এর মধ্যে উপজেলার সরকারি স্কুল কলেজ ও এমপিওভুক্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বাসা ভাড়া নিয়ে বেনামে চালাচ্ছেন এই কোচিং বাণিজ্য। আর সেখানেই সকাল, দুপুর ও বিকালে চলছে শিক্ষকদের প্রাইভেট পাঠদান।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদরেই রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক কোচিং সেন্টার। এর মধ্যে সাবেক এমপির বাড়ি সংলগ্ন, দূর্গি মন্দির, মান্নান ম্যানশন, গালর্স স্কুলের পিছনে, শ্রীনগর রথখোলা, ষোলঘর টমা মেডিকেলের পাশে, মণ্ডল পাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকরা গড়ে তুলেছেন তাদের বাণিজ্য কেন্দ্র।
এছাড়াও শ্রীনগর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের রিয়াজ স্যার, মতিউর রহমান, শ্রীনগর সরকারি এ হাই খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আহসান হাবিব, শাখাওয়াত হোসেন, নিজামউদ্দিন, সুবাষ মল্লিক, সানাউল হক, ডলি রানী দে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত বলে জানা গেছে।
আরও রয়েছে কামারগাঁও কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম, সহকারী শিক্ষক শামীম আহমেদ, শরীফ মাহমুদ, ষোলঘর একেএসকে উচ্চ বিদ্যায়ের আতাউর রহমান, আব্দুল রশিদ শেখ, আনিছুর রহমান, বাঘড়া সরূপচন্দ্র পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেন, বাড়ৈখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকরা কোচিং পড়াচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
আর অগ্রপথিক কোচিং সেন্টার, ইউএস কোচিং সেন্টার, শ্রাবণ স্যার কোচিং সেন্টার, এফএলআই কোচিং সেন্টার, স্টাডি কোচিং সেন্টার, চিরঞ্জীত কোচিং সেন্টার, সুব্রত কোচিং সেন্টারে চলছে নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় সব বিদ্যালয়ের কোনো না কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত রয়েছেন।
দেখা গেছে, ছোট্ট একটি ঘরে ঘিঞ্চি পরিসরে ১ ঘণ্টার কোচিংয়ে ২০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে একত্রে পড়ানো হচ্ছে। এতে দায়সারা গোছের পাঠদান হলেও মূলত শিক্ষার কোনো পরিবেশ নেই।
এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১ ঘণ্টা করে মাসে ১২ দিন তাদের পড়ানো হয়। তাদের কোচিং ফি বাবদ মাসে ৫’শত থেকে ১৫’শত টাকা করে দিতে হচ্ছে।
কোচিংয়ের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘কি করবো, কোচিংয়ে না পড়লে পরীক্ষায় পাস করবো কিভাবে? ক্লাসেতো আর সব কিছু শেখানো হয় না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ‘ক্লাসে তো আর সব পড়ানো হয় না। বাধ্য হয়েই ছেলে মেয়েদের কোচিংয়ে পড়তে দিতে হচ্ছে। এমনও শিক্ষক রয়েছে তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া যায় না।’
কোচিংয়ে পড়ানোর বিষয়ে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে অনেকেই বলেন, ‘আমাদের অজান্তে কিছু কিছু শিক্ষক তাদের বাসা বাড়িতে গোপনে প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন।’
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে কোচিংয়ের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’