এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, একমাত্র নির্বাচিত সরকারই জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে এবং বাংলাদেশকে বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থেকে উদ্ধার করতে পারে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ মিলনায়তনে 'কারেন্ট বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক সিনারিও: দ্য ওয়ে ফরোয়ার্ড' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করতে একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন মিন্টু।
পূর্ববর্তী অনির্বাচিত সরকারগুলোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা অপরিকল্পিত ও অনুৎপাদনশীল মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন এই প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের জন্য ব্যয়বহুল স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের উপর নির্ভরতাই মুদ্রাস্ফীতির কারণ এবং এটি অর্থনীতিতে বোঝা চাপিয়েছে- যা সমাধান করতে কয়েক বছর সময় লাগবে।
কর্মসংস্থানের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে মিন্টু বলেন, প্রতিবছর প্রায় ২২-২৩ লাখ তরুণ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত থাকলেও বিনিয়োগ কমে যাওয়া ও বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ কমার কারণে কর্মসংস্থান স্থবির হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: জনগণের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নজর দিন: সরকারকে ড. দেবপ্রিয়
সরকারের উচ্চমূল্যের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ অর্থনৈতিক চাপকে আরও বাড়িয়েছে। ফলে তারা দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে বেসরকারি ব্যবসার জন্য ঋণের প্রাপ্যতা আরও সীমিত হয়ে পড়ছে বলে তিনি ব্যাখ্যা করেন।
মিন্টু যুক্তি দেখান, বাংলাদেশে বর্তমানে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ নেই, যা অতি প্রয়োজনীয় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করছে।
মিন্টু কিছু অর্থনীতিবিদকে এমন বিবৃতি দেওয়ার জন্যও সমালোচনা করেন। তিনি বিশ্বাস করেন তাদের বিবৃতিগুলো চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময় জনসাধারণের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই অর্থনীতিবিদরা সম্পদ বা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কোনো অবদান রাখেন না। তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য জনমনে অহেতুক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।’
কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার মূল চাবিকাঠি হিসেবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মিন্টু।
তিনি বলেন, বেসরকারি খাত যদি অবাধ ও ভয়হীন পরিবেশে চলতে না পারে, তাহলে বিনিয়োগ বাড়বে না, কর্মসংস্থানও বাড়বে না।
আরও পড়ুন: শ্বেতপত্র: দুই বছরের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় গুরুত্বারোপ করলেন দেবপ্রিয়