মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকার কারণে গত কয়েকদিন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছিল। আজ সকালে ঢাকার আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টিপাত বন্ধ রয়েছে। গতকাল বৃষ্টির মধ্যেও ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি দেখা গিয়েছিল, আজ তা থেকে কিছুটা উন্নতি হলেও খুব বেশি স্বাস্থ্যকর নয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৮৬। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ২০তম স্থানে রয়েছে ঢাকা। গতকাল একই সময়ে শহরটির স্কোর ছিল ৯২।
বায়ুমান সূচক অনুযায়ী দুদিনের বাতাসের মানই ‘মাঝারি’ পর্যায়ে রয়েছে। তবে আজ ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হয়ে ওঠা থেকে বেশি দূরে নেই এই স্কোর।
বর্ষাকালে ঢাকার বাতাসের মানে যে পরিবর্তন দেখা যায়, মাঝেমধ্যেই তার ব্যতিক্রম দেখা দিচ্ছে। বৃষ্টিতেও ঢাকার বায়ুদূষণ কমছে না লক্ষণীয়ভাবে।
রাজধানী ঢাকা বিশ্বের জনবহুল শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বে তৃতীয় মেগাসিটি হিসেবে পরিচিত ঢাকা। তবে ঢাকায় ঘনবসতির সঙ্গে ব্যস্তানুপাতিক হারে কমেছে সবুজায়ন। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিবেশ বিভাগের তথ্যমতে, ঢাকার বনভূমির পরিমাণ এখন ৬ শতাংশের নিচে। এ কারণে যানবাহন ও কলকারাখানার বিষাক্ত বাতাস শোষণ কম হচ্ছে, যা বায়ুদুষণ বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, টানা কয়েকদিন ধরে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষ তিনে আফ্রিকার কোনো না কোনো শহর থাকলেও আজ তার ব্যতিক্রম দেখা গেছে। আজ মধ্যপ্রাচের দুটি শহর ও এশিয়ার একটি শহর রয়েছে তালিকার শীর্ষে।
আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতেও ঢাকার বাতাসের মানে ফের অবনতি
২১৬ স্কোর নিয়ে আজ তালিকার শীর্ষে রয়েছে কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটি। অন্যদিকে, ১৭৪ ও ১৭১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রযেছে ভিয়েতনামরে হ্যানয় ও কাতারের দোহা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।