বিশ্ব নেতা
গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
ফিলিস্তিনের গাজা শহরে গণহত্যা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার মিউনিখ সুরক্ষা সম্মেলন-২০২৪-এর ফাঁকে তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সব সময় গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি গাজায় যা ঘটছে, তা গণহত্যা। সুতরাং, আমরা কখনই এটি সমর্থন করি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের বাঁচার অধিকার রয়েছে এবং তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র রয়েছে। ‘গাজার জনগণের বাঁচার অধিকার রয়েছে। সুতরাং আমাদের উচিত তাদের সহায়তা করা এবং এই আক্রমণ ও যুদ্ধ বন্ধ করা।’
আরও পড়ুন: মিউনিখে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নির্যাতিত ফিলিস্তিনি শিশু, নারী ও জনগণের প্রতি সমর্থন ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে তাদের জন্য কিছু সহায়তা পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ইসরাইলের পরিকল্পিত অভিযানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কখনই এ ধরনের আক্রমণ সমর্থন করে না। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্রে থাকার অধিকার পাওয়া উচিত, এটা পরিষ্কার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৬৭ সালের জাতিসংঘ প্রস্তাবে দুই-রাষ্ট্র (টু-স্টেট) তত্ত্ব রয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করতে হবে।'
আরও পড়ুন: মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে প্রধানমন্ত্রী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নতুন সরকারকে বিশ্ব নেতাদের অভিনন্দন বিএনপির মাথা খারাপ করে দিচ্ছে: হাছান মাহমুদ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকারকে বিশ্ব নেতাদের অভিনন্দন জানানো দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, 'উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা সফরকালে আমি ১৭টি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছি, যদিও আমরা সেখানে মাত্র দুই দিনের জন্য ছিলাম। আমি একই হলে থাকায় কমপক্ষে আরও ১৭ জনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাই সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।’
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অডিটোরিয়ামে উগান্ডার কাম্পালায় অনুষ্ঠিত ১৯তম ন্যাম সম্মেলন ও তৃতীয় দক্ষিণ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: কাম্পালায় ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের সাক্ষাৎ
বিএনপির সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, 'এসব (নতুন সরকারকে বিশ্ব নেতাদের অভিনন্দন) দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে, তারা আরও আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছে।'
হাছান মাহমুদ বলেন, সব দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে প্রার্থীদের ফিরিয়ে না দেওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরও অতীতে দলীয় প্রতীক ছাড়াই এ ধরনের নির্বাচন হয়েছে।
উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় শেষ হওয়া দুই দিনব্যাপী তৃতীয় সাউথ সামিটে যোগদান শেষে মঙ্গলবার দেশে ফেরেন হাছান মাহমুদ।
আরও পড়ুন: বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করলে তাদের আসনে উপ-নির্বাচন হবে: হাছান মাহমুদ
চার দিনের এই সফরে ১৯তম ন্যাম সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৃতীয় দক্ষিণ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব করেন এবং একটি বিবৃতি দেন।
জি-৭৭’র সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা সাউথ সামিট।
প্রায় ১০০টি দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা এই বৈঠকে অংশ নেন।
'লিভিং নো ওয়ান বিহাইন্ড' প্রতিপাদ্য নিয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিবৃতিতে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা ও সহযোগিতা জোরদারে সদস্য দেশগুলো বাণিজ্য, বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং ডিজিটাল অর্থনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে।
টেকসই উন্নয়নের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশসহ সদস্য দেশগুলো গ্লোবাল সাউথে সংহতি, ঐক্য ও পরিপূরক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ন্যাম সামিট: বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্ব নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফিলিস্তিনে চলমান সংঘাতের অবসানের দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনই সময়।
তিনি বলেন, ‘আমি নির্মম হত্যাযজ্ঞের মুখে অসহায় ফিলিস্তিনিদের মর্মান্তিক, অমানবিক অস্তিত্বের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমাদের সকলের এক বিশ্ব হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং সংঘাতের অবসানের দাবি জানানোর সময় এসেছে।’
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ভারত আয়োজিত দ্বিতীয় ভয়েস অব দ্য গ্লোবাল সাউথ সামিট ২০২৩ এ ভাষণ দেওয়ার সময় এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এটি মূলত জাতিগুলোর মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব, যা ইউরোপে চলমান যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনে গণহত্যার দিকে পরিচালিত করেছে।’
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, এই সংঘাতগুলো যুদ্ধরত দেশ এবং জড়িত আন্তর্জাতিক অংশদের মধ্যে সত্যিকারের বিশ্বাস ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা তৈরি করার জরুরি প্রয়োজনের আহ্বান জানায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ব অসহনীয় দারিদ্র্য, অনাকাঙ্ক্ষিত বৈষম্য, অসহনীয় সন্ত্রাসবাদ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর হুমকিতে জর্জরিত।’
তিনি বলেন, গ্লোবাল সাউথের জনগণের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ ও ক্রমবর্ধমান কষ্টের সঙ্গে এখন নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দেখা দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সংকটময় সময়ে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং 'সবার প্রবৃদ্ধি' অর্জনের জন্য 'সবার আস্থা' জোরদার করতে হবে।’
আরও পড়ুন: উদ্বোধন হওয়া ৩ উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল সাউথ আমাদের ভবিষ্যত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত, যদিও এটি প্রায়শই বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জের ঝুঁকিতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘সবার আস্থার ভিত্তিতে আরও ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গঠনে সক্ষম করার জন্য গ্লোবাল সাউথের জন্য আরও সুযোগ ও আওয়াজের অনুমতি দিয়ে এগুলো মোকাবিলা করা দরকার।’
তিনি এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা, বিনামূল্যে আবাসন, কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু অভিযোজন অর্জনে গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি গ্লোবাল সাউথ এবং বিশ্বের উন্নতির জন্য কিছু সুপারিশ করেন। সেগুলো হলো-
প্রথম: শান্তির প্রবক্তা হিসেবে তিনি বিশ্বাস করেন, মানবতার সার্বিক কল্যাণের জন্য বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা সমুন্নত রাখা অত্যাবশ্যক।
‘গ্লোবাল সাউথকে অবশ্যই একতরফা নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট বজায় রাখতে হবে।’
দ্বিতীয়: বৈশ্বিক জনসংখ্যার অর্ধেক হিসেবে নারীরা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রাণবন্ত সমাজ গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
‘দীর্ঘসময় ধরে নারী নেত্রী হিসেবে আমি নিশ্চিতভাবে জানি, একটি উজ্জ্বল ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যতের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন একটি কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা।’
আরও পড়ুন: আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নতমানের চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তৃতীয়: বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা অত্যাবশ্যক।
‘গ্লোবাল সাউথে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং প্রাসঙ্গিক প্রযুক্তি হস্তান্তর অপরিহার্য।’
চতুর্থ: প্রধান জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে গ্লোবাল সাউথের উচিৎ সবার উন্নত জীবন প্রদান এবং আয়োজক ও স্বদেশ উভয় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অভিবাসনকে সহজতর করা।
পঞ্চম: কোভিড-১৯ এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশে সংঘাতের ফলে স্বল্পোন্নত দেশগুলো বিভিন্ন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
‘আমি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর গ্র্যাজুয়েশনের পরেও যথাযথ সময়ের জন্য শুল্ক, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
পরিশেষে, তিনি বৈশ্বিক মানব উন্নয়নে দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ট্রায়াঙ্গুলার কোঅপারেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
‘আমি উন্নয়ন অংশীদার, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অংশীজনদের আরো উন্নত ভবিষ্যতের জন্য গ্লোবাল সাউথকে উদারভাবে সমর্থন করার আহ্বান জানাই।’
ভারত শুক্রবার ভার্চুয়াল ফরম্যাটে সেকেন্ড ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটের আয়োজন করছে, যা এই বছরের জানুয়ারির পর দ্বিতীয়বার হচ্ছে।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় গ্লোবাল সাউথ সামিটে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
উন্নত ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ-অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে যুদ্ধ, সংঘাত ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'শান্তি ও অগ্রগতির জন্য মানুষের সংযোগই প্রাণশক্তি। ভবিষ্যতের সংকটের জন্য আমাদের আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের অবশ্যই দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ায় আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে জিজিএফ কনফারেন্স ভেন্যুতে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এর উদ্বোধনী অধিবেশনের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েনের আমন্ত্রণে এই ফোরামে অংশ নিচ্ছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গ্লোবাল গেটওয়েকে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি বড় সংযোগকারী হিসেবে দেখতে চায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অংশীদার দেশগুলোর ৪০ জনেরও বেশি উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা ২৫-২৬ অক্টোবরের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: উচ্চ পর্যায়ের সফরে ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রী
তারা অবকাঠামো খাতে বৈশ্বিক বিনিয়োগ, সরকারি ও বেসরকারি খাতের চ্যালেঞ্জ, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে ইইউ বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন এবং হাই-টেক পার্কে সুযোগ-সুবিধা অনুসন্ধানের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় বিনিয়োগ পরিবেশ দেয়। ‘আমি ইইউ বিনিয়োগকারীদের আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোর সুবিধাগুলো পরিদর্শন করার জন্য আমন্ত্রণ জানাই। নিরাপদ কাজ ও বহুমাত্রিক অর্থনীতি নিয়ে আমাদের আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’
১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের ৩০০ কোটি গ্রাহকের বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক করিডোরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে সড়ক, রেল ও বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ। দেশটি নেপাল, ভুটান ও উত্তর-পূর্ব ভারতের স্থল-সংযুক্ত অঞ্চলগুলোতে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশের প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলো প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, 'ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশ ও ইইউয়ের মধ্যে কানেক্টিভিটি একটি অভিন্ন বাধ্যবাধকতা।’
তিনি বলেন, ইইউ বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বাণিজ্য, উন্নয়ন ও মানবিক অংশীদার। ‘নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের গতিশীলতার ক্ষেত্রে আমাদের ফলপ্রসূ সহযোগিতা রয়েছে। ইইউয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ ও অঙ্গীকার।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি ইউরো ঋণের জন্য আমরা ইআইবির সঙ্গে একটি যুগান্তকারী চুক্তি সই করেছি।’
বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে তিনি ইইউ'র সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরও জোরদারে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশে (এলডিসি) উত্তরণের জন্য বাণিজ্য অগ্রাধিকার অব্যাহত রাখার জন্য ইইউ'র প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ১৫ বছরেরও কম সময়ে ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। চরম দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে কাজ করবে।
তিনি বলেন, তার সরকার খাদ্য নিরাপত্তা, সর্বজনীন স্কুল ভর্তি, কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ পানি ও পয়োনিষ্কাশন, বিনামূল্যে আবাসন, গ্রামীণ যোগাযোগ, দুর্যোগ মোকাবিলা, জলবায়ু অভিযোজন, শতভাগ বিদ্যুৎ পরিষেবা নিশ্চিত, দেশব্যাপী ইন্টারনেট, শিল্প প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সর্বোপরি নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা জলবায়ু ঝুঁকি থেকে সহনশীলতা ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, পরিবহন নেটওয়ার্ক, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, সবুজ জ্বালানি, ডিজিটাল রূপান্তর, গবেষণা ও উদ্ভাবনে গ্লোবাল গেটওয়ের মনোযোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার প্রশংসা করেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য ইইউ'র অব্যাহত বাণিজ্য অগ্রাধিকার চাই।’
তিনি বলেন, গ্রিন হাইড্রোজেনের প্রসারে বাংলাদেশ ইইউতে যোগ দিতে ইচ্ছুক। ‘সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহারে ইইউয়ের দক্ষতা থেকে আমরা উপকৃত হতে পারি। আমাদের কৃষি উৎপাদন সংরক্ষণের জন্য কোল্ড চেইন নেটওয়ার্কগুলোতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম শিল্প উৎপাদনে বহুমুখীকরণে ইইউ'র প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে পারে। 'ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি নিয়ে আমাদের আসন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আমরা অংশীদার খুঁজছিন।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠী ইইউয়ের দক্ষতা ও প্রতিভা অংশীদারিত্ব কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্রস্তুত। আমরা বিশ্বাস করি, গ্লোবাল গেটওয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের 'স্মার্ট বাংলাদেশ' রূপকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।”
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ইইউ'র ৪০০ কোটি ইউরোর চুক্তি সই
যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ত্র কেনার অর্থ শিশুদের কল্যাণে সঞ্চয় করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীর কল্যাণের স্বার্থে চলমান যুদ্ধ ও অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধে এগিয়ে আসতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মঙ্গলবার(১৭ অক্টোবর) ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতালে বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা জনগণের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
বুধবার(১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ এর উদ্বোধনী ও শেখ রাসেল পদক-২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডির অন্যতম শহীদ ছিলেন রাসেল।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে শিশু ও নারীরা। ইসরায়েল এখন ফিলিস্তিনের ওপর হামলা শুরু করেছে। মঙ্গলবার একটি হাসপাতালে বোমা হামলায় অনেক শিশু নিহত হয়েছে। সেখানে শিশুদের রক্তাক্ত ছবি দেখা গেছে। ইসরায়েলেও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা যুদ্ধে বাবা-মা ও সন্তানদের হারানো মানুষের বেদনা ও কষ্ট বুঝতে পারেন। কারণ ১৯৭৫ সালের রক্তপাতের পর বিদেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করতে হয়েছে দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাই আমরা যুদ্ধ চাই না। আমি আহ্বান জানাচ্ছি যুদ্ধ বন্ধের।’
তিনি আরও বলেন, অস্ত্র উৎপাদন ও প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যয় করা হয় তা খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিশ্বের শিশুদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতে হবে। ‘এটা আমাদের দাবি। আমিও এই দাবি করছি।’
বাংলাদেশ সবসময় শান্তির জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা শান্তি চাই। কারণ, শান্তি উন্নয়ন নিয়ে আসে এবং যুদ্ধ ধ্বংস ডেকে আনে। আমরা ধ্বংস চাই না, বরং উন্নয়ন ও শান্তি চাই।’
শিশুদের কল্যাণ ও সাফল্যে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের উন্নয়নে তারা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সুতরাং শিশু মৃত্যুহার ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসের পাশাপাশি তাদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিশুরা যাতে শৈশব থেকেই শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চায় সম্পৃক্ত হয়ে সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমি বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছি। আমরা দেশের শান্তি ও অগ্রগতি চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাবা-মা ও প্রিয়জনদের অনুগত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'শিক্ষাই একজন মানুষের প্রধান শক্তি।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ও তার ছোট বোন রেহানা তাদের সন্তানদের বলেছিলেন যে তারা তাদের জন্য অর্থ ও সম্পদের মতো কিছুই রেখে যেতে পারবেন না এবং তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেছিলেন। তারা (তাদের সন্তানরা) প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা গ্রহণ করেছে এবং বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, এখন তাদের সন্তানরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়ন ও সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির মতো দেশের উন্নয়নে পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘ওরা সামনে আসে না। তারা নেপথ্যে থেকে দেশ ও দেশের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। তারা দেশের কল্যাণে আমাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: জন্মদিনে শেখ রাসেলকে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক থেকে দূরে থেকে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দেশকে এগিয়ে নিতে শিশুদের উচ্চ আকাঙ্ক্ষী হতে আহ্বান জানান।
২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকারের ভিশনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশু-কিশোররা স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক হবে এবং সে সময় দেশকে নেতৃত্ব দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি স্কুলে একটি করে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদউদ্দিন আহমেদ রতন, শিশু বক্তা আমিরা নায়ের চৌধুরী বক্তব্য দেন।
পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা ভারতীয় কর্নেল (অব.) অশোক কুমার তারার একটি ভিডিও বার্তা, শেখ রাসেলের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি এবং শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উপলক্ষে একটি ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট কার্ড বিনিময়ের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং আইসিটি বিভাগের আরও কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন।
রাসেলের শৈশব নিয়ে লেখা 'শ্রাবণের আবরণ শেখ রাসেল' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
'শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পালিত হচ্ছে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩।
রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ রাসেল পদক-২০২৩ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ পদক-২০২৩ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সমাপনী পুরস্কার বিতরণ করেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে) এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঢাকা, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ পদক-২০২৩ গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধ করুন, নারী ও শিশুদের বাঁচান: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধ করুন, নারী ও শিশুদের বাঁচান: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সর্বশেষ যুদ্ধসহ সব ধরনের যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এসব যুদ্ধ চাই না। একজন নারী রাজনীতিবিদ বা নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবে আমি বিশ্ব নেতাদের এই যুদ্ধগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানাবো।’
তিনি বলেন, ‘অস্ত্র ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন, কারণ এগুলো নারী ও শিশুদের জন্য সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে স্ট্যান্ডার্ড এভিয়েশন নেভিগেশন সার্ভিসের জন্য আইসিএওর সহায়তা কামনা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডিতে নবনির্মিত ১২ তলা জয়িতা টাওয়ার উদ্বোধন শেষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, এই মুহূর্তে সারাবিশ্বে সবাই যুদ্ধের হাহাকার দেখছে।
তিনি বলেন, ‘আগে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, এখন ইসরাইল ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়েছে এবং ইসরায়েল ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনের অর্ধেকেরও বেশি দখল করে নিয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেছেন যে তার পরিবারের সদস্যদের ও তার যুদ্ধ ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: গণভবনে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের শিল্পী ও কলাকুশলীদের নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা দখলদার বাহিনীর হাতে বন্দী ছিলাম এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর আমরা শরণার্থী জীবনের নৃশংসতা দেখেছি।’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি সচিব নাজমা মোবারেক এবং জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজ খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে গিয়ে জয়িতা টাওয়ারের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন এবং জয়িতা টাওয়ারে জামদানি গ্যালারি ও জয়িতা মার্কেট প্লেসের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নেওয়ায় বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভালো ধারণা পেয়েছেন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত সপ্তাহে জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ায় বিশ্ব নেতারা তার নেতৃত্বে অর্জিত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের একটি ভালো চিত্র পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আমার সরকারের নেতৃত্বে 'ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ' বৈঠকে অংশ নিয়ে আমি বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে পেরেছি।’
মঙ্গলবার স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ২২-২৪ আগস্ট ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ফলাফল নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
২২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস জোটের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গে যান।
সম্মেলনে আয়োজক প্রেসিডেন্ট রামাফোসা ছাড়াও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা উপস্থিত ছিলেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনে ভাষণ দেন।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে বিদেশি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন: মোমেন
শেখ হাসিনা বলেন, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বিনির্মাণে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করেছেন।
তিনি সার্বজনীন শাসনের নামে তাদের ওপর আরোপিত বৈষম্য প্রত্যাখ্যান করার জন্য দক্ষিণের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণের দেশগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া কৃত্রিম সিদ্ধান্তের কারণে আমরা আর কষ্ট পেতে রাজি নই।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘এই সম্মেলনের মাধ্যমে পারস্পরিক ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি, টেকসই উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বহুপক্ষীয়তা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে। … এবং ব্রিকস জোট এই ক্ষেত্রে একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যথাযথভাবে এর ভূমিকা পালন করবে।’
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকা সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন মঙ্গলবার
চট্টগ্রামে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ মায়ের্স্ক গ্রুপের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করলো ডাইনোসর!
জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনা বাড়াতে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) নির্মিত একটি শর্টফিল্মে বিশ্ব নেতাদের এ সম্পর্কে ‘সতর্ক’ করেছে বিলুপ্ত প্রাণী ডাইনোসর। জাতিসংঘের সদরদপ্তরে বিশ্ব নেতা, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সামনে এ শর্টফিল্মটি প্রদর্শন করা হয়।
ইউএনডিপি’র ‘ডোন্ট চুজ এক্সটিংশন’ কর্মসূচির মূল বিষয় হিসেবে নির্মিত শর্টফিল্মটি নিয়ে জাতিসংঘও টুইট করেছে।
জাতিসংঘের সাধারণ এসেম্বেলি হলে বিশ্ব নেতা, কূটনীতিক ও বিশিষ্টদের উদ্দেশ্যে জলবায়ু পরিবর্তন সংকট নিয়ে ডাইনোসর বলেছে, ‘এখনই সময় মানব জাতি অজুহাত বন্ধ করে পরিবর্তন করতে শুরু করো।’
৭০ মিলিয়ন বছর আগে ডাইনোসরের বিলুপ্তি নিয়ে জনপ্রিয় তত্ত্বের কথা উল্লেখ করে সবাইকে সতর্ক করে ডাইনোসর বলে, ‘অন্তত আমাদের গ্রহ ছিল। তোমাদের অজুহাত কী?’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বে প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘের সাধারণ অ্যাসেম্বেলির ভেতরে কম্পিউটার জেনারেটেড ইমেজারি (সিজিআই) ফিচার ব্যবহার করে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রে বিভিন্ন ভাষায় বিশ্বের অনেক তারকা এ ডাইনোসরে কণ্ঠ দিয়েছেন।
ডাইনোসরটি ভর্তুকির মাধ্যমে কীভাবে জীবাশ্ম জ্বালানিতে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তা কীভাবে অযৌক্তিক ও অবৈধ সে সম্পর্কে আলোকপাত করে।
ডাইনোসরটি প্রশ্ন রেখে বলে, ‘এই টাকা দিয়ে বিকল্প কী করা যায় সে সম্পর্কে চিন্তা করো। বিশ্বব্যাপী মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। তোমাদের কী মনে হয় না স্বজাতিকে শেষ করে দেয়ার চেয়ে তাদের সাহায্য করা বেশি অর্থপূর্ণ?’
‘ডোন্ট চুজ এক্সটিংশন’ শর্টফিল্মটি অ্যাক্টিভিস্টা লস অ্যাঞ্জেলস, ডেভিড লিট, ফ্রেমস্টোর এর সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নির্মাণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর
টিকা প্রদানে বিশ্ব নেতাদের উচিত সমতার উদাহরণ সৃষ্টি করা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে ধনী দেশ ও গরীব দেশগুলোর মধ্যে সমতার সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, 'করোনার অতিমারিতে আক্রান্ত বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি দরিদ্র দেশগুলোও এই মহামারিতে বিপর্যস্ত। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে দরিদ্র দেশগুলোও এই অতিমারির কারণে আরও দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিশ্ব নেতাদের উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি দরিদ্র দেশগুলোর দিকেও সমানভাবে উদ্যোগী হতে হবে।’
আরও পড়ুন: কোভিড টিকা: দ্বিতীয় ডোজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু
বুধবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে 'বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস' উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি মি. বার্ধণ সিং রানার উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, 'বিশ্বব্যাপী আজ স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো 'সকলের জন্য সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর বিশ্ব গড়ি'। এই দিবসের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সকলের সাথে সমতা ও ন্যায্যতা। তাই এই ভাইরাস গোটা বিশ্ব থেকে একসাথে, এক হয়ে বিদায় করতে হলে করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রদানে ধনী দেশ ও গরীব দেশের মধ্যে সমতা ঘটাতে হবে। তা না করে কেবল অর্থের জোরে ধনী-গরিব দেশগুলোতে টিকা প্রদানে বৈষম্য করা হলে এই ভাইরাস বিশ্ব থেকে বিদায় করা সম্ভব হবে না।'
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না: মন্ত্রী
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া করোনা প্রতিরোধে সরকারের ১৮টি নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলার ওপর জোর দেন এবং উপস্থিত জেলা, উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনা দেন।
এছাড়া, করোনায় করণীয় বিষয়াদি তুলে ধরে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশিদ আলম।
আরও পড়ুন: হাসপাতালের শয্যা বাড়ানোর বিকল্প নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সেই সাথে দেশব্যাপী করোনা অতিমারিতেও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে এবং আগামীতে আরও কী কী কাজ করলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের উপকার হতে পারে সে বিষয়টি তুলে ধরে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর।
সভায় সূচনা বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেছা বেগম। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সিডিসি’র লাইন ডিরেক্টর নাজমুল ইসলাম।
দেশের নানা আয়োজনে ১৭-২৬ মার্চ যোগ দেবেন বিশ্ব নেতারা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের নিয়ে এক বড় উৎসব পালনের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ।