একাডেমিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ২ হাজার ৮৪১ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। তিনি বলেন, প্রকল্পটি সাম্প্রতিককালের মধ্যে সবচেয়ে বড় একাডেমিক উদ্যোগ।
বুধবার (৩০ জুলাই) অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য প্রকল্পটির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু করে ২০৩০ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই প্রকল্পের অধীনে ৬টি একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ২৬০০ জন ছাত্রীর জন্য ৪টি আবাসিক হল নির্মাণ, ৫১০০ জন ছাত্রের জন্য ৫টি আবাসিক হল নির্মাণ, ৫টি ছাত্র হল ও ৪টি ছাত্রী হলের জন্য হাউজ টিউটর আবাসন সুবিধা তৈরি, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য ২টি আবাসিক ভবন নির্মাণ, ৫টি অন্যান্য ভবন (প্রশাসনিক ভবনসহ) নির্মাণ, ৪টি জলাধার সংস্কার এবং সৌন্দর্যবর্ধন, বিদ্যমান সার্ভিস লাইন মেরামত/সংস্কার, খেলার মাঠ উন্নয়ন ১টি, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ২টি এবং ড্রেনেজ সিস্টেম ও ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট (ওয়েস্টবিন-২৫৬টি) করা হবে।
উপাচার্য বলেন, এই প্রকল্পটি জনগণের করের টাকায় বাস্তবায়িত হবে এবং আমরা একে জাতির পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপহার হিসেবে বিবেচনা করছি। জাতির প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এই অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রকল্পের সারসংক্ষেপ এবং অ্যানিমেশন চিত্র উপস্থাপন করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, হিসাব পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ জাবেদ আলম মৃধা।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, এই প্রকল্প মূলত একাডেমিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। এর আওতায় যে ভবনসমূহ নির্মিত হবে, তার প্রায় সবকটিই শিক্ষাদান ও গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি ব্রিটিশ মডেল অনুসরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কার্যক্রমও এই প্রকল্পের মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে।
উপাচার্য আরও জানান, এই প্রকল্পের আওতায় নির্মিত গবেষণাকেন্দ্র, ল্যাব এবং অন্যান্য ফ্যাসিলিটি সমাজের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় থাকলেও অনুমতির ভিত্তিতে বাইরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গবেষকরা ব্যবহার করতে পারবেন। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে সবুজায়ন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বৃদ্ধির বিষয়েও প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি। এসময় শিক্ষা উপদেষ্টা, পরিকল্পনা উপদেষ্টা, অর্থ বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
তিনি বলেন, আমরা এটিকে একটি মাস্টারপ্ল্যানের সূচনা হিসেবে দেখছি। আশা করি, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী এক থেকে দেড় দশকের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।