পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে একজন বিচারিক হাকিমকে দিয়ে এই তদন্ত সম্পন্ন করে ৩০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
তদন্ত করার সময় বিচারিক হাকিমকে (ম্যাজিস্ট্রেট) পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক, জেল সুপার ও পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। এ মামলার পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য আগামী ২৩ জুন নির্ধারণ করেন আদালত।
বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এই নির্দেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান।
আদেশের পরে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, পঞ্চগড়ের সন্তান (পলাশ) ঢাকা বারের একজন অ্যাডভোকেট। উনি মানহানির মামলায় পঞ্চগড় জেলা কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালীন সময়ে গত ২৬ তারিখে (এপ্রিল) ওনাকে কে বা কাহারা শরীরে পেট্রোল বা কেরোসিন জাতীয় পদার্থ দিয়ে তাকে আগুন লাগিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। আমি বাদী হয়ে হাইকোর্টে এ ঘটনায় রিট করি।
‘জেল কারাগারে এই যে ব্যর্থতা তাকে সিকিউরিটি দিতে এটা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এ ব্যাপারে রুল দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত বলে দিয়েছেন পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর তত্ত্বাবধানে আরেকজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিবেন বিচারিক তদন্তের জন্য। ডিসি, কারাগারের সুপার এবং এসপি তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন।
‘আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়ার নিদেশে দিয়েছেন’, বলেন তিনি।
সায়েদুল হক সুমন আরও বলেন, ‘আদালত এ কথা বলেছেন- এ ছেলেটা যদি কোনো কারণে এই যে অভিযোগ, হত্যা করা না হয়ে থাকে, সে যদি সুসাইডও করে থাকেও; তাও এটা বের হয়ে আসা দরকার যে, আগুনে জ্বলার মতো পদার্থ কই পেলো- কিভাবে আগুন দিলো এ ব্যাপারটা সামনে আসা জরুরি।’
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গত সোমবার রিট করেন।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত আইনজীবী পলাশ জেলার আটোয়ারি উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বড়সিংগিয়া গ্রামের প্রণব কুমার রায়ের ছেলে।
জানা যায়, একটি প্রতিষ্ঠানের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২৫ মার্চের একটি মানববন্ধনে প্রধানমন্ত্রীর নামে পলাশ কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। রাজীব রানা নামে এক তরুণ তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরের দিন ২৬ মার্চ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় এবং ওইদিনই কারা হাসপাতালের শৌচাগারে অগ্নিকাণ্ডের শিকার হন তিনি। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩০ এপ্রিল পলাশ মারা যান।
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজি প্রিজন, রংপুর বিভাগের ডিআইজি, পঞ্চগড়র কারাগারের জেলার।