আইনশৃঙ্খলা
নাটোরে ড্যাব নেতাকে গলাকেটে হত্যা, ব্যক্তিগত সহকারী গ্রেপ্তার
নাটোরে ড্যাব নেতা ডা. আমিরুল ইসলামকে গলাকেটে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী আসাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে হত্যাকারী আসাদকে নিয়ে আলোচিত জনসেবা হাসপাতালে যায় পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট।
পরে সেখানে এক ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন জানান, আসাদের বান্ধবীকে কেন্দ্র করে ডা. আমিরুলের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়। এ কারণে আসাদকে চাকরিচ্যুত করেন ডা. আমিরুল। এসব ঘটনায় সৃষ্ট ক্ষোভ থেকে পরিকল্পিতভাবে ডা. আমিরুলকে হত্যা করে তার সাবেক পিএ আসাদ।
পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ২ হাজার ইয়াবাসহ ৩ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
এর আগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে গাড়িচালকসহ ৬ জনকে আটক করেছিল পুলিশ। সোমবার(১ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের হাসপাতালের ব্যক্তিগত কক্ষে খুন হন বিএমএ আহ্বায়ক ও ড্যাব নেতা ডা. আমিরুল ইসলাম।
অভিযুক্ত আসাদের বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার এলাচগ্রামে। সে ওই গ্রামের ইলিয়াস আকন্দের ছেলে।
১০৪ দিন আগে
হাসিনা-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ড হয়েছে: সাবেক আইজিপি মামুন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে দেশে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে বলে আদালতে স্বীকার করেছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার(২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ রাজসাক্ষী হিসেবে এই জবানবন্দি দেন আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে সমন্বয়কদের আটক রেখে মানসিক নির্যাতন করে আন্দোলন প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে আসামি হিসেবে রয়েছেন তিনি। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলায় দোষ স্বীকার করে নিয়ে 'অ্যাপ্রুভার' (রাজসাক্ষী) হয়েছেন। আজ এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের ১১তম দিনে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এ মামলার ৩৬তম সাক্ষীর জবানবন্দি দিলেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি সাড়ে ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই কৌশলি চাকরি। সব সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। আমার এই চাকরিজীবনে আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি সব সময় যথেষ্ট মানবিকতা ও সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। চাকরিজীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্বকালীন সময়ে সংঘটিত হয়েছে, তার দায় আমি স্বীকার করছি।’
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, ‘আমি গণহত্যার শিকার প্রত্যেকের পরিবার, আহত ব্যক্তিবর্গ, দেশবাসী এবং ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দেবেন।’
পড়ুন: জুলাই হত্যা মামলায় সালমান, আনিসুল ও চৌধুরী মামুন ফের রিমান্ডে
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমার এই সত্য ও পূর্ণ বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদঘাটিত হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত দান করেন, বাকিটা জীবন কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।’
জবানবন্দিতে সাবেক এই আইজিপি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পুলিশে রাজনৈতিক প্রভাব আরও বেড়ে যায়। প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন কিছু কিছু কর্মকর্তা। ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগাযোগ ছিল।
তিনি বলেন, এসব কর্মকর্তা প্রায় রাতেই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠকে করতেন। গোপন সেসব বৈঠক গভীর রাত পর্যন্ত চলতো। বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা হলেন—সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবিপ্রধান হারুনুর রশীদ, এসবির মনিরুল ইসলাম, ঢাকার ডিআইজি নুরুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি বিপ্লব কুমার, এএসপি কাফী, ওসি মাজহার, ফোরকান অপূর্বসহ আরও অনেকে। এর মধ্যে কারও কারও সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি যোগাযোগ ছিল।
রাজসাক্ষী মামুন জবানবন্দিতে আরও বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় চেইন অব কমান্ড মানতেন না এসব কর্মকর্তা। কিন্তু আমি চাইতাম তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুক। মূলত পুলিশ বাহিনীতে গড়ে তোলা দুটি গ্রুপই এসব কর্মকাণ্ড চালাতো। এছাড়া দুই গ্রুপের নেতৃত্বদানকারীরা চাইতেন তাদের নিজস্ব বলয়ের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং পাক এবং ঢাকায় থাকুক। জবানবন্দিতে র্যাবে থাকাকালীন টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন বা টিএফআই সেলসহ বহু বন্দিশালার বর্ণনাও দেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুন।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বিভিন্ন বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
এর আগে গত ১০ জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
ওইদিন তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে—তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।’
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠনের সময় মামুন এসব কথা বলেন।
একই দিন এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১। মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন।
এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।
১০৪ দিন আগে
অধস্তন আদালতের বিচারকদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ পেল সুপ্রিম কোর্ট
বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া তিন মাসের মধ্যে পৃথক সচিবালয় গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরল এবং সুপ্রিম কোর্টের পৃথক সচিবালয় স্থাপনে কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান সম্বলিত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের সংশোধনী অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করে এবং বাহাত্তরের সংবিধানের মূল ১১৬ অনুচ্ছেদ বহাল করে আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃপক্ষের পাঠানো প্রস্তাবনা অনুসারে তিন মাসের মধ্যে মধ্যে একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিচারকদের জন্য ২০১৭ সালে তৈরি করা শৃঙ্খলাবিধি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হয়েছে।
এ রায়ের ফলে এখন থেকে বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধানের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টকে আর ধরনা দিতে হবে না।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূইয়া। এ ছাড়া ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম।
আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ের ফলে বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতিদান ও ছুটি মঞ্জুর) শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরে এলো। এখন থেকে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নামে বিচারকদের বদলি ও শৃঙ্খলা বিধানের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে আর কোনো নাটাই থাকল না। নির্ভয়ে তারা রায় দিতে পারবেন। রায় দেওয়ার পর নির্বাহী কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়ে রাতের আঁধারে বিচারকদের বদলির আর কোনো ভয় থাকল না। এ রায়টি একটি ঐতিহাসিক রায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে সংবিধানের বিদ্যমান ১১৬ অনুচ্ছেদ, ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবী রিটটি করেন। ওই সাত আইনজীবী হলেন— মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, মো. জহিরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল্লাহ সাদিক, মো. মিজানুল হক, আমিনুল ইসলাম শাকিল ও যায়েদ বিন আমজাদ।
রিটে বলা হয়, ১৯৭২ সালের সংবিধানে অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতিদান ও ছুটি মঞ্জুর) ও শৃঙ্খলাবিধানের এই দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত ছিল। কিন্তু ১৯৭৪ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত করা হয়। পরে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ‘সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রযুক্ত হইবে’ শব্দগুলো সন্নিবেশিত করা হয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পঞ্চম সংশোধনী আইন ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করলে পঞ্চদশ সংশোধন আইন, ২০১১ এর মাধ্যমে ১১৬ অনুচ্ছেদের বর্তমান একই বিধানটি প্রতিস্থাপন করা হয়। বর্তমানে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে এই বিধানটিই বিদ্যমান রয়েছে।
রিটের যুক্তিতে বলা হয়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। ১১৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে এই মৌলিক কাঠামো বিনষ্ট করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির বাস্তবায়ন কার্যত আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে, পঞ্চম সংশোধনী অসাংবিধানিক ঘোষিত হয়েছে এবং পঞ্চদশ সংশোধনীতে ১১৬-এর বিধান বহাল রাখা হয়েছে, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের পরিপন্থি। পৃথক সচিবালয় না থাকায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। অধস্তন আদালতের ওপর আইন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণের কারণে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাগণ স্বাধীনভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করতে পারছেন না।
এই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৭ অক্টোবর হাইকোর্ট বিচারপতি ফারাহ মাহবুব (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে সংবিধানের বিদ্যমান ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং এ সংক্রান্ত ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় কেন প্রতিষ্ঠা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।
আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। পাশাপাশি বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অগ্রগতি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ও পৃথক সচিবালয়: হাইকোর্টের রায় ২ সেপ্টেম্বর
গত ২৫ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান। সে অনুযায়ী এই বেঞ্চে উভয় পক্ষে কয়েকদিন রুল শুনানির পর আজ (২ সেপ্টেম্বর) রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
১০৪ দিন আগে
রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মিঠু গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্রনেতা নাদিমুল হক এলেম হত্যা মামলায় সূত্রাপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সারোয়ার উদ্দীন মিঠুকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা রোডের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান।
গত বছরের ১৯ জুলাই পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজসংলগ্ন পাতলা খান লেনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শেখ বোরহানউদ্দিন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী নাফিমুল হক ওরফে এলেম।
তিনি জানান, গত বছরের ১৯ জুলাই পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজের মোড়-সংলগ্ন পাতলা খান লেনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ও শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী নাদিমুল হক এলেম। এ ঘটনায় নিহতের মা ইসমত আরা বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ মোট ৮৯ জনকে আসামি করে সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। একই ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. শামসুল আলম আরেফিনও সূত্রাপুর থানায় আরেকটি মামলা করেন। বর্তমানে ঘটনাটির তদন্ত কার্যক্রম সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ বিভাগ পরিচালনা করছে। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাবেক এমপি বাহার ও মেয়ের ১৭ কোটি টাকা অবরুদ্ধ করল সিআইডি
সারোয়ার উদ্দিন আহমেদ মিঠুকে রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন ও পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন।
তিনি আরও জানান, অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অন্যান্য জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
১০৪ দিন আগে
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের
চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৮২ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি করেন চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র একেএম নুরুল্লাহ (২৩)।
মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ ১৮২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাসমিন আক্তার নিসাত।
পড়ুন: শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি ফখরুলের
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, তৎকালীন নগর পুলিশের সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলাম, সাইফ পাওয়ার টেকের এমডি তরফদার রুহুল আমিন, আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ, শেখ হাসিনার সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক এমপি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট নগরের নিউমার্কেট–সংলগ্ন রেলওয়ে জামে মসজিদের সামনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেন বাদী। আসামিদের নির্দেশে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার উপর হামলা চালান। সেদিন বাদী গুলিবিদ্ধ হন।
বাদীর দুই পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। বাদী চিকিৎসাধীন থাকায় ও জড়িত আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে সময় লাগে, যার কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে।
১০৫ দিন আগে
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে রুবেল নামের এক ব্যক্তির আমৃত্যু কারাদণ্ড
ঢাকার কেরাণীগঞ্জ এলাকায় নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে রুবেল নামের এক ব্যক্তিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার(১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় দেন। আসামি মো. রুবেলকে আমৃত্যু সাজার পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে।
জরিমানার টাকা আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে ভুক্তভোগীকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
পড়ুন: ডা. নিতাই হত্যা মামলায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড, চারজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকার কেরাণীগঞ্জ এলাকার ভাড়া বাসায় মেয়েকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন রুবেল।
রাত সাড়ে ৩টার দিকে মেয়েকে ঘুম থেকে তুলে ধর্ষণ করে এবং ২১ অক্টোবর মেয়েটির নানী কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
২০১৯ সালে ৩১ জানুয়ারি কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার এসআই এস এম মেহেদী হাসান, রুবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে আদালতে।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৯ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে।
১০৫ দিন আগে
আওয়ামী লীগ অবশ্যই নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ‘অবশ্যই ব্যাহত করার চেষ্টা’ করবে।
রবিবার (৩১ আগস্ট) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের উপর গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ সংস্কার কমিশন, রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড, মাদক নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উসকানি এবং ভুয়া খবর ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন সম্পর্কিত আলোচনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য ছিল, তা পুনরুজ্জীবিত ও সুরক্ষিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘মতবিরোধ থাকলেও গণতন্ত্রের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার জন্য সকল রাজনৈতিক দলকে ব্যক্তিগত এবং দলীয় স্বার্থকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। এই ঐক্য ভেঙে গেলে, ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীগুলো বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।’
পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে বড় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের নিরাপত্তা সম্পর্কে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা এবং শান্তিপূর্ণ আয়োজন সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণের উপর নির্ভর করছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিরাপত্তা দেবে এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
জনসাধারণের অংশগ্রহণের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষের স্বেচ্ছায় এবং উৎসাহের সঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে। সকলের সহযোগিতায়, আমরা বিশ্বাস করি অন্তর্বর্তী সরকার একটি অবাধ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সক্ষম হবে।’
পুলিশের নিরপেক্ষতা এবং নিষ্ক্রিয়তা সম্পর্কে জনসাধারণের উদ্বেগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ যদি তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ নেয়, তাহলে মানুষ অভিযোগ করে যে তারা একটি শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু, যদি তারা খুব দেরিতে পদক্ষেপ নেয়—তাহলে আবার সমালোচনা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই কঠিন। আমরা চেষ্টা করছি। উদাহরণস্বরূপ, গতকাল (৩০ আগস্ট) একটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ যদি তা ঘটার আগেই পদক্ষেপ নিত—তাহলে অনেকেই বলত যে, তারা অপ্রয়োজনীয়ভাবে হস্তক্ষেপ করেছে।’
সারা দেশে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নিচ্ছে। ‘৭ সেপ্টেম্বর থেকে পুলিশ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হবে। আমরা প্রস্তুত।’
তিনি এই ধরনের ঘটনা কমাতে জনসাধারণ এবং রাজনৈতিক সমর্থন কামনা করেন। ‘এই ঘটনাগুলো ধীরে ধীরে কমাতে আমাদের সকলের সাহায্য প্রয়োজন। তবেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে।’
কিছু গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, যারা আর রাজনীতিতে সক্রিয় নন, তারা অবশ্যই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইবেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও পলাতক আছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দল, জনগণ এবং কর্তৃপক্ষ—আমাদের সকলের কর্তব্য—তাদের থামানো।’
১০৬ দিন আগে
ধানমন্ডিতে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিল শিশু গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ
রাজধানীর ধানমন্ডি থানা এলাকায় মারিয়া(১২) নামে এক গৃহকর্মীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার(৩০ আগস্ট) বিকাল ৪টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গৃহকর্মী মারিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল থানার আচুলা গ্রামে। সে ওই এলাকার মাসুদের মেয়ে ছিল।
তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা গৃহকর্ত্রী নাসরিন সুলতানা জানান, ওই বাসায় আমি একাই থাকি। আমার একমাত্র মেয়ে ও স্বামী দেশের বাইরে থাকেন। আমার গাড়ির চালক দুপুরের দিকে বাসায় এসে কলিংবেল দিচ্ছিল কিন্তু সে দরজা খুলছিল না। পরে ড্রাইভার আমাকে ফোন দিলে আমি বাসায় এসে দরজা খুলে দেখি গেস্ট রুমে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে ঝুলে আছে। তখন তার শরীর গরম ছিল পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক জানায় সে আর বেঁচে নেই।
তিনি আরও বলেন, চার মাস আগে তার নানি বকুল আমার বাসায় কাজের জন্য দেয়। তার নানী আমার পাশের বাসায় কাজ করে। আমার বাসায় দুইটি কাজের মেয়ে এর মধ্যে দুই মাস আগে একটি মেয়ে চলে গেছে সে আর আসেনি। আমাদের ধারণা সে এই বাসায় কাজ করতে চাইনি এজন্য সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।
পড়ুন: নেত্রকোণায় এক রাতে বৃদ্ধ-যুবক ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
গৃহকর্মী মারিয়ার নানি বকুল জানান, চার মাস আগে চার হাজার টাকা বেতনে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দেই আমরা। আজ দুপুরে খবর পেলাম সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এই কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, লাশটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনা বিষয়টির সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
১০৭ দিন আগে
বগুড়ায় হানি ট্র্যাপে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি, নারীসহ গ্রেপ্তার ৭
বগুড়ায় হানি ট্র্যাপে ফেলে দুই ব্যক্তিকে একটি ফ্ল্যাটে জিম্মি করে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনায় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার ও জিম্মিদের উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে শহরের চকসূত্রাপুর শহীদ বিলু সড়কের রহমান ভিলার পাঁচতলা ভবনের পঞ্চম তলার দক্ষিণ ফ্ল্যাট থেকে জিম্মিদের উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আটকদের মধ্যে রয়েছেন বগুড়ার আলোচিত কারাবন্দি তুফান সরকার ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মতিন সরকারের ভাই।
গ্রেপ্তাররা হলেন— সদরের চেলোপাড়ার মহসিন কাজি সিজান (২৫), চকসূত্রাপুর চামড়া পট্টির মতিন সরকারের ভাই ওমর সরকার (৩৫), কেয়া বেগম (৩৩), আফসানা মিমি (২৪), কামরুন্নাহার অধোরা (২২), এনামুল হোসেন ওরফে রায়হান (২৭) ও নয়ন হোসেন (৩৫)।
এসময় তাদের হেফাজত থাথা জিম্মিদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ৫ হাজার ১০০ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। আটকদের মধ্যে মহসিন কাজি সিজানের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিশেষ ক্ষমতা আইন, চুরি ও মারামারিসহ ৬টি মামলা, এনামুল হোসেন রায়হানের বিরুদ্ধে অপহরণ, চুরি ও মারামারিসহ ৬টি মামলা, আলোচিত ওমর সরকারের বিরুদ্ধে হত্যা, চুরি, মারামারি ও মাদকসহ ৬টি মামলা এবং নয়ন হোসেনের বিরুদ্ধে ১টি মাদক মামলা আদালতে বিচারাধীন।
ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকবাল বাহার জানান, জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার ফজলুর রহমান (৪৪) মাস খানেক আগে তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এলে কেয়া বেগমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে মোবাইল নম্বর বিনিময় করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সকালে কেয়া ফোন করে ফজলুর রহমানকে বগুড়া শহরের তিনমাথা এলাকায় আসতে বলেন। তিনি এলে কেয়া ও সহযোগীরা তাকে চকসূত্রাপুরের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে আটকে রাখে। কিছুক্ষণ পর তার এক সহযোগীকেও সেখানে ডেকে আটকিয়ে রাখা হয়।
ওসি আরও জানান, ভুক্তভোগীদের মারধর করে কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাদের নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করা হয় এবং ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি। জিম্মিদের পরিবার বিষয়টি ডিবিকে জানালে পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে উদ্ধার ও সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার আসামিদের শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়।
১০৮ দিন আগে
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জন কারাগারে
শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার(২৯ আগস্ট) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক তৌফিক হাসান তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া অন্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মঞ্জুরুল আলম পান্না, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খাঁন, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী ও মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।
পড়ুন: সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীসহ ঢাবি শিক্ষক ডিবি হেফাজতে
গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ‘মঞ্চ ৭১’।
জুলাই অভ্যুত্থানের আন্দোলনকারীরা অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী এলে তাকে ঘিরে ফেলে এবং আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
গোলটেবিল বৈঠকের অংশগ্রহণকারীদের ঘেরাও করে রাখে। পরে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়। রাতে শাহবাগ থানা পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলাটি করে।
অনুষ্ঠানটিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল গণফোরামের সাবেক সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও আইনজীবী জেড আই খান পান্নার।
১০৮ দিন আগে