শনিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে সোয়া ২টার মধ্যে পৃথক এ কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।
নিহতদের মধ্যে তিনজনকে ‘মাদক ব্যবসায়ী’ ও একজনকে ‘ডাকাত দলের সর্দার’ বলে দাবি করেছে র্যাব ও পুলিশ।
র্যাব জানায়, ঝিনাইদহের পবহাটি এলাকায় শনিবার দিবাগত রাত ২টায় র্যাবের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জেলা শহরের বাঘাযতিন সড়কের সাজ্জাদুর রহমান ও উদয়পুর গ্রামের আব্দুল রাজ্জাক নিহত হয়। র্যাবের দাবি, দুজনেই মাদক ব্যবসায়ী।
র্যাব-৬ ঝিনাইদহের কোম্পানি কমান্ডার সিনিয়র এএসপি গোলাম মোর্শেদের ভাষ্য, ঘটনাস্থলের পাশের একটি বাড়িতে মাদক ব্যবসায়ীরা অবস্থান করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
‘র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা মোটরসাইকেলযোগে পালানোর সময় র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। র্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে সাজ্জাদুর রহমান ও আব্দুল রাজ্জাককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে,’ বলেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
নিহতরা দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে দাবি র্যাবের।
ঘটনাস্থল থেকে ২টি ওয়ান শুটার গান, ৫৫ বোতল ফেনসিডিল, ১৫২ পিস ইয়াবা উদ্ধার করার কথা জানিয়ে র্যাব বলছে, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তাদের দুই সদস্য আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়িতে শনিবার রাত সোয়া ২টায় কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজনের নিহতের খবর জানায় পুলিশ।
পুলিশের দাবি, নিহত ফারুক মিয়া (৩১) একজন মাদক ব্যবসায়ী। সে ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি তেলুয়ারি গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি আহমেদ কবীরের ভাষ্য, রাতে ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি বাজারের পাশে পাকা রাস্তার উপরে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদক ভাগাভাগি করছে এমন খবরে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালায়।
‘পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশের ওপর প্রথমে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও পরে গুলি ছুড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়লে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে গুলিবিদ্ধ ফারুক মিয়াকে পাওয়া যায়। তাকে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন,’ বলেন ওসি।
তিনি বলেন, নিহত ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউএনবি বার্তা বিভাগে আসা খবর অনুযায়ী সারাদেশে মাদক বিরোধী অভিযানে গত ১৫ মে থেকে ১৬৫ জন মাদক ব্যবসায়ীর নিহতের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদের মধ্যে ১২৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় এবং ৩৮ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়ে পুলিশ বলছে, তারা নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে মারা গেছে।
এদিকে শনিবার রাত ২টায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ির সাকোয়া এলাকায় কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজনের নিহতের কথা জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি নিহত সামছুল হক ডাকাত দলের সদস্য। সে পলাশবাড়ি সাতারপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
এর আগে শনিবার বিকালে নিজ বাড়ি থেকে শামছুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খান মোহাম্মদ শাহরিয়ারের ভাষ্য, নিহত শামছুল ডাকাতিসহ নানা অপকর্মে জড়িত। গ্রেপ্তারের পর শনিবার রাত ২টায় তাকে নিয়ে অভিযানে বের হলে তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পাল্টা গুলি চালালে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে শামছুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে গাইবান্ধা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানিয়ে ওসি আরো জানান, ডাকাতদলের হামলায় পুলিশের ৬ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের গাইবান্ধা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।