন: মেহজাবীন অভিনীত ভিকি জাহেদের ‘তিথিডোর’ নিয়ে কেন এত আলোচনা
পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরেই আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে সিনেমার শুটিং। নিশো-তমা জুটি বাদে অভিনয়ে আর কারা থাকছেন এবং গল্পের পটভূমিই বা কি- সে ব্যাপারে এখনও কিছু প্রকাশ করা হয়নি। তবে সিনেমাটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না দর্শকদের।
‘অসিয়ত’ কবে মুক্তি পাবে
২০২৫ সালের ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে যাবতীয় পরিকল্পনা চলছে চলচ্চিত্র নির্মাণের। ২০২৩ সালের ঈদুল আযহায় ‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তি পেয়েছিল জনপ্রিয় ওটিট (ওভার-দ্যা-টপ) প্ল্যাটফর্ম চরকিতে। একইভাবে ‘অসিয়ত’ চলচ্চিত্রটির সঙ্গেও দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সম্পৃক্ত হওয়ার কথা চলছে। শিগগিরই এক জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে এই সম্পৃক্ততাসহ মুক্তির স্পষ্ট দিনক্ষণ নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হবে ‘অসিয়ত’ টিম।
নিশোর বিচক্ষণ প্রত্যাবর্তন
‘সুড়ঙ্গ’ চলচ্চিত্রটির পর থেকে গত এক বছর একেবারেই ক্যামেরার সামনে দেখা যায়নি আফরান নিশোকে। ফলে এই বিস্তর সময়টাতে অপেক্ষায় থাকা অনুরাগীদের মধ্যে তাকে নিয়ে চলেছে হাজারো জল্পনা-কল্পনা। কিন্তু এ সময়টাতে ছোট পর্দার সুপ্রতিষ্ঠিত এই অভিনেতা প্রস্তুতি নিয়েছেন বড় পর্দার জন্য। এখন তার সমস্ত ধ্যান-জ্ঞান চলচ্চিত্রে অভিনয়কে ঘিরে। তবে ভাল গল্প পেলে ওটিটিতেও তাকে দেখা যাবে। সব মিলিয়ে তিনি চেয়েছিলেন সিনেমার মাধ্যমেই দর্শকদের সামনে হাজির হতে। আর তাই এই দীর্ঘ বিরতি।
আরও পড়ুন: আসছে তাহসান-মিথিলার ওয়েব সিরিজ ‘বাজি’
নিশোর মতে ভালো কিছু কাজের জন্য উপযুক্ত সময়ের প্রয়োজন। তাই আড়ালে থাকা মানে কাজ থেকে দূরে থাকা নয়। বরং এতে কাজের প্রতি আরও বেশি নিবেদিত হওয়া যায়, যার নিরিখে বৃদ্ধি পায় কাজের গুণগত মান। ফলশ্রুতিতে, সৃষ্টি হয় নতুন কাজ দেখার আগ্রহ এবং সেই সঙ্গে নিশ্চয়তা থাকে ভক্তদের প্রত্যাশাকে পূরণ করার।
সমূহ সম্ভাবনার সূচনালগ্নে ‘অসিয়ত’
বাংলাদেশের নাটক ও চলচ্চিত্র অঙ্গনে বিগত ২০ বছর ধরে একটি স্বনামধন্য নাম হয়ে উঠেছে আলফা-আই স্টুডিওজ লিমিটেড। অন্যদিকে, ওপার বাংলার প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফের রয়েছে দীর্ঘ ২৮ বছর চলচ্চিত্র নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ দুইটি প্রতিষ্ঠান যখনই একসঙ্গে হয়েছে তখনই অবতারণা ঘটেছে দারুণ নির্মাণশৈলীর। মূলত এর অঙ্কুরেই প্রাণ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এসভিএফ আলফা-আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের। এই যৌথ উদ্যোগ ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, তারই প্রথম দৃষ্টান্ত হিসেবে নির্মাণ হতে চলেছে ‘অসিয়ত’।
শেষাংশ
রায়হান রাফীর পরিচালনায় নিশো-তমা জুটির সিনেমা ‘অসিয়ত’ নিশো ভক্তদের জন্য দারুণ একটি চমক হতে যাচ্ছে। চলচ্চিত্র প্রযোজনার দিক থেকে ভারত ও বাংলাদেশি স্টুডিওগুলোর যৌথ অবস্থান একদমই নতুন নয়। তবে সিনেমাকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি চিত্রজগতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাছাড়া সিনেমা বানানো ও পরিবেশনে আলফা-আই এবং এসভিএফ প্রত্যেকেই সফল। সেই সুবাদে এই অংশীদারিত্ব বিশ্ব মানের চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি রাখছে। এই প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশি ছবির জন্য বিশ্ব দরবারে মর্যাদাবান স্থানে অধিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ বিরতির পর ‘নীল জোছনা’ নিয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন শাওন
শাকিব খানের 'তুফান' চলচ্চিত্রের চমকপ্রদ কিছু তথ্য
৫২৬ দিন আগে
ফারুকীর ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলম্যান’ আসছে বঙ্গ-তে
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলম্যান’ এবার আসছে জনপ্রিয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ-তে। সম্প্রতি বঙ্গ’র ফেসবুক পেজ থেকে একটি ফার্স্ট লুক পোস্টারের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের এক সাধারণ মেয়ে দেশের কর্মজীবী নারীদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠার গল্প নিয়ে এই সিরিজটি ২০২১ সালে ভারতের একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পায়। এরপরে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে ওয়েব সিরিজটি।
‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলম্যান’ প্রযোজনা করেছেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। এটি তার প্রথম প্রযোজিত কোনো ওয়েব সিরিজ, এর আগে তিনি প্রযোজনা করেছেন ফারুকীর প্রথম আন্তর্জাতিক সিনেমা ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’।
সিরিজে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাসনিয়া ফারিণ। এছাড়া অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ, আফজাল হোসেন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, হাসান মাসুদ, সাবেরী আলম, পার্থ বড়ুয়া, মুকিত জাকারিয়া, ইরেশ যাকের, মারিয়া নূর, মোস্তফা মনোয়ার, শরাফ আহমেদ জীবন ও চঞ্চল চৌধুরী প্রমুখ।
১১ই জুলাই থেকে সিরিজটি দেখা যাবে বঙ্গ অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভে মুক্তি পাচ্ছে ফারুকীর 'শনিবার বিকেল'
৫২৭ দিন আগে
দীর্ঘ বিরতির পর ‘নীল জোছনা’ নিয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন শাওন
২০০৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল বাংলাদেশের কিংবদন্তি ঔপন্যাসিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ুন আহমেদের ‘আমার আছে জল’ সিনেমা। সেখানে ‘নিশাদ’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। তারপর থেকে গান ও নাটকের মাধ্যমে বেশ কিছুবার দর্শকদের সামনে এলেও বড় পর্দা থেকে তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। অবশেষে ১৭ বছরের দীর্ঘ বিরতি ভেঙে ‘নীল জোছনা’ শিরোনামের চলচ্চিত্র দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য পর্দায় ফিরছেন শাওন।
কেমন হতে যাচ্ছে সিনেমার গল্প, আর এই নির্মাণে শাওনের সঙ্গী হচ্ছেন কারা- চলুন জেনে নেয়া যাক।
বিনোদন জগতে শাওনের পদচারণা
বিনোদন জগতে শাওনের শুরুটা ছিল ১৯৮৯ সালে ইবনে মিজান পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আলাল দুলাল’-এ শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয়ের মাধ্যমে। সেখানে তিনি অভিনয় করেছিলেন তৎকালীন খ্যাতিমান নায়িকা সুচরিতার ছোটবেলার চরিত্রে। তবে তিনি আলোচনায় আসেন শিশু শিল্পীদের জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি’তে বিজয়ী হওয়ার পর। তার নামের সঙ্গে একাধারে জুড়ে ছিল নৃত্যশিল্পী, সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী।
আরো পড়ুন: ইতালির ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হলো 'ময়না'
ছোটপর্দায় শাওনের অভিষেক হয় ১৯৯৬ সালের ধারাবাহিক নাটক ‘নক্ষত্রের রাত’-এর মাধ্যমে। ধারাবাহিকটি নির্মাণ করেছিলেন প্রথিতযশা নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদ। ১৯৯৯ সালে তার কালজয়ী ধারাবাহিক ‘আজ রবিবার’-এ শাওনের ‘তিতলি’ চরিত্রটি আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। এরপর থেকে হুমায়ুন আহমেদের নাট্যদলের নিয়মিত একজন হয়ে যান শাওন। সে বছরই রম্য নাটক ‘সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড’-এ মিতু চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
শুধু নাটকেই নয়, প্রখ্যাত নির্মাতার চলচ্চিত্রগুলোতেও সমান বিচরণ ছিল এই মেধাবী তারকার। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমায় প্রধান নায়িকা ‘কুসুম’-এর ভূমিকায় দেখা যায় শাওনকে। এরপর থেকে ‘দুই দুয়ারী’ (২০০১)-তে ‘তরু’, ‘চন্দ্রকথা’ (২০০৩)-য় ‘চন্দ্র’, এবং ‘শ্যামল ছায়া’ (২০০৪) সিনেমার ‘আশালতা’ চরিত্রগুলো দর্শক ও সমালোচক মহলে বেশ সমাদৃত হয়।
২০০৪ সালের দর্শকনন্দিত ধারাবাহিক নাটক ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’তে তিনি ‘পুষ্প’ চরিত্রে অভিনয় করেন।
হুমায়ুন আহমেদের নির্দেশনায় শাওনের সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল ২০০৮ সালের ‘আমার আছে জল’, আর সর্বশেষ নাটক ছিল ২০১১ সালের ‘স্বর্ণকলস’।
আরো পড়ুন: কিরণ রাওয়ের ‘লাপাতা লেডিস’ নিয়ে যে কারণে এত আলোচনা
২০১২ সালে হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর পর থেকে তার বেশ কিছু রচনা পরিচালনা করেন শাওন।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১১ সালের নাটক ‘স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গ’, ২০১৪ সালের ‘বিভ্রম’, এবং ২০১৬ সালের চলচ্চিত্র ‘কৃষ্ণপক্ষ’। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ সিনেমায় ‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো’ শিরোনামের গানে কণ্ঠ দেওয়ার সুবাদে তিনি শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।
‘নীল জোছনা’ সিনেমার কথকতা
সিনেমার গল্প
চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য নির্মিত হয়েছে মোশতাক আহমেদের ‘নীল জোছনার জীবন’ উপন্যাস অবলম্বনে, যেটি মুলত একটি প্যারাসাইকোলজি বিষয়ক কাহিনী নিয়ে রচিত।
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র লায়লা, যে অতীত ও ভবিষ্যত দেখতে পারে। আর এই বিষয়টি আতঙ্কিত করে তুলেছে তার স্বামী আমিনকে। কেননা সে জানতে পেরেছে খুব শিগগিরই লায়লার ফাঁসি হতে যাচ্ছে, আর কথাটি বলেছে স্বয়ং লায়লা নিজে। আমিন কিছুতেই বুঝে উঠতে পারে না, কেন তার স্ত্রীর ফাঁসি হবে; সে তো কোনো অপরাধ করেনি!
আরো পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এর বাংলাদেশি সিনেমা
চরম উদ্বিগ্নতার মুহুর্তে তারা শরণাপন্ন হয় মনস্তাত্ত্বিক ড. তরফদারের। গভীর পর্যবেক্ষণে তিনি খেয়াল করেন যে, লায়লা প্রায়ই একটি গান গুনগুন করে। আর এই গানের উৎসটি ডাক্তারকে সন্ধান দেয় এক অদ্ভূত বিমূর্ত জীবনের, যার নাম নীল জোছনা।
লায়লার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার পেছনে এই নীল জোছনাই দায়ী। আবার এই নীল জোছনাই তাকে ফাঁসির দিকে ধাবিত করছে।
ডাক্তার টের পান, লায়লার জীবন প্রবাহ পৃথিবীর আর দশটা মানুষের মত স্বাভাবিক নয়। এরপরও তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকেন মেয়েটির ভয়াবহ পরিণতির গতিপথ পাল্টানোর জন্য।
আরো পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এর কিছু চমকপ্রদ বাংলা নাটক
চলচ্চিত্রের নির্মাণ ও কলাকুশলি
৬ বছর আগে ২০১৮ সালের শেষ দিকে সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ফাখরুল আরেফিন খানের পরিচালনায়। মহামারী করোনাসহ নানা কারণে শুটিংয়ের কাজ বারবার পিছিয়ে যায়। অতঃপর চলতি বছরের মে মাস থেকে সফলভাবে সিনেমাটির শুটিং চলছে।
‘ভুবন মাঝি’, ‘গণ্ডি’ এবং ‘জেকে ১৯৭১’-এর পর ফাখরুল আরেফিন খানের চতুর্থ সিনেমা ‘নীল জোছনা’। এর আগে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘আল বদর’ (২০১১)-এর জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
চলচ্চিত্রে শাওনকে দেখা যাবে শহুরে এক নারীর চরিত্রে। সিনেমার আলাদা চমক হিসেবে থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী পাওলি দাম। এছাড়া অন্যান্য অভিনয়শিল্পীরা হলেন- ইন্তেখাব দিনার, তারিক আনাম খান, এস এম নাঈম ও পার্থ বড়ুয়া।
আরো পড়ুন: আসছে তাহসান-মিথিলার ওয়েব সিরিজ ‘বাজি’
ছবির ক্যামেরাম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন রানা দাশগুপ্ত। সাকি ব্যানার্জির সংগীত পরিচালনায় ছবিতে গান থাকবে মোট তিনটি। এগুলোর মধ্যে মৌলিক গান দুটি, যেগুলোর গীতিকার লয়দীপ ও মাহমুদ শাওন।
পরিশেষ
মনস্তাত্ত্বিক গল্পের চলচ্চিত্র দিয়ে শাওনের প্রত্যাবর্তন হুমায়ুন-ভক্তদের জন্য নতুন করে থ্রিলার নির্ভর কাজ দেখার ইন্ধন যোগাচ্ছে। ২১ শতকের প্রথম দশকে বিনোদন জগতের বিভিন্ন অঙ্গনে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার মাধ্যমে ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের একটি আলাদা জায়গা তৈরি করেছিলেন শাওন। তবে ‘নীল জোছনা’র মাধ্যমে সেই জনপ্রিয়তার পুনরুত্থান ঘটবে কি না, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে চলচ্চিত্রটির মুক্তির দিন পর্যন্ত।
তবে ফাখরুল আরেফিন খানের বিগত ভিন্ন ধারার কাজের সুবাদে বাংলাদেশি সিনেমা জগতে নতুন কিছু সংযোজনের সম্ভাবনা তৈরি করছে চলচ্চিত্রটি।
মেহজাবীন অভিনীত ভিকি জাহেদের ‘তিথিডোর’ নিয়ে কেন এত আলোচনা
৫২৯ দিন আগে
মেহজাবীন অভিনীত ভিকি জাহেদের ‘তিথিডোর’ নিয়ে কেন এত আলোচনা
ঈদুল আজহা ২০২৪-এর চতুর্থ দিন ২০ জুন চ্যানেল আই প্রাইম ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পায় ‘তিথিডোর’। টেলিফিল্মটি ছিল রোমান্টিক-কমেডি নির্ভর ঈদ আয়োজনের একটি ভিন্ন পরিবেশনা। ভিকি জাহেদের নির্দেশনায় নাম ভূমিকায় দেখা গেছে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীকে। তার সাবলীল অভিনয়ে টেলিফিল্মের সংবেদনশীল গল্প স্পর্শ করেছে দর্শকদের মন। মুক্তির পর থেকে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে গোটা সামাজিক মাধ্যম জুড়ে। চলুন, এই হৈচৈ-এর নেপথ্যের কারণটি জেনে নেওয়া যাক-
‘তিথিডোর’ নাট্য বৃত্তান্ত
চিরাচরিত নাট্যশৈলীর বাইরে গিয়ে ভিন্ন ধারার নাটক নির্মাণে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে সুপরিচিত নাম ভিকি জাহেদ। তারই পরিচালনায় টেলিফিল্মটির শ্রেষ্ঠাংশে ছিলেন মেহজাবীন চৌধুরী, আবুল হায়াত, প্রান্তর দস্তিদার, আশা মজিদ রোজী, শামীমা নাজনীন এবং শিশু শিল্পী দিবা সাজ্জাদ।
গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জাহান সুলতানা। এছাড়া টেলিফিল্মের অন্যান্য কারিগরি দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল ভিকির পুরনো টিম। তাদের মধ্যে চিত্রগ্রহণে ছিলেন বিদ্রোহী দীপন এবং সম্পাদনা, ভিএফএক্স, রঙ ও আবহ সঙ্গীত বিন্যাসে কাজ করেছেন অর্ণব হাসনাত।
আরও পড়ুন: ইতালির ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হলো 'ময়না'
তিথিডোর: একজন নারীর জীবনের টানাপোড়েনের গল্প
সামাজিক নানা টানাপোড়েনের মাঝে নিশাত নামের ৩০ বছর বয়সী এক তরুণীর জীবনের মানে খুঁজে পাওয়ার গল্প তিথিডোর। শুরুটা হয় মুষলধারে পড়ন্ত বৃষ্টি দেখার সময় চায়ে সেই বৃষ্টির পানি মিশিয়ে তাতে চুমুক দেওয়া দিয়ে। এমন ভালো লাগা রোমান্টিক দৃশ্য ক্রমশ এগিয়ে ক্লাইমেক্সে উপনীত হয় চরম হতাশায়।
নিজের সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসার মানুষটিকে অন্য সম্পর্কে জড়াতে দেখে নিশাতের পুরো পৃথিবীটা ধ্বংস হতে শুরু করে। বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে বিয়ে সংক্রান্ত বিড়ম্বনায় পরিবারের কাছেও ঠাঁই মেলে না তার। অন্যদিকে বিয়ের মিথ্যে নাটক সাজিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সে একা একটা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে। ধীরে ধীরে বেঁচে থাকার স্পৃহা হারিয়ে ফেলতে থাকে নিশাত।
ঠিক এমন সময়েই আকস্মিকভাবে আবির্ভাব ঘটে এক দেবশিশু- দিবার। নিশাত যে বিল্ডিংয়ে থাকে সে বিল্ডিংয়ে নতুন এসেছে। সব সময় হাসিখুশি থাকা মেয়েটি দেখা হলেই নিশাতের মন খারাপের কারণ জানতে চায়। সে জানায় তার মা বলেছে, মন খারাপ থাকলে জীবনের সব সুন্দর জিনিসগুলোর লিস্ট করতে।
আরও পড়ুন: 'প্রিয় মালতী' হতে যাচ্ছে মেহজাবীন চৌধুরীর প্রথম সিনেমা
নিশাত যখন চূড়ান্তভাবে নিজের জীবনকে শেষ করে দিতে উদ্যত হয়, তখনি সে জানতে পারে দিবা মরণব্যাধি লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে দিবাকে দেখতে গেলে শিশুটি তাকে বলে, এখন সে আর সেই লিস্ট করতে পারছে না। লিস্টে আরও সুন্দর জিনিস যোগ করতে তার নিশাতের সাহায্য দরকার। এই অনুরোধ রেখে এক সময় চলে মারা যায় শিশুটি। কিন্তু নিশাতকে দিয়ে যায় বেঁচে থাকার অমূল্য নির্যাস।
এই নির্যাসে এক চিমটি টনিক যোগ করে দেয় শামসুর রহমান নামের ৮০ বছরের বৃদ্ধ। তার ভাষায়- ‘প্রতিটা বয়সেরই একটা আলাদা সৌন্দর্য আছে।’
তার সঙ্গে কথোপকথনে নিশাত বুঝতে পারে জীবন শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট পাওয়ার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। জীবনটা অনেক বৈচিত্র্যময় এবং অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিসে ভরপুর। আর এই প্রত্যেকটি সৌন্দর্যের মূল্য রয়েছে। এই উপলব্ধির পর সব দুঃখ ভুলে নিশাত আনন্দের খোঁজার মাঝে দিন যাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন: আসছে তাহসান-মিথিলার ওয়েব সিরিজ ‘বাজি’
দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার চিত্রপট
টেলিফিল্মটির পেছনে ভিকি জাহেদের নির্মাণশৈলী এবং মেহজাবীনের অভিনয়ের ভূয়সী প্রশংসায় মুখর দেশের নেটিজেন পাড়া। সাম্প্রতিক সময়ের অভিনেত্রীর অধিকাংশ কাজগুলোর মতো এটিও ছিল গতানুগতিক ধারা বহির্ভূত।
চরিত্রের প্রয়োজনে বিষাদের প্রতিটি দৃষ্টিকোণ ফুটে উঠেছে মেহজাবীনের অভিনয়ে। নারীপ্রধান টেলিফিল্মটির পুরোটাতেই মিশে ছিল নারীত্বের বিষণ্নতার আবহ। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে এরকম কাজের নজির খুব একটা দেখা যায় না। এমনি অনবদ্য পরিবেশনাকে সাদরে গ্রহণ করেছেন নাট্যপ্রেমীরা। বিশেষ করে নারী দর্শকরা নিশাতের মাঝে অবিকল খুঁজে পেয়েছেন নিজেদের।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুঃখ-ভারাক্রান্ত বিষয়গুলো অগোচরেই থেকে যায়। মুখে হাসি রেখেও অনেক নারীই দিনের পর দিন বিষণ্নতাকে নীরবে বয়ে বেড়ান। এই টেলিফিল্মটি সেই সব নিঃশব্দ কান্নাকে যেন এক নিমেষে উগড়ে দেয়ার ইন্ধন জুগিয়েছে। সামাজিক মাধ্যম জুড়ে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে নারী দর্শকদের মন্তব্যে।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এ মুক্তির অপেক্ষায় কিছু চমকপ্রদ বাংলা নাটক
শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে অনেক আলাপ-আলোচনা হলেও মানসিক স্বাস্থ্যের জটিলতাগুলো বরাবরই এড়িয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু মনোকষ্ট যত ঘনীভূত হয়, ততই তা শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। তাছাড়া আত্মহত্যার প্রবণতাও বর্তমান সমাজের একটি ভয়াবহ সমস্যা। এর নিরসনকল্পে অবিলম্বে হতাশার রসদগুলো আলোচনার মঞ্চে নিয়ে আসা জরুরি। ‘তিথিডোর’ যেন তারই এক মাইলফলক নাটকীয় মোড়কে।
সেই ধারাবাহিকতায় মেহজাবীন নিজেও একজন নারী অভিনেত্রী হিসেবে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই এই কাজটি করেছেন। এ ধরনের গল্প যত মানব সম্মুখে আসবে তত এ নিয়ে কথা হবে। আর গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো সমাধানের মুখ দেখবে।
আর তাই জীবনযুদ্ধে জর্জরিত অনেক নারী দর্শক নিজেদের অনুপ্রেরণার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। বিশেষত সম্পর্কের জটিলতায় জর্জরিত মধ্যবয়স্ক নারীরা ব্যক্ত করেছেন সামাজিক মর্যাদা হারানোর কথা। একদিকে শরীরে বয়সের ছাপের সঙ্গে বাড়তে থাকা মানুষের কটু কথা, অন্যদিকে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের স্বনির্ভরশীলতা নিয়ে বিতর্ক।
আরও পড়ুন: কিরণ রাওয়ের ‘লাপাতা লেডিস’ নিয়ে যে কারণে এত আলোচনা
এই সূত্রে দর্শকদের মন্তব্যে আরও উঠে এসেছে মেয়ে সন্তানের প্রতি মা-বাবাদের বৈষম্যের কথা। তথাকথিত সামাজিক নিয়মের তাড়নায় এই একুশ শতকেও একটি মানব সত্ত্বা হিসেবে নারীদের রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। এমনকি ভালোবাসার মানুষটির কাছ থেকেও মেলে না কাঙ্ক্ষিত আচরণ।
প্রতিটি জীবনমুখী উপাদানের পরিবেশনার পর সুন্দর সমাপ্তিটা শুধু ভালো লাগাই দেয়নি, উৎসাহ জুগিয়েছে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের। মূলত এই বার্তাই পূর্ণতা দেয় একটি নাটকের। টেলিফিল্মটিকে বিশাল সেই অর্জনে ভূষিত করে একজন দর্শক ঐতিহাসিক শ্লোকের বেষ্টনীতে তার মন্তব্য আওড়েছেন এভাবে, ‘দুনিয়ায় মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকাটাই আসল।’
শেষাংশ
সব মিলিয়ে ‘তিথিডোর’ ভিকি জাহেদের আরও একটি অনবদ্য নির্মাণ, যা আরও গভীরতা দিয়েছে মেহজাবীন চৌধুরীর বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিনয় নৈপুণ্যে। আর এই নির্মাতা-অভিনেত্রীর জুটির ভূমিকায় প্রাণ পেয়েছে হাজারও নারীর হৃদয় নিঙড়ানো আর্তনাদের গল্প। নানা দৃষ্টিকোণ থেকে একজন আশাহত নারীর নিঃশব্দ দিনাতিপাতের কেবল অকাট্য পরিবেশনাই নয়, টেলিফিল্মটির সফলতা ছিল একটি ইতিবাচক সমাধানে পৌঁছানো। আর তাই দর্শকরা নিজের জীবনের সঙ্গে শুধু মিলই খুঁজে পাননি, সেই সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে ফিরে খুঁজে পেয়েছেন সঠিক পথটি।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এ বাংলাদেশি যেসব সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়
৫৩২ দিন আগে