বৈদেশিক-সম্পর্ক
তৃতীয় টার্মিনাল বাংলাদেশের যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতাকে বদলে দেবে: ইইউ রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের ফলে বাংলাদেশের যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বদলে যাবে।
শনিবার (৭ অক্টোবর) ইইউ রাষ্ট্রদূত তার এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনার চিত্তাকর্ষক নতুন বিমানবন্দর টার্মিনালের উদ্বোধন প্রতি বছর ২৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিচালনা করার সম্ভাবনাসহ বাংলাদেশের যাত্রী ও কার্গো সক্ষমতাকে বদলে দেবে।’
তাকে নতুন টার্মিনালে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুরের সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা গেছে, যা তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন।
জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন জ্যান জানোস্কি তৃতীয় টার্মিনাল পরিদর্শন করার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন। শনিবার এর সফট-ওপেনিং হয়েছে।
তিনি তার পোস্টে লিখেছেন, ‘শিগগিরই বাংলাদেশের (তৃতীয় টার্মিনাল থেকে) বিমান চলাচল শুরু হবে। ঢাকার হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন তৃতীয় টার্মিনালের সৌন্দর্যে আমি স্তম্ভিত। এটির বাস্তবায়নে প্রচুর জার্মান প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে ফার্স্ট এয়ারবাস ৩৮০ অবতরণ দেখার তর সইতে পারছি না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (৭ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং করে বলেছেন, বাংলাদেশের রিসোর্ট শহর কক্সবাজার বা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শিগগিরই বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে একটি আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
আঞ্চলিক সংযোগ বাড়িয়ে তৃতীয় টার্মিনালের মতো সুদৃঢ় প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে জাপান: ভাইস মিনিস্টার
জাপান বলেছে, এ অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের 'শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির' স্বার্থে ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের মতো সুদৃঢ় প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে তারা।
শনিবার (৭ অক্টোবর) জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার কোমুরা মাসাহিরো বলেছেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশের সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীসহ অন্যান্য মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার উয়েহারা আতসুশি; বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জাপানের পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স বলেন, 'এইচএসআইএ তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিংয়ের জন্য আমি অভিনন্দন জানাতে চাই। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যা উভয় দেশের পতাকার প্রতীক।
চলতি বছরের এপ্রিলে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফরকালে 'কৌশলগত অংশীদারিত্ব' শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সহযোগিতা এবং সম্ভাব্য ইপিএর দিকে যৌথ গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসর হচ্ছে।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট ইনিশিয়েটিভের আওতায় জাপান ঢাকা মেট্রোরেল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এবং ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালসহ আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রধান অবকাঠামো উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকা ও টোকিওর মধ্যে একটি সরাসরি ফ্লাইট চালু করা হয়, যার জন্য উভয় দেশ ইচ্ছুক। এটি মানব ট্র্যাফিককে আরও শক্তিশালী করবে এবং জাপানি সংস্থাগুলোর বিনিয়োগের আরও সম্প্রসারণে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শক্তিশালী, স্থিতিশীল, স্বনির্ভর বাংলাদেশ ভারতের জন্য সর্বোত্তম নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে পারে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যে বাংলাদেশের একটি স্থিতিশীল আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে এবং ভারতের জন্য সর্বোত্তম নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিশ্চিত করতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সম্পদ ও কর্মশক্তিকে কার্যকরভাবে একীভূত করতে, সহযোগিতার জন্য জনসমর্থনকে একত্র করতে এবং উপ-অঞ্চলের পূর্ণ পুনরুজ্জীবন অর্জনের জন্য উন্নয়নই বাংলাদেশের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
শুক্রবার সিলেটে একটি উৎসবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুযোগ অফুরন্ত- একবার আমরা (সম্পূর্ণ) উপলব্ধি করতে পারলে, এটি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে ব্যাপক অবদান রাখবে।’
সিলেট-শিলচর উৎসব হল দুটি শহরকে যুক্ত করার উৎসব: সিলেট ও শিলচর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিবৃতি দিয়েছেন কারণ আঞ্চলিক এই দুই দেশ তুলনামূলক ও পরিপূরক প্রতিযোগিতার পূর্ণ সুবিধা গ্রহণ করে স্বার্থ ও ভাগ্যের একটি অত্যন্ত পরস্পর নির্ভরশীল সম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছে।
মোমেন আশা প্রকাশ করেন, অভিন্ন সংস্কৃতি, একই ধরনের খাবার এবং দুই দেশের অভিন্ন আকাঙ্খা প্রদর্শনের মাধ্যমে সিলেট-শিলচর উৎসব বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, উৎসবটি উভয় পক্ষের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একসঙ্গে শান্তি ও সমৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করতে এবং বিশ্বাস ও বোঝাপড়া তৈরি করতে পারে।
মোমেন বলেন, ‘আমাদের ভাগ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং আমাদের ভবিষ্যৎ ভাগ করা সমৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে রচিত। বাংলাদেশ একটি বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে ভারতের উত্থানকে তার নিজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার একটি বড় সুযোগ বলে মনে করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ’ ভারতের জন্য সর্বোত্তম নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিশ্চিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
বাংলাদেশে শুধু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, শান্তিপূর্ণ পরমাণু শিল্পও গড়ে তুলেছে রাশিয়া: পুতিন
বাংলাদেশকে ‘দীর্ঘদিনের বন্ধু ও উত্তম অংশীদার’ বলে মন্তব্য করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তার দেশ সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও একে অপরের স্বার্থ বিবেচনার নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে।
রূপপুর প্রকল্পের আওতায় সহযোগিতার অংশ হিসেবে তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের পারমাণবিক খাতের জন্য অত্যন্ত যোগ্যতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
পুতিন বলেছেন, পারমাণবিক সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান এমন ৮০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের পড়াশোনা শেষ করেছেন এবং এ সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কেবল একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি না, বরং একটি সম্পূর্ণ পারমাণবিক সেক্টর তৈরি করছি। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শিল্প গড়ে উঠেছে এবং আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলে এটি করছি।’
বৃহস্পতিবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট ১-এ রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ উপলক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেন।
শুক্রবার রাশিয়ান পক্ষের দেওয়া তার বক্তৃতার ইংরেজি অনুলিপি অনুসারে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পটি দুই দেশের স্বার্থ পূরণ করে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা
তিনি বলেনি, ‘অবশ্যই এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করতে একটি বাস্তব ও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।’
পুতিন বলেন, ‘এই তরুণ প্রজাতন্ত্রকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে আমাদের দেশও ছিল এবং এর অর্থনীতির উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলাম আমরা। পাশাপাশি আমরা প্রধান শিল্প ও জ্বালানি কাঠামোগুলো নির্মাণে সহায়তা করছি, যাতে বাংলাদেশের জনগণ এর সুফল পেতে থাকে।’
শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির একজন স্বীকৃত বিশ্বনেতা হিসেবে তিনি বলেন, রোসাটম সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তা মানদণ্ডের পাশাপাশি পরিবেশগত ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে সবচেয়ে উন্নত প্রকৌশল সমাধান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) নিয়মকানুন ও সুপারিশ কঠোরভাবে মেনে নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্ভিদের শারীরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত ও নির্ভরযোগ্য।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্পে তাদের সহায়তার জন্য আইএইএ-কে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
পুতিন বলেছেন, স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার প্রচেষ্টা কেবল স্থাপনা নির্মাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ‘আমরা পারমাণবিক প্রকল্পের সমগ্র জীবনচক্র জুড়ে আমাদের বাংলাদেশি অংশীদারদের সহায়তা করব। যার মধ্যে চুল্লির জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ, উদ্ভিদ রক্ষণাবেক্ষণ ও পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্যও আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
গত বছর থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য একটি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে জাহাজ মোংলা বন্দরে
সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞরা প্ল্যান্টে প্রাথমিক প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াগুলো তদারকি করবেন। এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তাদের প্রয়োজনীয় পেশাগত দক্ষতা এবং জ্ঞান তাদের শুধু পারমাণবিক শিল্পেই নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য অনেক অর্থনৈতিক খাতেও নিয়োগের সুযোগ দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এনার্জি ইউনিট ১-এ রাশিয়ান পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহের একটি প্রশংসাপত্র আমাদের বাংলাদেশি সহকর্মীদের কাছে হস্তান্তর করব। এর পরে রূপপুর সরকারি পারমাণবিক সুবিধার মর্যাদা পাবে।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রতি তার ব্যক্তিগত মনোযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন- ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি; স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কর্পোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ; বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান; রূপপুর প্রকল্প পরিচালক শওকত আকবর এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণের একটি সাধারণ ঠিকাদারের সিইও আন্দ্রেই পেট্রোভ।
স্টেট কর্পোরেশন রোসাটম ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত একটি আন্তঃসরকারি চুক্তির অধীনে পাবনা জেলায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে।
প্ল্যান্টটি ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসহ দুটি প্রজন্মের ৩+ চুল্লি নিয়ে গঠিত হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সাইটে কাজ করছেন ৪ হাজারেরও বেশি রাশিয়ান নাগরিকসহ ২০ হাজার বিশেষজ্ঞ।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার নিকট যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দাবির জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব 'শান্তিপূর্ণ অঞ্চল' তৈরি করতে পারে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বলেছেন, যৌথ শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য কৌশলগত অংশীদারিত্ব দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের মধ্যে সহযোগিতায় একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা ভাগ করে নেওয়া সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করি, তবে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে এগোতে হবে।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার নীতি অনুসরণ করছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তারা শান্তির সংস্কৃতি প্রচারের মাধ্যমে এ অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পক্ষে কথা বলছেন।
১১তম বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংলাপ-২০২৩-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ‘আত্মবিশ্বাস’ নিয়ে ‘এগিয়ে’ যাচ্ছে। ‘নিঃসন্দেহে ভারত এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং বাংলাদেশ অবশ্যই নিজেকে এই অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে দাবি করতে পারে।’
তিনি বলেন, এই দুই প্রতিবেশীর অংশীদারিত্ব এই দেশগুলোর পাশাপাশি এই অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে গুরুত্বপূর্ণ।
মোমেন বলেন, ‘আমরা আমাদের যাত্রায় ভারতের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা ও সহায়তা জোরদার করার ওপর জোর দিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: সিলেটে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ সংলাপ শুরু বৃহস্পতিবার
দেশীয় ব্র্যান্ডের গাড়ি তৈরিতে দ. কোরিয়ার সহযোগিতা চাইলেন শিল্পমন্ত্রী
দেশের নিজস্ব ব্র্যান্ডের গাড়ি তৈরির বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
তিনি বলেন, আমরা অবকাঠামোখাতে ব্যাপক উন্নতি করেছি। এখানে বিনিয়োগ করার অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা এ সুযোগ নিতে পারে। আমরা নিজস্ব ব্র্যান্ডের গাড়ি তৈরির চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শিল্প মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক। এ সময় শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত এ ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে হুন্দাই গাড়ি উৎপাদন শুরু হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার আরেক বিখ্যাত কোম্পানি কিয়া বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে আগ্রহী।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে ৪০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে দক্ষিণ কোরিয়া
বাংলাদেশের ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, স্থানীয়ভাবে বড় বড় শিল্প কারখানা স্থাপনে জোর দেওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়া সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, শ্রমশক্তি হিসেবে যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা ভাষা দক্ষতায় দুর্বল। কাজেই জনবল পাঠানোর সময় তাদের কারিগরি দক্ষতার পাশাপাশি ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করাও জরুরি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে কর্মরত কোরিয়ান ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও টেকনিশিয়ান বা কর্মীদের ভিসা জটিলতার কারণে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। তারা যদি তিন মাসের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা পায়, তাহলে তাদের কার্যক্রম চালানো আরও সহজ হবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত শিল্পমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
শিল্পমন্ত্রী এ ব্যাপারে স্বরাষ্টমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে নামল দ. কোরিয়া থেকে আসা রেলকোচের মিটারগেজ চালান
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি বর্জ্য ফেরত নেবে রাশিয়া: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) জ্বালানি বর্জ্য তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাশিয়া।
তিনি বলেন, 'আমরা জ্বালানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছি। রুশ ফেডারেশন এই জ্বালানি বর্জ্য তাদের দেশে ফিরিয়ে নেবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) ইউরেনিয়াম জ্বালানি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পাবনার ঈশ্বরদীতে কারখানার সাইটে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এবং প্রেসিডেন্ট পুতিন মস্কোর ক্রেমলিন থেকে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নকশা ও নির্মাণকাজ কোনো ধরনের দুর্যোগের সময় যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান গ্রহণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের ক্লাবে বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রী এ দিনটিকে বাংলাদেশের জনগণের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের দিন হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আজ পারমাণবিক জ্বালানি গ্রহণের মাধ্যমে সফল হচ্ছে।’
তিনি বলেন, তার সরকার ‘বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন’ প্রণয়ন করেছে এবং একটি স্বাধীন পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইএইএ) প্রতিষ্ঠা করেছে।
“আইএইএ’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এই প্রতিষ্ঠান"- তিনি যোগ করেন।
আরএনপিপির প্রথম ইউনিট থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এবং দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। শিগগিরই প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে।’
তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য সরকার পৃথক আইনের মাধ্যমে “নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড” নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন এবং বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে প্রস্তাবিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর ২০২০ সালের মধ্যে ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’প্রদানের লক্ষ্যে ‘বিদ্যুৎ খাতের সংস্কারের বিষয়ে ভিশন স্টেটমেন্ট অ্যান্ড পলিসি স্টেটমেন্ট’ প্রণয়নের অনুমোদন দিয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘১৯৯৬ সালে, আমরা শক্তি নীতিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকে অন্তর্ভুক্ত করেছি এবং আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, তৎকালীন সরকার ‘বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্ল্যান-২০০০’ প্রণয়ন করেছিল এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সহযোগিতা চেয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আইএইএ’র আন্তরিক সমর্থনে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করেছি কারণ বিষয়টি আমাদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন ছিল। আমাদের সরকারের ৯৬-০১ সালের মেয়াদ জটিল আইন প্রণয়নের আগেই শেষ হয়ে গেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে তার সরকার "ভিশন-২০২১" এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে "পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান-২০১০" প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আবার রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি।’ বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়া এটি বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে। ‘তাছাড়া, আইএইএ শুরু থেকেই বাংলাদেশকে নানাভাবে সাহায্য করে আসছে।’
এর জন্য, তিনি রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার, আইএইএ ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী এটি সম্ভব করার জন্য রাষ্ট্রপতি পুতিনকে ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি মস্কোতে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠক এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির বিশেষ আতিথেয়তার কথাও স্মরণ করেন।
২ অক্টোবর প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনার (ভ্লাদিমির পুতিনের) সার্বিক সহযোগিতায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্র সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কারণ প্রতিবেশী দেশটি প্রকল্পের শুরু থেকেই বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে আসছে।
বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রের সম্পূর্ণ নির্মূল এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি বাস্তবায়নে দৃঢ় অঙ্গীকার করেন তিনি।
এর আগে অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের কাছে জ্বালানি সরবরাহের সার্টিফিকেট এবং জ্বালানি অ্যাসেম্বলির মডেল হস্তান্তর করেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসিও ভিয়েনা থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন।
ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আরএনপিপির জন্য পারমাণবিক জ্বালানির প্রথম ব্যাচের উৎপাদন ও বিতরণের উপর একটি অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। আরএনপিপির প্রকল্প পরিচালক ও এনপিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শওকত আকবর আরএনপিপি সম্পর্কে একটি উপস্থাপনা করেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. আলী হোসেন।ৎ
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়: মোমেন
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের বিদায়ী সাক্ষাৎ
ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান গ্রহণ, পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের ক্লাবে বাংলাদেশ
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) জন্য বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃহস্পতিবার ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে আয়োজিত হস্তান্তর অনুষ্ঠানে (গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি) স্বপ্নের প্রকল্পটির রুশ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোসাটম আরএনপিপি কর্তৃপক্ষের কাছে তেজস্ক্রিয় জ্বালানি হস্তান্তর করে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ জ্বালানি হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রূপপুরে পৌঁছাল ইউরেনিয়াম
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসিও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়।
রাশিয়া থেকে একটি বিশেষ এয়ার কার্গোর মাধ্যমে ইউরেনিয়ামের চালানটি ঢাকায় এসে পৌঁছায়। পরদিন কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সড়কপথে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থলে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাশিয়ার একটি কারখানা থেকে সরাসরি একটি বিশেষ বিমানে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পারমাণবিক জ্বালানি পাঠানো হয়।
রাশিয়ার নভোসিবির্সক কেমিক্যাল কনসেনট্রেট প্ল্যান্টে (এনসিসিপি) এই জ্বালানি উৎপাদিত হয়, যা রোসাটমের জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তেভেলের সহায়ক প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের 'গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি'তে রাশিয়ার রোসাটম থেকে ইউরেনিয়ামের নতুন ব্যাচ গ্রহণ
রুশ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোসাটম ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট করে দু’টি ইউনিটে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি ২০২১ সালের অক্টোবরে এবং দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য চুল্লি ২০২২ সালের অক্টোবরে বসানো হয়।
সরকার ২০০৯ সালে আরএনপিপি প্রকল্প স্থাপনের ধারণাটি হাতে নেয় এবং ২০০৯ সালের ১৩ মে রাশিয়ার সঙ্গে ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার’ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে।
২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে নির্মাণকাজ সম্পাদনের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১৫ সালে মস্কোর সঙ্গে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সাধারণ চুক্তি (জিসি) সই করে সরকার।
বাংলাদেশ ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আরএনপিপির জন্য ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে রাশিয়ার সঙ্গে একটি আর্থিক চুক্তি সই করে। প্রকল্প ব্যয়ের ৯০ শতাংশ এই অর্থ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিট এবং ২০২৫ সালের জুলাইয়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে।
আরও পড়ুন: রূপপুরের জন্য ইউরেনিয়াম সংগ্রহে রুশ কোম্পানির সাথে প্রাথমিক চুক্তি
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের বিদায়ী সাক্ষাৎ
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের বিদায়ী হাইকমিশনার মো. গোলাম সারওয়ার দেশটির ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসহ’র সঙ্গে মঙ্গলবার এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এ সময়ে তারা বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
হাইকমিশনার মহাপরিচালককে মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবস্থায় নিজের ও তার দপ্তরের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি তার সময়কালে গত ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হওয়ার কথা জানিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বর্তমান অবস্থা জানান।
আরও পড়ুন: তথ্যপ্রযুক্তি বাণিজ্যে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা: হাইকমিশনার
সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য অর্থায়ন, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন প্রয়োজন: শাহরিয়ার আলম
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সবুজ অর্থনীতিতে উত্তরণের জন্য অর্থায়ন, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সরকার ঐতিহাসিক মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনায় (এমসিসিপি) পরিকল্পিত সবুজ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত রূপান্তরের দিকে মনোনিবেশ করেছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ন্যায্য রূপান্তরের লক্ষ্য অর্জনে প্যারিস চুক্তিসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক প্রক্রিয়ার আওতায় জলবায়ু অর্থায়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে উন্নত দেশগুলোর আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার পূরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি উত্তর থেকে দক্ষিণ, দক্ষিণ থেকে দক্ষিণের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতার পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের সক্রিয় ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বুধবার(৪ অক্টোবর) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত প্রথম বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যাকশন ফোরাম-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) আয়োজিত ‘একটি ন্যায়সঙ্গত রূপান্তরের জন্য প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও সহযোগিতামূলক অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু অ্যাকশন’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি দলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি টেকসই ভবিষ্যত অর্জনে সহযোগিতামূলক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা সবাই জলবায়ু ইস্যু এবং কীভাবে তারা জীবনের সমস্ত কিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত তা নিয়ে আরও কথা বলতে শিখছি। আমি মনে করি ক্লাইমেট অ্যাকশন ফোরামে আজ আমরা যা দেখছি তা বৈশ্বিক চিন্তাভাবনা এবং স্থানীয় ভাবে কাজ করার একটি অসাধারণ প্রদর্শন।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের উপ-রাষ্ট্রদূত থিজস ওউডস্ট্রা সহযোগিতার মাধ্যমে অর্জিত পরিবেশগত প্রভাব তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের উপ-রাষ্ট্রদূত থিজস ওউডস্ট্রা সহযোগিতার মাধ্যমে অর্জিত পরিবেশগত প্রভাব তুলে ধরেন।
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মাইকেল ক্রেজা সম্মিলিত পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আরও পড়ুন: প্রবাসীদের অবদান উৎসাহিত করতে ৩০ ডিসেম্বর 'এনআরবি দিবস' ঘোষণা: মোমেন