‘কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল এবং কয়েক দফা সেই আন্দোলন হয়। যে কারণে আমাদের ব্যবস্থাটি বাতিল করতে হয়েছে, এটা সত্য। কিন্তু এখন আমরা একটি নীতিমালা করছি; যেখানে প্রতিবন্ধী, নৃগোষ্ঠী ও সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর মানুষদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।’
‘২৭তম আন্তর্জাতিক এবং ২০তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস’ উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হলো- ‘সাম্য ও অভিন্ন যাত্রায় প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়ন’।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের কোনো মানুষকে অবহেলা করা হবে না। ‘সবাইকে বুঝতে হবে যে দেশের প্রতিটি মানুষ আমাদের আত্মীয়-স্বজন।’
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে প্রতিবন্ধীদের নিজেদের কাছের মানুষ হিসেবে গ্রহণ করার মানসিকতা গড়ে তোলার কথা বলেন।
প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার মানুষ হিসেবে প্রতিবন্ধীদের সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
‘তাদের সম্ভাবনাকে আমরা কাজে লাগাতে পারি....তাদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে দেশের উন্নয়নে তাদের মেধা ও দক্ষতাকে আমরা কাজে লাগাতে পারি,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধীদের অবহেলা না করে বরং তাদের সমর্থন দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তারা সমাজে নিজেদের গুরুত্ব ও গুণাবলী প্রমাণ করতে পারে। ‘তাদের সুপ্ত প্রতিভা প্রকাশে আমাদের সুযোগ দিতে হবে।’
তিনি জানান, এখন থেকে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মানুষদের জন্য চলাচল ও টয়লেট সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দেশের সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার প্রতি জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে আসতে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধী তরুণ, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়দের অত্যন্ত প্রশংসা করে বলেন, তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে স্বর্ণসহ নানা পদক অর্জন করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩’ এবং ‘নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং সরকার তা বাস্তবায়ন করছে।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. সাইদুল হক ও সমাজকল্যাণ সচিব মো. জিল্লার রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সমাজে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ করেন।
পরে তিনি প্রতিবন্ধী শিশুদের অংশগ্রহণে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।