বুধবার অনলাইনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদেশগামী এক লাখ কর্মীর মধ্যে কারও ভিসা হয়েছে, কারও টিকিট করা হয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়ানো শুরু হওয়ায় তারা বিদেশ যেতে পারেননি। তারা যেন সবাই বিদেশ যেতে পারেন সে বিষয়ে কোরবানির ঈদের পর নিয়োগকর্তা দেশের সাথে কথা বলব।’
এসব কর্মীর ভিসা ও টিকিটসহ বিভিন্ন কাজ করতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর প্রায় ১৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এ বিষয়ে সরকারি প্রণোদনা চেয়েছি।’
কোভিড-১৯ এর আগে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটিতে আসা কর্মীরা যাতে আবার যেতে পারেন সে বিষয়ে সরকারের সাথে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে শামীম আহমেদ বলেন, ‘করোনার পরে আমরা দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর জন্য কাজ করব, যাতে কোনো দুর্যোগ আসলেও আমাদের কর্মীদের কোনো সমস্যা না হয়।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেভাবে অনেকে বলছে সৌদি বা অন্য দেশ থেকে ৮-১০ লাখ লোক দেশে ফেরত আসবে তা সঠিক নয়। করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে দেশগুলো যখন কাজ উন্মুক্ত করে দেবে তখন সব কর্মী আবার কাজে যোগদান করতে পারবেন।
এ সময় বায়রা সভাপতি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী যে মহামারি চলমান তার কারণে অন্যান্য খাতের মতো আমাদের এ খাত ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এ উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে আমাদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল রাখা প্রায় অসম্ভব।’
আরও পড়ুন: প্রবাসী শ্রমিকদের ফেরাতে সরকার চাপের মুখে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি জানান, তাদের প্রায় ১৬০০ এজেন্সির ৩২ হাজারের অধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বর্তমান এ স্থবির অবস্থায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাসিক বেতন-ভাতা দেয়া ও অফিস ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ বহন করা তাদের জন্য প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
তবে তিনি বলেন, বায়রার আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে তাদের লাইসেন্সের জামানতের ৫০ শতাংশ টাকা বিনা সুদে এক বছরের জন্য মঞ্জুর করেছে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) হতে লাইসেন্সের বিভিন্ন জামানতের ৫০ শতাংশ উত্তোলনের প্রক্রিয়াটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। এজেন্সিগুলো বিএমইটিতে আবেদন করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাদের রক্ষিত জামানতের অর্ধেক উত্তোলন করতে পারছে।
বেনজীর আহমেদ জানান, কোভিড-১৯ মহামারির পর যেসব প্রবাসী কর্মী দেশে এসেছেন তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যেন কর্মক্ষেত্রে ফিরে যেতে পারেন তার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো অক্লান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মতবিনিময়ে জানানো হয়, বায়রার সদস্য রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে প্রতিবছর গড়ে সাত লাখের অধিক কর্মী বিভিন্ন পেশায় কর্মসংস্থানের জন্য বিশ্বের প্রায় ১৫৬ দেশে গমন করে থাকেন। তাদের বছরে প্রেরিত প্রায় ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স জাতির অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে স্বীকৃত।