বৈদেশিক-সম্পর্ক
মেক্সিকোয় বাংলাদেশি পণ্যের প্রচার করলেন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল
ঢাকায় মেক্সিকোর দূতাবাস খোলার ওপর গুরুত্বারোপ করার পাশাপাশি দেশটির বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রচার-প্রসারের ওপর জোর দিয়েছেন মেক্সিকোয় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের (এনডিসি) একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল মেক্সিকো সিটির বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করে। ওই দলটিকে স্বাগত জানাতে গিয়ে এ কথা বলেন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।
তিনি বলেন, ‘দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও মেক্সিকো একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী। বন্ধুত্ব, সংহতি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য— যা আমাদের দুই জাতিকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এই সফর পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াবে এবং আমাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারত্বকে আরও মজবুত করবে।’
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এনডিসি জাতীয় নিরাপত্তা, কৌশল ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এর মূলমন্ত্র ‘জ্ঞানই নিরাপত্তা’ আমাদের ভবিষ্যৎ নেতাদের আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে আরও প্রস্তুত করে তুলছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দূতাবাস থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
১১০ দিন আগে
টেকসই সমাধানে রোহিঙ্গাদের ক্ষমতায়িত কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দিচ্ছে ইইউ
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য রোহিঙ্গাদের শক্তিশালী এবং প্রতিনিধিত্বশীল কণ্ঠস্বর থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এর পাশাপাশি এ বিষয়ে নেওয়া উদ্যোগগুলোকে সমর্থন জানায় বলে জানিয়েছে ইইউ দূতাবাস।
এক বিবৃতিতে দূতাবাস বলেছে, রাজনৈতিকভাবে, মানবিক অর্থায়ন সহায়তার মাধ্যমে, উন্নয়ন সহযোগিতায়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়বদ্ধতায় এবং কার্যকর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আমরা পাশে আছি। কিন্তু এই সংকট এমন এক পরিস্থিতি যা যৌথ পদক্ষেপের জন্য জোর দাবি করছে।
আরও পড়ুন: এনসিসির কাজ শেষ পর্যায়ে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কারকে সমর্থন করে ইইউ
সম্প্রতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডার্স ডায়ালগ’-এ অংশ নেন বাংলাদেশে ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পূর্তিতে ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুর মাধ্যমে এক ব্রিফিং সেশনের আয়োজন করে ইইউ।
ঢাকার ইইউ দূতাবাস তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বুধবার এক বার্তায় এ অনুষ্ঠানকে ‘উদ্বেগজনক হলেও অনুপ্রেরণামূলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
১১০ দিন আগে
বিডিআরসিএসকে ১৫ লাখ ডলারের জরুরি বন্যা মোকাবিলার সরঞ্জাম দিলো চীন
বন্যায় জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিকে (বিডিআরসিএস) অনুদান হিসেবে ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের সরঞ্জাম দিয়েছে চীন সরকার।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ঢাকায় বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদরদপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আনুষ্ঠানিকভাবে এসব সরঞ্জাম হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ১০০টি ইঞ্জিনসহ রাবার বোট, ১৫টি ওয়াটার পিউরিফিকেশন ইক্যুপমেন্ট, ১০টি ডিজেল জেনারেটর, ৬সেট সমুদ্রের পানি লবণমুক্তকরণ যন্ত্র, ৫০০টি লাইফ ভেস্ট, ৫০০টি রেসকিউ হেলমেট, ৫০০ জোড়া রেসকিউ বুট, ৫০০ জোড়া হ্যান্ড গ্লাভস, ৩০০টি সামুদ্রিক ফার্স্ট এইড কিট, ২৫০টি রেসকিউ রোপ, ২৫০ সেট রেসকিউ রোপ ব্যাগ, ১০০ সেট লাইফ র্যাক্ট, ৫০টি ফ্লোট প্লেট, ৫০টি রেসকিউ প্যানেল এবং ২৫টি সফট স্ট্রেচার।
অনুষ্ঠানে ফারুক ই আজম বলেন, বাংলাদেশ বন্যা ও প্রকৃতির দুর্যোগের ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। প্রতিটি দুর্যোগে সরকার মানবিক সংগঠনসমূহের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টায় জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার কাজ করে। চীন সরকারের এ সহায়তা আমাদের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, সারা দেশে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে। আমি বিডিআরসিএসকে অনুরোধ করছি যাতে কার্যকরভাবে এই সরঞ্জামের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ, স্বেচ্ছাসেবকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নিশ্চিতকরণ এবং উদ্ধার কার্যক্রমে এসকল সরঞ্জমাদির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।
উপদেষ্টা বলেন, এই হস্তান্তর বাংলাদেশ এবং চীনের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব এবং সহযোগীতারই প্রতিফলন। আমরা এই সংহতিকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার প্রত্যাশা করছি।
আরও পড়ুন: সংস্কার হয়নি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৮৪ বিদ্যালয়, ফেরত গেল সাড়ে ১২ কোটি টাকা
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস-চেয়ারম্যান ড. তাসনিম আজিম, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির বাংলাদেশস্থ হেড অব ডেলিগেশন আলবার্তো বোকানেগ্রা, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব ড. কবির মো. আশরাফ আলম এবং বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রেজারার মো. আমিনুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
১১১ দিন আগে
নিউইয়র্কে কনস্যুলেটে হামলার ঘটনায় মার্কিন পুলিশ ও পররাষ্ট্র দপ্তরে চিঠি
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে সংঘটিত ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় পুলিশ, মেয়র ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থানীয় অফিসে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট।
এতে বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে গত রোববার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে একটি মতবিনিময় সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। এ ছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রায় দেড়শতাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অনুরোধে অনুষ্ঠান শুরুর আগেই নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মতবিনিময় সভাটি পণ্ড করার উদ্দেশ্যে এবং প্রধান অতিথিকে সরাসরি আক্রমণ করার হিংস্র মনোভাব নিয়ে বিকেল ৫টা থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা কনস্যুলেটের সামনে অবস্থান নেন। তাঁরা বাংলাদেশ সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা আগত অতিথিদের ধাওয়া করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধা দেন। তাঁরা আরও নানাবিধ অপকৌশল অবলম্বন করেন।
‘যার অংশ হিসেবে তাঁরা অতিথিদের উদ্দেশে ডিম নিক্ষেপ করেন। অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে কনস্যুলেটের প্রবেশপথের পার্শ্ববর্তী অন্য একটি অফিসের (একই ভবনের) কাচের দরজায় আঘাত করেন। এতে দরজায় ফাটল ধরে। পুলিশ দুষ্কৃতকারীদের এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজে বাধা দেয়। কয়েকজনকে আটক করে। দুষ্কৃতকারীদের এই ন্যক্কারজনক ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে ইতিমধ্যে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। তারা এই ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন উপদেষ্টাকে গাজার ক্ষুধার্ত শিশুদের ছবি দেখালেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা প্রধান অতিথিকে হেনস্তা ও জীবননাশের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকাসহ কনস্যুলেটের চারদিকে মধ্যরাত পর্যন্ত অবস্থান করেন। তবে পুরো সময় নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের উপস্থিতি ছিল। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি যথাসময়ে কনস্যুলেটে গাড়িযোগে প্রবেশের জন্য নির্ধারিত পথে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। প্রাণবন্ত মতবিনিময়, অতিথিদের সঙ্গে কুশলবিনিময় ও রাতের খাবার শেষে প্রধান অতিথি কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়া নির্ধারিত গাড়িতে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছান। প্রধান অতিথি চলে যাওয়ার পর পুলিশ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে। দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে কনস্যুলেট জেনারেল ইতিমধ্যে স্থানীয় পুলিশ, মেয়র ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থানীয় অফিসে পত্র দিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান অতিথির অনুষ্ঠানে আগমন কিংবা প্রস্থানের সময় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে তাঁর কোনো ধরনের সাক্ষাৎ বা দূরতম কোনো সংযোগ কিংবা সংশ্লেষ ঘটেনি। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা শত চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের অসাধু উদ্দেশ্য সাধন করতে পারেনি। এই কাজে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নানাবিধ অপতথ্য ও প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তারা। এই ধরনের মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছে কনস্যুলেট জেনারেল।
১১১ দিন আগে
গুরুত্বপূর্ণ পক্ষকে বাদ দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়: খলিলুর রহমান
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সব পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরে রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, ‘কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষকে বাদ দিয়ে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি সবার সঙ্গে কথা বলেছি। যদি না বলি, তাহলে কোনো সমাধান হবে না। আমি এখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, মিয়ানমার সরকারের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমাদের এই কাজ করতে হবে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।’
সোমবার (২৫ আগস্ট) রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কক্সবাজারে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন খলিলুর রহমান।
মিয়ানমারের গণমাধ্যম, সরকার, সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সঙ্গে কথা বাংলাদেশ সরকার যোগাযোগ করেছে কিনা— এই প্রশ্নের জবাবে মিয়ানমারের এক সাংবাদিককে তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে এক সাংবাদিক বন্ধুকে দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি। আপনারা আসতে থাকুন, আরও নিয়ে আসুন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষকে বাইরে রেখে সমাধান করা সম্ভব নয়, এটিই বাস্তবতা। আলোচনা মানেই সেটি যেকোনো সমাধানের জন্য, আর সেই সমাধান সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।’
‘যদি কোনো পক্ষকে বাইরে রাখা হয়, তাহলে কোনো চুক্তি বাস্তবায়িত হবে না বা খুব দ্রুত ভেঙে পড়বে। তাই আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার দরজা খোলা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এদিকে, ২০১৭ সালে শেখ হাসিনা সরকারের ব্যর্থতার কারণে রোহিঙ্গা সংকট আরও জটিল হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সমাধান সম্ভব নয়। বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ওপর গুরুতর অর্থনৈতিক ও সামাজিক বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে, যা সক্রিয় আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে অবশ্যই মিয়ানমারকেই সমাধান করতে হবে।
তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি ১৯৭৮ সালে কুতুপালং ক্যাম্পের প্রথম ক্যাম্প ইনচার্জ ছিলাম এবং আমার রোহিঙ্গা বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করেছি। সমস্যার উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং তা তাদের উদ্যোগেই সমাধান করতে হবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের রোডম্যাপ তৈরিতে প্রধান উপদেষ্টার ৭ দফা প্রস্তাব
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির নেতা আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া ফুয়াদ, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা আখতার হোসেনসহ অনেকে এই সেশনে বক্তব্য রাখেন।
রাশেদ খান বলেন, আমরা চাই চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিক। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সবাই মিলে মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তাহলে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার জানান, তার দল রোহিঙ্গা সংকটের মানবিক সহায়তা, ন্যায়বিচার ও টেকসই সমাধানের পক্ষে দৃঢ়ভাবে অবস্থান করবে।
আখতার হোসেন বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার চাই। নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরত না যাওয়া পর্যন্ত তাদের খাদ্য, শিক্ষা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে, রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
১১১ দিন আগে
রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান অব্যাহত রাখায় বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রবিবার (২৪ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র থমাস টমি পিগট এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান অব্যাহত রাখায় আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানাই। এছাড়া বার্মা (মিয়ানমার) থেকে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকেও ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতির শিকার মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন প্রকাশ করছে।
১১২ দিন আগে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের রোডম্যাপ তৈরিতে প্রধান উপদেষ্টার ৭ দফা প্রস্তাব
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কক্সবাজারে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছায় ও টেকসইভাবে রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের জন্য বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরিতে যৌথ প্রচেষ্টার লক্ষ্যে সাত দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন তিনি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে এই সংলাপে যোগ দিতে কক্সবাজার পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। এদিন বেলা ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। এতে মিয়ানমার ও আঞ্চলিক স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা কেবল কথার জালে বন্দি থাকতে পারি না। এখনই সময় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের দায়িত্ব শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও। সংকটের সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে ভাবা এবং তা বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখা সবার যৌথ দায়িত্ব।
যতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গারা নিজেদের আবাসভূমিতে ফিরে যেতে না পারেন ততদিন পর্যন্ত তাদের বিষয়টি ও এর টেকসই সমাধানকে বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখার জন্য জোর দেন অধ্যাপক ইউনূস।
গত মার্চ মাসে পবিত্র রমজানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এবং তিনি নিজে কক্সবাজারে এক লক্ষাধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে যোগ দিয়েছিলেন বলে সেই স্মৃতিচারণও করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে শুনেছি, রোহিঙ্গারা যত দ্রুত সম্ভব নিজ আবাসভূমিতে ফিরে যেতে চান। অনুষ্ঠানে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবস’ উপলক্ষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংলাপে যোগ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
এ সময় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে তাদের নিজ আবাসভূমিতে প্রত্যাবাসনের জন্য দৃশ্যমান আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা যা করছি, তা অব্যাহত রাখতে হবে।
এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক), পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুও বক্তব্য রাখেন।
প্রফেসর ইউনূসের সাত দফা প্রস্তাব
প্রথমত, রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছামূলক ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য একটি কার্যকর রোডম্যাপ তৈরিতে কাজ করতে হবে। কথার জালে আর বন্দি থাকা যাবে না।দ্বিতীয়ত, ২০২৫-২৬ সালের যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনার অর্থ ঘাটতি পূরণে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী ও মানবিক অংশীদারদের অব্যাহত সহায়তা জরুরি।
তৃতীয়ত, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এজন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও আরাকান আর্মিকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, জীবিকা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের ভেতরে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ ঘরে ফিরতে দিতে হবে।
চতুর্থত, মিয়ানমারের ভেতরে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা হ্রাস ও সংঘাত নিরসনে সংলাপ প্ল্যাটফর্ম জরুরি। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনায় বসতে হবে যাতে পুনর্মিলন, অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়।
পঞ্চমত, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা অপরিহার্য। মানবপাচার, মাদকপাচার, ছোট অস্ত্রের চোরাচালানসহ সীমান্তবর্তী অপরাধ মোকাবিলার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
ষষ্ঠত, জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। মিয়ানমার, আরাকান আর্মি ও অন্যান্য সংঘাতপক্ষের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংকট নিরসনের স্বার্থে পদক্ষেপ নিতে হবে।
সপ্তমত, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে), আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় চলমান জবাবদিহি প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করতে হবে। আইসিজের দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ কার্যকর করতে হবে এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সূত্রপাত মিয়ানমারে, তাই সমাধানও মিয়ানমারেই নিহিত। দেরি না করে সব পক্ষকে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে সংলাপে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
গত বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার তিন দফা প্রস্তাবের ভিত্তিতেই এ বছর উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে তথ্য দেন তিনি। কক্সবাজারের এই সংলাপ নিউইয়র্কে সম্মেলনে একটি কার্যকর রোডম্যাপ তৈরিতে অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ টেকসই সমাধানের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করছে। ২০১৭ সালে মাত্র কয়েক সপ্তাহে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করার বিষয়টি উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এখনও নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। এই পরিস্থিতিতে ইতিহাসের সঠিক পাশে দাঁড়ানোই নৈতিক দায়িত্ব বলে মত দেন অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি বলেন, সীমিত সম্পদ ও সামর্থ্য সত্ত্বেও মানবিক বিবেচনায় তাদের জীবন রক্ষার জন্য রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়েছিল বাংলাদেশ।
নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এটি প্রমাণ করে যে মানবজাতির সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটে আমরা তাদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহানুভূতি দেখিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী সংকটের মুখে আর চুপ করে থাকা সম্ভব নয়। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা অনেক বেশি জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।এ সময় দাতা, অংশীদার, জাতিসংঘ সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং বিশ্বব্যাপী বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর অব্যাহত সহায়তা, সহযোগিতা ও সংহতির প্রশংসা করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন যা কক্সবাজারকে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে পরিণত করেছে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে প্রতিবছর প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক জন্ম নিচ্ছে।
অন্যদিকে, মিয়ানমারে এখনো পাঁচ লাখেরও কম রোহিঙ্গা রয়েছে। এই চিত্র স্পষ্ট করে যে অব্যাহত নিপীড়নের কারণে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ছেড়ে যাচ্ছেন। গত আট বছরে বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠী বিশাল ত্যাগ স্বীকার করে আসছেন বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, সম্পদ, পরিবেশ ও প্রতিবেশ, সমাজ ও শাসনব্যবস্থার ওপর এর বিরাট প্রভাব পড়েছে।
এর আগে, রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
১১২ দিন আগে
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংলাপে যোগ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কক্সবাজারে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে এই সংলাপে যোগ দিতে কক্সবাজার পৌঁছান তিনি। এদিন ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়।
এতে মিয়ানমার ও আঞ্চলিক স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবস’ উপলক্ষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
এ সময় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে তাদের নিজ আবাসভূমিতে প্রত্যাবাসনের জন্য দৃশ্যমান আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা যা করছি, তা অব্যাহত রাখতে হবে।
রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রথম দিনের কর্মসূচিতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশেষ ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা গড়ে তোলার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম এ সেশনে অংশ নেন। এতে আরও অংশ নেন কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবির থেকে আসা রোহিঙ্গা প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা প্রবাসীরা।
সেশনটি পরিচালনা করেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ লাকি করিম, মোহাম্মদ রফিক (খিন মৌং) ও ওমর সালমা। এ সময় বক্তব্য রাখেন সয়েদুল্লাহ, ফুরকান মির্জা, আবদুল্লাহ, হুজ্জাউত উল্লাহ, সহাত জিয়া হিরো, আবদুল আমিন, জাইতুন নারা, জিহিন নূর, আবদুল্লাহ ও রো মুজিফ খান। রোহিঙ্গা প্রবাসীর সদস্যরাও আলোচনায় অংশ নেন। সেশনটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের জন্য নির্ধারিত থাকায় অন্য অংশগ্রহণকারীরা কেবল পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে সংলাপে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত থমাস এইচ অ্যান্ড্রুজ সেশনে যোগ দেন। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন, সংবাদমাধ্যম, বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সেশনে অংশ নেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) রানা ফ্লাওয়ার্স, মিয়ানমারের জন্য স্বাধীন তদন্ত সংস্থার প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান এবং ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুও।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণ অধিকার পরিষদসহ প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও এ সংলাপে অংশ নেন।
১১২ দিন আগে
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে সংলাপে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে। এতে প্রধান উপদেষ্টা যোগ দেবেন। সংলাপে যোগ দিতে ড. ইউনূস এরইমধ্যে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রথম দিনের কর্মসূচিতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশেষ ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা গড়ে তোলার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম এ সেশনে অংশ নেন। এতে আরও অংশ নেন কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবির থেকে আসা রোহিঙ্গা প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা প্রবাসীরা।
সেশনটি পরিচালনা করেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ লাকি করিম, মোহাম্মদ রফিক (খিন মৌং) ও ওমর সালমা। এ সময় বক্তব্য রাখেন সয়েদুল্লাহ, ফুরকান মির্জা, আবদুল্লাহ, হুজ্জাউত উল্লাহ, সহাত জিয়া হিরো, আবদুল আমিন, জাইতুন নারা, জিহিন নূর, আবদুল্লাহ ও রো মুজিফ খান। রোহিঙ্গা প্রবাসীর সদস্যরাও আলোচনায় অংশ নেন। সেশনটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের জন্য নির্ধারিত থাকায় অন্য অংশগ্রহণকারীরা কেবল পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সুস্পষ্ট পথ দেখাবে জাতিসংঘ সম্মেলন, আশা অধ্যাপক ইউনূসের
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত থমাস এইচ অ্যান্ড্রুজ সেশনে যোগ দেন। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন, সংবাদমাধ্যম, বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সেশনে অংশ নেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) রানা ফ্লাওয়ার্স, মিয়ানমারের জন্য স্বাধীন তদন্ত সংস্থার প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান এবং ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুও।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণ অধিকার পরিষদসহ প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও এ সংলাপে অংশ নেন।
১১২ দিন আগে
পাকিস্তান ও সার্কভুক্ত দেশের সঙ্গে সম্পর্ক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে: ইসহাক দারকে অধ্যাপক ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সকল সম্ভাব্য ক্ষেত্র পুনরুজ্জীবিত করার গুরুত্ব তুলে ধরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের অগ্রগতি ও জনগণ সঙ্গে জনগণের, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে সংযোগের ভূমিকার উপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি সার্ককে উৎসাহিত করি এবং আমি পাকিস্তান ও অন্যান্য সার্কের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসাবে দেখি।’
রবিবার (২৪ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিনেটর মোহাম্মদ ইসহাক দারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার, বাণিজ্য বৃদ্ধি, তরুণ ও তরুণদের মধ্যে বিনিময়, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধি এবং সার্কের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
উপপ্রধানমন্ত্রী দার প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শাহবাজ শরীফের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী আপনাকে তার শুভেচ্ছা পাঠাচ্ছেন,’ বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, অধ্যাপক ইউনূস প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে অতীতের মতবিনিময়ের কথা স্মরণ করে উষ্ণ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
‘প্রধানমন্ত্রী শরীফ ও আমি যখনই দেখা করেছি, আমরা সার্ক সম্পর্কে কথা বলেছি। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন এবং সার্ক আমাদের উভয়ের জন্যই শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে রয়ে গেছে,’ উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
সহযোগিতার সুযোগ ও বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপর জোর দিয়ে উপপ্রধানমন্ত্রী দার বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের দুটি অর্থনীতিই পরিপূরক। এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’
তিনি দারিদ্র্য বিমোচন ও সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের অবদানের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ ভাগ্যবান যে, আপনার মতো একজন সরকারপ্রধান পেয়েছে। এমন একজন নেতা যিনি বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করেন।’
উপপ্রধানমন্ত্রী জ্বালানি ও বাণিজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাসহ বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে পুরোনো সংযোগ পুনরুজ্জীবিত করা, তরুণদের শিক্ষা বিনিময় জোরদার, যোগাযোগ উন্নত করা এবং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি স্থান পেয়েছে।
বৈঠকের আলোচনায় এই অঞ্চলের সাম্প্রতিক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করা হয়।
পড়ুন: জামায়াত আমিরের সঙ্গে দেখা করলেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার
উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার প্রধান উপদেষ্টাকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা জানান।
তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে ঢাকায় তার ব্যস্ততা এবং তার সফরের প্রধান ফলাফলগুলো সম্পর্কে অবহিত করেন।
সফরকালে তার এবং তার প্রতিনিধিদলের জন্য চমৎকার ব্যবস্থা এবং উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইসহাক দার।
কিছু সংবেদনশীল বিষয় রয়েছে স্বীকার করে অধ্যাপক ইউনূস ঘন ঘন সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ সহযোগিতার বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রের উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘যখন পাকিস্তানি গায়করা বাংলাদেশে পরিবেশনা করেন, তখন সবাই তাদের প্রতিভার প্রশংসা করে। এই মনোভাব আমাদের গড়ে তুলতে হবে।’
১৩ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সফরকারী প্রথম পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী দার জানান, জাহাজ চলাচল ও বিমান চলাচল শুরু করাসহ যোগাযোগ উন্নত করার প্রচেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী অক্টোবরের মধ্যে ফ্লাই জিন্নাহ আমাদের দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে। বিমান সংস্থাটি বেসরকারিকরণের পর পিআইএ ঢাকায় সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
বাণিজ্য বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ায় অবদান রাখবে বলেও উভয় নেতা আশা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন।
১১৩ দিন আগে