সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, মুখ্য মহানগর হাকিম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সাধারণ) সমন্বয়ে গঠিত এ অনুসন্ধান কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে প্রাতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনার পর মঙ্গলবার বিচাপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদেশে ঘটনার শিকার নববধূ, মামলার বাদী, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, হোস্টেল সুপার, ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী (যদি খুঁজে পাওয়া যায়) এবং কমিটি যাদের প্রয়োজন মনে করবে, তাদের জবানবন্দি নিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত।
কোনো রকম ব্যর্থতা ছাড়া হাইকোর্টের এই আদেশের অনুলিপি বুধবারের মধ্যে তদন্ত কমিটির সদস্যদের কাছে পৌঁছাতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া সিলেটের পুলিশ কমিশনারকে এই অনুসন্ধান কমিটির যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। অনুসন্ধানকাজে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সরঞ্জাম সরবরাহ করতে সিলেটের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া রুলে ওই গণধর্ষণের হাত থেকে বাঁচাতে অবহেলা ও অছাত্রদের হলে থাকার দায়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও হল সুপারের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে স্বামীর সাথে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুজন।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতা-কর্মীসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় গত রবিবার দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ। এ সময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালত গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেয়।
চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখন পর্যন্ত এজাহারনামীয় ছয় আসামিসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিলেট রেঞ্জ পুলিশ ও র্যাব-৯। এদের মধ্যে ছয়জনের পাঁচদিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
তারা হলেন- মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর ও পাঁচ নম্বর আসামি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল হাসান, এজাহারভুক্ত আসামি মাহবুবুর রহমান রনি, সন্দেহভাজন আসামি রাজন ও আইনুদ্দিন।