শনিবার এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটক শ্রমিকদের ব্যাপারে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে নিরপরাধ শ্রমিকদের মুক্তির ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
‘তবে দোষীদের ব্যাপারে তাদের তেমন কিছু করার নেই,’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম বলেন, তারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং আটক শ্রমিকদের দ্রুত মুক্তির ব্যাপারটি গুরুত্বের সাথে দেখছেন।
শুক্রবার ও শনিবার কুয়েতে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় তাদের মুক্তির ব্যাপারে আরও কিছু দিন সময় লাগতে পারে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের স্বার্থকে গুরুত্বের সাথে দেখছি।’
এর আগে ঘটনার পরের দিন শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন কুয়েতের এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।
কুয়েতের মতো পরিস্থিতি যেন বিদেশে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাসে যেন আর না ঘটে সেজন্য সতর্ক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, কুয়েতের একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা তিন মাসের বকেয়া মজুরি ও কাজের অনুমতির ব্যাপারে দুঃখ-দুর্দশা জানাতে গত বৃহস্পতিবার প্রায় ৩০০-৪০০ বাংলাদেশি শ্রমিক ও চাকরিজীবী দূতাবাসের সামনে সমাবেত হন।
সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হবে বলে শ্রমিক প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করে ওই দিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তাদের একটি ছোট গ্রুপের সাথে আমার বৈঠক হয়েছে। সেখানে বেকয়া বেতন, কাজের অনুমতি নবায়নসহ তাদের তিনটি সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে।’
পরবর্তীতে ওই দিনই অপর এক বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপকের (পরিচালনা) সাথে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত জানান, সেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত কালাম জানান, কোম্পানির প্রতিনিধি আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া বেতন সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে নিশ্চিয়তা দিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে তার কাছ থেকে একটি লিখিত বিবৃতিও নেয়া হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
জানা যায়, কোম্পানির ওই প্রতিনিধি দূতাবাস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথে বাংলাদেশি কিছু শ্রমিক তাকে থামিয়ে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন।
পরে কনস্যুলার (রাজনৈতিক) ও চ্যান্সেরি প্রধান মো. আনিসুজ্জামান এবং আরও দুজন কর্মকর্তা কোম্পানির প্রতিনিধিকে গাড়িতে উঠতে সহযোগিতা করতে গেলে তাদের ওপরও হামলা করেন শ্রমিকরা।
কাজে ফেরার ব্যাপারে নিশ্চয়তা ও রাষ্ট্রদূতের অনুরোধ সত্ত্বেও এক পর্যায়ে কিছু শ্রমিক দূতবাসের ভেতরে প্রবেশ করে আসবাসপত্রসহ বিভিন্ন সম্পদ ভাঙচুর ও তছনছ করেন।
দূতাবাস সূত্র জানায়, অনুরোধের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং প্রায় ১৫০ বাংলাদেশি শ্রমিককে আটক করে নিয়ে যায়।