পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের শোষণ, বঞ্চনা, নিপীড়ন ও অত্যাচারের অবসান ঘটাতে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ১৯৬৬ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানে দিনব্যাপী হরতাল আহ্বান করেন।
প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন দমনে পাকিস্তানিদের নৃশংসতা বেড়ে যাওয়ায় এই আন্দোলন ১৯৬৯ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এরফলে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের শাসনের পতন ঘটে।
আওয়ামী লীগের ডাকা এই হরতালে সাড়া দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে।
এর আগে হরতাল পালনকালে ঢাকা, টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ এবং প্যারা-মিলিটারি ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) গুলি চালিয়ে ১০ জনকে হত্যা করে।
ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করে পাকিস্তানকে একটি ফেডারেশন রূপে গড়তে হবে। সকল নির্বাচন সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কদের সরাসরি ভোটে অনুষ্ঠিত হবে। আইনসভা সমূহের সার্বভৌমত্ব থাকবে।
২. দেশ রক্ষা ও পররাষ্ট্র এ দুটো বিষয় থাকবে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। বাকি বিষয়গুলোতে অঙ্গরাজ্যের পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
৩. পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য দুটো আলাদা অথচ সহজে বিনিময়যোগ্য মুদ্রার প্রচলন করতে হবে।
৪. সকল প্রকার ট্যাক্স, খাজনা, কর ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। আদায়কৃত রাজস্বের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় সরকারকে দেয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
৫. পূর্ব পাকিস্তানের অর্জিত বৈদেশিক মূদ্রা পূর্ব পাকিস্তানের এখতিয়ার এবং পশ্চিম পাকিস্তানের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা পশ্চিম পাকিস্তানের এখতিয়ারে থাকবে। এর নির্ধারিত অংশ কেন্দ্রকে দেবে। তারা বৈদেশিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক সাহায্য সম্পর্কে আলাপ আলোচনা ও চুক্তি করতে পারবে।
৬. পূর্ব পাকিস্তানে মিলিশিয়া বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী গঠনের অধিকার দিতে হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন, অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেছে।