বৈদেশিক-সম্পর্ক
শ্রমবাজার খুললেও মালয়েশিয়ার বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়: আসিফ নজরুল
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ফের শ্রমবাজার খুললেও ১০টি শর্ত যুক্ত করেছে মালয়েশিয়া, যেগুলোকে অগ্রহণযোগ্য মনে করছে ঢাকা। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়। এগুলো পূরণ করতে গেলে আবারও সিন্ডিকেট হবে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) হোটেল শেরাটন ঢাকায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র সহযোগিতায় তৈরি ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্লাটফর্মের (ওইপি) উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অতীতে বহুবার জটিলতা এবং সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে। ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে একবার বন্ধ হওয়ার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ২০২২ সালে এটি আবার চালু হয়। কিন্তু সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশসহ অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশ (যেমন: ভারত, নেপাল, মিয়ানমার) থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
গত অক্টোবরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা যৌক্তিক করার জন্য ১০টি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড নির্ধারণ করে। তাদের দাবি, এতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
এই শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: কমপক্ষে ৫ বছর কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; বিগত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড থাকতে হবে; অন্তত ৩টি ভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুটের নিজস্ব স্থায়ী অফিস থাকতে হবে; নিজস্ব প্রশিক্ষণ সুবিধা থাকতে হবে; মানবপাচার, জোরপূর্বক শ্রম, মানি লন্ডারিং বা অন্য কোনো অপরাধে সংশ্লিষ্ট না থাকার রেকর্ড থাকতে হবে।
বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সংগঠনসহ অনেকেই এই শর্তগুলোকে ‘অযৌক্তিক, অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক’ বলে মনে করছেন।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, ‘মালয়েশিয়া থেকে যে ১০টা শর্ত দিয়েছে, কয়েকটা শর্তের ব্যাপারে আমরা শক্ত আপত্তি জানিয়েছি। আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কথা বলার পরে মালেশিয়াকে জানিয়েছি যে এসব শর্ত মিটআপ (পূরণ) করা সম্ভব না। কারণ এগুলো মিটআপ করতে গেলে এখানে আবার সিন্ডিকেট হবে। অল্প কয়েকটি রিক্রুটিং এজেন্সি সুযোগ পাবে। এটি আমরা চাই না।’
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া আশ্বাস দিয়েছে যে তারা এগুলো বিবেচনা করবে। শ্রমবাজার সবসময় সবার জন্য উন্মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক আলাপ অব্যাহত রাখব।’
২৬ দিন আগে
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৭০ বাংলাদেশি
লিবিয়ায় অনিয়মিতভাবে অবস্থানরত ও দেশে ফিরতে আগ্রহী ১৭০ জন বাংলাদেশিকে লিবিয়া সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
সমন্বয়ে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে স্থানীয় সময় ৬টা ১০ মিনিটে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা ঢাকায় পৌঁছান।
ফেরত আসা বেশিরভাগ বাংলাদেশি মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন বলে জানা যায়। তাদের অনেকেই সেখানে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ঢাকায় পৌঁছালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আইওএমের কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিজেদের দুর্ভোগ ও অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার অনুরোধ জানান।
আইওএম তাদের প্রত্যেককে পথখরচ, খাদ্যসামগ্রী ও প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে। লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক অবস্থায় থাকা বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে।
২৭ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোলটস উপদেষ্টার অফিসকক্ষে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে শেখ হাসিনার রায়-পরবর্তী জনপ্রতিক্রিয়া, জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ ও এ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, বন্দি প্রত্যর্পণ, সাইবার ক্রাইম ও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ দুদেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জার্মানি ও বাংলাদেশ পরীক্ষিত বন্ধু। অদূর ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
নির্বাচনের তারিখ ও সময় এবং সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আশা করি, নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর নির্দিষ্ট দিন ও তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের যে তারিখই নির্ধারণ করুক, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
শেখ হাসিনার রায় পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ছোটখাটো দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটাতে চাইলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
অপরাধের মাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, অপরাধ বাড়ছে না। এটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে।
তিনি বলেন, মানুষ এখন স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারছে, যা বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে করতে পারেনি।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আনিয়া কেরস্টেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২৭ দিন আগে
বাংলাদেশের জনগণের সামগ্রিক কল্যাণের প্রতি ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ: নয়াদিল্লি
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছে, ভারত সেটি লক্ষ করেছে।
‘ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতাসহ সামগ্রিক কল্যাণের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’
এদিকে, আজ রায় ঘোষণার পর আরও একবার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।
সেখানে বলা হয়, আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।
দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব বলেও বিজ্ঞিপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
২৮ দিন আগে
হাসিনা ও কামালকে হস্তান্তরে ভারতকে চিঠি পাঠানো হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে হস্তান্তরের জন্য ভারতের কাছে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরত পাঠানোর চিঠি এখানে ভারতের মিশনে অথবা দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, এর আগেও আমরা চিঠি পাঠিয়েছি, কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। আজ রায় হয়ে গেছে, আমাদের তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত আনতে হবে।
এর আগেও বাংলাদেশের চিঠির জবাব দেয়নি ভারত। এ ছাড়া এই আইনে নানা ফাঁক রয়েছে—এই প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিকদের তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা চিঠি দেব। আইনি ফাঁক যদি থাকে, তবে সেটা আইনবিদরা দেখবেন।
প্রচলিত আইনে ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বাধ্য কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনি বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করবেন না। আইনের মানুষরা এটি নিয়ে বলতে পারবেন।
ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেয়, তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমি অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কোনো মন্তব্য করব না।
সোমবার দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণহত্যার মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এই ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি এই মামলার অন্য আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক।
এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরাসরি ‘লেথাল উইপন’ (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে পেয়েছিলেন তিনি।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ, নিরস্ত্র দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং ৩০ হাজার মানুষকে আহত করা হয়েছিল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই পাঁচ অভিযোগ হলো— উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা।
২৮ দিন আগে
কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন খলিলুর রহমান
আগামী ১৯ ও ২০ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) সপ্তম এনএসএ-স্তরের বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান।
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এই আঞ্চলিক ফোরামে অংশ নেওয়ার জন্য ড. খলিলুরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে।
নয়াদিল্লিতে সিএসসি বৈঠকে তার অংশগ্রহণকে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার আঞ্চলিক সহযোগিতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থার সভায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। গত এপ্রিলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিমসটেকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পাশাপাশি সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতেও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
ড. খলিলুর রহমান এর আগে চীনের কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত চায়না-ইন্ডিয়ান ওশান রিজিয়ন ফোরামে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
৩১ দিন আগে
ডাবলিন ও বুয়েনস আইরেসে দূতাবাস খুলবে ঢাকা
আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন ও আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসে দুটি নতুন দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরর উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বার্তায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৪৮তম সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে বার্তায় বলা হয়েছে।
৩২ দিন আগে
ভারতীয় মিডিয়ায় শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নিয়ে ঢাকার অসন্তোষ প্রকাশ
দিল্লিতে থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, বুধবার ঢাকায় ভারতীয় উপ-হাইকমিশনার পবন ভাদেকে ডেকে নিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় কূটনীতিককে অনুরোধ জানানো হয়েছে, তিনি যেন নয়াদিল্লিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার গণমাধ্যমে প্রবেশাধিকার তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করার অনুরোধ পৌঁছে দেন।
৩৩ দিন আগে
রোহিঙ্গা সংকট: কানাডীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকার নিরাপত্তা উদ্বেগের ইঙ্গিত
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে অবস্থান করায় মানবপাচার, মাদক ও অস্ত্র-গোলাবারুদ চোরাচালানের মতো নিরাপত্তা-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ক্রমেই বাড়ছে, যা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশের স্থানীয় জনগোষ্ঠী—উভয়ের ওপরই প্রভাব ফেলছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) কানাডার সিনেটের একজন সদস্য ও দুজন সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনাল (এইচসিআই) নামে একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ কথা বলেন।
উদ্বেগ প্রকাশ করে উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বৈশ্বিক মনোযোগ ও অর্থায়ন ক্রমেই কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক তহবিল বাড়াতে কানাডার সহায়তা চান তিনি। একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র টেকসই সমাধান।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধান প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকটের সামগ্রিক দিক নিয়ে আলোচনা হয়; বিশেষ করে প্রতিনিধিদল সম্প্রতি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে যে সরেজমিন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তা শেয়ার করে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কানাডার ধারাবাহিক মানবিক সহায়তা ও দীর্ঘদিনের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের মানবিক সহায়তা ও উদারতার প্রশংসা করে জানায়, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় ও সহায়তা দেওয়ায় বাংলাদেশের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
কানাডীয় সংসদ সদস্যরা, যারা একইসঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটি এবং নাগরিকত্ব ও অভিবাসনসংক্রান্ত কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি টেকসই সমাধানের পথে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
কানাডার প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার গুরুত্ব, বিশেষ করে তরুণদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, শিক্ষা রোহিঙ্গা তরুণদের দক্ষতা বাড়াবে, মানবপাচারের ঝুঁকি কমাবে, ইতিবাচক সামাজিক আচরণ উৎসাহিত করবে এবং শেষ পর্যন্ত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াতেও সহায়তা করবে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানান, এই প্রক্রিয়াটি সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন, কারণ এতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থানের বিষয় জড়িত থাকতে পারে, যা স্থানীয় মজুরির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শ, যাচাই ও সমন্বয়ের মাধ্যমে এসব উদ্বেগ কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
বৈঠকে উভয় পক্ষ বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে দৃঢ়, বন্ধুত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক অংশীদারত্ব আরও জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
৩৩ দিন আগে
প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্য ‘ভুল’ ও ‘অসম্মানজনক’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন, তাকে ‘ভুল’ এবং ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারের প্রতি অসম্মানজনক’ বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে ঢাকা জানিয়েছে, ভারত সঙ্গে পারস্পরিক কল্যাণকর সম্পর্কের প্রতি বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম ইউএনবিকে বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্য ভুল এবং সেটি (দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে) সহায়ক নয়; সেইসঙ্গে কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও সৌজন্যের প্রতিও সম্মানজনক নয়।’
সম্প্রতি নেটওয়ার্ক-১৮ গ্রুপের প্রধান সম্পাদক রাহুল যোশীর সঙ্গে একান্ত আলাপনে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন না চাইলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে কথা বলার ক্ষেত্রে সংযত হওয়ার আহ্বান জানান দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। গত শুক্রবার ওই গ্রুপের সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।
রাজনাথ সিং বলেন, ‘নয়াদিল্লি বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক চায় না। অধ্যাপক ইউনূসের উচিত, তিনি কী বলছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম, যদিও আমাদের লক্ষ্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।’
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এস এম মাহবুবুল আলম ইউএনবিকে জানান, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘সার্বভৌম সমতা, একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা এবং পারস্পরিক সম্মান’— এই নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক কল্যাণকর সম্পর্কের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, গঠনমূলক ও সম্মানজনক সংলাপের মাধ্যমেই মতপার্থক্য বা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সর্বোত্তম সমাধান হয়।’
৩৬ দিন আগে