মঙ্গলবার এজবাস্টনে ভারতের দেয়া ৩১৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শেষ পর্যন্ত ২৮৬ রানে সবকটি উইকেট হারায় মাশরাফি বাহিনী।
লক্ষ্যটা তিন শতাধিক হলেও তা নাগালের মধ্যেই ছিল বাংলাদেশের। বড় রান তাড়ায় টপ ও মিডল অর্ডারে সাকিব আল হাসান ছাড়া আর কেউ খেলতে পারেননি উল্লেখযোগ্য কোনো ইনিংস।
তবে ৬৬ রান করা সাকিব আউট হওয়ার পর দলীয় ১৭৯ রানের মাথায় ছয় উইকেট হারানো বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত জয়ের আশা দেখিয়েছিল সাইফউদ্দিন-সাব্বির রহমানের জুটি।
৬৬ রানের জুটির পর সাব্বির ফিরে গেলেও সাইফ চেষ্টা করে গেছেন। শেষ পর্যন্ত সঙ্গীর অভাবে তাকে থমকে যেতে হয় এক প্রান্তে। দ্বিতীয় ওয়ানডে ফিফটিতে অপরাজিত থাকেন ৩৮ বলে ৫১ রানে। পরপর দুটি ইয়র্কারে রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমানকে বোল্ড করে ম্যাচ শেষ করে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ।
এর আগে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে শুরুর দিকে ব্যর্থ হলেও শেষে দুর্দান্ত প্রতাপে ফিরেছেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার নেয়া ৫ উইকেটের কল্যাণে জয়ের জন্য ৩১৫ রানের ‘সহজ’ লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলের উদ্বোধনী জুটিতে ১৮০ রানের দারুণ শুরু পায় ভারত। রোহিত ৯২ বলে ১০৪ এবং সমান সংখ্যক বল খেলে রাহুল ৭৭ রানে ফিরে গেলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ভারত।
বাংলাদেশের হয়ে শুরুর ব্রেক থ্রু এনে দেন সৌম্য সরকার। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা রোহিতকে ইনিংসের ৩০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফেরান তিনি। তার কিছুক্ষণ পরেই আরেক ওপেনার রাহুলকে ফিরিয়ে দেন পেসার রুবেল হোসেন।
পরবর্তীতে ক্রিজে থাকা ভারতীয় অধিনায়ক ভিরাট কোহলি ঋষভ পন্তকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন। কিন্তু ৩৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে কোনো রান না দিয়ে জোড়া আঘাত করেন কাটার মাস্টার।
চলতি বিশ্বকাপে কোনো শতকের দেখা না পেলেও পাঁচটি অর্ধশতকের দেখা পাওয়া কোহলিকে (২৭ বলে ২৬) ওভারের দ্বিতীয় বলে ফেরানোর পর ক্রিজে আসেন হার্ডিক পান্ডিয়া। মুস্তাফিজের তৃতীয় বলটি কোনোভাবে মোকাবিলা করতে পারলেও পরের বলেই মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানেই ফিরে যান মারকুটে ব্যাটসম্যান পান্ডিয়া।
পরে জ্বলে উঠতে থাকা ঋষভ পন্তকে (৪১ বলে ৪৮) ফিরিয়ে ম্যাচ আরও একটু নিজেদের নাগালের মধ্যে রাখতে সাহায্য করেন সাকিব আল হাসান। মাত্র এক উইকেট পেলেও ভারতকে ৩১৫ রানে বেঁধে রাখতে তার ভূমিকাও অনেক। কারণ ১০ ওভার বল করে মাত্র ৩২ রান ব্যয় করেছেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার।
ভারতকে ৩০০ অতিক্রম করতে সাহায্য করেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ৩৩ বলে ৩৫ রান করা ধোনিকেও ফেরান মুস্তাফিজ। সেই সাথে দিনেশ কার্তিক ও ইনিংসের শেষ বলে মোহাম্মাদ শামিকে বোল্ড করে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো স্বপ্নের ৫ উইকেটের দেখা পান তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ৩১৪/৯ (রাহুল ৭৭, রোহিত ১০৪, কোহলি ২৬, পান্ত ৪৮, পান্ডিয়া ০, ধোনি ৩৫, কার্তিক ৮, ভুবনেশ্বর ২, শামি ১, বুমরাহ ০*; মাশরাফি ৫-০-৩৬-০, সাইফ ৭-০-৫৯-০, মুস্তাফিজ ১০-১-৫৯-৫, সাকিব ১০-০-৪১-১, মোসাদ্দেক ৪-০-৩২-০, রুবেল ৮-০-৪৮-১, সৌম্য ৬-০-৩৩-১)।
বাংলাদেশ: ৪৮ ওভারে ২৮৬ (তামিম ২২, সৌম্য ৩৬, সাকিব ৬৬, মুশফিক ২৪, লিটন ২২, মোসাদ্দেক ৩, সাব্বির ৩৬, সাইফ ৫১*, মাশরাফি ৮, রুবেল ৯, মুস্তাফিজ ০; ভুবনেশ্বর ৯-০-৫১-১, বুমরাহ ১০-১-৫৫-৪, শামি ৯-০-৬৮-১, চেহেল ১০-০-৫০-১, পান্ডিয়া ১০-০-৬০-৩)।