ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গত ৭ ফেব্রুয়ারি আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনে ছাত্রলীগের তিন কর্মীর সম্পৃক্ততা পেয়েছে ইবি ও লালন শাহ হল প্রশাসনের গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটিগুলো সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
সম্পৃক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুদাসসির খান কাফি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাগর ও উজ্জল হোসেন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী।
এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
আরও পড়ুন: ইবি ছাত্রলীগের সাবেক কর্মীসহ ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান জানান, শিক্ষার্থী নির্যাতনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় আগামী শৃঙ্খলা কমিটির সভায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটি জানায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুদাসসির খান কাফি ও মোহাম্মদ সাগরের নেতৃত্বে একদল ছাত্রলীগ কর্মী আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ওই শিক্ষার্থীকে লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে ডেকে নেয়।
সেখানে তারা ওই শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে মধ্যরাত থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে নির্যাতিত অভিযুক্তদের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে অস্বীকার করলে স্টিলের লাঠি দিয়ে মারধর করে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রশাসক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. এম আনিসুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওই শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে।
এর আগে গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগী তাবাসসুম, মিম, উর্মি ও মাওবিয়া জাহানের নির্যাতনের শিকার হন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী।
এ ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
হাইকোর্টের নির্দেশে গত ২১ আগস্ট অন্তরা ও তার চার সহযোগীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ইবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে আবারও নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী