সোমবার ওয়া লোন (৩২) এবং কিয়াও সো ও (২৮) এর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েক মাসের বিচারিক কার্যক্রম শেষে এ আদেশ দেয়া হয়।
গত বছর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছিলেন ওই দুই সাংবাদিক। সেখানে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়কে নিধনের জন্য ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে।
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়ে গত বছরের আগস্ট থেকে এগারো লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্য পুলিশ ওয়া লোন এবং কিয়াও সো ওকে গ্রেপ্তার করে।
রাখাইন পুলিশের অভিযোগ, ওই দুই সাংবাদিকের কাছে মিয়ানমারের গোপনীয় রাষ্ট্রীয় কাগজপত্র ছিল। তারা সামরিক বাহিনীর কর্মকাণ্ড নিয়ে স্পর্শকাতর তথ্য ও নথি সংগ্রহ করেছেন, যাতে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে।
গত কয়েকমাস তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শুনানি চলে। তবে নিজেদেরকে নির্দোষ দাবি করেন ওই দুই সাংবাদিক।
এদিকে মিয়ানমার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা- রয়টার্স।
এক বিবৃতিতে রয়টার্সের প্রেসিডেন্ট ও এডিটর-ইন-চীফ স্টেফান জে. আদলের বলেন, আজ মিয়ানমার, রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন এবং কিয়াও সো ও পৃথিবীর গণমাধ্যমের জন্য দুঃখের দিন। মিথ্যা অভিযোগে এই দুই প্রশংসনীয় সাংবাদিক ইতিমধ্যে প্রায় নয় মাস কারাগারে কাটিয়েছেন। অন্যায় কাজের কোনো প্রমাণ ছাড়াই আজকের রায় সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতার পরিপন্থী। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এই মামলাটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই রায় নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির অধীনে বেসামরিক সরকার ২০১৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর মিয়ানমারে দীর্ঘ মেয়াদে গণতান্ত্রিক সংস্কার কীভাবে স্থগিত হয়েছে তার একটি উদাহরণ।