মেছাচ্ছন্ন আকাশ নিয়ে রবিবারের সকাল শুরু করা ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা আজও ‘মাঝারি’, তবে আজ কয়েকটি বিষয় লক্ষ করা গেছে।
সাধারণত বাতাসের মান নির্ণয়কারী ওয়েবসাইট আইকিউ এয়ারের শীর্ষ দূষিত শহরগুলোর মধ্যে থাকতে দেখা যায় ঢাকা, লাহোর ও দিল্লিকে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ঢাকা ও দিল্লির অবস্থায় তার থেকে উন্নতি হয়েছে। কিছুদিন ধরে শহরদুটির বায়ুমান ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে অবস্থান করছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
রবিবার (২০ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে দিল্লি ৭০ এবং ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ৬২। ফলে তালিকার শীর্ষস্থানগুলোর বেশ নিচে অবস্থান করছিল এই দুই শহর। একইসঙ্গে ১৪৯ একিউআই স্কোর নিয়ে বরাবরের মতোই শীর্ষ পাঁচে ছিল লাহোর।
তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো, ভারতের দূষিত বায়ুর শহরগুলোর মধ্যে সবার উপরে থাকে দিল্লি। রাজধানী শহরের চেয়ে সাধারণত অনেক ভালো অবস্থায় থাকে কলকাতা ও মুম্বাই। কিন্তু আজ একই সময়ে কলকাতার দূষণের স্কোর দিল্লির চেয়ে ৭ বেশি, অর্থাৎ ৭৭। ফলে তালিকার অষ্টাদশ স্থানে থাকা দিল্লিকে টপকে একাদশ স্থানে উঠে গেছে পশ্চিমবঙ্গের এই শহর।
এদিকে, ৬২ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার বেশ নিচে, নির্দিষ্ট করে বললে ৩২তম স্থানে থাকলেও ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের চেয়ে ভালো অবস্থানে নেই ঢাকা। শহরটির দূষণের স্কোর ঢাকার চেয়ে এক কম। তালিকায় এর স্থান ঢাকার পরেই।
অন্যদিকে, ১৭০ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর ছিল কঙ্গোর কিনশাসা। এরপর ১৫৩ ও ১৪৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ছিল উগান্ডার কাম্পালা ও পাকিস্তানের লাহোর। এ ছাড়া ১৩৫ একিউআই স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর এবং ১৩৪ নিয়ে পঞ্চম স্থানে ছিল চিলির সান্তিয়াগো।
আরও পড়ুন: ঢাকার বায়ুমানে আরও অবনতি, তবে চমক দেখিয়েছে মিসর
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ এবং ৫০ থেকে ১০০ মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ বলে গণ্য করা হয়। এরপর এই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কণা দূষণের এই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।