বৈদেশিক-সম্পর্ক
জাহাজ শিল্প ও বন্দর অবকাঠামোয় সিঙ্গাপুরকে বিনিয়োগের আহ্বান নৌউপদেষ্টার
বাংলাদেশের জাহাজ শিল্পসহ বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে সিঙ্গাপুরকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত সিঙ্গাপুরের ভারপ্রাপ্ত পরিবহন মন্ত্রী মি. জেফ্রি সিও’র সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জাহাজ শিল্প খাতে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে এবং সকল প্রক্রিয়া এখন স্বচ্ছতার সাথে উন্মুক্ত মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের সম্ভাবনাময় জাহাজ শিল্প খাতসহ বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে সিঙ্গাপুর বিনিয়োগ করতে পারে।
বৈঠকে ড. এম সাখাওয়াত হোসেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে সিঙ্গাপুরের পরিবহন মন্ত্রীকে অবহিত করেন এবং বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা বিনিময় ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় সিঙ্গাপুরের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বলেন, বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনায় সিঙ্গাপুরের চমৎকার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দর, বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে শিপইয়ার্ড নির্মাণ, মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নসহ গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মেগা সম্প্রসারণ প্রকল্প বে টার্মিনাল নির্মাণে বাংলাদেশকে ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই টার্মিনালটি নির্মিত হলে বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
‘বন্দরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে অনেকাংশে কমে আসবে আমদানি ও রপ্তানি ব্যয়। উপদেষ্টা বে টার্মিনালের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে পিএসএ সিঙ্গাপুরের সাথে আসন্ন অক্টোবর মাসের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন,’ যোগ করেন উপদেষ্টা।
তিনি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর বা বাংলাদেশের উপর্যুক্ত যে কোনো স্থানে একটি আন্তর্জাতিক মানের শিপইয়ার্ড/ডকইয়ার্ড নির্মাণে সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ জানান। সিঙ্গাপুরের পরিবহন মন্ত্রী এ বিষয়ে উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেন।
বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিগুলো থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ ও মেধাবী মেরিনারদের সিঙ্গাপুরে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য উপদেষ্টা সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ করেন।
এছাড়া বাংলাদেশি নাবিকদের জন্য সিঙ্গাপুর সরকার কর্তৃক ট্রানজিট ভিসা প্রদানের আহ্বান জানান। সিঙ্গাপুরের পরিবহন মন্ত্রী বাংলাদেশি নাবিকদের জন্য দ্রুতই ট্রানজিট বা ওয়ার্কিং ভিসা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
বাংলাদেশ ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের ক্যাটাগরি ‘সি’-এর সদস্য হিসেবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন কামনা করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
১৫৩ দিন আগে
ড. ইউনূসকে আন্তঃধর্মীয় সংলাপে আমন্ত্রণ আর্চবিশপের
পোপের রাষ্ট্রদূত (অ্যাপোস্টলিক নানসিও) আর্চবিশপ কেভিন এস. র্যান্ডাল আগামী ৬–১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় এক আন্তধর্মীয় সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আর্চবিশপ র্যান্ডাল। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে জানা যায়, তিনি বলেন এই সংলাপটি দ্বিমাত্রিক—একদিকে একাডেমিক এবং অন্যদিকে ব্যবহারিক আলোচনার মাধ্যমে বৃহত্তর জনগণের কাছে পৌঁছানোই এর লক্ষ্য।
তিনি বলেন, এই সংলাপের মূল উদ্দেশ্য হলো সহনশীলতা, সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বের সংস্কৃতি প্রচার করা।
আর্চবিশপ র্যান্ডাল আগামী সেপ্টেম্বর মাসে রোমে ‘ফ্রাতেল্লি তুত্তি’ ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্যও প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস তার আমন্ত্রণের জন্য আর্চবিশপকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বড় আয়োজন। আমি আপনাদের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।’
এ সময় তিনি নতুন পোপের প্রতি শুভকামনাও জানান।
১৫৩ দিন আগে
ভৌগলিক নয়, অগ্রগতির দৃষ্টিতে বাংলাদেশকে দেখার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশকে কেবল একটি ‘ভৌগোলিক সীমানা’ হিসেবে না দেখে বরং অগ্রগতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ভৌগলিক সীমানার চেয়ে বৃহত্তর।
সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের নবনিযুক্ত দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান বিষয়ক নতুন বিভাগীয় পরিচালক জ্যাঁ পেসমে। সাক্ষাতকালে বিশ্বব্যাংকের প্রতি এই আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হলে, পুরো দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল সমৃদ্ধ হবে। যদি আমরা নিজেদের বিচ্ছিন্ন করি, তবে আমরা অগ্রগতি করছি না। আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সুবিধা এবং পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। আমাদের একটি সমুদ্র আছে। এটি আমাদের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন জুট। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক খাতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচির জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে সাধুবাদও জানান তিনি।
আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতি নিজের গভীর ভালোবাসার কথা জানান জুট। তিনি ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে তার দায়িত্ব পালনের স্মৃতিচারণও করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন সর্বোচ্চ অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, আশা রাষ্ট্রদূত মাসদুপুইয়ের
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে জুট বলেন, ‘আপনার এবং আপনার চমৎকার টিমকে ভালো কাজের জন্য সাধুবাদ।’
এ সময় বিশেষ করে আর্থিক খাতের অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং কিছু বিষয় মোকাবিলায় সরকারের প্রচেষ্টার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই যাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং বাংলাদেশের মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় অংশীদার হতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
এ ছাড়াও বৈঠকে গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জুট। একে তিনি ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত সবার জন্য একটি অত্যন্ত আবেগঘন মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেন।
জুটের সমর্থন ও প্রশংসার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন দেশের অবস্থা ছিল একটি ধ্বংসস্তূপের মতো, যেন ভূমিকম্প-পরবর্তী এলাকা। আমাদের অভিজ্ঞতা না থাকার পরও সব উন্নয়ন অংশীদার আমাদের সমর্থন করেছে। এটি আমাদের অনেক সাহায্য করেছে; আমাদের আত্মবিশ্বাসী করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস গত জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে তরুণদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘তরুণরা এই জাতিকে একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, গত জুলাইয়ে আমাদের তরুণরা যা করেছে তা ঐতিহাসিক। বিশেষ করে আমাদের মেয়েরা এবং নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা আজ জুলাই নারী দিবস পালন করছি, তাদের ত্যাগ যেন ব্যর্থ না হয়। তরুণরাই আমাদের দেশের মূল কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের উচিত তাদের দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বেশিরভাগ দেশেই তরুণদের অভাব রয়েছে। তাই আমরা তাদের বলেছি, তাদের কারখানাগুলো এখানে নিয়ে আসতে। আমরা শিল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করব যাতে এটি একটি উৎপাদনকেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
আরও পড়ুন: নেপাল-বাংলাদেশের মধ্যে দৃড় সম্পর্ক গড়ে ওঠার আশাবাদ
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নারীর ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমরা আপনাকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখব। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশে মেয়েদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি কর্মসূচি চালু হয়েছিল যা অন্যান্য দেশেও অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।
তিনি জানান, গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছরেও একইরকম সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য দেন।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটিতে নতুন পরিচালন ব্যবস্থা চালুর পর কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের লক্ষ্য এটি আরও কার্যকর করা।
তিনি আরও বলেন, আমরা ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে নিট বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে (এফডিআই) উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি লক্ষ করেছি, যা মূলত কোম্পানিগুলোর অভ্যন্তরীণ ঋণ ও শক্তিশালী ইকুইটি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে হয়েছে।
১৫৩ দিন আগে
বাংলাদেশের নির্বাচন সর্বোচ্চ অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, আশা রাষ্ট্রদূত মাসদুপুইয়ের
‘মুক্ত ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনকে অন্তর্ভুক্তিমূলক হিসেবে দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন খুব ভালোভাবে কাজ করবে। এটাই যে তাদের উদ্দেশ্য তা পরিষ্কার। তাই আশা করছি, নির্বাচনটি যতটা সম্ভব অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।’
তবে নির্বাচন কতটা অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, তা প্রস্তুতির ধরন ও প্রয়োগের ওপর নির্ভর করছে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
ইউএনবির সংবাদদাতাসহ গুটিকয়েক সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘অবশ্যই আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে। যতক্ষণ না সেই দল নিজেদের সংস্কার করছে, ক্ষমা চাইছে এবং তাদের কিছু নেতার বিচার হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত যে তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া কঠিন সেটি আমরা বুঝি।’
তার মতে, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন মানে শুধু বড় দল নয়, স্বতন্ত্র ও ছোট দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। যত বেশি দল অংশ নেবে, নির্বাচন তত বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে বলে মনে করেন তিনি।
চলতি বছরের মে মাসে অন্তর্বর্তী সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় এক গেজেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যতদিন না আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দলটির নেতাদের বিচার সম্পন্ন করছে, ততদিন এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেও জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’
রাষ্ট্রদূত বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘মুক্ত ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছে। এটি তাদের অঙ্গীকার। ফ্রান্স এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে। সম্ভব হলে, আমরা ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল পাঠিয়েও সহায়তা করতে চাই।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে—এমন ইঙ্গিত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঢাকায় ফরাসি দূতাবাসে রবিবার রাতে অনুষ্ঠিত ফ্রান্সের জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই বলেন, গণতন্ত্র মানে স্বাধীনতা, সমতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ ও অন্তর্ভুক্তি।
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বিচক্ষণ ও অসাধারণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাতে অনেক বাধা আসবে। তবে সাহস ও দৃঢ় প্রত্যয় থাকলে বাধাগুলো কাটিয়ে ওঠা যাবে।’
এয়ারবাস বিষয়ে আলোচনা চলছে
এয়ারবাস ক্রয়সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আলোচনা এখনো চলছে। এটি বন্ধ হয়নি।’
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বোয়িং বিমান কেনার বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছে বাংলাদেশ, যাতে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো যায় এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক (আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর) এড়ানো সম্ভব হয়।
রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য, ‘আমরা চাই সবাই সমান সুযোগ পাক। আমাদের মনে হয়, বিমানের বহরে এয়ারবাস ও বোয়িং—উভয় ধরনের উড়োজাহাজ থাকলে যাত্রীদের জন্য তা সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ সেবা নিশ্চিত করবে।’
গত জুনে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এয়ারবাসের নির্বাহী সহ-সভাপতি ওয়াউটার ভ্যান ওয়ার্স। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা একটি অগ্রাধিকারমূলক দেশ হিসেবে দেখছি।’
আরও পড়ুন: শুল্কনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা আশাব্যঞ্জক: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভ্যান ওয়ার্স আরও জানান, বছরে ৮০০টি বিমান সরবরাহ করা এয়ারবাস শুধু যাত্রীবাহী নয়, হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান তৈরিতেও দক্ষ। বাংলাদেশ যদি বিমানের বহরে এয়ারবাস যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে রপ্তানি ঋণ সংস্থা (ইসিএ) থেকে ৮৫ শতাংশ অর্থায়ন পাওয়া যেতে পারে।
সম্পর্ক ইতিবাচক রয়েছে
রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কারের প্রতি ফ্রান্সের সমর্থন রয়েছে। সরকারের সঙ্গে আরও গভীরভাবে যুক্ত হতে আমরা আগ্রহী।
তিনি বলেন, ‘অনেক প্রকল্প পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তাই সেগুলোর জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। তবে আমরা চাই, সেগুলো যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়।’
‘আমাদের দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্ক খুব ভালো, সবসময়ই ইতিবাচক। আমরা নানা খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি এবং সেটা আরও বাড়াতে চাই।’
তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণে স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌম সক্ষমতা বাড়াতে মহাকাশ প্রযুক্তি নিয়ে নতুন সহযোগিতা শুরু করছে ফ্রান্স। উন্নয়ন ও কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের ক্ষেত্রেও সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
১৫৩ দিন আগে
শুল্কনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা আশাব্যঞ্জক: বাণিজ্য উপদেষ্টা
শুল্কনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা আশাব্যঞ্জক বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকালে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে রেসিপ্রোকল ট্যারিফ অ্যাগ্রিমেন্টের খসড়া বিষয়ক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমরা গতকাল (রবিবার) যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেছি আমাদের দ্বিতীয় রাউন্ডের আলোচনা শেষ করে। আলোচনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আজ কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শেষ করে আবার প্রস্তুতি নিচ্ছি তৃতীয় রাউন্ডের আলোচনার জন্য। আমরা চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে যাব। আমরা আশা করছি একটা ভালো আউটকাম আসবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের আলোচনাগুলো আশাব্যঞ্জক হয়েছে। আলোচনাটা যথেষ্ট এনগেজিং ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও আমার বৈঠক হয়েছে। দফাওয়ারি আমাদের সঙ্গে যারা নেগোশিয়েশনে যুক্ত ছিলেন তাদের ৩৫-৪০ জনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।’
পড়ুন: নেপাল-বাংলাদেশের মধ্যে দৃড় সম্পর্ক গড়ে ওঠার আশাবাদ
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সেখান থেকে বেশকিছু পরামর্শ পেয়েছি। আমরা আশা করছি, এই আলোচনার মাধ্যমে রপ্তানির ওপর আমাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি যৌক্তিক শুল্কহার নির্ধারণ করবে।’
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা করি। ২০১৫ সাল থেকে আমরা শুল্ক পরিশোধ করে ব্যবসা করছি। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব সক্ষমতার ভিত্তিতে এই ব্যবসা করে থাকে। যদি তুলনামূলকভাবে আমাদের সঙ্গে কোনো বৈষম্যমূলক অবস্থান তৈরি না হয় তাহলে আমাদের ব্যবসায়ীরা সফলতার সঙ্গে ব্যবসা করে যাবে।’
যৌক্তিক শুল্কহারের কথা বলা হচ্ছে। আসলে কত শতাংশ শুল্ককে যৌক্তিক মনে করছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শূন্য।’
১৫৪ দিন আগে
নেপাল-বাংলাদেশের মধ্যে দৃড় সম্পর্ক গড়ে ওঠার আশাবাদ
বাংলাদেশ ও নেপাল বিদ্যমান বিভিন্ন খাতে, বিশেষ করে ব্যবসা ও বাণিজ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে আলোচনা ও মতবিনিময় করেছে। এ সময় উভয় পক্ষ দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শফিকুর রহমান দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আরজু রানা দেওবার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময়ে দুদেশের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) নেপালে বাংলাদেশের দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকট-ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে একটি দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে ওঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, টেক্সটাইলস, সরকারি ও বেসরকারি খাতে শিক্ষা ও গবেষণায় সহযোগিতা, পর্যটন উন্নয়ন, জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, শিক্ষাবিদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিসহ সহযোগিতার নতুন খাত অনুসন্ধান করছে দুই দেশ।
রাষ্ট্রদূত সহযোগিতার ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিতে আন্তরিকভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন এবং মন্ত্রীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। জবাবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং তার মেয়াদের সাফল্য কামনা করেন।
১৫৪ দিন আগে
‘বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট বলেছেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের একটি ‘টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এছাড়াও প্রতি বছর কর্মসংস্থানের বাজারে প্রবেশকারী ২০ লাখ তরুণের জন্য আরও উন্নত কর্মসংস্থান তৈরিতে সহায়তা করবে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর শনিবার(১২ জুলাই) প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন জুট। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণের সঙ্গে আমার তৈরি বন্ধুত্বের খুব মধুর স্মৃতি রয়েছে। বাংলাদেশি জনগণের সহনশীলতা, সৃজনশীলতা এবং তাদের সন্তানদের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য তাদের দৃঢ় সংকল্প দেখে আমি সর্বদা মুগ্ধ হয়েছি।’
বিশ্বব্যাংকের মতে, তার চার দিনের সরকারি সফরে জুট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, কান্ট্রি ডিরেক্টরের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে দশ বছরে যে রূপান্তরমূলক পরিবর্তনগুলো অর্জিত হয়েছে—তা তিনি সরাসরি দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
পড়ুন: জরুরি সংস্কারের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে ফিরতে পারে বাংলাদেশ: বিশ্ব ব্যাংক
চলতি জুলাইয়ের ১ তারিখে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের জন্য বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন জুট। এর আগে তিনি ২০১৩-২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপালের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ডাচ নাগরিক জুট ১৯৯৯ সালে বিশ্বব্যাংকে যোগ দেন এবং ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিনি সর্বশেষ ব্রাজিলে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি অপারেশনাল পলিসি ও কান্ট্রি সার্ভিসেস (ওপিসিএস) ভাইস প্রেসিডেন্সির অধীনে কৌশল, ফলাফল, ঝুঁকি ও এবং শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ছিলেন।
জুট তুরস্ক, কোমোরোস, ইরিত্রিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, সেশেলস ও সোমালিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদানকারী প্রথম দিকের উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে অন্যতম ছিল বিশ্বব্যাংক।
তখন থেকে, বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশকে প্রায় ৪৬০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার বেশিরভাগই অনুদান বা স্বল্প সুদের ঋণ হিসেবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) সহায়তায় পরিচালিত কর্মসূচিগুলোর মধ্যে একটি বৃহত্তম কর্মসূচি চলমান।
১৫৬ দিন আগে
শুল্ক আলোচনা: আগস্টের আগেই ইতিবাচক ফলের আশাবাদ ঢাকার
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিনদিনব্যাপী দ্বিতীয় দফা শুল্ক আলোচনা শেষে বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হওয়ায় বাংলাদেশের আশা, ১ আগস্টের নির্ধারিত সময়ের আগেই একটি ইতিবাচক ফল অর্জন সম্ভব হবে।
শনিবার (১২ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘কিছু বিষয় এখনও অমীমাংসিত থাকলেও আলোচনায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে।’
আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র সব বাংলাদেশি পণ্যে অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
তিনি জানান, উভয় পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যায়ে আলোচনা চলবে এবং দুই দেশের প্রতিনিধিরা আবারও বৈঠকে বসবেন। আলোচনা সরাসরি ও ভার্চুয়ালি— উভয় মাধ্যমেই হতে পারে। তারিখ ও সময় শিগগিরই নির্ধারণ করা হবে।
প্রয়োজনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, বাণিজ্য সচিব ও অতিরিক্ত সচিব আবারও যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন বলে জানান আজাদ।
তিনদিনের আলোচনা শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই একটি ইতিবাচক সমঝোতায় পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফাইজ আহমাদ তায়েব ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শুল্ক আলোচনা: বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও অগ্রগতির দেখা নেই
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও কপিরাইট সংক্রান্ত সংস্থার কর্মকর্তারাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনার সমন্বয় করে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাস। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয় (ইউএসটিআর) ৯–১১ জুলাই পারস্পরিক শুল্ক চুক্তি নিয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনার জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়।
গত ৭ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৪টি দেশের নেতাদের চিঠি পাঠান, যেখানে বাংলাদেশ অন্যতম।
তিনি চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেন, ‘আপনার দেশের বাজার আমাদের জন্য উন্মুক্ত করলে এবং শুল্ক ও অশুল্ক বাধা তুলে নিলে, আমরা এই চিঠিতে উল্লিখিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক হার পুনর্বিবেচনা করতে পারি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে ঘোষিত এই শুল্কহার বৃদ্ধি বা হ্রাস— উভয়ই হতে পারে। তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা চিঠিতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কখনোই আপনাকে হতাশ করবে না।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে ৩৫ শতাংশ হার এখনও যথেষ্ট নয়। তবে আপনি যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করেন, তাহলে কোনো শুল্কই থাকবে না। বরং দ্রুত অনুমোদন পেতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’
১৫৬ দিন আগে
জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত সন্দেহে বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তারে ঢাকার উদ্বেগ, কুয়ালামপুরের সঙ্গে সমন্বয়ের আহ্বান
সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কুয়ালালামপুরে অবস্থানরত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। শুক্রবার (১১ জুলাই) তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি মালয়েশিয়ার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ তদন্তে বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ার সঙ্গে কাজ করবে।
কুয়ালালামপুরে ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের ফাঁকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাজী মোহাম্মদ বিন হাজী হাসানের সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের বিষয়ে যথাযথ তদন্তে সরকার আন্তরিক এবং এই ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চায় ঢাকা।
বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা সহজতর করতে ঢাকাকে আশ্বস্ত করেছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামির সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তারা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
পড়ুন: শুল্ক আলোচনা: বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও অগ্রগতির দেখা নেই
উভয় পক্ষই বাংলাদেশে চলমান সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, এলডিসি স্নাতকোত্তর সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ মিশন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিথা হেরাথ এবং কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের উপমন্ত্রী এবং প্রতিনিধিদলের প্রধান পার্ক ইউনজুর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এসময় তারা দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ ২০০৬ সালে এআরএফ’র সদস্য হয়, যা নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে প্রতিষ্ঠিত একটি ফোরাম। এটি ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য গঠিত হয়েছিল। সংস্থাটিতে বৃহত্তর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত।
বর্তমানে, বাংলাদেশ এআরএফ-এর দুটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র, ‘সন্ত্রাসবাদ দমন এবং আন্তঃজাতিক অপরাধ’ এবং ‘দুর্যোগ ত্রাণ’র সহ-সভাপতিত্ব করছে।
এআরএফ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরবর্তী অধিবেশন ২০২৬ সালে ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিকালে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে জাতীয় বিবৃতি দেন। এতে তিনি জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রভাব বিবেচনা করে রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আসিয়ান সদস্যদের বাংলাদেশের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার প্রচেষ্টাকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. ফরহাদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৫৭ দিন আগে
শুল্ক আলোচনা: বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও অগ্রগতির দেখা নেই
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত শুল্ক আলোচনায়ও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাণিজ্য, শুল্ক ও দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়, কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারে কোনো আশার আলো দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে কথার সৌজন্য প্রকাশ করা হলেও বৃহস্পতিবারের আলোচনার মূল সারাংশ হলো— আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি এবং তা যে শিগগিরই হবে, এমন সম্ভাবনাও নেই।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ শুক্রবার ভোরে বলেন, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) অফিসে রাষ্ট্রদূত জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনা শেষে উভয়পক্ষই ‘পারস্পরিক কল্যাণে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি’ পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার ছিল তিন দিনের শুল্ক আলোচনার দ্বিতীয় দিন। বৈঠক শেষে আজাদ বলেন, ‘আলোচনাটি ছিল বিস্তৃত, যা উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ দিককে ছুঁয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে অন্তর্বতী সরকারকে আহ্বান ফখরুলের
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।
ঢাকায় অবস্থান করেও ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি ও টেলিকম বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও আলোচনায় অংশ নেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কৃষি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও কপিরাইট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সিনিয়র প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তিন দিনের আলোচনার শেষ পর্বটি শুক্রবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া চিঠিতে যে শুল্ক হার ঘোষণা করেছিলেন, তা কমানোর সম্ভাবনা এখন প্রায় নেই বললেই চলে।
১৫৭ দিন আগে