সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানান, সরকার পক্ষের চাপ থাকায় বিএনপিপন্থীদের সাথে রেখে তাদের সংগঠন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
জানা যায়, একই চাপে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের অনুসারী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের জোট ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ থেকে বিভিন্ন দাবি পূরণের শর্তে এ পর্যন্ত ১১৩ জন শিক্ষক বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে সমর্থন করতে রাজি হয়েছেন। তারা অধ্যাপক ফারজানাপন্থী গ্রুপে যোগ দেয়ায় তাদের ‘বঙ্গবন্ধু-আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পর্ষদ’ করা হয়েছে।
পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা বার্তায় ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পর্ষদ’-এর পক্ষে ৩৪৩ জন শিক্ষকের নাম পাওয়া গেছে। গত বছর ‘বঙ্গবন্ধু-আদর্শের শিক্ষক পরিষদে’ ছিলেন ২২০ জন শিক্ষক।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অধ্যাপক ফারজানাপন্থীদের ভরাডুবি হলেও পরাজিত প্রার্থীরা গড়ে ২৪০টি ভোট পান। অন্যদিকে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়। তবে কয়েকদিন আগে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা আসলে এ জোটের ১১৩ শিক্ষকসহ উপাচার্য ফারজানাপন্থীদের নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পর্ষদ’ গঠন করা হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।
নতুন এ শিক্ষক জোটে যোগ দিয়েছেন সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের আওয়ামীপন্থী অংশের মুখপাত্র জোটের আহ্বায়ক ও শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার, অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ (পদার্থ বিজ্ঞান), সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ (দর্শন), অধ্যাপক কৌশিক সাহা, অধ্যাপক আলমগীর কবির, অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ, অধ্যাপক শাহেদুর রশিদ প্রমুখ নেতৃস্থানীয় শিক্ষকরা। তবে তাদের মধ্যে কয়েকজন নতুন জোটে যোগ দিলেও রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-এর নতুন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক খবির উদ্দীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে শিক্ষকদের এ জোট গঠন করা হয়। কেউ জোট থেকে সরে গেলে সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। আমরা জোটের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে আশাবাদী। শিগগিরই সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করব।’
অন্যদিকে ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’-এর যুগ্ম আহ্বায়ক বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। আমরা সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’
নবগঠিত ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পর্ষদ’-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা এক জোট হয়ে কাজ করুক। এখন আমাদের সাথে ৩৫০ জনের মতো শিক্ষক আছেন। আশা করি আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষক আমাদের সাথে যোগ দেবেন। তাদের প্রতি আমাদের আহ্বান সবসময় অব্যাহত থাকবে।’