ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
রাত পেরোলে ডাকসু নির্বাচন, নতুন ভোরের অপেক্ষায় ক্যাম্পাস
রাত পেরোলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। দীর্ঘ ৬ বছরের অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ খ্যাত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে। সূচনা হবে এক নতুন ভোরের। নির্বাচন উপলক্ষে টানা ১৩ দিনে উৎসবমুখর পরিবেশে নানান ঢং ও উপায়ে প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন প্রার্থীরা। ভোটারও নিজেদের পছন্দের প্রার্থী খুঁজে নিয়েছেন। অপেক্ষা শুধু ব্যালটে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার।
তফসিল অনুযায়ী, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ডাকসু ও হল সংসদের ৪১টি পদে নিজের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেবেন ভোটাররা।
ডাকসুর চূড়ান্ত তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন।
ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৪৭১ জন। আর ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হবে ১৩টি করে পদে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন শিক্ষার্থী।
অন্যবারের তুলনায় এবার ডাকসুতে ব্যালটের আকার বেড়েছে। এবার ডাকসুতে থাকছে পাঁচ পৃষ্ঠার ব্যালট। আর হল সংসদের থাকছে এক পৃষ্ঠার ব্যালট। এ ভোট দিতে হবে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) শিটে। প্রতি ভোটারের জন্য আট মিনিট করে সময় রাখা হয়েছে।
ভোটকেন্দ্র
ক্যাম্পাসের ৮টি কেন্দ্রে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মোট ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে।১. কার্জন হল কেন্দ্র: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হল। মোট ৫ হাজার ৭৭টি ভোট।২. শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র: জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হল। মোট ৪ হাজার ৮৫৩ ভোট।৩. ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি): রোকেয়া হল। মোট ৫ হাজার ৬৬৫ ভোট।৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্র: বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। মোট ৪ হাজার ৭৫৫টি ভোট।৫. সিনেট ভবন কেন্দ্র: স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হল মোট ৪ হাজার ৮৩০টি ভোট।৬. উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ: সূর্যসেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কবি জসীম উদদীন হল। মোট ৬ হাজার ১৫৫টি ভোট।৭. ভূতত্ত্ব বিভাগ কেন্দ্র: কবি সুফিয়া কামাল হল। মোট ৪ হাজার ৪৪৩টি ভোট।
৮. ইউ ল্যাব স্কুল অ্যান্ড কলেজ: শামসুন নাহার হল। মোট ৪ হাজার ৯৬টি ভোট।
শাটল বাস সার্ভিস
নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভোট দেওয়ার সুবিধার্থে ক্যাম্পাসে চক্রাকারে শাটল সার্ভিস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।এদিন সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে বিকাল ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত শাটল সার্ভিস চলবে।
রুটম্যাপ অনুযায়ী, শাটল সার্ভিস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ থেকে, কার্জন হল হয়ে শাহবাগ, টিএসসি, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ক্লাব, ইউল্যাব স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিনেট ভবন এবং শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র হয়ে আবার ভূতত্ত্ব বিভাগে চক্রাকারে চলমান থাকবে।
ভোট প্রক্রিয়া
ভোটাররা নিজেদের সুবিধাজনক সময়ে নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোটকেন্দ্রে থাকা পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটারদের পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে।
ভোটার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি কার্ড বা পে-ইন স্লিপ দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন। অন্য বর্ষের ভোটাররা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড, হল কার্ড বা লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন। পরিচয় নিশ্চিতের পর ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ দেবেন ।
এরপর ভোটার তালিকায় নিজের নামের পাশে সই করবেন ভোটার। পরে পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার নম্বর জানাতে হবে।পরিচয় নিশ্চিতের পর ব্যালট নিয়ে ভোটার গোপন ভোট কক্ষে প্রবেশ করবেন। মুঠোফোন বা কোনো ধরণের ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে ভোট কক্ষে প্রবেশ করা যাবে না।
ব্যালট পেপার থেকে পছন্দের প্রার্থীর নাম ও ব্যালট নম্বর খুঁজে বের করবেন ভোটার।
পড়ুন: ডাকসু: নজর কাড়ছে লিগ্যাল নোটিশ, ডলারসহ জেন-জি প্রচারণা
এরপর পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশের ঘরে স্পষ্টভাবে ক্রস চিহ্ন দেবেন ভোটার। তবে খেয়াল রাখতে হবে, ক্রস চিহ্নটি যেন ঘরের বাইরে না যায়।
পছন্দের প্রার্থীকে ভোটদান শেষে ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার জমা দেবেন ভোটার।
কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের জন্য দুটি আলাদা ব্যালট বক্স থাকবে। ব্যালট পেপার ভাঁজ না করে সেগুলো নির্ধারিত বাক্সে ফেলে ভোটার তাঁর ভোটদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
পাশাপাশি ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দিতে হল থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর তালিকা পেয়েছে কমিশন। তারা এবার ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারবেন।
ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।
সরাসরি ভোট গণনা স্ক্রিনিং
নির্বাচনের ভোট গণনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গণনা কার্যক্রম সরাসরি দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর ভোট গণনা প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের বাহিরে এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে সরাসরি প্রদর্শন করা হবে।’
৯টি প্যানেলের জমজমাট লড়াই
এবারের ডাকসুতে লড়ছে— গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’, ছাত্রদলের প্যানেল, ছাত্রশিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’, উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র ঐক্যজোট’, বামপন্থী শিক্ষার্থীদের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’, ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’, ইসালামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’, স্বতন্ত্র প্যানেল ‘ডিইউ ফার্স্ট’ এবং তিনটি বাম জোটের ‘অপরাজেয় ৭১–অদম্য ২৪’ প্যানেলসহ অন্যান্য স্বতন্ত্র প্যানেল ও প্রার্থীরা।
মোট ভোটার ও প্রার্থী
ডাকসুর চূড়ান্ত তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন।
এদিকে, ডাকসু নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ৪৭১ জন।
চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন: টানা ৩৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ঢাবির সব প্রবেশপথ
সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ২১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পাশাপাশি ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হবে ২৩৪টি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন শিক্ষার্থী।
এর আগে, দীর্ঘ ২৮ বছর পর সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ১১ মার্চ। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন নুরুল হক নুর, জিএস ছিলেন গোলাম রাব্বানী এবং এজিএস পদে নির্বাচিত হন সাদ্দাম হোসেন।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে মোট ২৫টি পদের বিপরীতে ভোট দিয়েছিলেন ভোটাররা। তবে এবার পদসংখ্যা বেড়েছে। ফলে এবার মোট ২৮টি পদের বিপরীতে লড়বেন প্রার্থীরা।
বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ৪টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব পদ হচ্ছে-গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক।
৮৭ দিন আগে
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই থাকছে, ৯ সেপ্টেম্বরই ডাকসু নির্বাচন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে আর কোনো বাধা রইল না।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে রায়ে বলা হয়েছে।
এদিন আদালতে ঢাবির পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির, রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং ডাকসুর জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদের পক্ষে ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী শুনানি করেন।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম এ রিট দায়ের করেন।
রিটে অভিযোগ করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে এস এম ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন। এরপরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্যানেলে প্রার্থী হলেন— এমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন ভন্ডুলের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার
এরপর গেল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে কোন প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাই ও চূড়ান্ত করা হচ্ছে এবং ভোটের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কী— এ বিষয়েও জানতে চান চাওয়া হয়।
তবে তার এক ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের আদালত ওই স্থগিতাদেশ দেন।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় পুনরায় মামলাটির বিষয়ে গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন নিয়ে চেম্বার জজ আদালতে গেলে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শুনানির জন্য মামলার দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল।
জানা গেছে, নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় এবং হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন: ‘৩৬ জুলাইয়ের’ সঙ্গে মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ইশতেহার ঘোষণা
চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ২১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
৯২ দিন আগে
ডাকসু নির্বাচন: ছাত্রদলের ১০ দফা ইশতেহার ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য ১০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্যানেল। এটি এবারের ডাকসু নির্বাচনে কোনো প্যানেলের প্রথম ইশতেহার।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে ছাত্রদল মনোনিত 'আবিদ-হামিম-মায়েদ পরিষদ' তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে। ইশতেহারে মোট ৬৫টি প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল মনোনিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিমের সঞ্চালনায় সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান লিখিত ইশতেহারটি পাঠ করেন। এ সময় প্যানেলের সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদসহ অন্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
ইশতেহারে শিক্ষা ও গবেষণাকে প্রাধান্য দিয়ে আধুনিক, আনন্দময়, বসবাসযোগ্য ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা হয়েছে। পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার্থীদের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যবিমা, কারিকুলাম ও গবেষণার আধুনিকায়ন, পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও শাটল সার্ভিস, হয়রানিমুক্ত প্রশাসনিক সেবা, শিক্ষাঋণ ও কর্মসংস্থান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সম্প্রসারণ, ডিজিটাল সুবিধা ও সাইবার নিরাপত্তা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রাণীবান্ধব ক্যাম্পাস এবং কার্যকর ডাকসু প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন: সাইবার নিরাপত্তা শঙ্কায় প্রার্থীরা, প্রধান লক্ষ্য নারী প্রার্থীরা
ইশতেহারে আরও রয়েছে— গেস্টরুম-গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচি ও দমন–নিপীড়নের মতো চর্চা বন্ধ করে ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্বমুক্ত করা, নতুন আবাসিক হল নির্মাণ করে ভর্তির দিন থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য 'একটি সিট ও একটি পড়ার টেবিল' নিশ্চিত করা, ক্যান্টিন ও ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি বৃদ্ধি ও খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ।
নারী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি হলে স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট, মেডিকেল সেন্টারে নারী চিকিৎসকের উপস্থিতি, সান্ধ্য আইন বিলোপ ও পোশাকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও ইশতেহারে রাখা হয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়ন, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা, জরুরি ওষুধ বিনা মূল্যে সরবরাহের অঙ্গীকারও করা হয়েছে।
কোর্স কারিকুলাম নিয়মিত পর্যালোচনা, ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ডিজিটালাইজেশন, নতুন বাস রুট, মেধাভিত্তিক বৃত্তি ও শিক্ষাঋণ, ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন, ডিজিটাল দক্ষতা প্রশিক্ষণ এবং প্রাণীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতিও তারা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের অলিম্পিয়াড, সিম্পোজিয়াম, সেমিনার ও একাডেমিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতিও ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
৯৮ দিন আগে
ডাকসু ভিপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে রুমমেটকে ছুরি মারার অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ ওরফে জ্বালাময়ী জালালের হলে তার রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাবির হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জালাল আহমেদ টেলিভিশন ও ফিল্ম বিভাগের শিক্ষার্থী। আহত শিক্ষার্থী রবিউল হক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮–১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তারা একই কক্ষের বাসিন্দা।
রবিউল বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাবিউল বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে জালাল রুমে এসে লাইট অন করে এবং শব্দ করতে থাকে। ফলে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তখন আমি বলি, সকালে আমাকে লাইব্রেরিতে যেতে হবে অযথা শব্দ করলে ঘুমে সমস্যা হচ্ছে। এতে সে রেগে গিয়ে আমাকে অবৈধ, বহিরাগত বলে। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে আঘাত করে জখম করে। পরে কোনোক্রমে আমি নিজেকে আত্মরক্ষা করি।’
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন: চারুকলায় ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ফেস্টুন ভাঙচুর
তবে ঘটনার পর এক ফেসবুক পোস্টে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জালাল। তিনিই বরং রবিউলের হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি জালালের।
ওই পোস্টে নিজের ক্ষতচিহ্নের ছবি যুক্ত করে জালাল লিখেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে অবৈধ ও বহিরাগত শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার দাবিতে উকিল নোটিস পাঠানোর প্রাক্কালে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষে আজ রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমাকে মেরেছে আমার রুমমেট রবিউল ইসলাম। সে গত কয়েক মাস ধরে অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছে।’
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে প্রক্টরিয়াল দলের সদস্যরা গেছেন। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
১০০ দিন আগে
জিএস প্রার্থীর অদ্ভুত ইশতেহার: ‘ডাকসুতে আগুন লাগাতে এলাম বন্ধুরা’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জিএস প্রার্থী মো. আশিকুর রহমান তার ইশতেহারে উল্লেখ করেছেন ‘ডাকসুতে দাড়াইছে সবাই, কিন্তু বসে আছে একজনই’।
আশিকুর ইংরেজি বিভাগের ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ডাকসুতে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আশিকুর তার ইশতেহারে লিখেছেন, ‘ডাকসুতে আগুন লাগাতে চলে আসলাম বন্ধুরা’।
তিনি তার ইশতেহারে ক্লাসে উপস্থিতির নম্বর শিথিল করবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আই ডিক্লেয়ার ওয়ার ওন মাই ফ্যাকাল্টিজ (শিক্ষক)। কেন আমাকে ওই ৫ মার্কের জন্য ঘণ্টার পর ঘন্টা বস্তাপঁচা লেকচার শোনা লাগবে? এর থেকে ক্লাস না করে ভালো রেজাল্ট করা যায়। এন্ড দে ইউজ ইট অ্যাজ এ ওয়েপন।’
‘অ্যাটেনডেন্স ৭০-৭৫% হলেই ফুল মার্ক দেওয়া উচিত। আর ৫০% থাকলেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া উচিত। কিউএস র্যাঙ্কিং দিয়ে আদৌ কিছু হয়? আমাদের ঘাড়ের উপর পা দিয়ে জাতে উঠার চেষ্টা করলে হবে না। অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সুবিধা আগে।’
তিনি লিখেছেন, এই একটা কারণই যথেষ্ট ডাকসুতে দাঁড়ানোর। আরও পয়েন্ট আছে। যেগুলো সবাই দিয়েছে, অমুক উন্নয়ন, তমুক উন্নয়ন—এগুলো চাইলে কপি করে এখানে যোগ করা যাবে। কিন্তু আমি ওই ‘উদ্দীপকের গুরুত্ব অপরিসীম’ টাইপ লোক নই।
‘বাস্তবতা হলো সদস্য হিসেবে তেমন পরিবর্তন আনার কারোরই সেরকম সুযোগ/মৌরোদ নাই। সর্বোচ্চ প্রেসারাইজ করতে পারবে।’
তিনি ইশতেহারে লিখেছেন, ‘সমস্যাগুলো খুঁজবেন আপনারা। আমি রিপ্রেজেন্টেটিভ। আপনারা আমাকে সমস্যাগুলো বলবেন, সেটা নিয়ে দায়িত্বশীলদের সাথে ফাডাফাডি করার দায়িত্ব আমার। ফাডাফাডি, প্রেসারাইজ, আলোচনা করে দাবি আদায় আমার কাজ, সোফায় বসে আরাম করে তামাশা দেখা আপনার কাজ।’
‘কিন্তু হয় উল্টোটা। সমস্যা বের করে নেতারা আর তার জন্য রাস্তায় কষ্ট করে আন্দোলন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।’
তিনি ইশতেহারে বলেন, মেইন ফোকাস হলো ঢাবির যে রিসোর্স আর ইনফ্রাস্ট্রাকচার আছে সেটা কিভাবে তার ফুল পটেনশিয়ালে ইউটিলাইজ করা যায় সেটা নিয়ে।
‘মেয়েদের যাতায়াত, নিরাপত্তা, বিশেষ করে আবাসন সমস্যার জন্য ক্যাম্পাসে হল নির্মাণ অথবা কর্মচারীদের যেকোনো একটি ভবন হোস্টেলে (হল না) রূপান্তরের বিষয়ে কাজ করব।’
এছাড়াও ক্যাম্পাস যেন বহিরাগত জনসমাবেশের পার্কিং স্লট আর মূত্রবিসর্জনের জায়গা না হয়ে যায়, একাডেমিক এরিয়ায় সকল মিটিং-মিছিল শব্দদূষণ বন্ধ আর সর্বোচ্চ রাজুতে করার এখতিয়ার সেটাও প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে করা হবে, উল্লেখ করেছেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেছেন, ঢাবিতে কুরআন তিলাওয়াত হবে, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা হবে, কনসার্ট সব হবে। কেউ কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানবে না।
পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনে লড়বে ৯ প্যানেল, প্রার্থিতায় নতুনত্ব
আশিকুর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের পোলাপাইনরা পর্যাপ্ত ফান্ডিং পেলে মেধা আর রিসোর্স পরিপূর্ণভাবে ইউটিলাইজ করতে পারবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উচ্চমানের গবেষণা হবে। এমনকি আমার বিশ্বাস তারা স্টেট অব দ্য আর্ট টেকনোলজি তৈরি করতে পারবে, আর সেটার শুরু হবে এই ঢাবি থেকেই ইনশাআল্লাহ।’
তাকে কেন ভোট দেবেন তার যুক্তি হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন তার আর্থিক সততা, কোনো নারী কেলেঙ্কারি নেই, ভাই ব্রাদার কোরাম নেই ও স্ট্র্যাটেজিক দক্ষতা ইত্যাদি।
তিনি উল্লেখ করেছেন, রাজনীতি দুইভাবে হয়—থিওরি আর ডাইরেক্ট অ্যাকশন। বন্ধুরা সব দ্বিতীয়টাই বিশ্বাসী (যদিও বেশিরভাগ এটাই কার্যকরী) হলেও আমি সব মেটিকুলাসলি প্ল্যান করে করতে পছন্দ করি। আমি পেশাদার রাজনীতিবিদ নই। এজন্যই আমি একজন নেতার পরিবর্তে একজন রাজনৈতিক আমলা হিসাবে কাজ করতে চাই। ডাকসু জিএস-এর কাজও মোটাদাগে এমনই। সো আমি এখানে মূলত ‘দ্য ওয়ারটাইম কনসিলিয়ার (যুদ্ধকালীন পরামর্শদাতা) ফ্রম দ্য গডফাদার’।
তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আপনি যদি অ্যানিমে ও মুভি লভার হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই ওটাকু (কাল্পনিক চরিত্র) কে ভোট দিবেন।’
আশিকুর ভোট দেওয়ার যুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, ‘আনরেস্পনসিভ—গভীর রাতে কোনো সমস্যায় পড়লে আমাকে ফোন দিলে অবশ্যই আমাকে পাবেন না। কারণ আমি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। বাইকও নেই যে একটান দিয়ে চলে যাব।’
‘তো ভোটাররা এই জায়গায় খেয়াল রাখবেন, বিশেষ করে হল সংসদে—যে কোনো সমস্যায় পড়লে কাকে ফোন দিলে পাওয়া যাবে। যদিও প্রক্টোরিয়াল টিমকে ফোন করলেও যথেষ্ট সাড়া পাবেন।’
তিনি এক্সপোজের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, ‘এক্সপোজ—যেহেতু অন্যায়-অনিয়ম একদমই সহ্য করতে পারি না, তো যদি অন্য সদস্যরা একটুও অনিয়ম বা সিকি পয়সার কমিশনবাজি করে, তাদের এক্সপোজ করে দেব। তো যাদের সিলেটের পাথরচুরির সর্বদলীয় ঐক্যর মতো কিছু করার ইচ্ছা আছে, তারা আমাকে ভোট দিবেন না।’
তিনি উল্লেখ করেছেন, আর সবই আল্লাহর হাতে। ‘আর নিশ্চয়ই আমার জন্য আমার রবই যথেষ্ট।’
তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘এটা জেন-জি এর জন্য। আমার পোস্টার, প্রচারণা সব জেন-জি স্টাইলেই হবে।’
১০৫ দিন আগে
এক নজরে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় শেষ হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, ১২ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেল ৪টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে ৫৬৫টি ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ১২২৬টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনের অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন পদপ্রার্থীরা।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামীকাল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বেলা তিনটা। যাচাই-বাছাই শেষে ২১ আগস্ট বেলা একটায় চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে। এর আগে গত ২৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর তফসিল ঘোষণা করা হয়।
ডাকসুর মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ৫৬৫ জন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য মোট ৫৬৫টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। শেষ দিনে ৪৪২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকাল ছয়টায় চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এছাড়া, ১৮টি হল সংসদ নির্বাচনে মোট ১২২৬টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
এখনও প্যানেল ঘোষণা করেনি ছাত্রদল
ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহের শেষ দিন হলেও সাংগঠনিকভাবে চূড়ান্ত প্যানেল ঘোষণা করেনি ছাত্রদল। তবে ছাত্রদলের নেতারা পৃথকভাবে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। সূত্র অনুযায়ী, সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
ডাকসু সহসভাপতি (ভিপি) পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসান। এছাড়া মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ঢাবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান, কবি জসিমউদ্দীন হল শাখার আহ্বায়ক তানভীর বারী হামিম, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদসহ অন্যান্য ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।
শিবিরের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল
ডাকসু নির্বাচনে ২৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) পদে আবু সাদিক কায়েম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে এস এম ফরহাদ, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে মহিউদ্দিন খান মনোনয়ন পেয়েছেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ইকবাল হায়দার, আন্তর্জাতিক সম্পাদক খান জসিম, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ, সমাজসেবা সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মুয়াজ, ক্রীড়া সম্পাদক আরমান হোসাইন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতেমা তাসনিম জুমা, কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে সালমা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নুরুল ইসলাম সাব্বির, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এম এম আল মিনহাজ, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক সাখাওয়াত জাকারিয়া, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন খান, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম মনোনয়ন পেয়েছেন।
পড়ুন: দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডাকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর
কার্যনির্বাহী সদস্য পদে সর্ব মিত্র চাকমা, ইমরান হোসাইন, বেলাল হোসেন অপু, জয়েন উদ্দিন সরকার তন্ময়, মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ, মাজহারুল ইসলাম মুজাহিদ, রাইসুল ইসলাম, সাবিকুন নাহার তামান্না, শাহিউর রহমান, আফসানা আক্তার, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, রায়হান উদ্দিন ও আনাস বিন মনির মনোনয়ন পেয়েছেন।
ইমি ও বসুর নেতৃত্বে বাম জোট
ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাম জোট প্যানেল ঘোষণা করেছে। সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী হয়েছেন শেখ ইতি আফরোজ ইমি। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়বেন ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু। সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রার্থী জাবির আহমেদ জুবেল।
ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র যুব আন্দোলন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক ছাত্র মঞ্চ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই প্যানেলে রয়েছেন।
বামজোট থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক। অন্যান্য পদে কারা লড়বেন তা মঙ্গলবার প্রকাশ করা হবে।
প্যানেল ঘোষণা করেনি বাগছাসও
ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল থেকে লড়বে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)। তবে কে কোন পদে নির্বাচন করবেন তা এখনও ঘোষণা হয়নি।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব জাহিদ আহসান মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তবে বাগছাসের প্যানেল থেকে ভিপি পদে আব্দুল কাদের, জিএস পদে আবু বাকের মজুমদার এবং এজিএস পদে আশরেফা খাতুন নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ প্যানেল
সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের মাধ্যমে প্যানেল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। ভিপি পদে বিন ইয়ামিন মোল্লা, সহ-সভাপতি পদে সাবিনা ইয়াসমিন, এজিএস পদে রাকিবুল ইসলাম মনোনয়ন পেয়েছেন।
পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ শুরু আজ
বিজ্ঞানের ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. শাকিব খান, সমাজসেবা সম্পাদক পদে আরিফুর রহমান, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে রাশেদ আন আদিব, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মুক্তার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে আশিক হৃদয় আহমেদ, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে রাকিব হোসেন গাজী, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে ইশতিয়াক আহমেদ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সিয়াম ফেরদৌস ইমন মনোনয়ন পেয়েছেন।
উমামার স্বতন্ত্র প্যানেল
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্যানেল হচ্ছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে উমামা ফাতেমা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
এই স্বতন্ত্র প্যানেলে ভিপি পদে উমামা ফাতেমা, জিএস পদে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি আল সাদী ভূইয়া এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে বর্তমান সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহী থাকতে পারেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হবে।
জামালুদ্দীন ও এনসিপির মাহিন সরকার প্যানেল
স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদের নেতৃত্বে ভিপি ও জিএস পদে নির্বাচন করবেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার। এজিএস পদে ফাতেহা শারমিন এ্যানি নির্বাচন করবেন।
পরবর্তী প্রক্রিয়া
আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত প্রার্থীদের বাছাই প্রক্রিয়া চলবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন; ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭১ জন ও ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন। তফসিল অনুযায়ী, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৯ সেপ্টেম্বর। ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত চলবে। একই দিনে ফলাফলও ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, দীর্ঘ ২৮ বছর পর সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ১১ মার্চ। ২০১৯ সালের নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন নুরুল হক নুর, জিএস ছিলেন গোলাম রাব্বানী এবং এজিএস পদে নির্বাচিত হন সাদ্দাম হোসেন।
পড়ুন: সাম্য হত্যা নিয়ে ধোঁয়াশা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হলেও পুরস্কৃত পুলিশ
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে মোট ২৫টি পদের বিপরীতে ভোট দিয়েছিলেন ভোটাররা। তবে এবার পদসংখ্যা বেড়েছে। ফলে এবার মোট ২৮টি পদের বিপরীতে লড়বেন প্রার্থীরা।
বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ৪টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব পদ হচ্ছে-গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক।
১০৮ দিন আগে
ঢাবি-সাত কলেজের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সঙ্গে সরকারি সাত কলেজের সব ধরনের অন্তর্ভুক্তি বাতিলের পর সব দায়িত্ব ও শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি সাত কলেজের সব প্রশাসনিক, একাডেমিক ও আর্থিক দায়-দায়িত্ব এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের সব তথ্য, ছবি ও ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনার বাবদ ফি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান আজ উপাচার্যের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে সব দায়িত্ব ও তথ্য প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসের কাছে হস্তান্তর করেন।
এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারি সাত কলেজের সম্মানজনক পৃথকীকরণের কাজ চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাবি প্রশাসন।
পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ শুরু আজ
দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদসহ অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক, সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাগণ এবং কলেজের অধ্যক্ষগণ উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারি সাত কলেজের সম্মানজনক পৃথকীকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সফলতা কামনা করেন।
১১২ দিন আগে
ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ শুরু আজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
প্রার্থীরা ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ ২ আগস্ট থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৯ আগস্ট বিকেল ৩টা।
প্রার্থীরা সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল করতে পারবেন। একই সময়ে হল সংসদের মনোনয়নপত্র প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট হল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সশরীরে সংগ্রহ ও দাখিল করতে হবে।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডাকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর
ডাকসু ও হল সংসদ আচরণ বিধিমালা-২০২৫ অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের সময় কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না এবং পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বা জমা দেওয়া যাবে না।
এদিকে, নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকায় বহিষ্কৃত ও মামলায় অভিযুক্ত কোনো শিক্ষার্থর্থীর নাম অন্তর্ভুক্ত থাকলে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়া সাপেক্ষে তার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা।
১১৪ দিন আগে
হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ: উমামার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হলে বাম, ডান ও ইসলামীসহ সব দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
গত শুক্রবার (৮ আগস্ট) কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষকে দেওয়া একটি চিঠিতে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আমরা গত বছরের ১৭ জুলাই সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসন থেকে এই মর্মে প্রতিশ্রুতি নিতে সক্ষম হয়েছি যে, হলে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, বামপন্থি ইত্যাদি) নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে দেওয়া ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গত এক বছরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের এই চুক্তি বলবৎ ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে কিছু সংগঠন গুপ্তভাবে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার কারণে ৮ আগস্ট ছাত্রদল হলে কমিটি ঘোষণা করেছে। আমরা শিক্ষার্থীরা মনে করি, তাদের এইসব কার্যকলাপ জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া উল্লেখিত চুক্তিকে ভঙ্গ করেছে, যা স্পষ্টত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।’
পরবর্তীতে দৈনিক জনকণ্ঠসহ বিভিন্ন মাধ্যমে উমামার উদ্ধৃতিতে বলা হয়, ‘হলে বাম দল ছাড়া সব দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ চান উমামা ফাতেমা।’
পড়ুন: হল রাজনীতি নিষিদ্ধের আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে: ঢাবি উপাচার্য
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে ইউএনবিকে উমামা ফাতেমা বলেন, দৈনিক জনকণ্ঠসহ অন্যান্য মিডিয়ায় শিরোনাম ও ফটোকার্ডে আমার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। এসব সাংবাদিক নিজের মতো একটা অর্থ বানিয়েছে। কবি সুফিয়া কামাল হলে বামরা কোনো ফ্যাক্টর নয়, আমাদের হলে বাম রাজনীতি করেন এমন কেউ নেই।
বিবৃতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রভোস্ট স্যারের কাছে জমা দেওয়া বিবৃতিতে আমরা সুফিয়া কামাল হলে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে লিখে দিয়েছি। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ (বাগছাস) ইত্যাদি, মানে যাবতীয় বাম, ডান, ইসলামিক সব দলের রাজনীতি হলে বন্ধ থাকবে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘অথচ ছাত্রীসংস্থার লোকজন এর আগেই খসড়া বিবৃতি ছড়িয়ে দিয়েছে। ছাত্রীসংস্থার লোকজন এর আগেও হলে পানির ফিল্টার ও ঝাড়বাতি লাগিয়েছে। ঝাড়বাতি বিষয়ে নাকি প্রক্টর অফিস থেকে ফোন দিয়ে হলে অফিসকে অনুমতি দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল।
‘হল রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে সব ধরনের রাজনীতি এনডোর্স করা হচ্ছে,’ বলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক এই মুখপাত্র।
তবে উমামার এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সংস্থার সভানেত্রী সাকিবুন্নাহার তামান্না। তিনি বলেন, ‘ঢাবি ছাত্রী সংস্থা এমন কোনো কাজে জড়িত ছিলো না। হলে তো অনেক শিক্ষার্থী আছেন, এখানে ছাত্রী সংস্থার নাম কেন জড়ানো হলো বুঝতে পারছি না।’
একই দিন রাতে মিরর নিউজ নামের একটি অনলাইন পোর্টালের ফটোকার্ডে উমামার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়, ‘শিবিরকে সব হল কমিটি প্রকাশ করতে হবে এবং ছাত্রদল যে কমিটি প্রকাশ করেছে তা বাতিল করতে হবে।’
পড়ুন: ঢাবির ১৮ হলে আহ্বায়ক কমিটি দিল ছাত্রদল
এই ফটোকার্ডের বিষয়ে উমামা বলেন, আমি বলিনি যে শিবিরকে প্রকাশ করতে হবে। যারা ‘গুপ্ত’ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, তারা তো নিজ থেকে এসে পরিচয় প্রকাশ করবে না। এটি প্রশাসনের দায়িত্ব, প্রশাসনের উচিত এসব শিক্ষার্থীকে আইডেন্টিফাই করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিকে একটি পুনর্মিলনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সবারই অভিযোগ — শিবিরের সমস্যা আমি কেন গুপ্ত রাজনীতির কথা তুললাম, ছাত্রদলের সমস্যা আমি কেন কমিটির কথা বলেছি, আর বামদের সমস্যা আমি কেন হলে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ চাইলাম।
উমামা বলেন, আমি ঠিক করেছি এসবের বিরুদ্ধে মামলা করব। আমি এসব কার্যক্রম ডাকসুর জন্য করছি না, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এসব করছি।
১১৭ দিন আগে
ঢাবিতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন
মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করার সব ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র 'হাঙ্গর নদী গ্রেনেড' প্রদর্শিত হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পায়রা চত্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ (ডিইউএফএস) এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। সংসদের জনসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক আবরার নাদিম মুমশাদের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, বাংলাদেশের মহান মুক্তি সংগ্রামের স্মৃতি ও আকাঙ্ক্ষাকে সম্মুন্নত রাখতে ঢাকা সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে এবং চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র 'হাঙ্গর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭) প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে সংগঠিত সব গণসংগ্রামের অভেদ চেতনায় আকাঙ্ক্ষা ও স্মৃতিকে কলুষিত করার সব ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র রুখে দিতে নিজ নিজ জায়গা থেকে সবাইকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
১২০ দিন আগে