মানুষের অস্তিত্ব সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, যদি ২০২৫ সালের মধ্যে নিঃসরণ শীর্ষে পৌঁছায়, ২০৩০ সালের মধ্যে তা অর্ধেক হয়ে যায় এবং ২০৫০ সালের মধ্যে আমরা 'নেট জিরো' অর্জন করতে পারি- তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব এখনও এড়ানো যাবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করতে পারব আমরা। তবে এর জন্য প্রয়োজন দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
আরও পড়ুন: টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: পরিবেশমন্ত্রী
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে ‘দ্য আনঅ্যাভয়েডবল মাস্টার রিস্ক? অ্যাড্রেসিং ক্লাইমেট ওভারশ্যুট’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, অতিক্রমণ এবং ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে ইতোমধ্যেই যে বিপর্যয়কর বাস্তবতা চলছে তা আরও খারাপ করে তুলবে। আইপিসিসি স্পষ্টভাবে বলেছে যে- অনেক ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিদ্যমান সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে যা জাতীয় শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করছে।
তিনি বাংলাদেশের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে খরা বৃদ্ধির দিকে ইঙ্গিত করেন।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইতোমধ্যেই আরও ঘন ঘন এবং চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনা ঘটছে, যা লোকজনকে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ হওয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৩৩ লাখ বাংলাদেশি (জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের পুরো জনসংখ্যার সমান) জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উচ্ছেদ হবে, যা এটিকে দেশের অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের ১ নম্বর চালক শক্তি করে তুলবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু প্রতিশ্রুতি পূরণে উন্নত বিশ্বের প্রতি আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, যে উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং সহনশীলতা তৈরিতে সহায়তা করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের কার্বন ডাই অক্সাইড অপসারণ এবং সৌর বিকিরণ পরিবর্তনের মতো অ-পরীক্ষিত প্রযুক্তির দিকে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়। এর পরিবর্তে আমাদের প্রশমন, প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধান, বনায়ন ইত্যাদি কাজের উপর গুরুত্বারোপ করা উচিত।
প্যানেল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন- কোস্টারিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং জলবায়ু ওভারশুট কমিশনের কমিশনার, কার্লোস আলভারাডো কুয়েসাদা, পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার এবং ইউরোপীয় সবুজ চুক্তির জন্য ইউরোপীয় কমিশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট, মারোস শেফকোভিচ।
আরও পড়ুন: ক্ষয়ক্ষতি তহবিল সমৃদ্ধ করে অবিলম্বে বিতরণ শুরু করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী