নোয়াখালী, ২৭ অক্টোবর (ইউএনবি)-এ যেন গল্প! হৃদয় জয় করা, হৃদয় ছোঁয়া গল্প। এ গল্পের বাস্তব প্রতিফলন ঘটালো নোয়াখালীর মানুষ।
গতকাল শুক্রবার থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিচ্ছে ৭০ হাজার ২৯৮ জন পরীক্ষার্থী । মোট ৩০টি বিষয়ে ১৩২০ আসনে ভর্তির জন্য লড়বেন তারা।
এই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছেন প্রায় সমপরিমান অভিভাবক। অনেক ক্ষেত্রে বাবা মাসহ দুজন আসায় সে সংখ্যা দাঁড়ায় দেড় লাখের কিছু বেশী। কিন্তু নোয়াখালীর সব হোটেল, মোটেল, আবাসন ব্যবস্থা যোগ করলে মাত্র এক হাজার ৫শত লোক থাকতে পারে এক সাথে । ফলে দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
কিন্তু তাদের এই দুশ্চিন্তাকে আলোয় রূপান্তর করে দেন নোয়াখালীবাসী। এগিয়ে এসেছে নোয়াখালী পৌরসভা ও সদর উপজেলা পরিষদও।
সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়, স্থানীয় মসজিদ, মাদ্রাসায় থাকার জন্য অস্থায়ী আবাসিক ক্যাম্প করা হয়। শুধু তাই নয় এসব ক্যাম্পে তিন দিনব্যাপী বিনামূল্যে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সেখানে বিনামূল্যে এই সেবা পাবেন আগামীকাল রবিবার পর্যন্ত। এদের নিরাপত্তার জন্য দিন-রাত রেড ক্রিসেন্ট ও স্কাউটরা সেবা দিচ্ছে।
এই আয়োজন খুশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সকলে। সিলেট থেকে এসে পরীক্ষায় অংশ নেয়া সুজন জানান, আমরা অভিভূত। সারা জীবন এটা আমাদের মনে থাকবে।
ঢাকার শিক্ষার্থী ফাতেমা হোসেন জানান, আমাদের চিন্তার জায়গাটা পাল্টিয়ে দিয়েছে নোয়াখালীর এই ব্যবস্থা। তাদের এই অবদান কোনোদিন ভূলবার নয়।
নোয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন সেলিম বলেন, “হয়ত এই শিক্ষার্থীদের সবাই এখানে ভর্তির সুযোগ পাবে না। কিন্তু নোয়াখালীর মানুষে যে অতিথি পরায়ন এটা তাদের তাদের কাছে দৃস্টান্ত হয়ে থাকল। তাছাড়া এই মানুষগুলোকে রাস্তায় শুয়ে বসে দিন কাটাতো হতো এবং অনেককে অবর্ণনীয় কষ্ট করতে হতো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সম্মিলিত আয়োজনে তাদের দুঃখ দূর করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। আমাদের এই আয়োজন আগামীদনিগুলোতেও বহাল থাকবে।”
নোয়াখালির সাধারণ মানুষও এতে খুশি। যে যার সাধ্যমত এ আয়োজনে অংশ নিচ্ছে। নোয়াখালির এই আয়োজন সারাদেশের জন্য একটা মডেল হতে পারে।