বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য এ রকম কোনো হত্যাকাণ্ড করা হয়নি।’
এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘ঘটনা তো অনেক আগের। এ মামলার যাতে বিচার না হয়, আসল আসামিরা যাতে ধরা না পড়ে, সে জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছিল। কাজেই মামলাটির শুনানি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হবে- এটা আমরা মনে করি এবং সে ব্যাপারে আদালতের কাছে প্রার্থনা করব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সাহেব মৃত্যুর আগেও আফসোস করেছেন আমাদের কাছে। তিনি বলেছেন, আমি কি বিচার দেখে যেতে পারব না। এখানে ওনার স্ত্রীও মারা গেছেন। কাজেই এ হত্যাকাণ্ড তো নিশ্চয় কোনো ভূতে করে যায়নি।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দলটির ২৪ নেতা-কর্মী নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল হয়। একটি হত্যা এবং অন্যটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে। এরপর বিচার শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর রায় দেয় ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১।
রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দুটি মামলায় তাদের অভিন্ন সাজা হয়। সেই সাথে হত্যা মামলায় আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
দুই মামলায় আলাদাভাবে সাজা দেয়া হলেও তা একযোগে কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
সাজাপ্রাপ্ত মোট ৪৯ আসামির মধ্যে ১৮ জন পলাতক। যার মধ্যে দুজন ফাঁসির ও ১২ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। এরপর কারাবন্দী আসামিরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন পেপারবুক প্রস্তুত করতে সরকারি ছাপাখানায় (বিজি প্রেসে) পাঠায়। মামলার পেপারবুক তৈরির পর বিজি প্রেস তা গত ১৬ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠিয়েছে। দুটি মামলায় প্রায় ২২ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক হাতে পাওয়ার পর মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টে শুনানির জন্য প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট শাখা।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘নথি প্রস্তুত হওয়ার পর প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ নির্ধারণ করবেন হাইকোর্টে শুনানির জন্য। তখন আমরা সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কাছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য আবেদন জানাব।’