আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে স্বশরীরে হাজির থেকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আরও যাদের হাজির থেকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে তারা হলেন-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের একজন প্রতিনিধি ও আইন সচিবের একজন প্রতিনিধি।
এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন উপস্থানের পর সোমবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বাশার) আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে/ স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ প্রতিবেদন পত্রিকায় দেখে আদালতে উপস্থাপনের পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দিয়েছেন। আদেশে ৩ ফেব্রুয়ারি চারজনকে হাজির হয়ে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া কারাগারে থাকা ‘ভুল’ আসামি জাহালমকে কেন অব্যাহতি দেয়া হবে না এবং তাকে মুক্তির কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে চেয়ারম্যান, দুদকের ডিজি (আইন), মামলার বাদী দুদক পরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাহিদ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, আইজি-প্রিজন ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন জাহালম। পেশায় পাটকলশ্রমিক জাহালমের কারাবাসের তিন বছর পূর্ণ হবে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি।
এতোদিন পরে এসে দুদক বলছে, জাহালম নিরপরাধ। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে জাহালম নিরপরাধ বলে জানিয়েছে।
এদিকে জাহালম একটি মামলায় জামিন পেলেও আরও ৩২টি মামলায় জামিন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ বছর আগে দুদকের একটি চিঠি জাহালমের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঠিকানায় যায়। ঝামেলার শুরু ঠিক তখনই। চিঠিতে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় জাহালমকে হাজির হতে বলে দুদক।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, ভুয়া ভাউচার তৈরি করে সোনালী ব্যাংকের ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আবু সালেকের সোনালী ব্যাংক ক্যান্টনমেন্ট শাখায় হিসাব রয়েছে। তার ১০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ভুয়া ঠিকানাগুলোর একটিতেও জাহালমের গ্রামের বাড়ির কথা নেই। রয়েছে পাশের আরেকটি গ্রামের একটি ভুয়া ঠিকানা।