তিনি জানান, মাঠ প্রশাসনকে সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত আছে সিপিপির ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার-ভিডিপি, স্কাউট।
বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিতলির সর্বশেষ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত হ্যারিকেনের তীব্রতা সম্পন্ন এ ঘূর্ণিঝড় উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে গোপালপুরের নিকট দিয়ে ভারতের উড়িষ্যা ও অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। তবে এটি গতি প্রকৃতি পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসলে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
মায়া বলেন, তিন চারদিন আগেই সরকার ‘তিতলি’র পূর্বাভাস পেয়েছে। তখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় প্রবণ জেলাসমূহকে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
‘তিতলি’ মোকাবেলায় মন্ত্রণালয় থেকে গৃহীত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী এর নির্দেশনা মোতাবেক ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উপকূলীয় ১৯ টি জেলার প্রত্যেকটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা-উপজেলা সমূহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছে।
তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সর্তক অবস্থায় রাখা হয়েছে। জেলাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ মজুদ রাখা হয়েছে এবং তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
মায়া চৌধুরী আরো বলেন, প্রত্যেকটি উপজেলায় এবং জেলায় সর্বক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোলরুম এনডিআরসিসি এর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় ১৯ টি জেলার সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতির প্রয়োজনে উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণকে স্বল্প সময়ের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য উপকূলীয় ৫৬ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সিপিপি সেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা প্রদান করা সিপিপি ঢাকা প্রধান কার্যালয়েও কন্ট্রোলরুম সার্বক্ষণিকভাবে খোলা রাখা হয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ে স্থাপিত ওয়্যারলেস স্টেশনের সাথে নিয়মিত বেতার যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
পরিস্থিতির অবনতি হলে আগাম ব্যবস্থা হিসেবে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার-ভিডিপির সকল সদস্যকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। জনসাধারনকে আতঙ্কিত না হয়ে রেডিও, টেলিভিশন ও টোল ফ্রি আবহাওয়া বার্তা ১০৯০ এর মাধ্যমে আবহাওয়ার তথ্য জেনে ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শাহ্ কামাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এজাজুল বার, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ, সিপিপির পরিচালক আহমাদুল হক উপস্থিত ছিলেন।