আইনশৃঙ্খলা
মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলা: মুক্তিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তথ্য গোপন করে উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এর আগে দেওয়া জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে হাইকোর্ট তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মুনতাকিমকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রমের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন— ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সোরোয়ার হোসেন বাপ্পী।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সোরোয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ না করেন তাহলে তাকে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ অর্থাৎ গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাজা বহালের রায় প্রকাশ, আমান দম্পতিকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি। কারাগারে আছেন কয়েক বছর ধরে। গত আগস্ট মাসে এ মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশনা দিয়েছিল দেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল আপিল বিভাগ।
কিন্তু এই নির্দেশনা গোপন রেখে হাইকোর্টে চাওয়া হয় ওই আসামির জামিন। গত ২০ নভেম্বর মুক্তিকে জামিন দেন বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এ জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর পর গত বুধবার মুক্তি পান তিনি। এদিকে এ আসামির মুক্তিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে সরকারের শীর্ষ মহলে।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘মামলাটি টাঙ্গাইল জেলার হলেও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ঢাকার জেলার নাম উল্লেখ করা রয়েছে। শুধু জেলার নাম ভুলই নয়, আসামির নামও ভুল লেখা হয়েছে। ছিল না কোনো টেন্ডার নম্বর।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামিন চাইতে পারেন যেকোনো আসামি। কারণ এটা আসামির অধিকার। জামিন পেতেও পারেন। তবে এভাবে ভুল তথ্য দিয়ে জামিন হাসিল করাটা কতটা ন্যায়সঙ্গত। এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার চেম্বার বিচারপতি বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। সে অনুযায়ী বিষয়টির উপর সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে গত ২০ নভেম্বর মুক্তিকে জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ রবিবার প্রত্যাহার করে নেন। পাশাপাশি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।’
প্রসঙ্গত, সহিদুর রহমান মুক্তি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই। ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়।
এ ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এই মামলায় তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
পরে পুলিশ এই চারজনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। বর্তমানে এই মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মসমর্পণ
নিপুণ রায়কে ৮ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
গোসলের ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ, যুবকের যাবজ্জীবন
রংপুরের পীরগাছায় গোসলের ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে ব্রেলভী হোসেন সুমন নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রবিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার রাধাকৃষ্ণ গ্রামের মোশাররফ হোসেন মানিকের ছেলে ব্রেলভী হোসেন সুমন এক প্রতিবেশীর বাড়িতে যাতায়াত করতেন।
একপর্যায়ে ওই বাড়ির নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এতে মেয়েটি রাজি না হওয়ায় গোপনে মোবাইল ফোনে গোসলের ভিডিও ধারণ করেন।
সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন সুমন।
২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ধর্ষণের সময় বিষয়টি তাদের এক নিকটাত্মীয় দেখে ফেলেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
ওই বৈঠকে বিয়েতে অস্বীকৃতি জানান সুমন। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি পীরগাছা থানায় মামলা করতে যান ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নেওয়া পরে আদালতে মামলা করেন।
আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপপরিদর্শক (এসআই) ইকরামুল হক তদন্ত শেষে ওই বছরের ২০ আগস্ট সুমনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
প্রায় চার বছর মামলার বিচারকাজ চলার পর রবিবার রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন
লক্ষ্মীপুরে স্বামীকে হত্যা: ২ আসামির যাবজ্জীবন
চাঁদপুরে শাশুড়ি ও স্ত্রী হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
চাঁদপুরে স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যার দায়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়ায় একজনের মো. আল মামুন মোহন নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে এ মামলার রায় দেন আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) শাহেদুল করিম।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মামুন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মৃত মনতাজ মাস্টারের ছেলে।
হত্যার শিকার স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতু ও শ্বাশুড়ি পারভীন বেগম চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকার প্রবাসী মো. সেলিম খানের মেয়ে ও স্ত্রী।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর মামুন ও রিতুর বিয়ে হয়। শ্বশুর বাড়িতে ঘর না থাকায় রিতু বাবার বাড়িতে থাকতেন। এরইমধ্যে দেশের বাইরে চলে যান মামুন।
সেখানে কাজ না পেয়ে দেড় বছর পরে দেশে ফিরে আসেন। নানা কারণে রিতুকে সন্দেহ করতে থাকেন।
এরপর ২০২০ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়িতে ইফতারের সময় স্ত্রী ও শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন মামুন। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।
ছুরিকাঘাত করার পর রিতু ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং তার মা পারভীন বেগম ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় রিতুর চাচা মো. লিয়াকত খান ফরিদগঞ্জ থানায় মামুনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করেন তৎকালীন ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ শহীদ হোসেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি আইনজীবী মজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, মামলায় আদালত ২৮ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ, মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা ও আসামি তার অপরাধ স্বীকার করায় আদালত এই রায় দেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে স্ত্রী ও ২ সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
যশোরে সোনা চোরাচালান মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
রাঙ্গামাটিতে শিশু বলাৎকার: যুবককে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড
রাঙ্গামাটিতে এক শিশুকে বলাৎকারের দায়ে এক যুবককে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাঙ্গামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নিার্যাতন দমন ট্রাইব্যুলাল এর বিচারক এ.ই.এম. ইসমাইল হোসেনের আদালত এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার
তিনি জানান, বলাৎকারের ঘটনায় শিশুর বাবার দায়ের করা মামলায় যুবক মো. ওমর সাদেক রিয়াদ ওরফে ওমর ফারুককে দোষি সাব্যস্ত করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে রাষ্ট্র পক্ষে আইনজীবী ছিলেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সাইুফুল ইসলাম অভি।
আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আইনজীবী শফিউল আলম মিয়া, আইনজীবী রাশেদ ইকবাল এবং আইনজীবী কামাল হোসেন সুজন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে রাঙ্গামাটি শহরের শান্তিনগর বাস টার্মিনাল এলাকায় ওমর সাদেক রিয়াদ ওরফে ওমর ফারুক ওই কিশোরকে বলাৎকার করেন।
এরপর কিশোরের বাবা ওই বছরের ১০ অক্টোবর রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে রবিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে রাঙ্গামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন এবং জেল হাজতে পাঠান।
আরও পড়ুন: ফেনীতে কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
ছাত্রকে বলাৎকারের দায়ে মাদরাসা শিক্ষকের যাবজ্জীবন
হিযবুত তাহরীরের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
খুলনা মহানগরী হরিণটানা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাতে খানজাহান নগর এলাকা থেকে হিজবুত তাহরীর খুলনা অঞ্চলের প্রধানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি ল্যাপটপ, ছয়টি মোবাইল, দুইটি পেনড্রাইভ, একটি এটিএম কার্ড এবং হিযবুত তাহরীরসংশ্লিষ্ট বইয়ের ১০টি প্রিন্ট কপি জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জালিয়াতির অভিযোগে ঢাকায় চীনা নাগরিকসহ গ্রেপ্তার ১৫
গ্রেপ্তার হওয়া চার সদস্য হলেন— হিজবুত তাহরীর খুলনা অঞ্চলের প্রধান আনিসুর রহমান রুহুল আমিন রকি (৩৬), সদস্য মো. শাকিল আহম্মেদ (২৬), রিজভী আজিম খান (২৭) ও মেহেদী হোসেন সালিত (২৪)।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে কেএমপির সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক।
পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের টিম শনিবার দিবাগত রাতে নগরীর হরিণটানার খানজাহান নগর এলাকা থেকে হিজবুত তাহরীর খুলনা অঞ্চলের প্রধানসহ চারজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, এদের মধ্যে মো. আনিসুর রহমান রুহুল আমিন রকি মূলত খুলনা অঞ্চলে হিজবুত তাহরীরের কার্যক্রম প্রচার প্রসারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়।
তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে যান।
এর আগে ২০১১ ও ২০১৩ সালে ডিএমপির গুলশান থানা এবং ২০১৫ সালে ডিএমপির ভাটারা থানায় গ্রেপ্তার হয়ে ৩, ৭ ও ১৩ মাস কারাভোগ করেছেন। তিনি তার সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে নির্দেশনা নিয়ে জুম মিটিং ও গোপন বৈঠকের মাধ্যমে কর্মী সংগ্রহ এবং রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
বর্তমানে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা প্রথম ফেজে রোজভেল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থেকে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবরে মহাসমাবেশ থেকে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, কারাগারে মৃত্যু
নাশকতার অভিযোগ: ২৮ অক্টোবর থেকে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ৭২১
৯৯৯ নম্বরে সাকিবের কল, দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা
পাবনায় রেললাইনের কিছু অংশ ভেঙে গিয়ে ফাঁকা হয়ে আছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। তবে তার আগেই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানান এক যুবক।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে ভাঙুরার দিলপাশা রেল স্টেশনের কাছাকাছি স্থানে রেললাইনে এই সমস্যা দেখা যায়।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে স্বামীকে কুপিয়ে খুন করে ৯৯৯-এ স্ত্রীর ফোন
পরে বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন সাকিব নামে একজন।
কলটি রিসিভ করেছিলেন ৯৯৯ কলটেকার কনস্টেবল সোহরাব আরাফাত এবং বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
তিনি বলেন, তাৎক্ষণিক রেললাইন মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেলওয়ে নিয়ন্ত্রণকক্ষ এবং রেল পুলিশ নিয়ন্ত্রণকক্ষে ঘটনাটি দ্রুত জানাই।
সংবাদ সংবাদ পেয়ে রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মেরামতকারী দল রেললাইনের ফাঁকা অংশটুকু মেরামত করে।
আরও পড়ুন: ৯৯৯-এ ফোন: নোয়াখালীতে অস্ত্রসহ ২ ডাকাত গ্রেপ্তার
এলপিজির দাম আবার কমল, ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৯৯৯ টাকা
২৮ অক্টোবর থেকে সারাদেশে ২০৮টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে
গত ২৮ অক্টোবর থেকে রবিবার (২৬ নভেম্বর) ৬টা পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচিতে মোট ২০৮টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া, ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর চলমান ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ চলাকালীন গত ৬০ ঘণ্টায় তিনটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
এ সময় মোট তিনটি গাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
এর মধ্যে ঢাকা শহরের ভেতরে একটিতে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার।
আরও পড়ুন: বরিশালে সড়কে গাছ ফেলে ট্রাকে আগুন
বাকি দুটি অগ্নিসংযোগ হয়েছে কুমিল্লার দাউদকান্দি ও বরিশাল বিভাগে।
আগুনে দুটি বাস ও একটি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে সারাদেশে আগুন নেভাতে ছয়টি অগ্নিনির্বাপক ইউনিটের মোট ৩০ জন সদস্য কাজ করেছেন।
এছাড়া, ফের রবিবার সকাল থেকে বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে আগুন
কুলিয়ারচরে দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী পিকআপভ্যানে আগুন
৪৮ ঘণ্টার অবরোধ: সারা দেশে ২৩০ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ৪৩০ টহল দল মোতায়েন
ঢাকা, ২৬ নভেম্বর (ইউএনবি)- বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে ২৩০ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজ অবরোধের প্রথম দিনে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে ২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবি’র এই কর্মকর্তা জানান, বাকি ২০২ প্লাটুন বিজিবি অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি সারা দেশে মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষ দিক থেকে বিরোধী দলগুলোর অবরোধ ও হরতাল পালন শুরু করার পর থেকে আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা দেশের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।
ইতোমধ্যে ঢাকায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ১৪৫টিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪৩০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ইমরান খান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লার গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে র্যাব।
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ অবরোধ কর্মসূচি: সারা দেশে ২৩৩ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ৪২৮ টহল দল মোতায়েন
তিনি বলেন, ‘যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা রোধে বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র্যাবের কর্মকর্তারা নিবিড় নজর রাখছেন।’
নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো এই অবরোধের ডাক দেয়।
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যে ৬ দফায় অবরোধ পালন করেছে।
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ অবরোধ: সারা দেশে ২৩২ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ৪৩২ টহল দল মোতায়েন
নাশকতার অভিযোগ: ২৮ অক্টোবর থেকে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ৭২১
দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৭২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে মা ও মেয়েকে হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ২ জন গ্রেপ্তার
র্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও নাশকতায় জড়িত মোট ৭২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার রাজধানীর বংশাল ও চকবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি নেতা আরমান ও ছাত্রদলের নেতা রাব্বি হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
আরও পড়ুন: নাশকতার অভিযোগে ২৮ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ৬৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব
চট্টগ্রামে অবরোধে বিএনপির ২০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জালিয়াতির অভিযোগে ঢাকায় চীনা নাগরিকসহ গ্রেপ্তার ১৫
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে শনিবার (২৫ নভেম্বর) এক চীনা নাগরিকসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এ ঘটনায় চক্রটির ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই চক্রের প্রধান ঝ্যাং জি ঝাহ্যাং (৬০) নামে এক চীনা নাগরিক।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) রাজধানীর হাতিরঝিল ও কাফরুল থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।
চক্রটি বৈধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছাড়াই সহজ ঋণের সুযোগ এবং চাকরির আবেদনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে প্রতারণামূলক স্কিমগুলোতে জড়িত ছিল।
অভিযানের সময় পুলিশ সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে আলামত জব্দ করে এবং ২৯টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের তথ্য উদঘাটন করে।
আরও পড়ুন: রংপুরে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, গত দুই বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এই গ্রুপটি।
তবে এই অর্থের কোনোটিই বাংলাদেশে নেই। সবগুলোই চীনে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শুধু গত ছয় মাসে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এই চক্রটি দেশটিতে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ মানুষকে প্রতারিত করেছে।
ডিবি প্রধান তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, চীনা নাগরিকদের তৈরি একটি অ্যাপের সার্ভার সিঙ্গাপুরে রয়েছে এবং কল সেন্টারগুলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে অবস্থিত। চক্রটি ভুক্তভোগীদের অল্প পরিমাণ টাকা দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত।
তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করার জন্য প্রতারিতদের প্রলুব্ধ করেছিল। যা একবার ইনস্টল হয়ে গেলে প্রতারকদের ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোনে ফটো, ভিডিও এবং যোগাযোগের তালিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারত।
পরবর্তীকালে, প্রতারকরা ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল করতে এবং অর্থ আদায়ের জন্য এই তথ্য ব্যবহার করে, কখনও কখনও মিথ্যা ছবি এবং ভিডিও তৈরি করে।
হারুন আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশে এসব অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়ে ৬০ জনের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কেউ আত্মহত্যা করেছে কিনা তা জানা যায়নি।
ডিবি প্রধান পরামর্শ দেন, এই চক্রের হাতে কেউ প্রতারিত হলে ভুক্তভোগীর মামলা করা উচিত।
তিনি আরও জানান, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তারা আত্মগোপনে চলে গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে ডিবির অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন: জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে জাপা: চুন্নু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেড়েছে ডায়রিয়া, হাসপাতালে স্যালাইন সংকট