কলকাতায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ওরফে আনার রাজনৈতিক কারণে খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মেয়ে অভিযোগ করেছেন মুনতারিন ফেরদৌস ডরিন।
শনিবার(৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কলকাতায় বাবার হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই অভিযোগ করেন।
ডরিন বলেন, ‘অবশ্যই আমার বাবা হত্যার পেছনে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দলের কোন্দল আছে। তা না হলে তারা (তার বাবার দল অর্থাৎ আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তারকৃত সন্দেহভাজন) কেন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হবে! তারা সব জানত। এমনকি তারা আমাকে সান্ত্বনা দিতেও এসেছিল!’
আরও পড়ুন: এমপি আনার হত্যা: দুই আসামি ৬ দিনের রিমান্ডে
কেন তাঁকে জানানো হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
ডরিন আরও বলেন, 'এরপর আমি সাংবাদিক ভাইদের বলি, আমার বাবা নিখোঁজ, দয়া করে তাকে খুঁজে বের করুন। সাহায্য চাইতে ডিবিপ্রধান, ডিবি পুলিশের কাছে গিয়েছি। তারপরও তাদের (সন্দেহভাজনরা) কেন আমাকে জানায়নি বা কেন পুলিশের কাছে সাহায্য চায়নি?’
তিনি আরও বলেন, তথ্য গোপন করা হয়েছে, যা একটি অপরাধ। আপনারা জানেন যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল ঝিনাইদহ গিয়ে তিনটি মোবাইল উদ্ধারে কাজ করে। মোবাইল তিনটি কিন্তু তারা পায়নি। প্রমাণ লোপাটও অপরাধ। তিনি বলেন, আমি চাই প্রতিটি অপরাধের শাস্তি হোক।
ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুই নেতাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমনকি প্রধান সন্দেহভাজন খুনি শিমুল ভূঁইয়াকে গ্যাস বাবুর বিষয়ে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেওয়া হয়েছে। গ্যাস বাবু ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং সাইদুল করিম মিন্টুর চাচার নাম প্রকাশ করেছেন। অবশ্য তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কারণ তারা পরস্পর সম্পর্কিত। আমি বিশ্বাস করি, এই তদন্ত সাপেক্ষে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
গত ১২ মে এমপি আনার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। পশ্চিমবঙ্গের বড়ানগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাসায় ওঠেন তিনি। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে আনোয়ারুল আজিম রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন।
বাসা থেকে বের হওয়ার পাঁচ দিন পর ১৮ মে বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বরানগর থানায় আনোয়ারুল আজিমের নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন। গত ২২ মে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেন নামে একটি আবাসিক ভবনের ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে হঠাৎ খবর ছড়িয়ে পড়ে। ফ্ল্যাটের ভিতরে রক্তের চিহ্ন পাওয়া গেলেও লাশ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৭ আসামিই গ্রেপ্তার: ডিবিপ্রধান