বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী সারজিস আলম এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, কর্তৃপক্ষ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার বা মামলা দিয়ে হয়রানি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সারজিস আলম বৃহস্পতিবার বিকালে নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন,'তারা তাদের কথা রাখেনি। তাই এসব গণগ্রেপ্তার, নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।'
আরও পড়ুন: ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তি পেলেন কোটা আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক
তিনি আরও লেখেন, 'আপনারা (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছেন। আমার ভাইয়ের (স্কুল-কলেজের ছাত্র) ওপর লাঠিচার্জ করছেন। যাকে খুশি তুলে নিতেন। আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেয়ে তাদের ভাইকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেছেন, বাবাকে হুমকি দিয়েছেন! মাশরুর এর একটি উদাহরণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আমার ভাইদের রিকশা থেকে নামিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আপনারা আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে মারলেন। কি ভাবছেন আপনি? এভাবেই কি সব শেষ হয়ে যাবে? যারা একবারের জন্যও এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল তারা গ্রেপ্তারের ভয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারে না। অনেকে আছেন যাদের পরিবার এখনো তাদের সন্ধান পায়নি। এটা হওয়া উচিত হয়নি!’
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে 'রিমেমবারিং আওয়ার হিরোজ' কর্মসূচিতে হামলায় আহত ১০
তিনি আরও লেখেন, ছয়জনকে ডিবি হেফাজতে ৬ দিন আটকে রাখা যায়, কিন্তু বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে আটক করা যায়? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার যা ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, সেগুলো কীভাবে বন্ধ করা যায়?
পুলিশ সদস্যদের ভাই বলে সম্বোধন করে তিনি আরও লেখেন, 'এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের ওপর নয়, পুলিশের ওপর নয়। এই রাগ আপনার পোশাকের (ইউনিফর্ম) উপর। বছরের পর বছর ধরে এ দেশের অনেক মানুষ এই ইউনিফর্মধারীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে। ঐ পোশাক ছেড়ে আমাদের কাতারে আসুন, আমরা আপনাদেরকে স্বাগত জানাবো এবং আলিঙ্গন করব।
পোস্টের শেষ অংশে তিনি লেখেন, ‘যেহেতু এই পথ সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই আমরা কোন কিছুর মুখোমুখি হতে ভয় পাই না। যতদিন বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে না, গণগ্রেপ্তার, নিপীড়ন, নির্যাতনের অবসান হচ্ছে না, ততদিন পর্যন্ত এই লড়াই চলবে।’
আরও পড়ুন: ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের গ্রেনেড-টিয়ারশেল নিক্ষেপ