দেশের দুই জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আরও ২৭ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার ভোর থেকে এসব নাগরিকদের ঠেলে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ও স্থানীয় প্রশাসন।
বিজিবির দেওয়া তথ্যমতে, ফেনীর ছাগলনাইয়ার মটুয়া সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। শুক্রবার (৩০ মে) ভোর রাত ৩টার দিকে তাদের ঠেলে পাঠানো হয়। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ৪ বিজিবির ছাগলনাইয়া বিওপির টহলদল মটুয়া এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ঘরের মধ্যে ১৩ জনকে দেখতে পায়। তাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ৬ শিশু রয়েছেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন— আলতাফ (৩৯) ও তার স্ত্রী মোমিনা বেগম (৩২), আমিনুল ইসলাম (৩৮) ও তার স্ত্রী উর্মি বেগম (২৯), মোমিনুল হক (৩৫) ও তার স্ত্রী শেফালী বেগম (৩০) এবং ইশরাক হোসেন (৪০)। বাকি ছয়টি শিশু।
বিজিবি জানায়, ছাগলনাইয়া উপজেলার মটুয়া সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো ৪টি পরিবারের ১৩ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আটক ব্যক্তিদের বরাতে বিজিবির কর্মকর্তারা বলেন, ওই ১৩ বাংলাদেশিকে হাত ও চোখ বেঁধে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে আসা হয়। পরে বৈরী আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রত্যেকের হাত ও চোখের বাঁধন খুলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে থানায় হস্তান্তর করা ১৩ জনকে স্থানীয় মটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। তাদের খাবারসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
বিজিবি–৪ ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, সীমান্তে ঠেলে পাঠানোর ঘটনায় বিএসএফের সংশ্লিষ্ট কোম্পানি কমান্ডারকে মৌখিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার। এ বিষয়ে প্রতিবাদলিপি পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: আবারও বিয়ানীবাজার সীমান্তে ২১ জনকে পুশইন করল বিএসএফ
অন্যদিকে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা সীমান্ত দিয়ে আরও ১৪ জন পুশ-ইন করেছে বিএসএফ।
শুক্রবার (৩০ মে) ভোর ৫টার দিকে মাটিরাঙ্গার তাইন্দং ইউনিয়নের আম বাগান সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশ-ইনের পর তাদের আটক করে বিজিবি।
আটকদের ২৩ বিজিবি যামিনী পাড়া ব্যাটালিয়নের তত্ত্বাবধায়নে তাইন্দং ডিপি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে।
আটকরা জানান, তারা ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ইট ভাটায় কাজ করতেন। সেখান থেকে তাদের আটক করে বিমানে করে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় নিয়ে আসা হয়। এরপর দক্ষিণ ত্রিপুরায় নিয়ে এসে ভোরে জোরপুর্বক বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করানো হয়।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, আটকদের নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই চলছে।