দেশের খরাসহিঞ্চু অঞ্চলে ও কম উর্বরতা সম্পন্ন মাটিতে অন্য কোনো ফসল ভালোভাবে না জন্মালেও কাসাভা হেক্টরপ্রতি ফলন দেয় গড়ে ৩৫ থেকে ৫০ টন। যেখানে ধান ও অন্যান্য দানাদার ফসলের ফলন হেক্টরপ্রতি ২ থেকে ১০ টন।
এছাড়া পাহাড়ের ঢাল, উঁচু জমি, খেতের আইল এমনকি পতিত জমিতেও কাসাভার ভালো ফলন পাওয়া যায়।
শিমুল আলু বা কাসাভা চাষে ধানের মতো জলাবদ্ধতা পরিবেশের প্রয়োজন হয় না। তাই কাসাভা চাষে কৃষকের সেচের খরচ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। এছাড়া কাসাভা গাছে তেমন কোনো রোগবালাইও হয় না।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সভাকক্ষে বিকাল ৪টায় কৃষকদের মাঝে কাসাভার বীজ বিতরণ করার সময় এসব তথ্য জানান ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির।
আরও পড়ুন: মশার দেহে ডেঙ্গু ভাইরাসের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ বাকৃবি গবেষকের
এ সময় কৃষকদের মাঝে তিনি কাসাভার বিভিন্ন উপকার, খাবার পদ্ধতি, বাণিজ্যিক ব্যবহার, চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
কাসাভাকে আপদকালীন একটি ফসল উল্লেখ করে অধ্যাপক বলেন, কাসাভা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম শর্করা উৎপাদনকারী ফসল এবং বিশ্বের প্রায় ৮০ কোটি মানুষের প্রধান খাদ্য। পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য কাসাভা উপযুক্ত একটি ফসল। পতিত জমিতে চাষাবাদ করা বলে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যাবে।
কাসাভার বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ছোলায়মান আলী ইউএনবিকে বলেন, গার্মেন্টস, কাগজ, ওষুধ, বেকারি, টেস্টিং সল্টসহ বিভিন্ন শিল্পে এর ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া কাসাভা থেকে আটা তৈরি করা যায়। এমনকি কাসাভা পশুখাদ্য ও জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহে বাকৃবিতে ক্লাস অনলাইনে, পরীক্ষা সশরীরে
কাসাভার বীজ পাওয়া ময়মনসিংহের চকছত্রপুর এলাকার এক কৃষক রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘আজকের এই প্রদর্শনী থেকে কাসাভা ও এর বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কাসাভার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে না জানায় চাষাবাদে আগ্রহী ছিলাম না। এখন নিজেও চাষাবাদ করব এবং অন্য কৃষককেও জানাব।’
আরেক কৃষক মো. মিলন কাসাভার বীজ নিজ জমিতে আবাদ করবেন বলে জানান।
বীজ বিতরণের সময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শাহানারা বেগম ও অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আজাদ-উদ-দৌলা প্রধানসহ ময়মনসিংহের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষক।
আরও পড়ুন: বাকৃবি: একজনও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই ৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য