ওমান থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দেশে ফেরা সুমনের পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকাল থেকে সামাজিক মাধ্যমে তাঁর ছবি প্রচার করে তার পরিবারের খোঁজ করছিল ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ওমান থেকে ফেরত আসেন সুমন। তার কাছে পাসপোর্ট ছিলো না। বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটি কন্ট্রোল ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অনুরোধে তাকে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। শুরু হয় তার স্বজনদের খোঁজ চেয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা।
অসুস্থ হয়ে ফেরত আসা সুমন মানসিকভাবে এতোটাই অসুস্থ ছিলেন যে তিনি বিমানবন্দরেই নিজের জামা-কাপড় মলমূত্র ত্যাগ করে নষ্ট করে ফেলেন। এসময় তিনি নিজের নাম ‘সুমন’-এটুকু ছাড়া আর কোনো তথ্যই দিতে পারছিলেন না। এই প্রেক্ষিতে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটা জিডি করা হয়। গতকাল রাতে তিনি উত্তরার আশকোনার ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারেই ছিলেন।
ওমান থেকে ফেরত আসা সুমনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার রতনপুর গ্রামে। আজ সকাল ১১টায় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের ডেপুটি ডিরেক্টর শরিফুল ইসলামের উপস্থিতিতে তার বড় ভাই মামুনের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের একটি অ্যাম্বুলেন্সে তিনি বাড়ি ফিরবেন।
ব্র্যাকের এসোসিয়েট ডিরেক্টর শরিফুল হাসান বলেন, ‘আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না মাঝে মধ্যেই বিদেশ থেকে আসা মানসিক ভারসাম্যহীন এমন লোকদের সন্ধান আমরা পাই যাদের কাছে পাসপোর্ট থাকে না। শুধুমাত্র একটা ট্রাভেল পাস নিয়ে তারা ফেরত আসেন। মানসিকভাবে সুস্থ না থাকায় অনেক সময় তারা সেই ট্রাভেল পাসটাও হারিয়ে ফেলেন। ফলে তাদের স্বজনদের খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়। এজন্য আমরা এয়ারপোর্টে এই প্রবাসীদের সহায়তায় একটা কাঠামো করার অনুরোধ করেছি।’
তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুরের সুমন ভাইয়ের মতো আরও ১৪৮ জন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বিদেশ থেকে ফেরত আসা অভিবাসীকে তাদের স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। বিমানবন্দরের বিদেশ-ফেরতদের জরুরি সহায়তা দিতে গত আট বছর ধরে কাজ করছে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টার। সিভিল এভিয়েশন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক, এপিবিএনসহ সবার সহযোগিতায় গত আট বছরে ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে নানা ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। শুধু ২০২৪ সালেই ৪০ জন প্রবাসীকে বিশ্বের নানা দেশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার ও মানবপাচার বিরোধী লড়াইয়ে ভূমিকা রেখে যুক্তরাষ্ট্রের টিআইপি হিরো-২০২৪ পুরস্কারে ভূষিত আল-আমিন নয়ন ও মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা রায়হান কবিরসহ একটি টিম এই কাজে যুক্ত আছেন। প্রবাসে বা বিদেশ থেকে ফিরে সংকটে আছেন এমন যে কেউ বা তাদের পরিবারের সদস্যরা ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে সহায়তার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।