আইনশৃঙ্খলা
চামড়া পাচার, মাদক ও পুশইন ঠেকাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
কোরবানির পশুর চামড়া পাচার, মাদক ও অন্যান্য চোরাচালান রোধ এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের পুশইন ঠেকাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শুক্রবার (৬ জুন) দুপুরে আখাউড়া উপজেলার ফকিরমোড়া বিওপির আওতাধীন আনারপুর সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন ২৫ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জাব্বার আহমেদ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ঈদ পরবর্তী সময়ে সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে পশুর চামড়া পাচার, মাদক ও অন্যান্য চোরাচালান রোধ এবং বিএসএফের পুশইন প্রতিহত করতে বিজিবিকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।'
তিনি আরও জানান, সীমান্তে নজরদারি ও টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।
জাব্বার আহমেদ বলেন, 'স্থানীয় জনসাধারণ ও বিজিবির তৎপরতার কারণে এ পর্যন্ত এ সীমান্ত দিয়ে কোনো পুশইনের ঘটনা ঘটেনি।'
তিনি জানান, গত এক মাসে ২৫ বিজিবি প্রায় ৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে। এসব অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, ৬০ বিজিবির পক্ষ থেকেও একই ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
১৯২ দিন আগে
ঈদযাত্রায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে নৌপথে কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার
ঈদুল আজহার সময় নৌপথে যাত্রীদের নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুটগুলোতে বিশেষ টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
চাঁদপুর, শরীয়তপুর, ভোলা, নোয়াখালীর হাতিয়া এবং বরিশালের বিভিন্ন রুটে এ টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।
বর্তমানে ২৩টি দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলায় মোট ১৩৫টি লঞ্চ ২৪ ঘণ্টা চলাচল করছে, যা ঈদে ঘরমুখো হাজারো যাত্রী বহন করছে।
ঢাকা নদীবন্দরের উপপরিচালক মোবারক হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ভোলার মনপুরাগামী এমভি ফারহান-৩ লঞ্চের সিঁড়ি থেকে ছয়জন যাত্রীর মধ্যে একই পরিবারের পাঁচজন—বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়ে যায়। স্থানীয় নৌকার মাঝিরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করেন।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে তিন শিশু, এক নারী এবং দুই কিশোর রয়েছে। তারা ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মনপুরা যাচ্ছিলেন।
মোবারক হোসেন আরও জানান, ঈদযাত্রায় চাঁদপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, হাতিয়া ও সন্দ্বীপ রুটে যাত্রীচাপ বেশি থাকায় প্রতিদিন ১৩৫ থেকে ১৪৫টি লঞ্চ চলাচল করছে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পন্টুন নং ১৩-এ এক ব্রিফিংয়ে নৌবাহিনীর কমান্ডার হারুন-অর-রশিদ বলেন, নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে দেশের প্রধান লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাট এবং নৌপথে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
নদী ও উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত কোস্ট গার্ড এবার চারটি অঞ্চলে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে—ঢাকা, ভোলা, চট্টগ্রাম ও মোংলা।
তারা সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও নৌযান তল্লাশি, যাত্রীদের ব্যাগ স্ক্যানিং, মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা এবং লিফলেট বিতরণ করছেন।
বিশেষ নজর থাকছে ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল-পটুয়াখালী-ভোলা রুট ও বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, গজারিয়া ও মেঘনা নদীতে চলাচলকারী লঞ্চগুলোর ওপর।
এছাড়া চট্টগ্রামের সদরঘাট, কর্ণফুলী, কক্সবাজারের ঘাট নং ৬ ও বড়ঘোপ, খুলনার রূপসা, কয়রা, শরনখোলা, মংলার কৈখালী এবং ভোলার ইলিশা ও ভেদুরিয়া এবং বরিশালের ডিসি লঞ্চ টার্মিনালে নিয়মিত টহল চলছে।
কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, যেকোনো দুর্ঘটনা কিংবা নাশকতা প্রতিরোধে তাদের সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ঈদের পরেও যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে এই বিশেষ নিরাপত্তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
১৯৩ দিন আগে
খাগড়াছড়িতে পুশ-ইন ও কোরবানির চামড়া পাচার রোধে সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
খাগড়াছড়ির সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন আসন্ন কোরবানির চামড়া, গবাদি পশু পাচার রোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার( ৫ জুন)জোন সদর দপ্তরে পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ২৩ বিজিবির যামিনীপাড়া জোন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জোন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খালিদ ইবনে হোসেন।
তিনি বলেন, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) অবৈধভাবে বাংলাদেশে ‘পুশ-ইন’ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে বর্ডার গার্ডের ( বিজিবি) পক্ষ থেকে লিখিত ও মৌখিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং একাধিকবার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভারত থেকে গবাদি পশু ও কোরবানির চামড়া পাচার রোধে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
জোন অধিনায়ক বলেন, সীমান্তে যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে, রামগড়-ফটিকছড়ি সীমান্তেও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আহসান উল ইসলাম।
তিনি সকালে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন টহল ফাঁড়ি পরিদর্শন শেষে জানান, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
১৯৩ দিন আগে
আনার হত্যা মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন আ. লীগ নেতা সাইদুল করিম
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া, তাকে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ গত সোমবার (২ জুন) এই আদেশ দেন। আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার ও ব্যারিস্টার আশরাফ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল বাসেত।
আদেশের বিষয়টি বুধবার (৪ জুন) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আসামির আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার।
তিনি জানান, সামি সাইদুল করিম মিন্টুর নাম এফআইআরে ছিল না এবং তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক কোনো জবানবন্দি দেননি। এসব বিবেচনায় আদালত তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে। এছাড়া, তাকে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
এর আগে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগ এনে গত বছরের ১২ মে আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। ওই মামলার পর গত বছরের ১১ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধানমন্ডি থেকে সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: জামিন পেলেন জবির সাবেক শিক্ষক আনোয়ারা বেগম
পরে এই মামলায় শিমুল ভুইঁয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুইঁয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভুইঁয়া ও সিলিস্তা রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার নথিপত্র ও আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১২ মে চিকিৎসার কথা বলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। পশ্চিমবঙ্গের বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন তিনি। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই নিখোঁজ আনোয়ারুল আজীম।
এর পাঁচ দিন পরে গত বছরের ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। কিন্তু আর খোঁজ মেলেনি টানা তিন বারের এই সংসদ সদস্যের। গত বছরের ২২ মে খবর ছড়ায়, কলকাতার পাশের নিউ টাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়েছে। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে সেখানে লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
১৯৪ দিন আগে
কোরবানির ঈদে নিরাপত্তাসহ সার্বিক প্রস্তুতি ভালো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আসন্ন কোরবানির ঈদে নিরাপত্তাসহ সার্বিক প্রস্তুতি ভালো বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
উপদেষ্টা বুধবার (৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাবের পাশে কোরবানির পশুর হাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এবার কোরবানির প্রতিটি হাটে বিপুল সংখ্যক আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ইজারাদারদের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদের দিন বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল
তিনি বলেন, অসুস্থ পশু যেন হাটে ঢুকতে না পারে সেজন্য চেক-আপের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ অসুস্থ বা আহত হলে যেন চিকিৎসা নিতে পারে, সেজন্য মেডিকেল টিম রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে এবারের কোরবানির ঈদের হাট ব্যবস্থাপনা ও সার্বিক প্রস্তুতি অত্যন্ত ভালো।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাচ্ছি গরুর দাম স্বাভাবিক থাকুক, যাতে কৃষক বা খামারি ও ক্রেতা উভয়ই লাভবান হয়।তিনি বলেন, গরুর দাম যদি খুব কমে যায় তখন কৃষক বা খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার দাম বেড়ে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভোক্তারা। তাই, আমরা চাচ্ছি এমন একটা দাম নির্ধারণ হউক যাতে দুই পক্ষ লাভবান হয়।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রত্যেকটি কোরবানির পশুর ট্রাকের সামনে লেখা থাকবে ট্রাক কোন হাটে যাবে এবং এ সংক্রান্ত ব্যানারও টানানো থাকবে।’ কেউ এর ব্যত্যয় করার চেষ্টা করলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
১৯৪ দিন আগে
মুন্নি সাহাসহ তার পরিবারের চার সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
সাংবাদিক মুন্নি সাহা, তার মা আপেল রানী সাহা, স্বামী কবির হোসেন, দুই ভাই তপন কুমার সাহা ও প্রণব কুমার সাহার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, সাংবাদিক মুন্নি সাহা, তার পরিবারের সদস্যরা এবং তার স্বামী এস এম প্রমোশনসের স্বত্বাধিকারী কবির হোসেন অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।আরও পড়ুন: সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সপরিবারে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগ-সংশ্লিষ্টরা বিদেশে পালাতে পারেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। তারা পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।
অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা একান্ত প্রয়োজন।
১৯৫ দিন আগে
বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ, রুল জারি
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল ও নতুন পরিচালক হিসেবে আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে মনোনীত করার সিদ্ধান্তের বৈধতার প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রুলে বিসিবির পরিচালক হিসেবে ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল এবং আমিনুল ইসলামকে পরিচালক মনোনীত করার সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ কার্যক্রম চালাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বিসিবির আইনজীবী।
বিসিবির সদ্য সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদের করা রিটের শুনানি শেষে মঙ্গলবার (৩ জুন) বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথিকা হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। যুব ও ক্রীড়া সচিব এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডসহ রিটের পাঁচজন বিবাদীকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে ফারুক আহমেদের রিটের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী এ কে এম আজাদ হোসেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক। বিসিবির পক্ষে আইনজীবী মাহিন এম রহমান এবং আমিনুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম শুনানিতে ছিলেন।
আরও পড়ুন: সাফজয়ী দলকে বিসিবিও দেবে আর্থিক পুরস্কার
আদেশের পর ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস বলেন, আদালত রুল ও স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। যারা আছেন তারা থাকবেন। আদালতের বক্তব্য হচ্ছে- যে যেভাবে আছেন, সে সেভাবে থাকবেন। ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। তার মানে যে যে অবস্থায় আছেন, সে অবস্থায় ফাংশন করবেন।
বিসিবির আইনজীবী মাহিন এম রহমান বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজকে যারা পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বে আছেন ও কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারাই কাজ চালিয়ে যাবেন। আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে বর্তমানে ৯ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে।
গয় ২৯ মে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে। পরদিন ৩০ মে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামকে বিসিবির পরিচালক মনোনীত করে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিলের পর এক বোর্ড সভায় আমিনুল ইসলামকে বিসিবির সভাপতি নির্বাচিত করেন পরিচালকরা।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গত ২৯ মে এবং ৩০ মের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত রবিবার রিটটি করেন ফারুক আহমেদ। রিটটি সোমবার(২ জুন) হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে গতকাল হাইকোর্ট রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। অন্য কোনো বেঞ্চে রিটটি উপস্থাপন করার স্বাধীনতা রিট আবেদনকারীর থাকবে বলে উল্লেখ করেন আদালত। এরপর এই বেঞ্চে রিটটি দাখিল করা হয়, যা আজ শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ২৫ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। সে অনুযায়ী শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল ও স্থিতিবস্থার আদেশ জারি করেন।
১৯৫ দিন আগে
ট্রাইব্যুনালে হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ সালাহউদ্দিনের
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে গুমের অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার (৩ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিন এই অভিযোগ দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য যাদের নাম অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া আরও অজ্ঞাতনামা অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজ বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন সালাহউদ্দিন। এ সময়ে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ আইনজীবীরা সাথে ছিলেন। পরে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে অভিযোগ তুলে দেন তিনি।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিনকে তুলে নেওয়া হয় বলে তখন অভিযোগ করেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। অন্যদিকে তখন বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সালাহউদ্দিনকে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন।
সে সময় সালাহউদ্দিন বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন। একই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
সালাহউদ্দিনকে আটক করার পর বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। ২০১৫ সালের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহউদ্দিন খালাস পান। ভারত সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের পর জাতীয় নির্বাচন পেছানোর যৌক্তিকতা নেই: সালাহউদ্দিন
২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিলেও খালাস পান সালাহউদ্দিন। আদালত তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই বছরের ৮ মে সালাহউদ্দিন ভ্রমণ অনুমোদনের জন্য আসাম রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি ভারতে আটকে আছেন। দেশটিতে তার বিরুদ্ধে যে অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ভারতে থাকার কারণে তিনি নিজের পাসপোর্ট নবায়নের সুযোগ পাননি। ভ্রমণ অনুমোদন দেওয়া হলে তিনি নিজের দেশে ফিরতে চান। দেশবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হতে চান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট সালাহউদ্দিন দেশে ফেরার জন্য ভ্রমণ অনুমোদন বা ট্রাভেল পাস পান। ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
১৯৫ দিন আগে
মেজর সিনহা হত্যা: হাইকোর্টে ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া, অপর ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া আসামিদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন। মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে এ রায় দেওয়া হয়।
এর আগে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর গত ২৯ মে শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ (২ জুন) রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়। পরে শুনানি শেষে আজ সকালে রায় দেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন, তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও শামীমা দীপ্তি। আসামিপক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান শুনানি করেন।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে মেজর সিনহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
তৎকালীন বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী গুলি চালিয়েছিলেন মেজর সিনহার ওপর। পরে এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত হন ওসি প্রদীপ।
আরও পড়ুন: মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু
এ ঘটনার পাঁচ দিন পর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। এরপর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযোগপত্রে ঘটনাটিকে ‘পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
এ ঘটনায় করা মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
এরপর বাধ্যতামূলক ডেথ রেফারেন্স পর্যালোচনার জন্য মামলাটি হাইকোর্টে পৌঁছে এবং দণ্ডপ্রাপ্তরা তাদের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আজ নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখে হাইকোর্ট।
১৯৬ দিন আগে
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল
জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অপর আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে এই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ জুন তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির ও মামলার পরবর্তী আদেশের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার (১ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এদিন সকালে জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। চীফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই অভিযোগ দাখিল করেন। পরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ওপর শুনানিসহ আদালতের বিচারকাজ বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এরপর ১৪ আগস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দাখিল করা হয়। সেই অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছর ১৪ অক্টোবর।
ছয় মাস ২৮ দিনে তদন্ত শেষ করে গত ১২ মে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও সরাসরি নির্দেশ দেওয়াসহ মোট পাঁচটি অভিযোগ আনেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্রাথমিকভাবে তার (শেখ হাসিনার) বিরুদ্ধে মূলত ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছে। জুলাই গণহত্যার ঘটনায় সব হত্যাকাণ্ডের সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি শেখ হাসিনার। তিনি এ গণহত্যা ও হত্যার উসকানিদাতা, প্ররোচনাদাতা ও সরাসরি নির্দেশদাতা। এ বিষয়ে তার বহু কল রেকর্ড, অডিও-ভিডিও পাওয়া গেছে।
৫টি অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগটি হচ্ছে, তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের উসকানি দিয়েছেন ও প্ররোচনা দিয়েছিলেন ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে। যেখানে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা, রাজাকারের নাতিপুতি এসব বলেছিলেন। এসব বলার মাধ্যমে তাদের (আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। এছাড়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ অর্থাৎ সহযোগী বাহিনী হিসেবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের (আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের) হত্যা করে আহত করে অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, দ্বিতীয় যে অভিযোগটি করা হয়েছে সেটা হচ্ছে, সরাসরি নির্দেশ। তদন্ত সংস্থার তদন্তে শেখ হাসিনা কিছু টেলিফোন কনভারসেশন জব্দ করেছেন। সেখানে তিনি বারবার সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি রাষ্ট্রীয় সব বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন হেলিকপ্টার, ড্রোন, এপিসিসহ মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরস্ত্র, নিরীহ আন্দোলনকারী সিভিলিয়ান (নাগরিক) যারা দেশে একটা ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেরত ছিলেন, তাদেরকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন ও নির্মূল করার জন্য।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এছাড়া বাকি ৩টি অভিযোগ সুনির্দিষ্ট বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। যেখানে শেখ হাসিনার নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে অপরাধগুলো সংঘটিত হয়েছে। কীভাবে মানুষকে মারা হয়েছে, নৃশংসতাগুলো করা হয়েছে, সেব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ঘটনাকেন্দ্রিক ওই ৩টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যত লোক মারা গেছেন, যত লোক আহত হয়েছেন, প্রত্যেকটার ব্যাপারে তার (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধে চার্জ রয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, প্রতিবেদনে এসেছে প্রায় দেড় হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে, ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে গুলি করে আহত করা হয়েছে, নারীদের ওপর বিশেষভাবে সহিংসতা চালানো হয়েছিল, লাশ একত্রিত করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, পোস্টমর্টেম করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, ডাক্তারদের চিকিৎসা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
শেখ হাসিনার বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালে শেখ হাসিনা নিজে গিয়ে বলেছিলেন, এসব ভর্তি রোগীকে যাতে চিকিৎসা দেওয়া না হয়। রোগীরা যখন যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে হাসপাতাল থেকে চলে যেতে চেয়েছিলেন, তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাতে পচে গেলে কেটে ফেলতে হয় সেরকম নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আন্দোলকারীদের ওপর দায় চাপানোর জন্য বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় নিজেদের লোকদের দিয়ে অগ্নিসংযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়।
এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর এ মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও (গণ–অভ্যুত্থানের সময় আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন) আসামি করা হয়।
১৯৭ দিন আগে