মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শেরপুর-ধুনট সড়কের বোয়ালকান্দি ব্রিজের কাছে ‘গোলাগুলির’ এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শফিউর রহমান জ্যোতি (৫৩) ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের প্রতাপখাদুলি গ্রামের মৃত মোজাফফর হোসেনের ছেলে ও ধুনট উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বর্তমানে দলের কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন।
পুলিশের ভাষ্য, জ্যোতি খুব অল্প বয়সে চরমপন্থী দলের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের আঞ্চলিক নেতা হিসেবে পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জে বিচরণ করতেন। পুলিশের রেকর্ডে তার বিরুদ্ধে ৫টি হত্যাসহ ১৩টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ১৯৮৭ সালে নাটোরের গুরুদাসপুর থানা লুটের একটি মামলায় তার ৮৪ বছরের সাজা হয়েছিল।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর ভাষ্য, উপজেলার বোয়ালকান্দি এলাকায় শেরপুর-ধুনট সড়কে ব্রিজের কাছে গোলাগুলি হচ্ছে এমন খবর পেয়ে রাতে তিনি ও শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুষ্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায় এবং একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানোর হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে ওয়ানশুটার গান, রামদা, ৩ রাউন্ড গুলি ও জ্যোতির ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
ধুনট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরাফাতুজ্জামান পাশা জানান, নব্বই দশকে সরকারের সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে সর্বহারা পার্টি থেকে আত্মসমার্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন জ্যোতি। আত্মসমার্পণের কারণে তার সাজাও উচ্চ আদালত থেকে মাফ করা হয়। জ্যোতি ধুনট উপজেলার বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এখনও দলের কর্মী হিসেবে প্রকাশ্যে কাজ করে আসছিলেন। তিনি বিগত মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার দিবাগত রাতে ওই শেরপুর উপজেলায় ভবানীপুর বাজার সংলগ্ন ব্রিজের কাছে দু’দল চরমপন্থীর মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ লিটন (৩৬) ও আফসার (৪৫) নামে নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের দুই সদস্য নিহত হন। লিটনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এবং আফসার একই জেলার রায়গঞ্জ উপজেলায়।